Skip to main content

হিন্দু বিরোধী, বৈষম্যমূলক OBC আইন


২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসে। আর তারপরই রাজ্যের তথাকথিত পিছিয়ে পড়া (?) মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য কল্পতরু হয়ে ওঠেন মমতা ব্যানার্জি। মুসলিমদের জন্য নানা রকম সুযোগ সুবিধা দিতে থাকেন। আর সেই সময় চুপিসারে ২০১২ সালে পাস হয়ে যায় একটি আইন- “The West Bengal Backward Classes (Other than Scheduled Castes and Scheduled Tribes) (Reservation of Vacancies in Services and Posts) Act, 2012,” 


🔴কি ছিল সেই আইনে?

আইন অনুযায়ী OBC (Other Backward Classes) কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়; OBC-A এবং OBC-B। আর এইভাবে রাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের ঢালাও সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ দিয়ে দেওয়া হয়। আর সেই সংরক্ষণ দেওয়া হয় পিছিয়ে পড়া হিন্দুদের কোটার ভাগ কেটে।



এখানে উল্লেখযোগ্য, OBC-তে হিন্দুরা যে সংরক্ষণের সুবিধা লাভ করতেন, তা পিছিয়ে পড়ার মাপকাঠিতে। তাছাড়া, সংরক্ষণ তালিকায় তাদের জাতির সঙ্গে হিন্দু কথা লেখা থাকতো না। কিন্তু OBC-A এবং OBC-B ক্যাটাগরিতে  যাদের পিছিয়ে পড়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে তাদের জাতির পাশে পরিষ্কার ‛মুসলিম’ কথাটা উল্লেখ করা হয়েছে। 


🔴ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে কাউকে সংরক্ষণ দেওয়া যেখানে সংবিধান বিরোধী, সেখানে আইনে কিভাবে মুসলিম পরিচয়ের ভিত্তিতে সংরক্ষণ দেওয়া হতে পারে? 

আইন অনুযায়ী, OBC-A ক্যাটাগরিতে জায়গা পেয়েছে রাজ্যের প্রায় বেশিরভাগ মুসলিম সম্প্রদায়। সংরক্ষণ তালিকায় রয়েছে- বৈদ্য মুসলিম, বেলদার মুসলিম, ব্যাপারী মুসলিম, হাজ্জাম, জমাদার, দফাদার, জোলা (আনসারী-মোমিন), খোট্টা মুসলিম, লস্কর, মাঝি/ পাটনি মুসলিম, মাল মুসলিম, চামার/ মুচি মুসলিম, মোল্লা, মুসলিম বারুই, মুসলিম হালদার, মুসলিম সরকার, মুসলিম বিশ্বাস, মুসলিম মালি, মুসলিম মন্ডল, মুসলিম সাঁপুই/ সিপাই, নস্য শেখ, কয়াল মুসলিম, নাইয়া মুসলিম, পৈলান মুসলিম, পুরকাইত মুসলিম, সরকার মুসলিম। 


🔴 এই আইনের সুযোগ নিয়ে রাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়ের বড়ো অংশ সংরক্ষণের সুযোগ নিয়ে ব্যাপকভাবে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ হচ্ছেন। আর এই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে শুধুমাত্র ধর্মীয় পরিচয়- ‛মুসলিম’ পরিচয়ের কারণে। অন্যদিকে হিন্দুদের যারা সংরক্ষণ পাচ্ছেন, তাঁরা ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে নয়। ফলে হিন্দুরা রাজ্যের সরকারি চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। 


🔴 অর্থাৎ, এটা প্রমাণিত যে, শুধুমাত্র ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে হিন্দুকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আর এক্ষেত্রে একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য। তা হলো এই আইনে কিছু মুসলিম সম্প্রদায়কে সংরক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যাদের পূর্বপুরুষ হিন্দু থেকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয়েছিলো। তাঁরা যদি সংরক্ষণ পায়, তবে অন্য হিন্দু যারা একই পদবীর, তাহলে তাঁরা যদি ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়, তবে তাঁরাও সংরক্ষণের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন না। ফলে আগামীদিনে এর ফলে ধর্মান্তরণ বাড়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।


তাই এই হিন্দু বিরোধী, বৈষম্যমূলক ২০১২ সালের OBC আইন বাতিল করা হোক।

Popular posts from this blog

দাড়িভিটের স্ফুলিঙ্গ থেকে ভাষা আন্দোলনের প্রদীপ জ্বালাতে আমরা ব্যর্থ

এসো হে সেপ্টেম্বর, আমার ভাষার মাস। ভাষাতীর্থ দাড়িভিট, রাজেশ তাপসের বাস।। ২০১৮-র ২০ সেপ্টেম্বর উত্তর দিনাজপুর জেলার দাড়িভিট হাইস্কুলের গুলি চালনার ঘটনা এখন সবাই জানেন। আলোচনার সুবিধার জন্য অল্পকথায় প্রেক্ষাপটটা আরেকবার দেখে নেওয়া যাক। দাড়িভিট হাইস্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি ছিল বাংলা ও বিজ্ঞান শিক্ষকের। এই স্কুলে উর্দুভাষী ছাত্র-ছাত্রী নেই। স্থানীয়রা মুসলমান। তৃণমূল নেতার তৎপরতায় সরকারের বিদ্যালয় দপ্তর পাঠালো বাংলা ও বিজ্ঞান শিক্ষকের জায়গায় উর্দু শিক্ষক এবং সংস্কৃত শিক্ষক। অবাঞ্ছিত উর্দু শিক্ষকের নিয়োগকে একটু সহনশীল করার জন্য সম্ভবত সংস্কৃত শিক্ষককের নামটাও যুক্ত করা হয়েছিল। ছাত্ররা মানেনি, প্রতিবাদ করেছিল। প্রতিবাদ করেছিলেন গ্রামবাসীরা। অতএব পুলিশ সামান্য উত্তেজনাতেই গুলি চালায়, ফলে দুই প্রাক্তন ছাত্র রাজেশ সরকার এবং তাপস বর্মণের মৃত্যু হয়। এর প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গ সপ্তাহখানেক উত্তাল হয়। জাতীয়তাবাদী ছাত্র সংগঠন এবিভিপি মিছিল মিটিং করে। বিজেপি ২৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গ বন ডাকে যা আংশিক সফল হয়। এই বনধকে সফল করতে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির যুবমোর্চার সভাপতি দেবজিৎ সরকার দাড়িভিট গেল...

বলি প্রসঙ্গে আমার মতামত

ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এর চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better, তাহলে বলতে হয় আপনার জীবন আর মৃত্যুর sence নেই। কেন ছাগলের মৃত্যুটাই মৃত্যু? চালকুমড়ো বা আঁখের মৃত্যুটা মৃত্যু নয় কেন? আপনার যদি জীবন আর মৃত্যুর সম্বন্ধ প্রকৃত জ্ঞান থাকতো তাহলে তিনটি ক্ষেত্রেই আপনি সমান দুঃখ পেতেন। কিন্ত আপনার মনে হয় ছাগল বলি দেওয়ার চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better।  আপনার এই প্রকৃতি দেখে বলতে হয়, জীবন বাঁচানো আপনার উদ্দেশ্য নয়, বরং আপনি রক্তকে ভয় পান, অস্ত্র কে ভয় পান। আপনার বাস্তবিক বোধ থাকলে আপনি অস্ত্রের আঘাতে চালকুমড়ো বা আঁখের এবং ছাগ তিনটি বলির ই বিরোধীতা করতেন। কারণ তিনটির প্রকৃতিই একই রকম, এই তিনটে থেকেই অনেক নতুন প্রাণের জন্ম হতে পারতো। তাই তিনটির হত্যাই একই রকম ক্ষতি করে। কিন্ত, শুধুমাত্র ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এটি মানুষের হিংস্র পাশবিক প্রবৃত্তি। তাহলে প্রশ্ন করতে হয়, আমরা কি সত্যিই অহিংস?  আমাদের মায়েরা প্রতিদিন জ্যান্ত মাছগুলো দুহাতে ধরে বঁটিতে ঘচাং করে একবারে জ্যান্তই কেটে ফেলেন। শহরের মাছ-মাংস বিক্রেতারাও একইভাবে কাটেন। তখন কি সেটা নৃশংসতা নয়? ক...