Skip to main content

সংস্কৃতি

আসামের মেয়েরা ও বিহু উৎসব |

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল প্রাকৃতিক উপাদান ও সৌন্দর্যে ভরপুর। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি মূলতঃ মহিলা প্রধান। উত্তর-পূর্বের কথা উঠলেই প্রথমে যে রাজ্যের নাম মনে আসে তা হল আসাম। পাহাড় ঘেরা অতি মনোরম একটি রাজ্য। আসামকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয় লোয়ার আসাম আর আপার আসাম। আসামের রাজধানী দিসপুর লোয়ার আসামের মধ্যেই পড়ে। এখানে মহিলাদের সম্মান দেওয়া হয়। স্কুলে ভর্তির সময়ে মায়ের নামটাই সবার আগে প্রয়োজন। বাবার নাম না হলেও চলে যায়।

আসামের মেয়েদের জীবনযাত্রাও বৈচিত্রপূর্ণ। এখানে কন্যাসন্তান ভূমিষ্ঠ হলে লক্ষ্মীর আগমন মানা হয়। সেই আনন্দে বাড়ির লাগোয়া জমিতে বিভিন্ন রকমের গাছ লাগানো হয় যেমন – আমলা, রিঠা , শিকাকাই ইত্যাদি। এই ধরণের গাছ বাড়িতে লাগানোর দুটি উদ্দেশ্য আছে। প্রথমত, এই গাছগুলির ফল ইত্যাদি চুল এবং স্কিনের পক্ষে যথেষ্ট উপকারী যা সদ্যজাত কন্যাকে পরবর্তীকালে সুন্দরী হতে সাহায্য করবে। দ্বিতীয়ত , এই গাছগুলির কাঠ দিয়ে ফার্নিচার তৈরী করে মেয়েকে বিয়ের সময় গিফট দেওয়া যাবে। প্রসঙ্গত বলে রাখি এখানে পণপ্রথার প্রচলন নেই এমনকি মেয়ের বাবা এক বস্ত্রে মেয়েকে বিদায় দেবেন। কনের ব্যবহারের যা যা সামগ্রী দরকার এবং গয়না, আসবাবপত্র সব ছেলের বাড়ি থেকেই দেওয়া হয়। যদি ইচ্ছে হয় কনের বাবা খুশী হয়ে কিছু দিতে পারেন। তাই মেয়ের বাবাকে কোনোমতেই কন্যাদায়গ্রস্থ পিতা বলা যায় না। বিয়ে ঠিক হওয়ার ক্ষেত্রে মেয়ের মতামত অগ্রাধিকার পায়। পাত্র পছন্দ না হলে পাত্রীর পূর্ণ স্বাধীনতা আছে পাত্রকে রিজেক্ট করে দেবার। বিয়ের ক্ষেত্রে পাত্রীর মতামতই শেষ কথা ।

শ্বশুরবাড়িতেও বৌমা যথেষ্ট আদর ও স্বাধীনতা পেয়ে থাকেন। শাশুড়ি-মায়েরা কখনো বৌমার ওপর ছড়ি ঘোরান না বা ‘সাসগিরি’ ফলাবার চেষ্টা করেন না। শাশুড়ি-বৌমা সংসারের দায়িত্ব সমান ভাগে ভাগ করে নিয়ে সুন্দরভাবে সংসার চালান।

মেয়েরা নিজেদের কাপড় নিজেরাই তাঁতে বোনেন। স্বামী যদি বৌকে মারধর করেন তাহলে বৌয়েরও পুরো অধিকার আছে স্বামীকে ধরে পেটানোর। আসামের মেয়েরা চুপ করে পড়ে পড়ে মার খেতে জানে না।

মেয়ে প্রথম ঋতুমতী হলে কলাগাছ লাগিয়ে আত্মীয়-স্বজন ডেকে বিয়ের মত অনুষ্ঠান করা হয়। ভালো জ্যোতিষীকে ডেকে ঋতুমতী হওয়ার দিনক্ষণ গণনা করা হয়। তারপর জ্যোতিষীর দেওয়া বিধান অনুযায়ী একসপ্তাহ বা একমাস ঋতুমতী মেয়েকে ব্রত পালন করতে হয়। এইসময় চারদিন ঋতুমতী ঘরের বাইরে পা রাখতে পারে না। চার দিন বাদে স্নান করে দিনে একবার সূর্য ডোবার আগে চাল,ডাল, সব্জি সব একসাথে সেদ্ধ করে ( অনেকটা খিচুড়ির মত) পদ্মপাতায় ঋতুমতীকে খাওয়ানো হয়। পুরো ব্রতকালে এমনটাই চলে। পদ্মপাতায় খাওয়ার একটা বিজ্ঞানসম্মত যুক্তি আছে। পদ্মপাতার ওপরে থাকা গারনিয়ার খাবারের সাথে মিশে শরীরে গিয়ে স্কিনের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়।

এই অনুষ্ঠানে আরেকটা মজার বিষয় হল দিদিমা ঠাকুমারা কোলে বাচ্চা নিয়ে নাচ গান করেন। এর মানে মেয়েকে বোঝানো হয় ‘ তুমি মা হওয়ার যোগ্য হলে।‘  এই পুরো অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য হল মেয়েদের ঋতুমতী হওয়া খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। এতে লজ্জার কিছু নেই। আত্মীয়-স্বজন , পাড়াপ্রতিবেশী এই অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত থেকে আনন্দ করেন , ভোজ খান।

বিবাহিত মেয়েরা ঋতুমতী হলে চারদিন রান্নাঘরে ঢোকেন না। এইসময় স্বামীরা রান্না করে স্ত্রীকে খাবার বেড়ে দেন।

আসামের প্রধান উৎসব বিহু – বিহু আসামের প্রধান উৎসব। খুব ধুমধাম করে এখানে বিহু উৎসব পালিত হয়।

বোহাগ বিহু- আমাদের বাংলায় নববর্ষের সময়টা আসামে বোহাগ বিহু পালিত হয়।মোটামুটি একসপ্তাহ ধরে চলে এই উৎসব। প্রথমদিন সকালে গরুকে বেগুন,লাউ, কাঁচা হলুদ ও কালো ডাল লেপন করে স্নান করানো হয়। গরুকে স্নান করানোর সময় একটা গান গাওয়ার রীতি আছে- “ লাউ খা, ব্যাঙ্গনা খা, বসরে বসরে বাড়হি যা।“ অর্থাৎ কিনা “ লাউ খেয়ে, বেগুন খেয়ে বছরে বছরে বেড়ে যাও।“ স্নান করানো হয়ে গেলে গরুর গলায় নতুন দড়ি পরিয়ে পুজো করা হয়। বাড়ির সবাইও কালো ডাল ও কাঁচা হলুদের লেপন দিয়ে স্নান করে। এই লেপন ত্বকের  ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়। মেয়েরা কালো ডালের লেপন দিয়ে চুল ধোয়। এরফলে চুল রেশমের মত কোমল আর উজ্জ্বল হয়। এইদিনে মেয়েদের মেহেন্দী লাগানোর রীতিও রয়েছে। অসমিয়ারা বিশ্বাস করেন হাতে মেহেন্দী লাগালে নখের সুরক্ষা হয়।

পুজো মিটে গেলে জলপানে দই, গুড় , চিঁড়ে ,মুড়ি ইত্যাদি খাওয়া হয়। বিহু উৎসবে অসমিয়ারা বিভিন্ন ধরণের পিঠে বানিয়ে থাকেন যেমন- তিল পিঠা , কেটলি বা ভাপা পিঠা , ঘিলা পিঠা ,সুঙ্গা পিঠা,  তিলের নাড়ু ,নারকেলের নাড়ু ইত্যাদি।

বোহাগ বিহুর দ্বিতীয় দিনকে ওয়েলকামিং ডে বলা হয়। এদিন গাঁয়ের ছোট ছোট বাচ্চারা মেখলা চাদর পরে নাচ, গান করে। উপহারস্বরূপ বাচ্চাদের রুমাল, গামছা দিলে ওরা বাড়ির সদস্যদের আশীর্বাদ করে চলে যায়। একসপ্তাহ ধরে আত্মীয়-স্বজনদের যাতায়াত লেগে থাকে। কোনো ভালো কাজের জন্য যেমন মন্দির তৈরি , রাস্তা তৈরি ইত্যাদির জন্য চাঁদাও এইসময় দেওয়া হয়। বিহুর দ্বিতীয় দিনে কোনো একটি নির্জন জায়গা যেখানে লোকের যাতায়াত কম  যেমন বড় গাছের আড়ালে মেয়েরা দল বেঁধে নাচ করে। ঢোল , পেপা,গোঁগোঁনা, বাঁশি, তাল , টকা প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্র বিহু নাচে ব্যবহার করা হয়। উপহার দেওয়া নেওয়ার পালা পুরো একমাস ধরে চলতে থাকে।

কাতি বা কঙ্গালী বিহু—কার্ত্তিক মাসের প্রথমদিন থেকে শুরু হয় এই বিহু। এইসময় ধান পাকে, চাষ কম হয় , ঘরে মজুত চাষের ধান, শস্য এইসময় প্রায় ফুরিয়ে আসে। সেইজন্য এই বিহুকে বলা হয় কঙ্গালী বিহু বা গরীবের বিহু। এই বিহুতে তুলসী পুজা করা হয়। গাঁয়ের সবার ঘরে তুলসীমঞ্চকে সুন্দর করে সাজানো হয়। তুলসীমঞ্চ সাজানোর একটা অলিখিত প্রতিযোগিতা চলে। সন্ধ্যেবেলায় তুলসী পুজো করে ধানক্ষেতে প্রদীপ জ্বালানো হয়। পুজো পর্ব মিটে গেলে হাঁসের মাংস, কুমড়োর তরকারি সহযোগে রাতে খাওয়াদাওয়া হয়। অসমীয়ারা বিশ্বাস করেন এইসময় কুমড়ো আর হাঁসের মধ্যে ঘি আসে যা শরীরের পক্ষে খুব উপযোগী । সন্ধ্যেবেলা ছোট ছোট বাচ্চারা এসে তুলসী মঞ্চে পুজো করে গান গায়—

“তলো ক্ষীর তলে তলে মৃগপহুসরে

রামকৃষ্ণ গখায়ে (ভগবান)হরধণু মারে।“ 

কার্ত্তিক মাসের প্রথমদিন থেকে দীপাবলী অবধি রোজ সন্ধ্যেবেলায় প্রদীপ জ্বালানো হয়। সবুজ মুগ, আদা, নারকেল, ছোলা সহযোগে তৈরি প্রসাদ বাচ্চাদের দেওয়া হয় আর সাথে বিভিন্ন রকমের পিঠেও বানানো হয়।

মাঘ বিহু বা ভুগলী বিহু—মাঘ মাসের প্রথম দিন থেকে শুরু হয় এই বিহু উৎসব। এইসময় ধান পেকে চাল হয়। নতুন চাল ঘরে তুলে ‘নখোয়া ‘ অর্থাৎ ভগবানকে প্রথম সেই চাল নিবেদন করা হয়। তারপর কোনো এক আত্মীয়- কুটুম্বকে নেমন্তন্ন করে তার সাথে নতুন চালের ভাত, মাংস সহযোগে ভোজ সারা হয়। উৎসবের প্রথম দিন সবাই মিলে একসাথে খাওয়ার রীতি।

মকর সংক্রান্তির দিন ধানের খড় দিয়ে ডিজাইনার ঘর করা হয়। এই ঘরকে ‘ভেলা ঘর’ বলে। রাতে এই ‘ভেলা ঘর’ জ্বালানো হয়। ‘ভেলা ঘর’ বানানো থেকে জ্বালানো অবধি কাজ সমাধা করার জন্য বিভিন্ন দল গঠন করা হয়। একেকটা দল একেকরকম ডিজাইনের ‘ভেলা ঘর’ বানিয়ে জ্বালায়। তারপর জমিয়ে ভোজ খাওয়া হয়। রাতভর চলে নাচ, গান, মস্তি। এই উৎসবের আরেকটা রীতি হল লোকের ঘর থেকে জিনিস চুরি করা, শুধুমাত্র আনন্দের জন্য।

সকাল সাড়ে তিনটে -চারটে  অর্থাৎ সূর্য ওঠার সময় কাঠ দিয়ে বড় ঘর জাতীয় কিছু বানানো হয়। এটাকে ‘মেজি’ বলে। ‘মেজি’ জ্বালিয়ে স্নান করে শুদ্ধ হয়ে নামঘর(মন্দির) থেকে এসে সবাই একসাথে চা খায়। এইদিন ১০১ শাক ও লাল পিঁপড়ের ডিম রান্না করে খাওয়া হয়।

রাস উৎসবও আসামে খুব ধুমধাম করে পালিত হয়। তাই রাস উৎসব নিয়ে দু একটা কথা না বললেই নয়। লোয়ার আসামে মূর্তি সাজিয়ে, মেলা বসে রাস উৎসব পালন করা হয়, ঠিক পশ্চিম বাংলার মত।

আপার আসামে রাস পূর্ণিমার দিন টিন এজ ছেলেমেয়েদের দ্বারা শ্রীকৃষ্ণের পালা অনুষ্ঠিত হয়। পুরো আপার আসামেই বিভিন্ন জায়গায় এরকম স্টেজ শো হতে দেখা যায়। আসামের মাজুলীতে সবথেকে বড় রাসের মেলা হয়। দেশ বিদেশ থেকে পর্যটকরা রাসের মেলা দেখতে ভিড় জমান এখানে।

আসামের প্রাকৃতিক পরিবেশ যেমন অত্যন্ত মনোরম তেমনি এখানকার রীতি রেওয়াজও খুব ভালো। জানার কোনো শেষ নেই। তিন বছর আসামে থেকে যতটুকু জানতে পেরেছি তাই ভাগ করে নিলাম সবার সাথে। তবুও জানার বাকি রয়ে গেল অনেক কিছু।

--সমাপ্ত--


বিহু হলমী আসামীম রাজ্যের গণগাঁও জেলার অসমিয়া পূর্ণের একটি সমষ্টি- রোঙ্গালি বাহাগ বিহু এপ্রিল মাসে পালন করা হয়, কোলি বাটি বিহু অক্টোবরে ভোগালি বা মাঘ বিহু জানুয়ারিতে পালন করা হয়। 



ভারতের সর্বাধিক বিখ্যাত উত্সবগুলি আপনাকে অবশ্যই অনুভব করতে হবে

Popular posts from this blog

 বর্তমানে রাত্রীকালীন বিবাহের প্রাসঙ্গিকতা :- ____________________________________ মুসলমান অত্যাচারের কারণে 'রাত্রি কালীন গোপন বিবাহ' রীতির প্রচলন। এসব সত্য জানার সত্ত্বেও এখনও এই রীতি বয়ে নিয়ে হচ্ছে। তার সম্ভাব্য কারণ কি কি হতে পারে? ১| দিনের বেলা সকলে ব্যস্ত থাকে নানা কাজে। কেও স্কুলে, কেও অফিসে কেও বা অন্য কোনো কাজে লিপ্ত থাকেন। তাই সেই কাজের মাঝে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা সম্ভব হয় না। তাই সন্ধ্যার লগ্নে বিয়ে হলে মানুষ দুপুরে কাজের শেষে বিশ্রাম নিয়ে সন্ধ্যেয় সেজেগুজে এসে বিয়ে দেখতে পারে। রাত্রে প্রায় সকলেই বাড়িতে থাকেন। তাই কোথাও নিমন্ত্রণ রক্ষা করা বিষয়টা অনেকটাই নির্ঝঞ্ঝাট মনে হয়। ২| এখন বিবাহ একটি পারিবারিক উৎসব নয়। বরং বিবাহ আত্ম অহংকার, ক্ষমতার প্রদর্শনীতে পরিণত হয়েছে। রাতে জমকালো Light Show দেখানো যায়। বাজীর প্রদর্শনী করা যায়। এর সাথে আরও যত রকমভাবে নিজের ক্ষমতার প্রদর্শন করা সম্ভব সবরকম চেষ্টাই করা হয়। কিন্ত দিনে এই সমস্ত ঘটনার Prime Focus একজনের উপর পড়া সম্ভব নয়, তাই রাত্রে। ৩| সামাজিক দৃষ্টিকোণ: বর্তমানে দিনে বিবাহ দেওয়াকে দারিদ্রতার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা ...

ব্রাহ্মণ্য অত্যাচার তত্ত্বের Propaganda Vs Reality

ভারত বাংলাদেশ আর পাকিস্তান মিলে প্রায় 50 কোটি মুসলিম বাস করে। কিন্তু, এতো মুসলিম তো আরবেও নেই। তাহলে এতো মুসলমান এলো কোথা থেকে? অন্য ধর্মের লোক এতো দ্রুত হারে বাড়ছে না কেনো? অন্য ধর্মের 50 কোটি লোক হলোনা কেনো ? Communist আর secular দের বক্তব্য এরা হিন্দুই ছিল, কিন্তু ব্রাহ্মণদের অত্যাচারের ফলে আর মুসলিমদের ধর্মের উদারতার কারণে জাত-পাতহীনতার কারণে এরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। এরা মুসলিমদের দান-ধ্যানের নীতি, সুফি_সন্তদের জীবনযাত্রায় প্রভাবিত হয়ে "ইসলাম" ধর্ম গ্রহণ করেছে। ব্রাহ্মণদের অত্যাচার তত্ত্ব  Communist রা হিন্দু সমাজকে দুইভাগে ভাগ করেন-- 1. উচ্চ বর্ণ  2. নিম্ন বর্ণ সমাজের সবচেয়ে ভক্তিবান মানুষ হলো তথাকথিত নিম্নবর্ণের মানুষরা। তাদের কাছে ধর্মই সব। তাঁরা সব করতে পারেন কিন্তু ঠাকুর কে অবহেলা করেন না। তাঁরা শুধুমাত্র ব্রাহ্মণদের অত্যাচারের জন্যেই ধর্মান্তরিত হয়েছে এটা বিশ্বাস করেন কিভাবে❓ এটা তো গেলো পুরোনো যুগের কথা.... এবার এখনকার কথা বলি.... আচ্ছা বলুন তো, আমরা আমাদের পারিবারিক সূত্রে বা বন্ধুদের সূত্রে প্রায় প্রতিদিন নানান রকম খবর শুনি। যেমন- কারোর বিয়ে হয়েছে, কার...

বৃদ্ধাশ্রম ও অনাথালয় এর সংযুক্তিকরণ

আমি কিছু ছোট ছোট old age home এবং orphan home এ গেছি এবং সেখানে গিয়ে মনে হয়েছে বৃদ্ধ মানুষগুলো তাঁদের পরিবারের ছোটো-ছোটো নাতি-নাতনীদের মিস করেন। আবার অনাথালয়ের orphan দের কাছে গিয়ে মনে হয়েছে তারা যদি দাদু ঠাকুমাদের মত কাওকে পেত, যারা তাদের একটু গল্প বলবে, মাথায় হাত বুলিয়ে তাদের আদর করবে তাহলে তারাও হয়ত অনেকটা ভালো থাকত। তাই আমার মনে হয়েছে বৃদ্ধাশ্রম ও orphan home যদি একই ছাদের নীচে করা সম্ভব হয় তাহলে ওইসব বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এবং বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলোর পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার যে কষ্ট, সেটা সামান্য হলেও লাঘব হবে। এবার আমি এটা নিয়ে কতটা ঠিক ভেবেছি বা এটা ইমপ্লিমেন্ট করা কতটা সম্ভব বা তার প্রতিবন্ধকতার জায়গা গুলো আমি সম্পুর্ন ওয়াকিবহল নই। সম্পূর্ণ একটা ইমোশনাল ভাবনা থেকে এটা আমি ম্যাডামকে জানিয়েছি। ম্যাডাম বা ডিপার্টমেন্ট এ যারা দীর্ঘদিন ধরে অনেক গুরুদায়িত্ব সামলেছেন তাঁদের সবার পর্বত সমান অভিজ্ঞতা। যদি তাঁরা এই ভাবনার মধ্যে কোনো পজিটিভ দিক আছে বলে মনে করেন এবং প্রাকটিক্যাল গ্রাউন্ডে এটা ইমপ্লিমেন্ট করা সম্ভব মনে করেন এবং এক ছাদের তলায় old age home এবং orphan home তৈরী করা...