Skip to main content

নদীয়ার স্বাধীনতার কাহিনী

কোন দেশের স্বাধীনতা দিবস বলতে একটিই দিন বোঝায়। কিন্তু ভারতবর্ষের ক্ষেত্রে ঘটেছে ব্যতিক্রম। ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট সারা বিশ্ব যখন নিদ্রামগ্ন তখন ভারতবর্ষের পূর্বপ্রান্তের কয়েকশত ব্যক্তির প্রাণশক্তি ও স্বাধীনতা জাগ্রত হন ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট নয়, ১৯৪৭ সালের ১৮ই আগস্ট।


সমগ্র ভারতবর্ষে যখন ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। তখন কেন ১৮ই আগস্ট নদীয়ার স্বাধীনতা দিবস? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে প্রবীন নদীয়াবাসীদের মনের কোণে লুকিয়ে থাকা চাপা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ আজও ঘটে। ভারত ভাগের পর স্যার সিরিল র‍্যাডক্লিফের তৈরি ম্যাপের গণ্ডগোলের জন্যই ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট ভারতবাসীর কাছে অন্যতম স্মরণীয় দিন হয়েও নদীয়াবাসীর কাছে ছিল চরম দুঃখের ও বেদনার দিন।


স্বাধীনতার প্রাক্কালে অবিভক্ত নদীয়ার মহুকুমা ছিল পাঁচটি; কৃষ্ণনগর সদর, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও রানাঘাট। র‍্যাডক্লিফের ম্যাপে ভাগীরথীর পশ্চিমপাড়ে নবদ্বীপ বাদে বাকি এলাকা পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। নবদ্বীপকে নদীয়া জেলা বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ১৯৪৭ সালের ১২ই আগস্ট রেডিওতে ঘোষণা করা হয়, ভারতবর্ষকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা হবে, এবং নদীয়া জেলাকে পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে পড়ছে বলে জানানো হয়।


নদীয়া জেলা পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্তির কথা শুনে জেলার বেশিরভাগ ঘরে কান্নার রোল পরে গিয়েছিল। সে সময় নদীয়ার রাণী ছিলেন জ্যোতির্ময়ী দেবী। তিনিও যথেষ্ট আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এর পিছনেও আছে রাজনৈতিক কারণ।


১৯৪৬ সাল থেকেই নদীয়ার সাম্প্রদায়িক বিরোধ চাপা পড়া আগুনের মতো ধিকধিক করে জ্বলছিল। মুসলিমদের আগাম হুমকি ছিল “লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান"। ১৪ই আগস্টের পর তারা জোর করে রাজবাড়ি দখল নেবে। কৃষ্ণনগরের রাস্তায় রাস্তায় এ ধরনের আওয়াজও তোলেন তাঁরা। সে সময় কৃষ্ণনগর মানে আমিনবাজার থেকে রাজবাড়ি, চকেরপাড়া হয়ে আনন্দময়ীতলা, পুরসভা থেকে গোবিন্দ সড়ক হয়ে জলঙ্গি নদীর ধার, অর্থাৎ গোয়াড়ী পর্যন্ত। মুল্লিম লিগের নেতারাই পতাকা উত্তোলনের ব্যবস্থা করেন। মুসলিম লিগের পতাকাই হয় পাকিস্তানের পতাকা। কৃষ্ণনগর পাবলিক লাইব্রেরির মাঠেই পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলিত হয়। পাকিস্তানের জয়ধ্বনি দেওয়া হয়।


জানা যায়, নদীয়া জেলা পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় মুসলিমরা পোস্টঅফিস মোড়, গোবিন্দ সড়ক (বর্তমান হাইস্ট্রিট), আনন্দময়ী তলা, আমিনবাজার, চকেরপাড়া, কোর্ট রোডে আওয়াজ তোলেন 'পাকিস্তান জিন্দাবাদ'। হিন্দুরা তখন আতঙ্কগ্রস্ত। মুসলমানরা হুমকি দিচ্ছেন কে কোন বাড়ি দখল নেবে! রানী জ্যোতির্ময়ী দেবীর আশঙ্কা ছিল, নদীয়া পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে পড়লে তাঁর জমিদারী থাকবে না ।


এই সময় রানী জ্যোতির্ময়ী দেবীর নেতৃত্বে, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, কাবু লাহিড়ী, প্রমথনাথ শুকুল, সাবিত্রী দেবী প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা আন্দোলন সংগঠিত করতে থাকেন। এই খবর বিদ্যুৎগতিতে ব্রিটিশ সরকারের কাছে পৌঁছে যায়। ব্রিটিশ সরকারও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং চিন্তা করেন যদি এই অজুহাতে আবার দ্বিখণ্ডিত ভারত এক হয়ে যায়, তবে ব্রিটিশের কাছে তা হবে অতি ভয়ঙ্কর দিন। এই সময় আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলে স্যার র‍্যাডক্লিফকে ডেকে পাঠান এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেন। স্যার র‍্যাডক্লিফ দেখলেন, ভুল তাঁরই। নদীয়ার ভারতে থাকার কথা। চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর মহাকুমাকে নদীয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কৃষ্ণনগর ও রানাঘাট মহাকুমাকে নিয়ে নদীয়ার নতুন সীমানা নির্ধারিত হয়। শিকারপুর থেকে পলাশী।


১৮ই আগস্ট রেডিওতে ঘোষণা করা হয় কৃষ্ণনগর ও রানাঘাট মহুকুমা নিয়ে গঠিত, নবগঠিত ভারত ভূখণ্ডেই থাকছে। প্রবীন সাহিত্যিক সুধীর চক্রবর্তী বলেন, "সে সময় আমি সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। ১৮ই আগস্ট খাওয়া দাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়েছি। হঠাত মাঝরাতে চিৎকার চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙ্গে যায়। "


জানলা দিয়ে দেখি লরি ভরতি করে, পায়ে হেঁটে লোকজন আনন্দে রাস্তায় নেমে পড়েছেন, মুসলিমদের পাল্টা হুমকি দিয়ে নিজেদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলেন। তিনদিন পাকিস্তানে থাকার পরে পাবলিক লাইব্রেরীর মাঠে ওঠে চরকা চিহ্নযুক্ত তেরাঙ্গা জাতীয় পতাকা। ফলে র‍্যাডক্লিফের সীমানা নির্দেশক মানচিত্রের ভুলে কৃষ্ণনগর স্বাধীন হয় ১৮ই আগস্ট। তাই ১৮ই আগস্ট নদীয়ার স্বাধীনতা দিবস বা ভারতভুক্তি দিবস।


কিন্তু ঘটনাপ্রবাহ এরকম ছিল না। কেউ ইতিহাসকে স্মরণ করার ঝামেলা গ্রহন করেননি। খুব সাম্প্রতিক কালে পর্যন্ত ভারতের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা ২৩শে জানুয়ারী নেতাজীর জন্মদিন, ২৬শে জানুয়ারী প্রজাতন্ত্র দিবস ও ১৫ই আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবস ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে পতাকা উত্তোলনের বিধি অনুযায়ী নিষিদ্ধ থাকায় আমি একক প্রচেষ্টায় নদীয়া জেলার শিবনিবাস গ্রামে যা কলকাতা থেকে ১২০ কিমি দূরবর্তী, ১৮ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালন করার ব্যবস্থা করি। কারণ, আমি আমার দাদু, প্রমথনাথ শুকুলের কাছ থেকে গল্প শুনেছিলাম। আমার দাদু ছিলেন একজন স্বাধীনতায় অংশগ্রহনকারী প্রত্যক্ষ সৈনিক। তিনিই আমায় ঐ তিনদিনের ইতিহাস স্মৃতিচারণ করেন। দাদুর কাছের কাহিনী থেকে আরও জানতে পারি নদীয়া জেলার ৫টি মহাকুমা, মালদা জেলার কিছু অংশ, বনগাঁ ও বালুরঘাটের কিছু অংশ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই জায়গার বেশীর ভাগই ছিল হিন্দু প্রধান। সুতরাং এগুলি ভারতবর্ষের অংশ হওয়া উচিত ছিল। এই সমস্ত অঞ্চলের হিন্দুরা প্রতিবাদ শুরু করেন এবং কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ জাতীয় স্তরে তাদের ব্যাপারটি তুলে ধরেন। র‍্যাডক্লিফ কমিশনকৃত ভুল সংশোধিত হওয়ার পর এই স্থানগুলি ভারতের অংশীভূত হয়।


দাদুর কাছে কাহিনী শুনে শৈশব কাল থেকেই আমি অবাক হয়েছি এটা ভেবেই যে কেন স্বাধীনতা দিবস ১৫ই আগস্ট পালিত হয়, যখন আমার জন্মস্থান ভারতের অংশীভূত হয় ১৮ই আগস্ট! ১৫ই আগস্ট দাদু-দিদার কাছে আনন্দের বা সুখের দিন ছিল না, কারণ ১৯৪৭ সালের ঐ দিন ছিল শোক-সন্তপ্ত।


ঐতিহাসিক অনুসন্ধান শুরু তখন থেকে। ১৯৪৭-এর সঠিক ঘটনাপ্রাপ্তির জন্য তথ্যাবলী অনুসন্ধান শুরু করি। বহু মানুষের (যাদের মধ্যে ঐতিহাসিকেরাও ছিলেন) কাছে যাই এবং তাদের থেকে এই ঘটনাবহুল দিনের, বিশেষ করে ১২ই আগস্ট থেকে ১৮ই আগস্ট পর্যন্ত দিনগুলির বহুল বিবরন পাই। কিন্তু দুঃখের বিষয়, উক্ত ঘটনার কোন লিখিত নথিপত্র পাওয়া যায়নি।


বিভিন্ন গ্রন্থাগারগুলিতে অনুসন্ধান শুরু করি এবং শেষ পর্যন্ত ১৯৪৭ সালের কলকাতার মহাকরণের তথ্যদপ্তরে গেলাম। প্রায় দুইমাস অনুসন্ধানের পর হঠাত পেয়ে গেলাম লাল রঙের চর্মাবৃত শক্ত বাঁধাই করা একটি বাংলা মুদ্রিত পুস্তক 'নদীয়ার স্বাধীনতা' যাতে পুঙ্খনাপুঙ্খ ভাবে ঐ দিনগুলির ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। অবশেষে পাওয়া গেল প্রাথমিক দলিল, যাতে বলা হয়েছে নদীয়া ও বাংলার অন্যান্য কিছু স্থানে ভারতের অন্তর্ভুক্তি হয় ১৯৪৭ সালের ১৮ই আগস্ট।


কিছু সরকারী কর্মীকে যুক্তি দিয়ে বোঝানো গেল যে নদীয়া জেলায় ১৮ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হওয়া উচিত। সেই মোতাবেক পরিকল্পনা করে ১৯৯১ সালের ১৮ই আগস্ট ভারতের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা শিবনিবাসে উত্তোলন করা হয় এবং উত্তোলন করেন নদীয়া জেলার বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী সাবিত্রী দেবী। কিন্তু অনেকেই পতাকা বিধি লঙ্ঘনের জন্য আমার গ্রেফতার হতে পারে এই আশঙ্কায় সাবধান করলেন। কিন্তু কোন কথায় কর্ণপাত না করেই উদযাপনের ব্যবস্থা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হল। আমার যুক্তিগ্রাহ্য উৎসাহকে সম্মান করে শেষ পর্যন্ত সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিলেন ভারত সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। তাদের সহযোগিতাকে অবলম্বন করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পি ভি নরসিমা রাও-এর কাছে পৌঁছানো গিয়েছিল এবং তাঁকে বুঝিয়ে দিনটি পালনের অনুমতি আদায় করা গিয়েছিল। তৎকালীন ভারত সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের নদীয়া জেলার আধিকারিক শ্রী সুভাষ সরকার মহাশয়ের আন্তরিক সহযোগিতায় ও আমার প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে পাওয়া গেল নদীয়ার স্বাধীনতা দিবস পালন করার অধিকার। প্রশাসনের তরফ থেকে এই উদ্যোগ বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়া হলেও গুরুত্বপূর্ণ নথি দেখানোয় শেষ পর্যন্ত প্রশাসন পিছু হঠতে বাধ্য হয় এবং শিবনিবাস মন্দির সম্মুখে জাতীয় পতাকা উত্তোলন হয় ।


এরপর থেকে এই স্বাধীনতার দিনটির ব্যাপ্তি পেতে থাকে রাণাঘাট, মালদা, বনগাঁ এবং বালুরঘাটে। ১৮ই আগস্ট দিনটিকে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে উদযাপিত করা শুরু হয়। বর্তমানে হাজার হাজার মানুষ শিবনিবাস মন্দির প্রাঙ্গনে সমবেত হয় এইদিনে স্মৃতিচারন করতে। বর্তমানে এই অনুষ্ঠান ব্যাপ্তি লাভ করেছে। সমস্ত শ্রেনীর দৈনিক পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার দৌলতে এই দিনটি সবার কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে।


আজ নদীয়াবাসীর কাছে ১৫ই আগস্ট যেমন স্বাধীনতা দিবস পালনের একটি গণতান্ত্রিক আবেগ, ঠিক তেমনই ১৮ই আগস্ট তারিখটিও ঐতিহাসিক আবেগের কারণে সমান মর্যাদায় পালিত হয়।


Sorce: 'ইতিহাসের অন্তরালে নদীয়া' 

Popular posts from this blog

ছেলেরা কেন দিনদিন 'বৌদিবাজ' হয়ে উঠছে?

সমাজটা খুবই খারাপ দিকে যাচ্ছে। ছেলেরা এখন বৌদিবাজ হয়ে উঠেছে! তারা একবার করে প্রেমে ছেঁকা খাওয়ার পর আর অন্য কোনও প্রেমিকা জোটায় না, বৌদিদের সাথে গল্প করে। কারণ - ১| ধোঁকা খায় না ২| হৃদয়ে আঘাত লাগে না ৩| Break up 💔 বলে কিছু থাকে না ৪| অনেকটা Stunt বাজীর মতো, মাথায় কোনো চাপ নেয়ার দরকার পরে না  আর একটা বিষয় হলো এখন বেশিরভাগ ছেলে পড়াশোনা দিকে ব্যস্ত। তাই তাদের হাতেও বেশি সময় থাকে না। আবার বৌদিদের হাতেও বেশি সময় সীমিত। তাই একটা Understanding বজায় থাকে। আরেকটা জিনিস হল নতুন প্রেমিকারা যেরকম নানারকম চাপ দেয়। বৌদীরা অনেকটা বোঝে ব্যাপারগুলো। যেমন- ফাঁকা পকেট, কম সময়, Relation Public না করা... এসব জিনিস। সেই কারণে তারা এতটা চাপ দেয় না। অল্পবয়সী মেয়ের একটু জেদি হয়। তাই তারা অকারণেই ঝগড়া করে যা এমনিতেই চাকরি আর ভবিষ্যতের চিন্তায় চিন্তিত ছেলেদের ভালো লাগে না। তাই তারা বৌদিদের দিকেই ঝোঁকে। বিয়ে তো অবশ্য ভালো কোনো মেয়ে দেখেই করবে, তার আগের সময়টা অন্য দিকে দেয় - বৌদিদের সাথে আড্ডা মারে। বৌদিদের সাথে কথা বলে আর কিছু হোক বা না হোক মানসিক শান্তি আছে। আমার বৌদিবাজ বন্ধুদের জন্য 💖

বলি প্রসঙ্গে আমার মতামত

ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এর চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better, তাহলে বলতে হয় আপনার জীবন আর মৃত্যুর sence নেই। কেন ছাগলের মৃত্যুটাই মৃত্যু? চালকুমড়ো বা আঁখের মৃত্যুটা মৃত্যু নয় কেন? আপনার যদি জীবন আর মৃত্যুর সম্বন্ধ প্রকৃত জ্ঞান থাকতো তাহলে তিনটি ক্ষেত্রেই আপনি সমান দুঃখ পেতেন। কিন্ত আপনার মনে হয় ছাগল বলি দেওয়ার চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better।  আপনার এই প্রকৃতি দেখে বলতে হয়, জীবন বাঁচানো আপনার উদ্দেশ্য নয়, বরং আপনি রক্তকে ভয় পান, অস্ত্র কে ভয় পান। আপনার বাস্তবিক বোধ থাকলে আপনি অস্ত্রের আঘাতে চালকুমড়ো বা আঁখের এবং ছাগ তিনটি বলির ই বিরোধীতা করতেন। কারণ তিনটির প্রকৃতিই একই রকম, এই তিনটে থেকেই অনেক নতুন প্রাণের জন্ম হতে পারতো। তাই তিনটির হত্যাই একই রকম ক্ষতি করে। কিন্ত, শুধুমাত্র ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এটি মানুষের হিংস্র পাশবিক প্রবৃত্তি। তাহলে প্রশ্ন করতে হয়, আমরা কি সত্যিই অহিংস?  আমাদের মায়েরা প্রতিদিন জ্যান্ত মাছগুলো দুহাতে ধরে বঁটিতে ঘচাং করে একবারে জ্যান্তই কেটে ফেলেন। শহরের মাছ-মাংস বিক্রেতারাও একইভাবে কাটেন। তখন কি সেটা নৃশংসতা নয়? কেন আমরা ব

রাষ্ট্রভক্ত বীরাঙ্গনা হীরা দে

 🌹💥🕉️ দুর্নীতিবাজদের সাথে কেমন আচরণ করা উচিত তার উদাহরণ আমাদের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা থেকে জানা যায়। এই শাস্তিও কোন রাজা বা সরকার দিয়েছিল না দিয়ে ছিল শুধুমাত্র তার পরিবারের সদস্যরা। 💢 1311 খ্রিস্টাব্দে, আলাউদ্দিন খিলজিকে জলোর দুর্গের গোপন কথা বলার জন্য পুরস্কার হিসাবে পাওয়া অর্থ নিয়ে ভিকা দাহিয়া আনন্দের সাথে বাড়ি ফিরছিলেন।এত টাকা এই প্রথম দেখল। হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিল যুদ্ধ শেষ হলে এই টাকা দিয়ে একটা বিলাসবহুল প্রাসাদ তৈরি করে আরামে বসবাস করবে।প্রাসাদের সামনে ঘোড়া বাঁধা থাকবে, চাকর থাকবে।  তার স্ত্রী হীরা স্বর্ণ ও রৌপ্য গয়না দ্বারা সারা শরীর ঢাকা থাকবে। আলাউদ্দিন কর্তৃক জালোর কেল্লায় নিযুক্ত সুবেদারের দরবারে তিনি বড় মর্যাদার বিবেচিত হবেন।বাড়িতে পৌঁছে বিড়বিড় করে হেসে টাকার বান্ডিলটা বাড়িয়ে দিলেন স্ত্রী হীরা দে'র হাতে।  🌹স্বামীর হাতে এত টাকা এবং স্বামীর মুখ ও অভিব্যক্তি দেখে হীরাদে আলাউদ্দিন খিলজির সৈন্যদের দিল্লি ফিরে যাওয়ার কারণ বুঝতে পেরে জালোরের যুদ্ধে হতাশ হয়ে হঠাৎ জালোরের দিকে ফিরে যায়। হীরা দে বুঝতে পেরেছিলেন যে তার স্বামী ভিকা দাহিয়া তার জন্মভূমি জ