Skip to main content

নবী মুহাম্মদের প্রাথমিক অবস্থা -- এক মুসলমানের কলমে হুর প্রসঙ্গ

ছোটবেলা একটি বইতে পড়েছিলাম, শর্ষীনার পীরসাহেব নাকি বাঙালি নারীদের গনিমতের মাল হিসেবে পাকবাহিনী এবং রাজাকার আলবদরদের ভোগ করার ফতোয়া দিয়েছেন। শুনে খুব অবাক লেগেছিল। মনে মনে ভেবেছিলাম, এই ধরণের পীর সাহেবরা ইসলামের মত শান্তির ধর্মকে বদনাম করছে। পবিত্র শান্তির ধর্ম ইসলামে কোথাও কখনও এরকম কথা বলা নেই, থাকতেই পারে না।

একটু বড় হলাম যখন, কোরআনের বাঙলা অনুবাদ পড়লাম, সেই সাথে বুখারী হাদিস এবং সহি মুসলিম হাদিস। পড়ে অবাক বিস্ময়ে মাথা কাজ করছিল না। অনেকদিন অনেকবার ভেবেছি, এই কি সেই মুহাম্মদ, যাকে আমি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ভাবতাম? গনিমতের মাল ভোগ, যুদ্ধবন্দী নারীকে ধর্ষণ কি আসলেই ইসলামের বিধান কিনা, সেটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন অবশ্যই। উল্লেখ্য, কোরআন এবং হাদিস হচ্ছে সর্বকালের সর্বসময়ের জন্য মুসলমানদের বিধান বা আইন। সেখানে যা বলা হচ্ছে, বা মুহাম্মদ ব্যক্তিগত জীবনে যা করেছেন, মুসলমানদের ঠিক সেভাবেই সেই সব করা সুন্নত বলে গণ্য।

মুহাম্মদকে সবসময়ই খুব ভাল এবং আদর্শ মানুষ বলে জেনে এসেছি। ছোটবেলায় শুনতাম মুহাম্মদ তার চরম শত্রুকেও ক্ষমা করে দিতেন। কিন্তু বাস্তবে কোরআন হাদিস পড়ার পরে সেরকম কোন ঘটনা কোথাও খুঁজেই পেলাম না। পরে জেনেছিলাম, গৌতম বুদ্ধ থেকে শুরু করে এরকম অন্য কয়েকজন মহামানবের গল্প আসলে আমরা মুহাম্মদের নামে শুনি। সেগুলো আদৌ মুহাম্মদের গল্প নয় । তাহলে আসল মুহাম্মদ কেমন ছিলেন? এই বিষয়ে কোরআন হাদিস কী বলে?

নিজের ওপর আল্লাহর কাছ থেকে ওহী নাজিল হয়েছে দাবী করার পরে নতুন ধর্ম প্রচারের পরে পরে মুহাম্মদের প্রয়োজন হয়েছিল দল ভারী করবার। সেই সময়ে নানান পৌত্তলিক ধর্ম প্রচলিত ছিল, এক এক গোত্র এক এক দেবদেবীর উপাসনা করতো। ইহুদী এবং খ্রিস্টানও ছিল প্রচুর। মুহাম্মদ ঠিকই বুঝেছিল, মানুষ সব সময়েই দুটি জিনিসের বাধা লোভ আর ভয়। মুহাম্মদ দোযখের ভয় জনগণকে এমনভাবেই দেখিয়েছেন যে সেই ভয়েই অনেক দুর্বল হৃদয়ের মানুষ সাথে সাথে ইসলাম কবুল করে। একই সাথে ছিল ইসলামে যোগ দিলে অশ্লীল লাভের প্রতিশ্রুতি, বেহেশত নামক পতিতাপল্লী এবং সুরীখানায় প্রবেশাধিকার। এই দুই-লোভ এবং ভয় দেখিয়ে মানুষকে দলে টানার কাজ ভালভাবেই চলছিল সে সময়ে সেই সময়ে সংখ্য ছোট ছোট আরব বেদুইন দস্যু দল নানা জায়গাতে ডাকাতি করে বেড়াতো। সেই সব ডাকাতদের ডাকাতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন অনেক আরব জাতীয়তাবাদী নেতাই। কিন্তু সফল হয়েছিলেন একজন। তিনি হযরত মুহাম্মদ।

জিহাদের প্রতি আগ্রহের কারণ :-

মুহাম্মদের জন্মও হাশেমী বংশে, কোরআইশদের মধ্যে হাশেমীরা ছিলেন বেশ সম্ভ্রান্ত বংশ।

আপনারা জানেন যে মুহাম্মদ ইসলাম ধর্মের ঘোষনা দেয়ার পরে তার দলে বেশ কিছু মানুষ যোগ দেয় এবং বিপুল পরিমাণে মানুষ তার প্রচারিত ধর্মের বিরোধীতা করে। বিরোধীতার প্রধান উদ্দেশ্য অবশ্য ছিল রাজনৈতিক। সে সময়ে আরবের মক্কায় দুটো গ্রুপ শক্তিশালী ছিল, একটা গ্রুপের সদস্য মুহাম্মদ নবী হবার দাবী করায় অন্য গ্রুপটি নিজেদের কর্তৃত্ব হারাবার ভয়ে মুহাম্মদের প্রবল বিরোধীতা করে। সে সময়ে মুহাম্মদের প্রবর্তিত ইসলাম এবং সে সময়ের আরবের প্যাগান, খৃষ্টান এবং ইহুদীদের ভেতরে বেশ কিছু যুদ্ধ হয়। কোনও কোনও সময়ে মুহাম্মদের দল জয়লাভ করে, কোনও কোনও সময়ে কুরাইশরা বা বিধর্মীরা।

নতুন প্রচারিত ধর্মে যোগদানের জন্য মুহাম্মদকে বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হয়েছে, আল্লাহর নামে তিনি তার গ্রন্থ কোরআনে বলেছেন যে ইসলামের পথে জিহাদ করলে স্বর্গে অসংখ্য (৭২+) হুর গেলমান পাওয়া যাবে, দুধের সমুদ্র থেকে শুরু করে মদের নদী এমন কিছু নাই যে মুহাম্মদ লোভ দেখান নি। এ সকলই নতুন প্রবর্তিত ধর্মে মানুষকে আকৃষ্ট করার জন্য। পরকালে নানা ধরণের সুখ সুবিধার কথা বলে মুহাম্মদ ক্রমশ দল ভারী করতে শুরু করেছিল। মক্কা থেকে বিতাড়িত হয়ে শুধুমাত্র গনিমতের মাল ভোগের বিধান না থাকলেই এতো দ্রুত মুহাম্মদের সেনাবাহিনী খুব বেশি বৃদ্ধি পেতো না। নানা জায়গা থেকে ছোট ছোট দস্যু এবং ডাকাত দল জানতে পেরেছিল যে, নবী মুহাম্মদ একটা সেনাবাহিনী গঠন করেছে। যেই সেনাবাহিনী ছোট ছোট বাণিজ্য কাফেলা লুট করছে, ইহুদী গোত্রগুলোকে আক্রমণ করছে, এবং তাদের মালপত্র, স্ত্রী কন্যাদের গনিমতের মাল হিসেবে ভাগ করে নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, জিহাদ করে মারা গেলে মুহাম্মদ প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে ৭২টি হুর, সেই হুর নামক বেশ্যারা এত্ত সুন্দরী যে, খোদ কোরআনেই তাদের রূপযৌবন বর্ণনা করা হচ্ছিল। হাদিসেও অসংখ্যবার সেইসব হুরের স্তন আর চিরঅক্ষত যোনীর লোভ দেখানো হয়েছে। অর্থাৎ যুদ্ধ করে বেঁচে থাকলে গনিমতের মাল, মারা গেলে ৭২ খানা বেশ্যা। আরব বর্বর দস্যুদের সবচাইতে কামনার বস্তু। সে কারণে মুহাম্মদ খুব দ্রুত তার দলে অসংখ্য লোক ভিড়াতে সক্ষম হন।

কুরাইশ বা বিধর্মীদের সাথে যুদ্ধে গনিমতের মাল বা যুদ্ধে শত্রু সম্পত্তি ভোগ এবং দখলকে কেন্দ্র করে জিহাদীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিল। কিছু মানুষ মুহাম্মদের কাছে জানতে চাইলো যুদ্ধে মৃত শত্রুর ফেলে যাওয়া সম্পদ, স্ত্রী, শিশু, বাচ্চাকাচ্চা, বৃদ্ধ মা বাবা, উট, অর্থ এগুলো ভোগ করা যাবে কিনা? আসুন দেখি আমাদের মানবতার মহান পূজারী মুহাম্মদ এ সম্পর্কে কি বলেছেন! বেশ কিছু সাহাবী মুহাম্মদের কাছে গিয়ে জানতে চাইলো যুদ্ধে প্রাপ্ত গনিমতের মালের মধ্যে নারীদের ধর্ষণ করা জায়েজ কিনা। পরম করুনাময় আল্লাহ্ তায়ালা সাথে সাথে ওহী লাজিল করে বসলেন।