ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এর চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better, তাহলে বলতে হয় আপনার জীবন আর মৃত্যুর sence নেই। কেন ছাগলের মৃত্যুটাই মৃত্যু? চালকুমড়ো বা আঁখের মৃত্যুটা মৃত্যু নয় কেন? আপনার যদি জীবন আর মৃত্যুর সম্বন্ধ প্রকৃত জ্ঞান থাকতো তাহলে তিনটি ক্ষেত্রেই আপনি সমান দুঃখ পেতেন। কিন্ত আপনার মনে হয় ছাগল বলি দেওয়ার চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better।
আপনার এই প্রকৃতি দেখে বলতে হয়, জীবন বাঁচানো আপনার উদ্দেশ্য নয়, বরং আপনি রক্তকে ভয় পান, অস্ত্র কে ভয় পান। আপনার বাস্তবিক বোধ থাকলে আপনি অস্ত্রের আঘাতে চালকুমড়ো বা আঁখের এবং ছাগ তিনটি বলির ই বিরোধীতা করতেন। কারণ তিনটির প্রকৃতিই একই রকম, এই তিনটে থেকেই অনেক নতুন প্রাণের জন্ম হতে পারতো। তাই তিনটির হত্যাই একই রকম ক্ষতি করে।
কিন্ত, শুধুমাত্র ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এটি মানুষের হিংস্র পাশবিক প্রবৃত্তি। তাহলে প্রশ্ন করতে হয়, আমরা কি সত্যিই অহিংস?
আমাদের মায়েরা প্রতিদিন জ্যান্ত মাছগুলো দুহাতে ধরে বঁটিতে ঘচাং করে একবারে জ্যান্তই কেটে ফেলেন। শহরের মাছ-মাংস বিক্রেতারাও একইভাবে কাটেন। তখন কি সেটা নৃশংসতা নয়? কেন আমরা বাজারের জ্যান্ত মাছটাই বেশি পছন্দ করি? কেন মাছটার মরার অপেক্ষা করি না। এটা কি নৃশংসতা নয়?
পাঁঠারও রক্ত লাল, মাছেরও রক্ত লাল। মাছেরও জীবন আছে, চালকুমড়োরও জীবন আছে, আঁখেরও জীবন আছে। তফাত শুধু চিন্তাধারায়। যে কোনও প্রাণ কে হত্যা করা নিন্দনীয়, সেটা উদ্ভিদ হোক বা প্রাণী। কোনো প্রাণকেই অকারণে কেটে ফেলা উচিত নয়।
তাই, ছাগ বলির চেয়ে আখ বা চালকুমড়ো বলি বলা ব্যক্তিরা মূর্খেরও অধম। তাদের বাস্তবিক জীবন বোধটুকুই নেই। প্রকৃত সত্য হয়, অহিংসভাবে বেঁচে থাকা অসম্ভব, অবাস্তব। জৈন ধর্মালম্বীরা চাষ করতেও দ্বিধা করেন, কারণ মাটিতে অনেক ক্ষুদ্র জীব বসবাস করে। কিন্ত চাষ না করলে মানুষ খাবে কি? এরকম নৃশংসভাবে কি বেঁচে থাকা সম্ভব?
অতি বৃহৎ দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে micro bacteria, Virus এই সমস্ত কিছুরই জীবন আছে। কিন্ত তাদের কে সবাই বাঁচাতে গেলে আমাদের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। সেইজন্যই আমরা অহিংস নয়।
অহিংস হওয়ারও দরকার নেই, আবার হিংস করারও দরকার নেই। জীবনে বেঁচে থাকার জন্য যতটুকু দরকার ততটুকু হিংসা করতেই হবে। নইলে বাঁচা অসম্ভব।