Skip to main content

দাড়িভিটের স্ফুলিঙ্গ থেকে ভাষা আন্দোলনের প্রদীপ জ্বালাতে আমরা ব্যর্থ

এসো হে সেপ্টেম্বর, আমার ভাষার মাস।

ভাষাতীর্থ দাড়িভিট, রাজেশ তাপসের বাস।।

২০১৮-র ২০ সেপ্টেম্বর উত্তর দিনাজপুর জেলার দাড়িভিট হাইস্কুলের গুলি চালনার ঘটনা এখন সবাই জানেন। আলোচনার সুবিধার জন্য অল্পকথায় প্রেক্ষাপটটা আরেকবার দেখে নেওয়া যাক। দাড়িভিট হাইস্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি ছিল বাংলা ও বিজ্ঞান শিক্ষকের। এই স্কুলে উর্দুভাষী ছাত্র-ছাত্রী নেই। স্থানীয়রা মুসলমান। তৃণমূল নেতার তৎপরতায় সরকারের বিদ্যালয় দপ্তর পাঠালো বাংলা ও বিজ্ঞান শিক্ষকের জায়গায় উর্দু শিক্ষক এবং সংস্কৃত শিক্ষক। অবাঞ্ছিত উর্দু শিক্ষকের নিয়োগকে একটু সহনশীল করার জন্য সম্ভবত সংস্কৃত শিক্ষককের নামটাও যুক্ত করা হয়েছিল। ছাত্ররা মানেনি, প্রতিবাদ করেছিল। প্রতিবাদ করেছিলেন গ্রামবাসীরা। অতএব পুলিশ সামান্য উত্তেজনাতেই গুলি চালায়, ফলে দুই প্রাক্তন ছাত্র রাজেশ সরকার এবং তাপস বর্মণের মৃত্যু হয়।


এর প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গ সপ্তাহখানেক উত্তাল হয়। জাতীয়তাবাদী ছাত্র সংগঠন এবিভিপি মিছিল মিটিং করে। বিজেপি ২৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গ বন ডাকে যা আংশিক সফল হয়। এই বনধকে সফল করতে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির যুবমোর্চার সভাপতি দেবজিৎ সরকার দাড়িভিট গেলে তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।তার উপর পুলিশ অত্যাচার চালায়, যার ফলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে জামিনে মুক্তি পান। 


পাশাপাশি মৃতদের পরিবার সিবিআই তদন্তের দাবি জানায় এবং মৃতদেহদুটির সৎকার করতে দেয় না। শবদেহ দুটি মাটি চাপা দিয়ে গ্রামেই রেখে দেওয়া রয়েছে। এরপর থেকে আর ঘটনা বিশেষ কিছু গড়ায়নি। রাজ্য সরকার সিবিআই তদন্তের দাবি মানেনি।
স্থান কাল পাত্র :


স্থান : দাড়িভিট উচ্চ বিদ্যালয়টি উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর মহকুমার অন্তর্গত। পূর্বতন পশ্চিম দিনাজপুর জেলার উত্তর অংশ নিয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলা গঠিত হয় ১৯৯২ সালে। এর সম্পূর্ণ পূর্ব সীমান্ত জুড়ে রয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৮১ সালে এই জেলার (১৯৯২ পরবর্তী জেলাটির অঞ্চলের) হিন্দু জনসংখ্যা ছিল ৬৩.২৬ শতাংশ, মুসলমান ৩৫.৭৯ শতাংশ। 


জ্যোতি বসুর কমিউনিস্ট রাজ এক দশকের মধ্যে এই জেলায় মুসলমান অনুপ্রবেশের ঢল নামিয়ে মুসলমান জনসংখ্যা অভাবনীয় বাড়িয়ে দেয় ৯.৫ শতাংশ। ১৯৯১ সালে হিন্দু জনসংখ্যা কমে হয় ৫৪.২ শতাংশ, মুসলমান বেড়ে ৪৫.৩৫। তৃণমূলের দয়ায় ২০১১ সালে সবুজ নিশান উড়িয়ে উত্তর দিনাজপুর মুসলমান প্রধান জেলা হয়ে যায়। ২০১৮-তে যে অবস্থা আরও ভয়ানক তা বলাই বাহুল্য। এহেন জেলার গ্রামগুলির অবস্থা আরও ভয়ানক। উত্তর দিনাজপুরের শহরগুলিতে হিন্দু জনসংখ্যার অনুপাত ভালো হলেও গ্রামাঞ্চলে তা যথেষ্ট কম। দাড়িভিট স্কুলটি ইসলামপুর মহকুমায়। ইসলামপুর শহরে হিন্দু জনসংখ্যা ৬৭ শতাংশ (২০১১) হলেও ইসলামপুর মহকুমায় গ্রামাঞ্চলে হিন্দু জনসংখ্যা মাত্র ২৭ শতাংশ (২০১১)। দাড়িভিট স্কুলটি থেকে বাংলাদেশ সীমান্তের দূরত্ব সামান্য, ২ কিলোমিটার মাত্র। এই হলো স্থান।
উত্তর দিনাজপুর জেলা
১৯৮১ ১৯৯১ ২০০১ ২০১১
হিন্দু % ৬৩.২৬ ৫৪.২০ ৫১.৭২ ৪৯.৩১

মুসলমান % ৩৫.৭৯ ৪৫.৩৫ ৪৭.৩৬ ৪৯.৯২

(সূত্র : ভারত সরকারের জনগণনা রিপোর্ট)


কাল: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি চরম ইসলামি মৌলবাদী বন্ধু সরকারের রাজত্বকাল।
পাত্র : এই স্থান ও কালের ভয়াবহতাকে অগ্রাহ্য করে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও গ্রামবাসীরা। এবং দ্বিধাচিত্তের আমরা।


উর্দুর বিরুদ্ধে এবং হিন্দু বলেই কি গুলি ?


উর্দুর বিরুদ্ধে এবং হিন্দু বলেই কি গুলি চালাল তৃণমূলের পুলিশ? এরকম একটা কথা কি সাম্প্রদায়িকতা হয়ে যায় না? তবে দেখা যাক কখন কখন তৃণমূলের পুলিশ গুলি চালায়।

১ ডিসেম্বর ২০১১। সবে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় এসেছে। মগরা থানার মুসলমান অধ্যুষিত নৈনান গ্রামে রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের আধিকারিকেরা যান বিদ্যুৎ চুরি বন্ধ করতে। গ্রামবাসীরা বিদ্যুকর্মীদের আটকে রাখে। পুলিশ তাদের উদ্ধার করতে গেলে পুলিশকে আক্রমণ করে গ্রামবাসী। পুলিশ গুলি চালালে ২ জন মুসলমান মহিলা মারা যান। সব দোষ চাপল পুলিশের ঘাড়ে। ৩ জন পুলিশকর্মী সাসপেন্ড হলেন, মৃতেরা ক্ষতিপূরণ পেলেন। ব্যস, পুলিশ বুঝে গেল তৃণমূল জমানায় কোথায় গুলি চালাতে হবে না।

২০ অক্টোবর ২০১২– রাজাবাজার ট্রাম ডিপোর সামনে বাস চাপা পড়ে মারা যান স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ আকিল। শুরু হলো তাণ্ডব। ৮৬টি বাস, ১১টি গাড়ি, ২টি ট্রাম ভাঙচুর করা হয়। ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় ট্রাম ও বাস ডিপোটি। পুলিশ গুলি চালায়নি, কিছুই করেনি।

২৮ নভেম্বর ২০১৪। জামাতে উলেমা হিন্দের নেতা (পরে মন্ত্রী) সিদ্দিকুল্লার নেতৃত্বে ময়দানে জনসভার নামে চলে সন্ত্রাস। ৩ জন আইপিএস অফিসার সহ ১১ জন পুলিশ আহত হন, পুলিশের ১১টি গাড়ি ভাঙচুর হয়। পুলিশ গুলি চালায়নি।

১৭ জানুয়ারি ২০১৭-মুসলমান অধ্যুষিত ভাঙড় অঞ্চলে বিদ্যুৎ পরিবহণ কেন্দ্র (পাওয়ার গ্রিড) নির্মাণ নিয়ে বিরোধিতায় সেখানকার মানুষ পথ অবরোধ করে। তা সরাতে গেলে পুলিশের উপর প্রবল আক্রমণ হয়।১০টি পুলিশের গাড়ি পুকুরে ফেলে দেওয়া হয় বা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। অনেক পুলিশ আহত হন, অনেকে তাদের উর্দি খুলে পালান। পুলিশ গুলি চালায়নি।

তাহলে দাড়িভিট স্কুলে কী এমন হয়েছিল যে পুলিশ গুলি চালালো? দাড়িভিট স্কুলের বিক্ষোভে ছিল ছাত্র-ছাত্রীরা। কিছু গ্রামবাসী। কারো কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না, কোনো বোমাও ফাটেনি। কিছু ঢিল ছোড়া হতেই পারে। কোনো পুলিশের আহত হবার তেমন খবর নেই। তবু পুলিশ গুলি চালালো কেন? কারণ একটাই, পুলিশ জানে যে তৃণমূল জমানায় পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুদের মারলে কাউকে কোনো কৈফিয়ত দিতে হবে না। পুলিশের লোকেরা তো সমাজেরই মানুষ। তারা দেখছেন ইমাম ভাতা থেকে ফিরহাদ হাকিমের কলকাতার মেয়র হবার ঘটনা। দেখছেন কালিয়াচক, খাগড়াগড়, ধুলাগড়। সুতরাং তারা কোথায় গুলি চালাতে হবে বা হবে না তা ভালোই বোঝেন।

আমরা কি কিছু বুঝলাম, কিছু করলাম?

অন্যদের দোষারোপ করে লাভ নেই, নিজেদের প্রশ্ন করি আমরা এক বছরে কী বুঝলাম, কী করলাম? প্রথমত, বেশ কয়েকটা মিছিলে হেঁটেছি, এবিভিপির মিছিলেও। কিন্তু কেউ তাদের পোস্টার ব্যানারে ‘হিন্দু’ কথাটাই লেখেননি। স্রেফ ‘ছাত্র হত্যা’। এটা কী শুধুই ছাত্র হত্যা? কেন জানি না এখনো এ ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট দ্বিধায় রয়েছি মনে হয়।

দ্বিতীয়ত, এই ঘটনা কি পশ্চিমবঙ্গের ভাষা আন্দোলনের সূচনা করতে পারে? মনে রাখতে হবে যে, পাকিস্তান আমলে ১৯৫২ সালে ঢাকায় ঘটা বাংলা রাষ্ট্রভাষার দাবিতে ৪ জন মুসলমান যুবকের নিহত হবার ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে অতি পরিচিত। ১৯৭২-এ বাংলাদেশ গঠিত হবার পর এই ঘটনার প্রচার হয়েছে আকাশচুম্বী। একটু শিক্ষিত হিন্দু বাঙ্গালিই সালাম, বরকত, আবুল, জব্বারের নাম জানে। 


কিন্তু ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র শতবর্ষে অসমের শিলচরে বাংলা ভাষার জন্য ১১ জন আত্মবলিদানকারীদের কথা খুব কম বাঙ্গালি হিন্দুই জানেন। এমনকী পশ্চিমবঙ্গের নামিদামি সাহিত্য পত্রিকা, বুদ্ধিজীবী সবাই এ ব্যাপারে নীরব। এই আত্মবলিদানকারীদের একজন নারী–কমলা ভট্টাচার্য। আরও একটা বড়ো কথা, এই ১১ জন আত্মবলিদানকারীদের মধ্যে ৯ জনই হচ্ছেন পূর্বপাকিস্তান থেকে আসা উদ্বাস্তু। হিন্দু বাঙ্গালিকে কেন বাংলা নিয়ে গর্বের স্থান পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশ থেকে উচ্ছেদ হতে হয় এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ চপ। এই আত্মবলিদানকারীদের নামে কলকাতায় বা অন্য শররে কোনো রাস্তা নেই, কোনো স্মারক স্তম্ভ নেই। অথচ ঢাকার ২১ ফেব্রুয়ারির ভাষা-শহিদ স্মারকের অনেক নকল এখন কলকাতা ও অন্যান্য শহরে দেখতে পাওয়া যাবে। পশ্চিমবঙ্গকে পশ্চিম বাংলাদেশ বানাতে এটা তৃণমূল জমানার অবদান।

এই অবস্থায় বাংলা ভাষা নিয়ে সংগ্রাম আন্দোলনের কথা এলেই ২১ ফেব্রুয়ারি চলে আসে, যার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের কোনো যোগ নেই। আর এই ২১ ফেব্রুয়ারির হাত ধরে আমরা সবাই বাঙ্গালি, দুই বাংলা, একই মানুষ—ইত্যাদি ভাবের কথা সংবাদপত্র, টেলিভিশন, বুদ্ধিজীবী সবাই বলে চলেন। কিন্তু বাঙ্গালি যে শুধু বাংলা ভাষা দিয়ে হয় না, তার পাঁচ হাজার বছরের সংস্কৃতির ঐতিহ্য স্বীকার করেই বাংলাভাষী বাঙ্গালি হতে পারেন— সেকথা শোনে কে? 

তাই একদল বাংলাভাষী শিশু মাদ্রাসায় আরবি শেখে, একদল বাংলাভাষী মানুষ শেখে দেড়হাজার বছর আগের পৃথিবী অন্ধকারের পৃথিবী, একদল বাংলাভাষী মানুষ বিশ্বাস করে একমাত্র তার ধর্ম ও ঈশ্বর বাদে বাকি সব বিশ্বাস ঘৃণ্য। বাংলাভাষী বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম তাই ইসলাম। বাংলাদেশে সেজন্য কোনো মহাপুরুষের মূর্তি স্থাপন নিষেধ। আজকের বামপন্থী সেকুলার বুদ্ধিজীবী কণ্টকিত এবং তৃণমূল কংগ্রেসের ইসলামি মৌলবাদী তোষণের পশ্চিমবঙ্গ ক্রমশ হয়ে উঠছে পশ্চিম বাংলাদেশ জনসংখ্যা, সংস্কৃতি ও বাংলাভাষার বিকৃতিতে।

দাড়িভিটের রাজেশ তাপস, গ্রামবাসীরা এরকম প্রতিকূল অবস্থায় একটি ভাষা আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ জ্বালিয়েছিলেন প্রাণের বিনিময়ে। পশ্চিমবঙ্গ পেয়েছিল তার নিজস্ব ভাষা আন্দোলনের নান্দীমুখ। ইসলামি মৌলবাদী দাপটের বিরুদ্ধে উত্তর দিনাজপুরের অত্যন্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সেখানে বাঙ্গালি হিন্দু ছাত্র-ছাত্রীরা, গ্রামবাসীরা উর্দুর আক্রমণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গে বাংলাভাষার শিক্ষকের জন্য, বিজ্ঞান পঠনপাঠনের জন্য প্রাণ দিলেন রাজেশ, তাপস। এ শুধু একটি ভাষার আক্রমণের বিষয় নয়, এর সঙ্গে যুক্ত পশ্চিমবঙ্গে ইসলামি মৌলবাদের আক্রমণাত্মক নীতি। 


কিন্তু আমরা ব্যর্থ তাঁদের এই মৃত্যুঞ্জয়ী অবদানকে সম্মান জানাতে। দাড়িভিট সুযোগ দিয়েছিল বাংলা ভাষা ও বাঙ্গালির নতুন পরিচয়কে সবার সামনে তুলে ধরতে, আমরা পারলাম না। দাড়িভিট নিয়ে প্রয়োজন ছিল ধারাবাহিক রাজ্য জুড়ে প্রচার আন্দোলন, দাড়িভিটে ভাষা আন্দোলনের স্মারক নির্মাণ। দাড়িভিটের ঘটনা থেকে শুরু হতে পারতো রাজ্য জুড়ে মাদ্রাসা বন্ধের আন্দোলন, মাদ্রাসায় আরবি শিক্ষা বন্ধের আন্দোলন। দাড়িভিটের প্রতিবাদ জন্ম দিতে পারতো পশ্চিমবঙ্গের নিজস্ব ভাষা আন্দোলন। কেবল ক্ষমতায় আসার আন্দোলন পশ্চিমবঙ্গকে পশ্চিম বাংলাদেশ হওয়া ঠেকাতে পারবে না। আগামী দিনে হয়তো আমরা পারবো।

এই বিষয়ে আমরা "সৃষ্টি ও চেতনা মঞ্চ"- এর উদ্যোগ কে অনুসরণ করতে পারি। তারা ২০ শে সেপ্টেম্বর বাংলা ভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজন করছিলেন একটি প্রবন্ধ লেখা প্রতিযোগিতার।

প্রবন্ধের বিষয়গুলি ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ-

১. দাড়িভিটঃ কবে ও কেন?

২. কিভাবে সজ্ঞানে ও সচেতনে বাংলা ভাষা থেকে আরবি ও উর্দু শব্দ বর্জন করব।

৩. ক) পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থায় উর্দু ও আরবি শব্দের ব্যবহার বৃদ্ধি ও সংস্কৃত শব্দের ব্যবহার হ্রাস পাওয়া।

৩. খ) রাজনৈতিক স্তর থেকে বাংলা ভাষার আরবীকরণের প্রচেষ্টা থামানোর জন্যে আমাদের কি করণীয়? ৪. বাংলা ভাষার ইসলামিকরণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উজ্জ্বল দুটি নামঃ রাজেশ ও তাপস

৫. বাংলা আমাদের স্মৃতি ও চেতনায়

৬. কেন বাংলা ভাষা তথা যেকোন মাতৃভাষা একটি কম্পালসারি সাব্জেক্ট হওয়া দরকার প্রত্যেক স্কুলে কিন্ডারগার্টেন থেকে বা নার্সারি থেকে।

৭. বাঙালি কে? বাংলা ভাষায় কথা বললেই কি বাঙালি হয়? ৮. বাংলা কেবল একটি ভাষা, বাঙালির ভাষা, তার ধর্মরীতি, তার সংস্কৃতি- সব মিলিয়েই বাঙালি। (অর্থাৎ বাঙালি কোন কেবল একটি ভাষাগত সত্ত্বা না।)

এই ধরনের আলোচনায় ডানপন্থী-বামপন্থী উভয়পক্ষকেই স্বাগত জানানো দরকার। রাজনৈতিক দলাদলির উপরে আমরা ভারতীয়, আমরা হিন্দু, আমরা বাঙালি। রাজেশ আর তাপস ছিল আমাদেরই ভাই, আমাদেরই সন্তান...

Popular posts from this blog

ছেলেরা কেন দিনদিন 'বৌদিবাজ' হয়ে উঠছে?

সমাজটা খুবই খারাপ দিকে যাচ্ছে। ছেলেরা এখন বৌদিবাজ হয়ে উঠেছে! তারা একবার করে প্রেমে ছেঁকা খাওয়ার পর আর অন্য কোনও প্রেমিকা জোটায় না, বৌদিদের সাথে গল্প করে। কারণ - ১| ধোঁকা খায় না ২| হৃদয়ে আঘাত লাগে না ৩| Break up 💔 বলে কিছু থাকে না ৪| অনেকটা Stunt বাজীর মতো, মাথায় কোনো চাপ নেয়ার দরকার পরে না  আর একটা বিষয় হলো এখন বেশিরভাগ ছেলে পড়াশোনা দিকে ব্যস্ত। তাই তাদের হাতেও বেশি সময় থাকে না। আবার বৌদিদের হাতেও বেশি সময় সীমিত। তাই একটা Understanding বজায় থাকে। আরেকটা জিনিস হল নতুন প্রেমিকারা যেরকম নানারকম চাপ দেয়। বৌদীরা অনেকটা বোঝে ব্যাপারগুলো। যেমন- ফাঁকা পকেট, কম সময়, Relation Public না করা... এসব জিনিস। সেই কারণে তারা এতটা চাপ দেয় না। অল্পবয়সী মেয়ের একটু জেদি হয়। তাই তারা অকারণেই ঝগড়া করে যা এমনিতেই চাকরি আর ভবিষ্যতের চিন্তায় চিন্তিত ছেলেদের ভালো লাগে না। তাই তারা বৌদিদের দিকেই ঝোঁকে। বিয়ে তো অবশ্য ভালো কোনো মেয়ে দেখেই করবে, তার আগের সময়টা অন্য দিকে দেয় - বৌদিদের সাথে আড্ডা মারে। বৌদিদের সাথে কথা বলে আর কিছু হোক বা না হোক মানসিক শান্তি আছে। আমার বৌদিবাজ বন্ধুদের জন্য 💖

বলি প্রসঙ্গে আমার মতামত

ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এর চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better, তাহলে বলতে হয় আপনার জীবন আর মৃত্যুর sence নেই। কেন ছাগলের মৃত্যুটাই মৃত্যু? চালকুমড়ো বা আঁখের মৃত্যুটা মৃত্যু নয় কেন? আপনার যদি জীবন আর মৃত্যুর সম্বন্ধ প্রকৃত জ্ঞান থাকতো তাহলে তিনটি ক্ষেত্রেই আপনি সমান দুঃখ পেতেন। কিন্ত আপনার মনে হয় ছাগল বলি দেওয়ার চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better।  আপনার এই প্রকৃতি দেখে বলতে হয়, জীবন বাঁচানো আপনার উদ্দেশ্য নয়, বরং আপনি রক্তকে ভয় পান, অস্ত্র কে ভয় পান। আপনার বাস্তবিক বোধ থাকলে আপনি অস্ত্রের আঘাতে চালকুমড়ো বা আঁখের এবং ছাগ তিনটি বলির ই বিরোধীতা করতেন। কারণ তিনটির প্রকৃতিই একই রকম, এই তিনটে থেকেই অনেক নতুন প্রাণের জন্ম হতে পারতো। তাই তিনটির হত্যাই একই রকম ক্ষতি করে। কিন্ত, শুধুমাত্র ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এটি মানুষের হিংস্র পাশবিক প্রবৃত্তি। তাহলে প্রশ্ন করতে হয়, আমরা কি সত্যিই অহিংস?  আমাদের মায়েরা প্রতিদিন জ্যান্ত মাছগুলো দুহাতে ধরে বঁটিতে ঘচাং করে একবারে জ্যান্তই কেটে ফেলেন। শহরের মাছ-মাংস বিক্রেতারাও একইভাবে কাটেন। তখন কি সেটা নৃশংসতা নয়? কেন আমরা ব

রাষ্ট্রভক্ত বীরাঙ্গনা হীরা দে

 🌹💥🕉️ দুর্নীতিবাজদের সাথে কেমন আচরণ করা উচিত তার উদাহরণ আমাদের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা থেকে জানা যায়। এই শাস্তিও কোন রাজা বা সরকার দিয়েছিল না দিয়ে ছিল শুধুমাত্র তার পরিবারের সদস্যরা। 💢 1311 খ্রিস্টাব্দে, আলাউদ্দিন খিলজিকে জলোর দুর্গের গোপন কথা বলার জন্য পুরস্কার হিসাবে পাওয়া অর্থ নিয়ে ভিকা দাহিয়া আনন্দের সাথে বাড়ি ফিরছিলেন।এত টাকা এই প্রথম দেখল। হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিল যুদ্ধ শেষ হলে এই টাকা দিয়ে একটা বিলাসবহুল প্রাসাদ তৈরি করে আরামে বসবাস করবে।প্রাসাদের সামনে ঘোড়া বাঁধা থাকবে, চাকর থাকবে।  তার স্ত্রী হীরা স্বর্ণ ও রৌপ্য গয়না দ্বারা সারা শরীর ঢাকা থাকবে। আলাউদ্দিন কর্তৃক জালোর কেল্লায় নিযুক্ত সুবেদারের দরবারে তিনি বড় মর্যাদার বিবেচিত হবেন।বাড়িতে পৌঁছে বিড়বিড় করে হেসে টাকার বান্ডিলটা বাড়িয়ে দিলেন স্ত্রী হীরা দে'র হাতে।  🌹স্বামীর হাতে এত টাকা এবং স্বামীর মুখ ও অভিব্যক্তি দেখে হীরাদে আলাউদ্দিন খিলজির সৈন্যদের দিল্লি ফিরে যাওয়ার কারণ বুঝতে পেরে জালোরের যুদ্ধে হতাশ হয়ে হঠাৎ জালোরের দিকে ফিরে যায়। হীরা দে বুঝতে পেরেছিলেন যে তার স্বামী ভিকা দাহিয়া তার জন্মভূমি জ