দাড়িভিটের স্ফুলিঙ্গ থেকে ভাষা আন্দোলনের প্রদীপ জ্বালাতে আমরা ব্যর্থ

বছর দুই আগে একটা নাটক পড়ছিলাম।  জার্মানিতে হিটলারের উত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে লেখা নাটক। নামটা মনে নেই‚ নাটকটাও হুবুহু বলতে পারব না তবে একটা ঘটনা আমার মনে আছে। ইনফ্যাক্ট সেই উপন্যাসটা পড়েই আমি হিন্দু ইকোসিস্টেম এর ধারণা পেয়েছিলাম।

ঘটনাটা কমবেশি এই ছিলো যে‚ একজন নিঃস্ব ভবঘুরের কাছে কমিউনিস্টরা আসল পার্টিলাইন বোঝাতে। অনেক ক্ষন ধরে তার সাথে তাত্ত্বিক আলোচনা হল‚ শ্রেনীসংগ্রাম - সমাজতন্ত্র - বিপ্লব - শ্রেনীহীন সমাজ ইত্যাদি ইত্যাদি! এইসব বুঝিয়ে কমিউনিস্টরা চলে গেল। কিছুক্ষণ পরে নাৎসীরা আসল লোকটার কাছে।  লোকটাকে তারা রুটি খেতে দিল। পরের দৃশ্যে দেখা গেল যে লোকটা নাৎসী পতাকা হাতে নাৎসীদের মিছিলে হাঁটছে। 

পেট - একটা সাধারণ মানুষের জীবনের হয়তোবা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। যে তার সেই প্রয়োজন মেটাবে সে চিরদিনের জন্যে তার অনুগত হয়ে যাবে।

এইযে কমিউনিস্টদের আমরা খিল্লি করি ভাদ্দে বলে‚ সমস্ত আলোচনায়‚ প্রয়োজনে অপ্রয়োজন ভাত ভাত বলে চিল্লায় বলে‚ আসলেই সত্যি কথা এটা যে ভাতের দাবিই মানুষের আসল দাবি। এই চাহিদা যদি তার সম্প্রদায় মেটাতে পারে‚ তবে সে সম্প্রদায়ের জন্য জীবন পর্যন্ত দিয়ে দিতে পারে। 

আর তার জন্যই তৈরী সম্প্রদায়গত ইকোসিস্টেম তৈরী করা। যেটা মুসলমানদের আছে‚ কিন্তু হিন্দুদের নেই। একটা মুসলমান জন্ম থেকেই জেনে যায় যে তাকে রক্ষার দায়িত্ব তার সম্প্রদায়ের! তা সে খাদ্য দিয়ে হোক‚ কাজ দিয়ে হোক‚ শিক্ষা দিয়ে হোক‚ নিয়মকানুন দিয়ে হোক। তাই সেও তার সম্প্রদায়ের বাইরে বেরোতে চায় না। কিন্তু একটা হিন্দু জানে যে সে একা। তার পরিবারই তাকে বিপদে দেখবে কিনা ঠিক নেই‚ তায় সম্প্রদায়! তাই সে ন্যূনতম সুযোগ পেলেই সম্প্রদায়গত চেতনার থেকে নিজেকে আলাদা করে নেয়। 

সেকুলার হয়‚ কমিউনিস্ট হয় এমনকি ধর্মান্তরিত পর্যন্ত হয়।

****************************************************

আর এসব আটকানোর জন্যই প্রয়োজন হিন্দু ইকোসিস্টেম তৈরী করা।

যেটা আমরা হয়তো প্রত্যেকে যদি সামান্য সামান্য করেও চেষ্টা করি তাহলে হয়তো এই বিন্দু বিন্দু জুড়েই বড় সিন্ধু তৈরী হয়ে যাবে। আমাদের হাতে সময় কিন্তু বড্ড কম।

ইকোসিস্টেম তৈরীতে আমার প্রস্তাবিত পথগুলো হল -  

(আপনারাও নিজেরা মতামত দিন। নতুন কোনো পয়েন্ট আসলে যোগ করুন। )

🟪১- অর্থকরী যেকোনো কাজ কোনো হিন্দুত্ববাদীকে‚ নিদেনপক্ষে হিন্দুকে দিয়ে করান। হিন্দু কারিগর না পেলে কোনো হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের স্থানীয় নেতাদের সাহায্য নিন। ওদের কাছে এমন লিস্ট থাকে। না থাকলে আপনারা প্রেসার দিয়ে করিয়ে নিন। 

🟦২- নিজের দায়িত্বে সবসময় একটা পেশাগত লিস্ট রাখুন।  যেখানে বিভিন্ন পেশার হিন্দু কারিগরদের নাম ও ফোন নাম্বার থাকবে। নিজের ও অন্যের প্রয়োজনে সেই লিস্ট কাজে লাগান। 

🟧৩- আপনি ব্যবসায়ী হলে হিন্দুত্ববাদী ক্রেতাদের কিছুটা ছাড় দিন। তাহলে নিজেদের ভেতর ব্যাবসায়িক বন্ধন ও হৃদ্যতা  বাড়বে। যতদূর জানি সৎসঙ্গীদের ভেতর এমন  নিয়ম প্রচলিত আছে।

🟥৪- নিজের সম্প্রদায়ের যুবকদের যতবেশী সম্ভব কর্মক্ষেত্রে যুক্ত করুন। কোথাও কর্মখালির অথেন্টিক খবর দেখলেই নিজেদের সার্কেলের ইয়ং ছেলেদের সেটা জানান। খালি পেট কিন্তু কমিউনিজমেরে সেফ ডিপোজিট। এটা জানেন তো? তাছাড়া আপনি আজ যার জীবিকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন কাল সে আপনার কোনো উপকারে আসবে না‚ সেটাই বা কে বলতে পারে। 

🟨৫- ব্যবসা করুন। ব্যবসা করার ন্যূনতম সুযোগকে কাজে লাগান। ব্যবসাকে ক্রাইম হিসাবে দেখা কলোনিয়াল মাইন্ডসেটের বাবু কালচারকে অগ্রাহ্য করেই ব্যবসা করুন। চাকুরিজীবীরা কিন্তু জাতির সম্পদ বাড়ায় না‚ বাড়ায় ব্যবসাজীবীরা। নিজের ও জাতির সম্পদ বাড়ান আর অন্য হিন্দু যুবকদেরও সেখানে জীবিকা দিন। 

🟪৬- হালাল আর ঝটকার পার্থক্য সবাইকে বোঝান। একবার বেশিরভাগ হিন্দু যদি ঝটকা নিতে শুরু করে জঙ্গিদের ফান্ডে টাকা ঢোকা অর্ধেক হয়ে যাবে। ওদের কোমর কিন্তু ভেঙ্গে দিতে পারে এই ঝটকা মাংস। আশা করি বুঝতে পেরেছেন কি বলেছি।

🟦৭- নির্দিষ্ট কিছু ব্রান্ড‚ নির্দিষ্ট কিছু কোম্পানি বা দোকানকে বয়কটের খাতায় রাখুন। মরে গেলেও ওদের থেকে কেনা যাবে না। ওরা কিন্তু আমাদের টাকা দিয়েই বন্দুক কিনে আমাদের দিকে তাক করে।  আমি যেমন রাস্তায় ক্ষিধেতে মরে গেলেও কোনো ঠাকুর দেবতা বা কোনো গুরুদেবের ছবি নেই - এমন হোটেলে ঢুকিনা। কোনোদিনও ঢুকব না। আমার টাকা একমাত্র কোনো হিন্দু ব্যবসায়ীর হাতেই যাবে। আর কারও হাতে না। 

🟧৮- নিজে না করুন‚ আশেপাশে কোনো বেকার হিন্দু ছেলেকে ধরে ব্যবসায় বসান।  আপনি মূলধন দিন‚ ও পরিশ্রম দিক। দিনের শেষে লভ্যাংশ ভাগ করে নিন।  মনে রাখবেন মাংস - চামড়া - জুতো - ফল সহ বেশিরভাগ ব্যবসাই কিন্তু এখন হিন্দুদের হাতছাড়া হয়ে গেছে। এখনো যদি ফেরত না আনা যায় তাহলে বাঙ্গালীর ভবিষ্যৎ কিন্তু অন্ধকার।

🟥৯- যারা উচ্চবিত্ত আছেন বা যাদের NRI কানেকশন আছে তারা আল আমিন মিশন টাইপ কিছু প্রতিষ্ঠা করতে পারেন কিনা দেখুন। খুব দরকার এটা।  যারা অতদূর উঠতে পারবেন না তারা ছোটোখাটো লেভেলে শিক্ষা নিয়ে কিছু করুন। যেমন নিজেরা কিছু কিছু টাকা দিয়ে একটা সরকারি চাকরি প্রস্তুতির কোচিং খুলে দিন। সেখানে হিন্দু ছেলেমেয়েদের থেকে কম মাইনে নিন। বাকি টাকা একটু নিজেরা দিয়ে দিন।

🟨১০- আর শেষে একটা কথা বলি। একটা তৃতীয় বিশ্বের দেশে ডাক্তার যেমন থাকবে তেমন চোরও থাকবে। শিক্ষক থাকবে আবার মাফিয়াও থাকবে। উকিল থাকবে আবার ক্রিমিনালও থাকবে। সৎ ব্যবসায়ী বা বড় আমলা যেমন থাকবে আবার চিটিংবাজরাও থাকবে। এটাই স্বাভাবিক! আমাদের শুধু এটাই নিশ্চিত করতে হবে যে এরা সবাই যেন হিন্দু হয়। ব্যাস। আলো এবং অন্ধকার দুই ক্ষেত্রেই হিন্দুর রাজ চলুক। আর যাই হোক দেশটার নাম তো হিন্দুস্থান! তাইনা?

🖊লেখকের পরিচয় অজ্ঞাত 

( লেখাটি ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)