Skip to main content

বিদ্যাসাগর ও বঙ্গদেশ!

বাঙালিদের মধ্যে খুব বেশি ‘মানুষ’ জন্মায়নি। ‘দৈত্যকুলে প্রহ্লাদ’ মত করে বাঙালির মাঝে এমন কিছু মানুষ জন্মেছিলেন তারা কেবল দিয়েই গেছেন, বিনিময়ে কিছু পাননি। তেমনই একজন মহামানবের জন্মদিন ২৬ সেপ্টম্বর। তিনি বাঙালির ‘ঈশ্বর’ শ্রী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’।


রবীন্দ্রনাথ বিদ্যাসাগার সম্পর্কে বলতে গিয়ে ‘বাঙালি’ আর ‘মানুষ’ যে এক নয় তা শ্লেষ করে বলতে বাধ্য হয়েছেন এভাবে-

‘বিশ্বকর্মা যখন চার কোটি বাঙালি নির্মাণ করিতেছিলেন, সেখানে হঠাত দুই-একজন মানুষ গড়িয়া বসেন কেন, তাহা বলা কঠিন’


বাঙালির মধ্যে যে দু-চারটি 'মানুষ' জন্মেছেন সেই তাঁদের একজন বাঙালির ঈশ্বরের একটি কাল্পনিক ইন্টারভিউ নিয়েছিলাম গত ২৯ জুলাই তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে। আজকের জন্মদিনে সেই লেখাটি আবার প্রকাশ করে তাঁকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাচ্ছি।

-ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়, আপনাকে স্বাগতম আমাকে সময় দেয়ার জন্য।

-তোমাকেও স্বাগত জানাই।

-এই একবিংশ শতাব্দীর একজন মানুষ হিসেবে আপনাকে ঠিক কোন পরিচয়ে বড় করে তুলবো, সমাজ ধর্ম সংস্কারক, শিক্ষাবিদ, পাঠ্যপুস্তক প্রণেতা, লেখক, মুক্তচিন্তক?

-এখন আমাকে কিভাবে স্মরণ করা হয়?

-বাংলাদেশে আপনাকে স্মরণ করা হয় না। ৯০-এর দশকে ‘বিদ্যাসাগর সোসাইটি’ নামের একটি সংগঠন ছিলো যারা আপনার চিন্তাভাবনা লেখালেখি নতুন প্রজন্মের কাছে নতুন করে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করেছিলো। তখন সেই সংগঠনের প্রধানকে ‘ইন্ডিয়ার এজেন্ট’ বলে প্রায় দেশছাড়া করে ফেলা হয়েছিলো। ‘মীজানুর রহমানের ত্রৈমাসিক পত্রিকা’ কাগজের সম্পাদক মীজানুর রহমান নিজে কবি মলয় রায়চৌধুরীকে সেকথা জানিয়েছেন।

-সে কী কথা এখানে ইন্ডিয়ার এজেন্ট হওয়ার কি আছে?


-আছে স্যার, বাংলাদেশর বাংলা ভাষা হবে আরবী ফার্সি উর্দু মিশেলে একটা মুসলমানি চেহারার যাতে হিন্দুদের থেকে আলাদা করা যায়। পাকিস্তানে আমলে আপনাকে তাই এখনকার মুসলিম লীগ দর্শনের লেখক বুদ্ধিজীবীরা ‘ব্রিটিশপোষ্য’ বলে উল্লেখ করে বাংলা ভাষাকে সংস্কৃতায়ন করে ফেলার অভিযোগ তোলে আপনার বিরুদ্ধে। ‘বাঙালি মুসলমানদের নিজস্বতা’ নামে স্বাধীন বাংলাদেশের দ্বিজাতিতত্ত্ব আবার ফিরে আসে। কাজেই আপনি এই বাংলায় ব্রাত্য হয়ে পড়েন। আহমদ ছফাদের কাছে আপনি ব্রিটিশদের দালাল, এমনকি আপনি ভূত হয়ে র’ এজেন্ট হয়ে এখনো কাজ করছেন!

-পশ্চিমবাংলায় শুনেছি নকশালরা আমার মূর্তি ভেঙ্গেছিলো?

-হ্যাঁ। আপনি সিপাহী বিদ্রোহের সময় ইংরেজ সৈন্যদের থাকবার জন্য কলেজ খুলে দিয়েছিলেন এটাই তাদের অভিযোগ।

-ওরা কি স্বীকার করে দুইশো বছরের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের আগে ভারতে কম করে হলেও তিনশো বছরের মুসলিম সাম্রাজ্যবাদ চলছিলো? বামপন্থীদের পড়াশোনা আছে কিন্তু আক্কেল নেই। উনিশ শতক যে ইউরোপের আধুনিক জ্ঞান আর অস্ত্রের আধিপত্য গোটা বিশ্বকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে সেটি বুঝার মত জ্ঞান তখন আমার ছিলো। চিপা পায়জামার উপর গরদের কামিজ পরে কোমড়ে জরির ব্লেট পরা নাগড়া জুতা পরা নবাব বাদশাদের যে জাদুঘরে যাবার সময় এসে গেছে জেনেই আমি সেদিন বুঝে ছিলাম এই সিপাহী বিদ্রোহে ইংরেজরাই জয়ী হবে। একজন ভারতীয় হিসেবে আমাদের তখন দরকার ছিলো একটি রাজনৈতিক স্থীতিশীলতা। যেখানে আমরা পাশ্চত্য আধুনিক সাহিত্য বিজ্ঞান দর্শন পড়ে নিজের দেশকে বুঝতে পারবো। দেশ কি জিনিস, পরাধীনতা কি জিনিস এটা তো ভারতের মানুষ বুঝতো না। আধুনিক আইরিশ কবিদের দেশপ্রেমের কবিতা পড়েই হিন্দু কলেজের ছাত্ররা প্রথম বুঝে ছিলো তারা পরাধীন! তুমি কি মনে করো সিপাহীরা জিতে বৃদ্ধ বাহাদুর শাহ জাফরকে আবার বাদশা করলে ভারতের কোন উপকার হতো?


-তাহলে মুসলমান সমাজে রোকেয়ার জন্ম আরো তিনশো বছর পিছিয়ে যেতো! আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আপনি আসলে ব্রাহ্মণদের লেখাপড়ার জন্য চেষ্টা করেছেন, নিন্ম জাতের হিন্দুদের জন্য আপনি কাজ করেননি। মার্কসবাদী বদরুদ্দিন উমার এই কথা তার বইতে লিখেছেন।


-কার কথা বলছো আবুল হাশিমের ছেলের কথা? ও তো শুনেছি মুসলমানদের সংস্কৃতি মুসলমানদের আদব রক্ষার্থে তমুদ্দিন মজলিশ নামের এতটা সংগঠন খুলেছিলো। যাই হোক, তুমি কি জানো, সেকালে শিক্ষা কর ইংরেজরা জমিদারদের উপর চাপিয়েছিলো। এদেশের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জন্য ইংরেজরা টাকা ঢালবে কেন? এদিকে জমিদাররা, সেই উনিশ শতকের সাম্প্রদায়িক হিন্দু জাত্যাভিমান কি ভয়ানক ছিলো চিন্তা করো, তারা তাদের টাকা ছোট জাতের জন্য খরচ করতে রাজি ছিলেন না। ফলে শুরুতে শুধু উচ্চবর্ণের হিন্দুদের জন্য কলেজ খোলা হলো। এটা না করলে ভারতে কলেজ চালু করতে আরো একশো বছর লেগে যেতো। তোমাদের উমারকে বলো, রোকেয়া যদি সেকালের সমাজপতি মুসলমানদের কথা না শুনতেন তাহলে কি তিনি মুসলমান মেয়েদের জন্য স্কুল খুলতে পারতেন? রোকেয়াকেও সম্ভ্রান্ত উচ্চ বংশের মুসলমান ঘরের মেয়েদের কঠিন পর্দার মধ্যে লেখাপড়া সীমিত রেখে প্রথম স্কুল খুলতে হয়েছিলো। কই কোন গবেষক তো রোকেয়াকে বলেনি তিনি কেবল উচ্চবংশীয় মুসলমানদের লেখাপড়ার জন্য কাজ করেছেন?

-আপনি মুসলমানদের জন্য কিছু লিখেননি।

-আমার কোন মুসলমান সহপাঠীই ছিলো না। মুসলমানদের সম্পর্কে আমি এত কম জানতাম। কোলকাতার উচ্চশ্রেণীর ধনী মুসলমানরা কেউ বাংলায় কথা বলতেন না। তাদের ভাষা ছিলো উর্দু। বাংলাকে তারা ছোটলোকদের ভাষা মনে করতেন। ফলে তাদের নিয়ে আমি আসলে কি লিখবো? এইসব কথা?


-হিন্দুদের বিধবা বিয়ে আইন করেও আপনি ব্যর্থ হয়েছিলেন সে জন্য আপনার মধ্যে হতাশা আছে?

-আছে। বেঁচে থাকতে দুঃখ পেয়েছিলাম। হিন্দুদের মনের মধ্যে জঞ্জাল। আইন করে সে জঞ্জাল বের করা যাবে না। তারা আজো শত শত জঞ্জাল লালন করে চলেছে।

-মুসলমান সমাজ নিয়ে কিছু বলুন। তারা বাংলা ভাষার জন্য রক্ত দেয়ার দাবী করে কিন্তু কেউ কেমন আছেন জানতে চাইলে ‘আলহামদুরিল্লাহ’ বলে জবাব দেয়।

-আমি এই বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।

-আপনি নবাব সিরাজউদৌলার তুমুল সমালোচনা করেছিলেন আপনার ‘বাঙলার ইতিহাস’ বইতে। এ কারণে মার্কসবাদীরা আপনাকে সাম্রাজ্যবাদী ও মুসলিম বিদ্বেষী বলেছে পরবর্তীকালে।


-এই যে আমাকে মুসলিম বিদ্বেষী বলেছে- কেন বলেছে? কারণ তারা সিরাজকে মুসলমান বলে মানে এবং সিরাজের শাসনকে ‘মুসলমানদের শাসন’ বলে মানে। এটা যে ‘মুসলিম সাম্রাজ্যবাদ’ হয়ে গেলো এটা বুঝার মতও জ্ঞান তাদের নেই? তুমি দেখাও তো, ভারতীয় উপমহাদেশের কোন মার্কসবাদী এই এদেশের কোন ব্যক্তিত্বকে মহান করে যুবকদের সামনে তুলে ধরেছে? দেখাতে পারবে? আমাকে, রবীন্দ্রনাথকে তারা শ্রেণীশত্রু হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। তাদের সমস্ত নায়করা বাস করেন রাশিয়া ও চীনে! এটা অনেকটা মুসলমানদের খিলাফত শুরুর হিসেবে আরব ও তুরস্কের প্রতি মুসলমানদের টানের মত!


-বাংলা ভাষাটাকে পুরোপুরি মুছে না ফেললে আপনার নাম তো মুছে ফেলা যাবে না। এই যে যারা আপনার নামে কুত্সা লিখেন দাড়ি কমা ব্যবহার করে। এই যতিচিহৃগুলো আপনি বাংলায় বসিয়েছিলেন তাই না? অথচ ভাষাসৈনিকদের কেউ আপনার নাম পর্যন্ত নেয় না!

-বাদ দাও সুষুপ্ত…

-কবি মধুসূদন দত্তের জন্য আপনার আফসোস হয়?

-কেন বলো তো?

-আপনি তাকে ব্যারিস্টার পড়াতে বিলেত পাঠালেন। তার কবি জীবনের সেখানেই শেষ…। তারপর তার চরম শোচনীয় পরিণতি…


-আমি চেয়েছিলাম বাঙালিদের মধ্যে ব্যারিস্টার কেউ নেই। মাইকেল সেটা হোক। তুখোর ছাত্র ছিলো। সেও উচ্চাভিলাষী ছিলো। ব্যারিস্টার হলে অর্থকষ্ট আর থাকবে না। জানি না বিলেত না গেলে মধুসূদন আরো লিখত কিনা। আসলে কি জানো, দয়স্তয়ভস্কি, বোদলেয়ার, মধুসূদন এদের ধাঁতটাই এমন। একটা আফসোস হয়, মধুসূদন বলতো, মেঘনাদবদ কাব্য হচ্ছে তার আসল কাব্য রচনার আগে হাতের জড়তা কাটানোর জন্য একটা চেষ্টা! সে এখনো তার আসল লেখাটি লিখেনি…। চিন্তা করো, মেঘনাদবদ কাব্য যদি হয় প্রাক্টিস তাহলে সে পরে কি লিখতে পারত?

-বাংলা ভাষা ও বাঙালির ভবিষ্যত কেমন দেখতে পাচ্ছেন?

-সময়! সুষুপ্ত, সময় হচ্ছে আসল নায়ক, বুঝলে। সময়ই সব নির্ধারণ করে দিবে। যা থাকার থাকবে, যা থাকার নয় থাকবে না। আমরা কেউই হিরো নই, আসল হিরো সময়।


-আপনি আমাদের এখনো একজন নায়ক। ২৬ সেপ্টেম্বর আপনার জন্মবার্ষিকী। আপনাকে স্মরণ করলাম। অনেকে বলে থাকে আমাদের "ঈশ্বর" একজনই, ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’!


-তোমাকে ধন্যবাদ সুষুপ্ত…


©সুষুপ্ত পাঠক

Popular posts from this blog

বাংলার বারুজীবী বৃত্তান্ত

একসময় পান সুপারি দিয়ে নেমন্তন্ন করার প্রথা ছিল গ্রাম বাংলায়। তারপর ভোজের শেষে মুখুশুদ্ধি হিসেবেও পানের ব্যবহার ছিল তখন ।পান রাঙ্গা ঠোঁট ছিল আজকের সুন্দরীদের লিপস্টিক এর বিকল্প। আর এই পানের চাষ ও বিক্রির সঙ্গে যারা যুক্ত ছিলেন তাদের বলা হতো বারুজীবি বা বারুই। পশ্চিমবঙ্গে হাওড়া ,হুগলি ও বীরভূম জেলার সদর শহর সিউড়িতে রয়েছে বারুইপাড়া ।এছাড়া দুই মেদনীপুর সহ অন্যান্য জেলাতেও কমবেশি এই সম্প্রদায়ের লোক বাস করে। একেবারে নিরীহ শান্ত সৌম্য ভীতু প্রকৃতির সম্প্রদায় ।তবে শৈল্পিক চিন্তাধারা বিশেষভাবে ফুটে ওঠে এই সম্প্রদায়ের। উৎপত্তি - বারুজিবী জাতির উৎপত্তি সম্পর্কে একটি প্রচলিত লোককথা রয়েছে ।সেখানে বলা হয়েছে এক শিব ভক্ত ব্রাহ্মণ ছিলেন ।তিনি প্রতিদিন শিব পূজা করতেন। কিন্তু, তার আরো অনেক কাজ ছিল ।যেমন যেমন পান চাষ, কাপড়বোনা প্রভৃতি।ব্রাহ্মণের বেশিরভাগ সময় চলে যেত ওই কাজে।তারপর কোন এক সময় পেলে শিবের মাথায় দুই একটি ফুল ছুঁড়ে কর্তব্য সারতেন। এসব দেখে শিব ঠাকুর তাকে আন্তরিকভাবে শুধুমাত্র তার পূজা করতে বললেন। এবং আরো জানিয়ে দিলেন তা করলে তার কোন অভাব থাকবে না। কিন্তু, ব্রাহ্মণ সে ...

Déjà Rêve: স্বপ্ন যখন বাস্তব

 Déjà Rêve: স্বপ্ন যখন বাস্তব ↓ স্বপ্ন আমাদের মস্তিষ্কের সৃষ্ট কিছু চিত্র বা গল্প যা আমরা ঘুমের ভিতর মনের অবচেতনে দেখি। ঘুমের যেকোন পর্যায়ে আমরা স্বপ্ন দেখতে পারি। তবে সাধারণত ঘুমের REM (rapid eye movement) পর্যায়ে আমরা বেশি স্বপ্ন দেখি কারণ তখন আমাদের মস্তিষ্ক সবচেয়ে বেশি সচল থাকে। "দেজা রেভে" হল আপনি যা আগে কখনো স্বপ্ন দেখেছেন তা পুনরায় বাস্তবে দেখা। এর মানে, আপনি বর্তমানে যা চোখের সামনে দেখছেন তা একটি স্মৃতি এবং আপনি আগে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটার অনুরূপ কিছু বাস্তুবে দেখাকে দেজা রেভে বলে। অনেকেই মনে করেন যে দেজা রেভে হলো দেজা ভ্যূ এর বিপরীত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেজা রেভে হলো লুসিড ড্রিমিং এর বিপরীত এবং দেজা ভ্যূ এর অনুরূপ। ২০১৮ সালে ব্রেইন স্টিমুলেশন গবেষকরা বলেন যে দেজা রেভে সাধারণত আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা না বুঝার জন্য হতে পারে। ফরাসি দলটি দেজা রেভে এর উপর স্পষ্ট ধারণা পাওয়ার জন্য আরো পরীক্ষানিরীক্ষা করতে থাকেন। এই পরীক্ষার মাধ্যমে তারা দেখতে পান যে ১৯৫৮ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দেজা রেভে হওয়া সবাই আংশিকভাবে মৃগীরোগে আক্রান্ত ছিলো। সাধারণত মৃগী রোগীদের চিকিৎসায় ইলেকট্রিক ব্র...

হিন্দু বিরোধী, বৈষম্যমূলক OBC আইন

২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসে। আর তারপরই রাজ্যের তথাকথিত পিছিয়ে পড়া (?) মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য কল্পতরু হয়ে ওঠেন মমতা ব্যানার্জি। মুসলিমদের জন্য নানা রকম সুযোগ সুবিধা দিতে থাকেন। আর সেই সময় চুপিসারে ২০১২ সালে পাস হয়ে যায় একটি আইন- “ The West Bengal Backward Classes (Other than Scheduled Castes and Scheduled Tribes) (Reservation of Vacancies in Services and Posts) Act, 2012,”  🔴কি ছিল সেই আইনে? আইন অনুযায়ী OBC ( Other Backward Classes ) কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়; OBC-A এবং OBC-B । আর এইভাবে রাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের ঢালাও সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ দিয়ে দেওয়া হয়। আর সেই সংরক্ষণ দেওয়া হয় পিছিয়ে পড়া হিন্দুদের কোটার ভাগ কেটে। এখানে উল্লেখযোগ্য, OBC-তে হিন্দুরা যে সংরক্ষণের সুবিধা লাভ করতেন, তা পিছিয়ে পড়ার মাপকাঠিতে। তাছাড়া, সংরক্ষণ তালিকায় তাদের জাতির সঙ্গে হিন্দু কথা লেখা থাকতো না। কিন্তু OBC-A এবং OBC-B ক্যাটাগরিতে  যাদের পিছিয়ে পড়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে তাদের জাতির পাশে পরিষ্কার ‛মুসলিম’ কথা...