সত্যবতীকে চেনেন..? চিনবেনই বা কি করে আমাদের ইতিহাস বইতে তো আর এদের কথা লেখার মতো জায়গা হয়নি। তবে শুনুন সেই মহীয়সীর গল্প যিনি তাঁর দেহের বিনিময়ে দেশসেবায় ব্রতী হয়েছিলেন....
মেদিনীপুরের এই বিধবা সত্যবর্তী ছিলেন দেহপসারিনি। তাঁর কাছে যৌনক্ষুধা মেটাতে আসা পুলিশ অফিসারের কাছ থেকে গোপন খবর জেনে নিয়ে বিপ্লবীদের জানিয়ে দিতেন সত্যবতী। পুলিশের পৌঁছোনোর আগেই পালিয়ে যেত বিপ্লবীরা।
কিন্তু এ কাজেও শান্তি পাননি। পরে আইন অমান্য আন্দোলনে সরাসরি জড়িয়ে পড়েছিলেন। নন্দীগ্রাম ও আসাদতলায় প্রথম লবণ আইন অমান্য করেছিলেন সত্যবতী। ১৯৩২-এ ১১ ফেব্রুয়ারি তেরপেখিয়া বাজারে মদের দোকানের সামনে পিকেটিং করার সময় পুলিশের লাঠির ঘায়ে জ্ঞান হারালে তাঁকে ওই জেলহেফাজতে পাঠানো হয়েছিল। জেল থেকে তিন মাস পর এসে আবার প্রতিরোধ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। ১৯ আগস্ট নন্দীগ্রামে রাজনৈতিক সভায় যোগ দিতে গিয়ে আবারও গ্রেফতার হয়েছিলেন।
ততদিনে পুলিশ জানতে পেরেছিল যে, তিনি পুলিশের গোপন খবর বিপ্লবীদের জানিয়ে দেয়। পুলিশের লাঠির ঘায়ে তাঁর শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিল। তাঁর কিডনি আর অস্ত্র প্রবল ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সবচেয়ে বেশি। হাসপাতালেও চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি। দেশের দক্ষযজ্ঞে 'সতী' হয়ে প্রাণ গেল এই সত্যবতী দেবীর। অথচ দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে তাঁর নাম পর্যন্ত রইল না...
সংকলনে : স্বপ্নাশিষ দেবনাথ
ছবিওয়ালা : কৃষ্ণেন্দু মণ্ডল
© এক যে ছিলো নেতা