Skip to main content

সংবিধান প্রণয়ন দিবসে সংবিধান কোথায়?

আমি অবাক হয়ে যায় গণতন্ত্র দিবস বা Republic Day সার্চ করলে যেসব Result আসে তাতে সংবিধানের ছবি দেখান হয় না বললেই চলে। কারণ অধিকাংশ মানুষই জানেন না ২৬ শে জানুয়ারি কি হয়েছিল। তারা শুধুমাত্র জানেন ২৬ শে জানুয়ারি হল গণতন্ত্র দিবস। গণতন্ত্র দিবস কেন পালন করা হয়, এর তাৎপর্য কি, সেসব তাঁদের জানা নেই। তারা শুধুমাত্র জানেন, একদিন ছাদে ভারতের পতাকা তুলতে হয়, আর টিভিতে গণতন্ত্র দিবসের প্যারেড হয় এটুকুই। হয়তো অনেকে ২৬ শে জানুয়ারিকে ভারতের স্বাধীনতা দিবস বলেও মনে করেন।


এতে তাদের কোনো দোষ নেই। কারণ আমরা নিজেরাই ২৬ সে জানুয়ারি আর ১৫ ই আগস্ট কে পৃথক করি না। আমাদের কাছে ১৫ ই আগস্ট যা ২৬ শে জানুয়ারি দুটোই সমান, দুদিনই আমরা ছাদে পতাকা তুলি, একই রকম Whats app stats লাগাই, দুটো দিনই একইভাবে একই রকম পোস্ট করি, একইভাবে উপভোগ করি। ১৫ই আগস্ট বা ২৬ জানুয়ারির এই দুটো দিনের কোন পার্থক্য আমরা নিজেরাই উপলব্ধি করি না।


কিন্তু Republic Day বা গণতন্ত্র দিবস হল সংবিধান লাগু করার দিবস। সংবিধান লাগু করার মাধ্যমে ভারতবর্ষ তার নিজস্ব আইন চালু করেছিল এবং ব্রিটিশ আইন থেকে মুক্তি পেয়েছিল, সেটাকে উপভোগ করার জন্যই Republic Day Celebration। ব্রিটিশ শাসনের আইন থেকে মুক্তি পাওয়ার আনন্দে হর্ষ-উল্লাসের সাথে গণতন্ত্র দিবস পালন করা হয়। 

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা এটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। ১৯২৯ সালে কংগ্রেস অধিবেশনে প্রথম পূর্ণ স্বরাজের দাবি জানানো হয়। ১৯৩৪ সালে মানবেন্দ্রনাথ রায় গণপরিষদের ধারণা দিয়ে গণপরিষদ তৈরীর প্রস্তাব করেছিলেন। ১৯৩৯ সালে চক্রবর্তী রাজা গোপালাচারী প্রাপ্তবয়স্ক ভোটের ভিত্তিতে গণপরিষদ তৈরির দাবি জানান। 

 ১৯৩৭ সালে প্রথম প্রাদেশিক নির্বাচন হয়েছিল। সেখানে জয়লাভ করেছিল কংগ্রেস। কংগ্রেসের মন্ত্রীরা ১৯৩৭ সালে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাজ করতে শুরু করেছিল। এরই মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। ব্রিটিশ সরকার ক্রিপস মিশন কে ভারতে পাঠায়। এই মিশনের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য ভারতীয় সমর্থন আদায় করা এবং একই সাথে স্ব-শাসনের দাবির সমাধান করা। ব্রিটিশ সরকার প্রতিশ্রুতি দেয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ ভারতবর্ষকে সায়ত্বশাসন (Dominion Status) দেওয়া হবে। 

১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের ৮ ই আগস্ট  সংবিধান প্রণয়নের জন্য একটি সংস্থা গঠন করা হয়। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়। প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে না হলেও নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বাধীন  আজাদ হিন্দ ফৌজের ভয়ে ভারতবর্ষকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে সম্মত হয়। ১৯৪৬ সালে গণপরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সদস্য ছিল ৩৮৯ জন। ২ রা সেপ্টেম্বর ১৯৪৬ সালের অন্তর্বর্তীকালে সরকার গঠন হয়। 

৯ ডিসেম্বর ১৯৪৬ গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন বসে। গণপরিষদ তার সংবিধান তৈরীর কাজ শুরু করে। গণপরিষদের এই কাজ চলে ২৬ সে নভেম্বর ১৯৪৬ পর্যন্ত, সেদিন নতুন সংবিধান গৃহীত হয়। তবে এই সংবিধান লাগু করার জন্য ২৬ সে জানুয়ারিকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। কারণ ২৬ শে জানুয়ারি ১৯২৯ এর পূর্ণ স্বরাজ দিবস পালনের পর থেকে দীর্ঘদিন 26 শে জানুয়ারি ভারতবর্ষের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করা হতো। 


২৬ সে জানুয়ারির তাৎপর্য ,

২৬ সে জানুয়ারির এত আনন্দের কারণ হল- 

১| ব্রিটিশ আইন থেকে মুক্তি।  ভারতবর্ষ স্বাধীন হলেও ভারতবর্ষে ইংরেজদের আইন চলছিল। কারণ ভারতবর্ষের নিজস্ব সংবিধান ছিল না। তাই এই সংবিধান কার্যকর করার অর্থ হল ব্রিটিশ শাসনের আইন থেকে মুক্তি।

২| ১৯৪৭ এর পর থেকে এতদিন (১৯৫০) যেটা চলছিল সেটি একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরপর সবাই  ভোটে নির্বাচনের মাধ্যমে এটি পূর্ণকালীন নির্বাচিত সরকার গঠন করতে পারবে। 

৩| ব্রিটিশরা ভয় দেখাতো তারা চলে যাওয়ার পর দেশে অরাজকতার সৃষ্টি হবে। ভারতীয়রা ঠিকমতো দেশ চালাতে পারবেনা। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে না। সংবিধান তৈরীর মাধ্যমে ভারতবর্ষ ইংরেজদের তার যোগ্য জবাব দিয়েছিলো।

২৬ শে জানুয়ারি গণতন্ত্র দিবস হলেও এটা এক অর্থে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা দিবস। অরাজকতা থেকে স্বাধীনতা, একচেটিয়া শাসনের থেকে স্বাধীনতা। সেদিন মানুষ স্বেচ্ছায় স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে পারবে, নিজে নিজের পছন্দের সরকার গঠন করতে পারবে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিচার পাবে... সবাই স্বপ্ন দেখেছিল। এসব স্বপ্নের মূলে ছিলাম একটিই জিনিস, সেটি হলো ভারতবর্ষের সংবিধান, যা ঘোষণা করেছিল, প্রত্যেক ভারতবাষী,

"সামাজিক, আর্থনীতিক এবং রাজনীতিক , ন্যায়বিচার, চিন্তার, অভিব্যক্তির বিশ্বাসের, ধর্মের ও উপাসনার স্বাধীনতা, প্রতিষ্ঠা ও সুযোগের সমতা নিশ্চিতভাবে লাভ করবে।"

সেদিনের এই ঘোষনা মানুষের মনে একটা নতুন আনন্দের আবির্ভাব ঘটিয়েছিল। ২৬ শে জানুয়ারি মূলত সংবিধান কার্যকর করার দিবস। কিন্তু যে কোনও কারণেই হোক, বর্তমানকালের সংবিধানের প্রসঙ্গ গণতন্ত্র দিবসে উঠে আসে না। অধিকাংশ মানুষই জানেন না ২৬ শে জানুয়ারি কি হয়েছিল। তারা শুধুমাত্র জানেন ২৬ শে জানুয়ারি হল গণতন্ত্র দিবস। গণতন্ত্র দিবস কেন পালন করা হয়, এর তাৎপর্য কি, সেসব তাঁদের জানা নেই।

এতে তাদের খুব একটা দোষ নেই। যদি না ২৬ শে জানুয়ারি এবং ১৫ আগস্ট এর মধ্যে পার্থক্য না করা হয় তারাই বা পার্থক্য করবে কিভাবে? ১৫ আগস্টের স্বাধীনতা দিবসকে ২৬ জানুয়ারিকে গণতন্ত্র দিবসকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করার জন্য ২৬ জানুয়ারির সাথে সংবিধানের প্রসঙ্গটিকে বিশেষভাবে যোগ করা হোক। 


Popular posts from this blog

Interesting Facts about Bhagwan Shri Ram

Bhagwan Shri Ram is the Seventh Avatar among the Dasavatara of Shri Hari Vishnu Bhagwan Shri Ram is Considered as the oldest Devta Worshipped in Human Form as he was born in Treta Yuga Bhagwan Shri Ram is descendant of Surya Devta as he was born in the Ikshvaku dynasty who was founded by Raja Ikshvaku, Son of Surya Devta. This is why Shri Ram is also called Suryavanshi After defeating the Ravana, As Per Religious Beliefs Shri Ram ruled his kingdom Ayodhya for 11,000 years of complete peace and prosperity As per Epic Mahabharat that once Bhagwan Shiva said that reciting the name of Ram thrice gives the grace equal to pronouncing the names of thousand deities Vishnu Sahasranama lists a thousand names of Bhagwan Vishnu. According to this list, "Rama" is the 394th name of Bhagwan Vishnu Hanuman once fought with Shri Ram to protect Kashi King Yayati, To help the Yayati in the battle, Hanumanji started reciting...