Skip to main content

স্বাধীনতার নায়করা পর্ব ~ ৯

ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে মহান বিপ্লবী শহীদ অসিতরঞ্জন ভট্টাচার্য। ইনি জন্ম গ্রহণ করেন কুলিল্লায় ৪ই এপ্রিল ১৯১৫ সালে। তার পিতার নাম ছিল ক্ষীরোদ রঞ্জন ভট্টাচার্য। ক্ষীরোদ রঞ্জন ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক এবং স্বদেশীয়ানায় বিশ্বাসী। অসিতরঞ্জন ভট্টাচার্য কুমিল্লার কলেজে পড়াশোনা করতেন। কলেজে থাকাকালিন তিনি অনুশীলন সমিতির সংস্পর্শে আসেন। আসিতরঞ্জন বিশ্বাস করতে শুরু করেন সশস্ত্র আন্দোলনই দেশের স্বাধীনতা অর্জনের একমাত্র উপায়।


সবই তো হলো কিন্তু অস্ত্রশস্ত্র গোলাবারুদ আসবে কোথা থেকে? তারজন্য তো টাকা লাগবে! ডাকাতি না করা ছাড়া আর কোন রাস্তা নেই। সরকার ও ধনী মহাজনদের কাছ থেকে লুট করতে হবে অর্থ, এদের অর্থই দেশের কাজে লাগাতে হবে। দিনটি ছিল ১৩ই মার্চ ১৯৩৩ সাল, শ্রীহট্ট হবিগঞ্জের ইটাখোলা বড় ডাকঘর থেকে বেরিয়েছে এমনই এক হরকরা। কাঁধে ডাকের ঝোলা, একহাতে বল্লম তাতে বাঁধা ঘুঙুর। সূর্যাস্ত হলো কেবল কিছু দূর যেতেই পাঁচ জনের একটি দল তার ডাকব্যাগটি কেড়ে নিয়ে ছুটতে লাগলো। চিৎকার করে উঠলেন ডাকব্যাগটি নিয়ে পালাচ্ছে, চিৎকার শুনে লোকজন পিছু নেয় তাদের।


কিছুক্ষন পরই ধেয়ে আসা মানুষজন বিপ্লবীদের ঘিরে ফেলল। উৎসাহী একজন বল্লমটি ছুড়ে মারে স্বদেশীদের লক্ষ্য করে, পায়ে বেঁধে একজনের। অবস্থা খারাপ দেখে একজন সঙ্গে রাখা রিভলবার দিয়ে গুলি চালালে লুটিয়ে পড়লেন এক গ্রামবাসী। অবাঞ্ছিত এই ঘটনায় যখন সবাই হতচকিত, তখনই ধরা পড়ে যায় পাঁচজন বিপ্লবী। এদিকে পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেছেন, গ্রেপ্তার করা হলো পাঁচজনকে।


এবার বিচারের পালা বিচারে বাকি চারজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হলো, কিন্তু অসিতরঞ্জন ভট্টাচার্যকে গুলি চালানোর অপরাধে দেওয়া হলো মৃত্যুদণ্ড। ২রা জুলাই ১৯৩৪ সালে ফাঁসি দেওয়া হয় শ্রীহট্ট জেলে অসিতরঞ্জন ভট্টাচার্যকে। তখন সমগ্র বরাক উপত্যকায় এবং ওই জেলে সেটাই ছিল প্রথম ফাঁসি । অসিতরঞ্জন ভট্টাচার্য ছিলেন মাস্টারদা সূর্য সেনের ইণ্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি-র সক্রিয় সদস্য। অসিতরঞ্জনের দাদা বিধুভূষণ ভট্টচার্য ২২শে এপ্রিল ১৯৩০ সালের জালালাবাদের যুদ্ধে বৃটিশ সেনার বিরুদ্ধে লড়াই করেন। শহীদ হন টেগরা, মতি কানুনগো, প্রভাস বল প্রমুখ বিপ্লবীদের সঙ্গে বিধুভূষণ ভট্টচার্য।


সে দিনের অসিতরঞ্জন ভট্টাচার্যকে এই প্রজন্মের হয়তো কেউই চেনেনা। চিনেই বা কি লাভ এই আত্মবিস্মৃত জাতির.. পড়লে ক্ষমা করবেন অসিত বাবু এই হতভাগ্য জাতিকে।

অসিতরঞ্জন ভট্টাচার্য


জয়হিন্দ| বন্দেমাতরম|

© এক যে ছিলো নেতা

Popular posts from this blog

বলি প্রসঙ্গে আমার মতামত

ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এর চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better, তাহলে বলতে হয় আপনার জীবন আর মৃত্যুর sence নেই। কেন ছাগলের মৃত্যুটাই মৃত্যু? চালকুমড়ো বা আঁখের মৃত্যুটা মৃত্যু নয় কেন? আপনার যদি জীবন আর মৃত্যুর সম্বন্ধ প্রকৃত জ্ঞান থাকতো তাহলে তিনটি ক্ষেত্রেই আপনি সমান দুঃখ পেতেন। কিন্ত আপনার মনে হয় ছাগল বলি দেওয়ার চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better।  আপনার এই প্রকৃতি দেখে বলতে হয়, জীবন বাঁচানো আপনার উদ্দেশ্য নয়, বরং আপনি রক্তকে ভয় পান, অস্ত্র কে ভয় পান। আপনার বাস্তবিক বোধ থাকলে আপনি অস্ত্রের আঘাতে চালকুমড়ো বা আঁখের এবং ছাগ তিনটি বলির ই বিরোধীতা করতেন। কারণ তিনটির প্রকৃতিই একই রকম, এই তিনটে থেকেই অনেক নতুন প্রাণের জন্ম হতে পারতো। তাই তিনটির হত্যাই একই রকম ক্ষতি করে। কিন্ত, শুধুমাত্র ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এটি মানুষের হিংস্র পাশবিক প্রবৃত্তি। তাহলে প্রশ্ন করতে হয়, আমরা কি সত্যিই অহিংস?  আমাদের মায়েরা প্রতিদিন জ্যান্ত মাছগুলো দুহাতে ধরে বঁটিতে ঘচাং করে একবারে জ্যান্তই কেটে ফেলেন। শহরের মাছ-মাংস বিক্রেতারাও একইভাবে কাটেন। তখন কি সেটা নৃশংসতা নয়? কেন আমরা ব

ছেলেরা কেন দিনদিন 'বৌদিবাজ' হয়ে উঠছে?

সমাজটা খুবই খারাপ দিকে যাচ্ছে। ছেলেরা এখন বৌদিবাজ হয়ে উঠেছে! তারা একবার করে প্রেমে ছেঁকা খাওয়ার পর আর অন্য কোনও প্রেমিকা জোটায় না, বৌদিদের সাথে গল্প করে। কারণ - ১| ধোঁকা খায় না ২| হৃদয়ে আঘাত লাগে না ৩| Break up 💔 বলে কিছু থাকে না ৪| অনেকটা Stunt বাজীর মতো, মাথায় কোনো চাপ নেয়ার দরকার পরে না  আর একটা বিষয় হলো এখন বেশিরভাগ ছেলে পড়াশোনা দিকে ব্যস্ত। তাই তাদের হাতেও বেশি সময় থাকে না। আবার বৌদিদের হাতেও বেশি সময় সীমিত। তাই একটা Understanding বজায় থাকে। আরেকটা জিনিস হল নতুন প্রেমিকারা যেরকম নানারকম চাপ দেয়। বৌদীরা অনেকটা বোঝে ব্যাপারগুলো। যেমন- ফাঁকা পকেট, কম সময়, Relation Public না করা... এসব জিনিস। সেই কারণে তারা এতটা চাপ দেয় না। অল্পবয়সী মেয়ের একটু জেদি হয়। তাই তারা অকারণেই ঝগড়া করে যা এমনিতেই চাকরি আর ভবিষ্যতের চিন্তায় চিন্তিত ছেলেদের ভালো লাগে না। তাই তারা বৌদিদের দিকেই ঝোঁকে। বিয়ে তো অবশ্য ভালো কোনো মেয়ে দেখেই করবে, তার আগের সময়টা অন্য দিকে দেয় - বৌদিদের সাথে আড্ডা মারে। বৌদিদের সাথে কথা বলে আর কিছু হোক বা না হোক মানসিক শান্তি আছে। আমার বৌদিবাজ বন্ধুদের জন্য 💖

রাষ্ট্রভক্ত বীরাঙ্গনা হীরা দে

 🌹💥🕉️ দুর্নীতিবাজদের সাথে কেমন আচরণ করা উচিত তার উদাহরণ আমাদের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা থেকে জানা যায়। এই শাস্তিও কোন রাজা বা সরকার দিয়েছিল না দিয়ে ছিল শুধুমাত্র তার পরিবারের সদস্যরা। 💢 1311 খ্রিস্টাব্দে, আলাউদ্দিন খিলজিকে জলোর দুর্গের গোপন কথা বলার জন্য পুরস্কার হিসাবে পাওয়া অর্থ নিয়ে ভিকা দাহিয়া আনন্দের সাথে বাড়ি ফিরছিলেন।এত টাকা এই প্রথম দেখল। হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিল যুদ্ধ শেষ হলে এই টাকা দিয়ে একটা বিলাসবহুল প্রাসাদ তৈরি করে আরামে বসবাস করবে।প্রাসাদের সামনে ঘোড়া বাঁধা থাকবে, চাকর থাকবে।  তার স্ত্রী হীরা স্বর্ণ ও রৌপ্য গয়না দ্বারা সারা শরীর ঢাকা থাকবে। আলাউদ্দিন কর্তৃক জালোর কেল্লায় নিযুক্ত সুবেদারের দরবারে তিনি বড় মর্যাদার বিবেচিত হবেন।বাড়িতে পৌঁছে বিড়বিড় করে হেসে টাকার বান্ডিলটা বাড়িয়ে দিলেন স্ত্রী হীরা দে'র হাতে।  🌹স্বামীর হাতে এত টাকা এবং স্বামীর মুখ ও অভিব্যক্তি দেখে হীরাদে আলাউদ্দিন খিলজির সৈন্যদের দিল্লি ফিরে যাওয়ার কারণ বুঝতে পেরে জালোরের যুদ্ধে হতাশ হয়ে হঠাৎ জালোরের দিকে ফিরে যায়। হীরা দে বুঝতে পেরেছিলেন যে তার স্বামী ভিকা দাহিয়া তার জন্মভূমি জ