Skip to main content

দাবাড়ু প্রজ্ঞা!

১০ আগস্ট, ২০০৫'র কথা।


তামিলনাড়ু স্টেট কর্পোরেশন ব্যাংকের চাকরিজীবী রমেশ বাবু এবং তাঁর স্ত্রী নাগালাক্সমী'র ঘরে দ্বিতীয় সন্তান হিসেবে জন্ম হলো একটি ছেলের। ভারতের ঐ জায়গাটায় সাধারণত সন্তানদের নামের সাথে বাবার নাম যুক্ত করার রীতি আছে, এবং সে রীতি অনুযায়ী আগত সন্তানের নাম রাখা হলো প্রজ্ঞানন্দ, বাবার নাম যুক্ত করার পর ছেলেটার পুরো নাম দাঁড়ালো: রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দ। আর তাঁর বড় বোন: রমেশবাবু বৈশালী।


প্রায় কাছাকাছি বয়সের প্রজ্ঞা আর বৈশালী'র বড় হয়ে ওঠার গল্প প্রায় একই, এবং তাদের মধ্যে একটা বিশেষ মিল আছে- দুজনই দাবাড়ু।


দাবাড়ু প্রজ্ঞা আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনায় আসে মাত্র দশ বছর দশ মাস এবং উনিশ দিন বয়সে- ২০১৬ সালের ২৯-এ মে'র ঘটনা। কেআইআইটি ইন্টারন্যাশনাল ওপেন টুর্নামেন্টের নবম রাউন্ডে আল মুথাইয়া'র সাথে খেলা গেমটা জেতার মাধ্যমে প্রজ্ঞা তাঁর আন্তর্জাতিক মাস্টার খেতাবটি নিশ্চিত করেন। শুধু খেতাব পেয়েই শেষ না- প্রজ্ঞানন্দ হয়ে ওঠেন বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী আন্তর্জাতিক মাস্টার! তাঁর ঠিক দুই বছর পর, ২০১৮ সালের ২৩-শে জুন প্রজ্ঞা ইতালিতে অনুষ্ঠিত একটি টুর্নামেন্ট খেলার মাধ্যমে চূড়ান্ত গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাবটি অর্জন করেন। বয়স ১২ বছর ১০ মাস ১৩ দিন! প্রজ্ঞার আগে কম বয়সে গ্র্যান্ডমাস্টারের খেতাব পেয়ে রেকর্ড গড়া মানুষ আছেন মাত্র ৪ জন।


আমাদের আজকের আলাপ প্রজ্ঞা কত বছর বয়েসে গ্র্যান্ডমাস্টার হলেন কিংবা কয়টি টুর্নামেন্ট জিতলেন- তা নিয়ে নয় ।


মাত্র ১১ দিন আগে প্রজ্ঞানন্দ কিশোর থেকে যাত্রা শুরু করলেন যুবক হওয়ার পথে। ১৮ তম বছরে পা রাখা যুবক হতে শুরু করা প্রজ্ঞা নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। কবি হেলাল হাফিজের একটি কবিতার লাইন এ লেখায় জুড়ে দেয়া যায় অতি সহজেই

'এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়'


প্রজ্ঞা যে নিজের শ্রেষ্ঠ সময় পার করছেন- তা আজকের দাবা বিশ্বকাপ ২০২৩'র টাইব্রেকার খেলায় একদম স্পষ্ট। তামিলনাড়ুর এই সন্তান বিশ্ব র‍্যাংকিং-এ তিন নাম্বারে অবস্থান করা আমেরিকান গ্র্যান্ডমাস্টার ফাবিয়ানো কারুয়ানা'কে ৩.৫-২.৫ স্কোরে পরাজিত করে ফাইনালের সিট নিশ্চিত করলেন। এ যেন নতুন জন্মে পদার্পণ করার মতোই! এখানে মনে রাখা জরুরী- বিশ্বনাথন আনন্দের পর প্রজ্ঞা-ই ইতিহাসে দ্বিতীয় ভারতীয় যে কিনা বিশ্বকাপের ফাইনাল পৌঁছেছে। প্রজ্ঞা মুখোমুখি হতে চলেছেন ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দাবাড়ু ম্যাগনাস কার্লসেনের।



এক নজরে প্রজ্ঞানন্দের ওয়ার্ল্ড কাপ জার্নি :

ফাইনালে ওঠার জন্য প্রজ্ঞা যাদের যাদের হারিয়েছেন -

গ্র্যান্ডমাস্টার ম্যাক্সিম লাগার্দ

গ্র্যান্ডমাস্টার ডেভিড নাভারা

গ্র্যান্ডমাস্টার হিকারু নাকামুরা 

গ্র্যান্ডমাস্টার ফেরেন্স বেরকেস 

গ্র্যান্ডমাস্টার অর্জুন এরিগেইসি 

গ্র্যান্ডমাস্টার ফাবিয়ানো কারুয়ানা 


আজ প্রজ্ঞার সমর্থনে থাকবে লাখো কোটি ভক্ত। আপনিও কি সেসব ভক্তদের একজন?

Popular posts from this blog

খাদ্যের আমিষ-নিরামিষ🌰 🧄

  আণবিক জীববিজ্ঞানের  দৃষ্টিকোণ থেকে আমিষ বা প্রোটিন হল পেপটাইড বন্ধনসমূহ দ্বারা পরস্পর সংযুক্ত অ্যামিনো অ্যাসিডের  পলিমার  শৃঙ্খল। মানব পরিপাকের সময় পাকস্থলীতে  হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড   ও   প্রোটিয়েজ   নামক   উৎসেচকের  ক্রিয়ার ফলে আমিষ অণুগুলো ভেঙে অনেকগুলো ক্ষুদ্রতর  পলিপেপটাইড শৃঙ্খলে  পরিণত হয়। মানবদেহ অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিডগুলো  জৈবসংশ্লেষ  করতে পারে না, তাই খাদ্য হিসেবে গৃহীত আমিষে অবস্থিত এই অ্যামিনো অ্যাসিডগুলো  শোষণ  হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমিষ মানবদেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান। এটি দেহকলার গাঠনিক উপাদানগুলোর একটি এবং জ্বালানির উৎস হিসেবেও কাজ করতে পারে। জ্বালানি হিসেবে আমিষ শর্করার সমপরিমাণ শক্তি ঘনত্ব প্রদান করে: প্রতি গ্রামে ৪ কিলোক্যালরি (১৭ কিলোজুল)। এর বিপরীতে স্নেহপদার্থ বা চর্বি প্রতি গ্রামে ৯ কিলোক্যালরি বা ৩৭ কিলোজুল শক্তি প্রদান করে। পুষ্টিগত দৃষ্টিকোণ থেকে আমিষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক ও সংজ্ঞাসূ...

Dashavatar : 10 Avatars of Bhagwan Vishnu!

1. Matsya Avatar 2. Kurma Avatar 3. Varaha Avatar 4. Narasimha Avatar 5. Vamana Avatar 6. Parashurama Avatar 7. Shree Ram Avatar 8. Shri Krishna Avatar 9. Balarama Avatar 10. Kalki Avatar

বলি প্রসঙ্গে আমার মতামত

ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এর চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better, তাহলে বলতে হয় আপনার জীবন আর মৃত্যুর sence নেই। কেন ছাগলের মৃত্যুটাই মৃত্যু? চালকুমড়ো বা আঁখের মৃত্যুটা মৃত্যু নয় কেন? আপনার যদি জীবন আর মৃত্যুর সম্বন্ধ প্রকৃত জ্ঞান থাকতো তাহলে তিনটি ক্ষেত্রেই আপনি সমান দুঃখ পেতেন। কিন্ত আপনার মনে হয় ছাগল বলি দেওয়ার চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better।  আপনার এই প্রকৃতি দেখে বলতে হয়, জীবন বাঁচানো আপনার উদ্দেশ্য নয়, বরং আপনি রক্তকে ভয় পান, অস্ত্র কে ভয় পান। আপনার বাস্তবিক বোধ থাকলে আপনি অস্ত্রের আঘাতে চালকুমড়ো বা আঁখের এবং ছাগ তিনটি বলির ই বিরোধীতা করতেন। কারণ তিনটির প্রকৃতিই একই রকম, এই তিনটে থেকেই অনেক নতুন প্রাণের জন্ম হতে পারতো। তাই তিনটির হত্যাই একই রকম ক্ষতি করে। কিন্ত, শুধুমাত্র ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এটি মানুষের হিংস্র পাশবিক প্রবৃত্তি। তাহলে প্রশ্ন করতে হয়, আমরা কি সত্যিই অহিংস?  আমাদের মায়েরা প্রতিদিন জ্যান্ত মাছগুলো দুহাতে ধরে বঁটিতে ঘচাং করে একবারে জ্যান্তই কেটে ফেলেন। শহরের মাছ-মাংস বিক্রেতারাও একইভাবে কাটেন। তখন কি সেটা নৃশংসতা নয়? ক...