Skip to main content

স্বাধীনতার নায়করা পর্ব ~ ৪

চেনেন ওনাকে..? না চেনাই স্বাভাবিক। ওনার নাম যতীশ গুহ। বিপ্লবী যতীশ গুহ নামটা শোনেনি নিশ্চয়ই ? শুনবেন কি করে তাঁর নামটা যে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে দেওয়া হয়েছে নেতাজির অন্তর্ধানে যতীশ গুহ'র সক্রিয় ভূমিকা ছিল। তাঁকে গ্রেফতার করে ব্রিটিশরা... লাল কেল্লায় প্রায় চার বছর মলদ্বারে রুল ঢুকিয়ে, আঙ্গুলে পিন ফুটিয়ে রোজ লাঠির আঘাত মেরে, মেঝেতে শুইয়ে বুটের ক্রমাগত লাথি মেরে অত্যাচার করে ব্রিটিশরা..... শুধু অনুভব করুন..... না যতীশ গুহ সেদিন মুখ খোলেননি....


এবার আপনার মনে হতে পারে নেতাজির অন্তর্ধানে যতীশ গুহ'র কথা কি ভাবে এল..? এই ইতিহাস তো কোনও বইতে নেই এবার চলে আসুন আপনার জানা "তথাকথিত" ইতিহাসে কিংবা ধরে নিন বোস দ্যা ফরগোটেন হিরো সিনেমার কথা। ১৯৪১ সালের ১৭ জানুয়ারী রাতে গৃহবন্দি সুভাষচন্দ্র বসু এলগিন রোডের বাড়ি থেকে একটি কালো গাড়িতে চেপে অন্তর্ধান করলেন গোমো স্টেশনের উদ্দেশ্য। তাঁর গাড়ির চালক ছিলেন ভাইপো শিশির বসু। ওই ঠান্ডার রাতে এলগিন রোডের বাড়ির সামনে মাত্র দুইজন চৌকিদার ঘুমোচ্ছে আর গাড়িটা এমনি এমনি বেরিয়ে গেল। কি সহজ সরল ব্যাপার তাই না ?


এবার আসি আসল ঘটনায়। মনে রাখবেন সেই সময়ে নেতাজির এলগিন রোডের বাড়ির বাইরে থাকত ছয় থেকে সাত স্তরের পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তাঁর উপর ২৪ ঘন্টা নজর রাখত প্রায় ১৫ জন ব্রিটিশ গোয়েন্দা। সব গেট বন্ধ থাকত। কেউ বাড়িতে এলে বা বাইরে গেলে তল্লাশি করত পুলিশ। সব তথ্য লেখা থাকত রেজিস্টারে। এই অবস্থায় একটা গাড়ি অত সহজে বেরিয়ে যাবে এটা অসম্ভব । কিভাবে বেরিয়েছিলেন সেটা নেতাজি জানেন আর কেউ না। কারণ ওই বেষ্টনী নেতাজি ছাড়া আর কারও ভেদ করা সম্ভব না ।


সত্যি কথা বলতে গেলে এই অন্তর্ধানের ঘটনায় আসল মানুষগুলিকে আমরা চিনি না। ফরওয়ার্ড ব্লকের লালা শঙ্করলাল, শার্দুল সিং, মিস্টার পরমানন্দ এই ঘটনার সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্সের সত্যরঞ্জন বক্সি, সুধীররঞ্জন বক্সি, হরিদাস মিত্র, যতীশ গুহ সরাসরি যুক্ত ছিলেন এই ঘটনার সঙ্গে বসু পরিবারে দ্বিজেন বসু, ইলা বসু, অরবিন্দ বসু, রণজিৎ বসু নেতাজিকে এই কাজে সাহায্য করেছিলেন। আমরা ভুলে গেছি শহীদ রামকৃষ্ণানকে যিনি নেতাজির রাশিয়া যাবার পথ খুঁজতে গিয়ে ডুবে যান আমুর নদীতে।


এই ঘটনা ব্রিটিশদের কাছে ছিল আশাতীত। তারা ব্যাপক তল্লাশি চালায় এবং বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্সের বেশ কিছু শীর্ষস্থানীয় বিপ্লবীকে, সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেন। যতীশ গুহ, সত্যরঞ্জন বক্সী, সর্দার শার্দুল শিং, অরবিন্দ বসুকে জেলে প্রচন্ড অত্যাচার করা হয়। জেলে প্রাণ দেন যতীশ গুহ..

যতীশ গুহ


জয়হিন্দ বন্দেমাতরম

তথ্য সৌজন্যে : ক্ষমা কর সুভাষ (ডক্টর জয়ন্ত চৌধুরী)

Popular posts from this blog

 বর্তমানে রাত্রীকালীন বিবাহের প্রাসঙ্গিকতা :- ____________________________________ মুসলমান অত্যাচারের কারণে 'রাত্রি কালীন গোপন বিবাহ' রীতির প্রচলন। এসব সত্য জানার সত্ত্বেও এখনও এই রীতি বয়ে নিয়ে হচ্ছে। তার সম্ভাব্য কারণ কি কি হতে পারে? ১| দিনের বেলা সকলে ব্যস্ত থাকে নানা কাজে। কেও স্কুলে, কেও অফিসে কেও বা অন্য কোনো কাজে লিপ্ত থাকেন। তাই সেই কাজের মাঝে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা সম্ভব হয় না। তাই সন্ধ্যার লগ্নে বিয়ে হলে মানুষ দুপুরে কাজের শেষে বিশ্রাম নিয়ে সন্ধ্যেয় সেজেগুজে এসে বিয়ে দেখতে পারে। রাত্রে প্রায় সকলেই বাড়িতে থাকেন। তাই কোথাও নিমন্ত্রণ রক্ষা করা বিষয়টা অনেকটাই নির্ঝঞ্ঝাট মনে হয়। ২| এখন বিবাহ একটি পারিবারিক উৎসব নয়। বরং বিবাহ আত্ম অহংকার, ক্ষমতার প্রদর্শনীতে পরিণত হয়েছে। রাতে জমকালো Light Show দেখানো যায়। বাজীর প্রদর্শনী করা যায়। এর সাথে আরও যত রকমভাবে নিজের ক্ষমতার প্রদর্শন করা সম্ভব সবরকম চেষ্টাই করা হয়। কিন্ত দিনে এই সমস্ত ঘটনার Prime Focus একজনের উপর পড়া সম্ভব নয়, তাই রাত্রে। ৩| সামাজিক দৃষ্টিকোণ: বর্তমানে দিনে বিবাহ দেওয়াকে দারিদ্রতার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা ...

ব্রাহ্মণ্য অত্যাচার তত্ত্বের Propaganda Vs Reality

ভারত বাংলাদেশ আর পাকিস্তান মিলে প্রায় 50 কোটি মুসলিম বাস করে। কিন্তু, এতো মুসলিম তো আরবেও নেই। তাহলে এতো মুসলমান এলো কোথা থেকে? অন্য ধর্মের লোক এতো দ্রুত হারে বাড়ছে না কেনো? অন্য ধর্মের 50 কোটি লোক হলোনা কেনো ? Communist আর secular দের বক্তব্য এরা হিন্দুই ছিল, কিন্তু ব্রাহ্মণদের অত্যাচারের ফলে আর মুসলিমদের ধর্মের উদারতার কারণে জাত-পাতহীনতার কারণে এরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। এরা মুসলিমদের দান-ধ্যানের নীতি, সুফি_সন্তদের জীবনযাত্রায় প্রভাবিত হয়ে "ইসলাম" ধর্ম গ্রহণ করেছে। ব্রাহ্মণদের অত্যাচার তত্ত্ব  Communist রা হিন্দু সমাজকে দুইভাগে ভাগ করেন-- 1. উচ্চ বর্ণ  2. নিম্ন বর্ণ সমাজের সবচেয়ে ভক্তিবান মানুষ হলো তথাকথিত নিম্নবর্ণের মানুষরা। তাদের কাছে ধর্মই সব। তাঁরা সব করতে পারেন কিন্তু ঠাকুর কে অবহেলা করেন না। তাঁরা শুধুমাত্র ব্রাহ্মণদের অত্যাচারের জন্যেই ধর্মান্তরিত হয়েছে এটা বিশ্বাস করেন কিভাবে❓ এটা তো গেলো পুরোনো যুগের কথা.... এবার এখনকার কথা বলি.... আচ্ছা বলুন তো, আমরা আমাদের পারিবারিক সূত্রে বা বন্ধুদের সূত্রে প্রায় প্রতিদিন নানান রকম খবর শুনি। যেমন- কারোর বিয়ে হয়েছে, কার...

বৃদ্ধাশ্রম ও অনাথালয় এর সংযুক্তিকরণ

আমি কিছু ছোট ছোট old age home এবং orphan home এ গেছি এবং সেখানে গিয়ে মনে হয়েছে বৃদ্ধ মানুষগুলো তাঁদের পরিবারের ছোটো-ছোটো নাতি-নাতনীদের মিস করেন। আবার অনাথালয়ের orphan দের কাছে গিয়ে মনে হয়েছে তারা যদি দাদু ঠাকুমাদের মত কাওকে পেত, যারা তাদের একটু গল্প বলবে, মাথায় হাত বুলিয়ে তাদের আদর করবে তাহলে তারাও হয়ত অনেকটা ভালো থাকত। তাই আমার মনে হয়েছে বৃদ্ধাশ্রম ও orphan home যদি একই ছাদের নীচে করা সম্ভব হয় তাহলে ওইসব বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এবং বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলোর পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার যে কষ্ট, সেটা সামান্য হলেও লাঘব হবে। এবার আমি এটা নিয়ে কতটা ঠিক ভেবেছি বা এটা ইমপ্লিমেন্ট করা কতটা সম্ভব বা তার প্রতিবন্ধকতার জায়গা গুলো আমি সম্পুর্ন ওয়াকিবহল নই। সম্পূর্ণ একটা ইমোশনাল ভাবনা থেকে এটা আমি ম্যাডামকে জানিয়েছি। ম্যাডাম বা ডিপার্টমেন্ট এ যারা দীর্ঘদিন ধরে অনেক গুরুদায়িত্ব সামলেছেন তাঁদের সবার পর্বত সমান অভিজ্ঞতা। যদি তাঁরা এই ভাবনার মধ্যে কোনো পজিটিভ দিক আছে বলে মনে করেন এবং প্রাকটিক্যাল গ্রাউন্ডে এটা ইমপ্লিমেন্ট করা সম্ভব মনে করেন এবং এক ছাদের তলায় old age home এবং orphan home তৈরী করা...