Skip to main content

সোশ্যাল মিডিয়া- হিন্দুত্বের সম্ভাবনা ও সামর্থ্য

সোশ্যাল মিডিয়া - হিন্দুত্বের সম্ভাবনা - সামর্থ্য
________________________________________

অনেকেরই বক্তব্য- "২০১৪ সালের পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে হিন্দুত্বের পক্ষে লম্বা চওড়া ভাষন দেওয়া যাচ্ছে। তাঁর আগে সবাই মুতে ফেলতো।"

এই প্রসঙ্গেই বলি, 2010 সালে মাত্র 1.2 কোটি মানুষের হাতে ফোন ছিলো। আর 2022 সালে বর্তমানে 49.2 কোটি মানুষের হাতে ফোন আছে। আসল পার্থক্যটা এখানেই। অনেকের অনেক কিছু মনে হতেই পারে। কিন্ত একটা ফোন মানুষের জ্ঞান আর চিন্তাভাবনার পরিধি বদলে দেয়।

2006 সালে মাত্র 20 টা শব্দ লেখা যেতো ফেসবুকে। 2014 দিকে সংখ্যাটা সম্ভবত 35-40 এর দিকে ছিলো। তারপর শব্দ আরও বৃদ্ধি হয়। পরবর্তীতে শুরু হয় Live, যা মানুষের আবেগকে আরো বাড়িয়ে দেয়।

একইরকম ভাবে ট্যুইটার ব্যবহার করাও যে কত কষ্টকর ছিলো, আর কত কষ্টে তা খোলা যেতো তা আমরা অনেকেই জানি না। কিন্ত বর্তমানে ওই টুইটারের #tag Trend কেই সবাই বাক_স্বাধীনতা বলে দাবি করছে।

আবার একইরকমভাবে বর্তমানে ইউটিউব, short video app সর্বত্রই আমাদের অবাধ প্রবেশ। প্রায় পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই এই প্রভাব দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন সময় Technology পরিবর্তন হতে থেকেছে। পরিবর্তনই স্বাভাবিক। কিন্ত এদের মতে, 2014 থেকেই এই পরিবর্তন এসেছে। 2014 এদের কাছে social media revolution year ! কিন্ত আদৌ কি তাই!?

অনেকের বক্তব্য, "মোদি জামানা শুরু হওয়ার আগে জাগ্রত হিন্দুর তুলনায় নিদ্রিত হিন্দুর সংখ্যা বেশি ছিল।"
আবার কারো বক্তব্য, "মোদিজী আসার আগে কতজন হিন্দু জাগ্রত ছিল?? আর ২০১৪ পর থেকে মানে ২০১৬-২০১৯ পর্যন্ত কিভাবে হয়েছে।"

যদি শুধুমাত্র একটি স্থির বছর হিসাবে 2014 কে ধরা হয়, তাহলে তা নিতান্তই ভুল। 2014 এর আগে হিন্দু না জাগতো,  যদি 2014 এর আগে কংগ্রেস_বিরোধী মতাদর্শ তৈরী না হতো, তাহলে 2014 এর পরিবর্তন হলো কীভাবে?

আরেকটা কথা, "2014 এর পর নাকি হিন্দুদের সোস্যাল মিডিয়াতে লম্বা-চওরা ভাষন দেওয়া যাচ্ছে", হ্যাঁ, ঠিকই 2014 এর আগে লম্বা-চওড়া ভাষনের জন্য সোস্যাল মিডিয়া ছিলো না। ছিলো কাগজ, সংবাদপত্র, ইস্তেহার।

2014 এর আগে নাকি হিন্দুরা কিছু বলতে মুতে ফেলতো! 🤔

তাহলে কোঠারী বন্ধুর জন্ম নিশ্চয়ই 2014 এর পরে? তাই না? তারা তো সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর পেয়েই করসেবা করতে গেছিলেন নিশ্চয়ই। ঠিক তো!?

আর এটা যদি শুধুমাত্র এটা RSS, মোদী বা সঙ্ঘ এর জন্যই হতো তাহলে আফ্রিকা, বাংলাদেশ, কিংবা পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও এই একইরকম প্রভাব দেখা যেতো না। যেতো কি?

ফেসবুকে যত বক্তা দেখা যায়, তাদের অধিকাংশের সাথেই অধিকাংশের সরাসরি যোগাযোগ নেই। কিন্ত তাদের একজনের চিন্তাধারার সাথে আরেকজনের চিন্তাধারার অধিকাংশই মিলে যায়। তাই তারা অনেকেই সোস্যাল স্বেচ্ছাসেবক।

এটা শুধুমাত্র ভারতে দেখা যাচ্ছে তাই নয়, পাকিস্তান,  বাংলাদেশ, আফ্রিকা,  ইউরোপ সর্বত্রই দেখা যাচ্ছে। কেননা যার সাথে মানসিকতা মিলে যায়, আমরা স্বেচ্ছায় তাদের অনুগামী হয়ে যায়, স্বেচ্ছায় তাদেরকে অনুসরণ করি। স্বেচ্ছায় তাদের মতের সাথে আমার মত তথা বক্তব্য কে জুড়ে দিয়ে আরো শক্তিশালী একটি মতাদর্শ গঠন করি। সেটা - শ্বেত-অশ্বেত, ধনী-দরিদ্র, বামপন্থা-দক্ষিণপন্থা, হিন্দুত্ব-ইসমাল-খ্রিষ্টীয়-ক্রিপ্টো, কিংবা কংগ্রেস-বিজেপি-তৃণমূল। যার মতের সাথে আমার মত মেলে, সেটুকু অংশের সাথে নিজের বক্তব্য কে জুড়ে দিতে দিতেই গড়ে ওঠে বর্তমান সোস্যাল-মতাদর্শ! বুঝলে?

বিভিন্ন মৌলবাদী সংগঠন গুলি যে হারে সোস্যাল মিডিয়ার ব্যবহার করে জিহাদী ট্রেনিং দিচ্ছে RSS কি সেই হারে তার বিস্তার করতে পেরেছে? RSS চাইলে কি প্রত্যেকের ঘরে ঘরে পৌঁছে যেতে পারতো না? কিন্ত RSS কি সোশ্যাল মিডিয়া কে নিজের আদর্শ প্রচারের জন্য ব্যবহার করে? কতটুকু?

অনেকের বক্তব্য, 2014 এর পর উগ্র হিন্দুবাদের প্রচার হচ্ছে! অনেক সেকুলার হিন্দু নাকি হিন্দুত্ববাদী হয়েছে!

এ প্রসঙ্গে আমার বক্তব্য, এটা তেমন কোনো কাজের নয়, এ শুধুই মতাদর্শের সমৃদ্ধি। জাগ্রত হিন্দু নয়, বলতে পারো যুক্তিবাদী হিন্দু। এরা ঘাটের মরা, চোখের সামনে মরতে দেখেও চোখ খোলেনা । কিন্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্তি দিয়ে নিজের মতাদর্শ কে তুলে ধরতে পারে। আর একটি পার্থক্য হলো- অসংখ্য তথ্য ও বাস্তব জীবনের উদাহরণের। চোখের সামনের অসংখ্য উদাহরণ এদের যুক্তিকে আরও ক্ষুরধার করে, কিন্ত এই যুক্তির বাস্তবিক প্রয়োগ আমি আজ পর্যন্ত দেখিনি। ভিরাট হিন্দুত্ববাদী কট্টর হিন্দুদের একটা সন্তান দেখেছি, মুসলমানের দোকান থেকে মাংস কিনতে দেখেছি, মুসলমানদের বাড়িতে ইফতার করতেও দেখেছি...! তাই এটা জাগ্রত হিন্দুদের নয়, যুক্তিবাদী হিন্দুদের মতাদর্শের সমৃদ্ধি! 

Popular posts from this blog

ছেলেরা কেন দিনদিন 'বৌদিবাজ' হয়ে উঠছে?

সমাজটা খুবই খারাপ দিকে যাচ্ছে। ছেলেরা এখন বৌদিবাজ হয়ে উঠেছে! তারা একবার করে প্রেমে ছেঁকা খাওয়ার পর আর অন্য কোনও প্রেমিকা জোটায় না, বৌদিদের সাথে গল্প করে। কারণ - ১| ধোঁকা খায় না ২| হৃদয়ে আঘাত লাগে না ৩| Break up 💔 বলে কিছু থাকে না ৪| অনেকটা Stunt বাজীর মতো, মাথায় কোনো চাপ নেয়ার দরকার পরে না  আর একটা বিষয় হলো এখন বেশিরভাগ ছেলে পড়াশোনা দিকে ব্যস্ত। তাই তাদের হাতেও বেশি সময় থাকে না। আবার বৌদিদের হাতেও বেশি সময় সীমিত। তাই একটা Understanding বজায় থাকে। আরেকটা জিনিস হল নতুন প্রেমিকারা যেরকম নানারকম চাপ দেয়। বৌদীরা অনেকটা বোঝে ব্যাপারগুলো। যেমন- ফাঁকা পকেট, কম সময়, Relation Public না করা... এসব জিনিস। সেই কারণে তারা এতটা চাপ দেয় না। অল্পবয়সী মেয়ের একটু জেদি হয়। তাই তারা অকারণেই ঝগড়া করে যা এমনিতেই চাকরি আর ভবিষ্যতের চিন্তায় চিন্তিত ছেলেদের ভালো লাগে না। তাই তারা বৌদিদের দিকেই ঝোঁকে। বিয়ে তো অবশ্য ভালো কোনো মেয়ে দেখেই করবে, তার আগের সময়টা অন্য দিকে দেয় - বৌদিদের সাথে আড্ডা মারে। বৌদিদের সাথে কথা বলে আর কিছু হোক বা না হোক মানসিক শান্তি আছে। আমার বৌদিবাজ বন্ধুদের জন্য 💖

বলি প্রসঙ্গে আমার মতামত

ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এর চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better, তাহলে বলতে হয় আপনার জীবন আর মৃত্যুর sence নেই। কেন ছাগলের মৃত্যুটাই মৃত্যু? চালকুমড়ো বা আঁখের মৃত্যুটা মৃত্যু নয় কেন? আপনার যদি জীবন আর মৃত্যুর সম্বন্ধ প্রকৃত জ্ঞান থাকতো তাহলে তিনটি ক্ষেত্রেই আপনি সমান দুঃখ পেতেন। কিন্ত আপনার মনে হয় ছাগল বলি দেওয়ার চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better।  আপনার এই প্রকৃতি দেখে বলতে হয়, জীবন বাঁচানো আপনার উদ্দেশ্য নয়, বরং আপনি রক্তকে ভয় পান, অস্ত্র কে ভয় পান। আপনার বাস্তবিক বোধ থাকলে আপনি অস্ত্রের আঘাতে চালকুমড়ো বা আঁখের এবং ছাগ তিনটি বলির ই বিরোধীতা করতেন। কারণ তিনটির প্রকৃতিই একই রকম, এই তিনটে থেকেই অনেক নতুন প্রাণের জন্ম হতে পারতো। তাই তিনটির হত্যাই একই রকম ক্ষতি করে। কিন্ত, শুধুমাত্র ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এটি মানুষের হিংস্র পাশবিক প্রবৃত্তি। তাহলে প্রশ্ন করতে হয়, আমরা কি সত্যিই অহিংস?  আমাদের মায়েরা প্রতিদিন জ্যান্ত মাছগুলো দুহাতে ধরে বঁটিতে ঘচাং করে একবারে জ্যান্তই কেটে ফেলেন। শহরের মাছ-মাংস বিক্রেতারাও একইভাবে কাটেন। তখন কি সেটা নৃশংসতা নয়? কেন আমরা ব

রাষ্ট্রভক্ত বীরাঙ্গনা হীরা দে

 🌹💥🕉️ দুর্নীতিবাজদের সাথে কেমন আচরণ করা উচিত তার উদাহরণ আমাদের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা থেকে জানা যায়। এই শাস্তিও কোন রাজা বা সরকার দিয়েছিল না দিয়ে ছিল শুধুমাত্র তার পরিবারের সদস্যরা। 💢 1311 খ্রিস্টাব্দে, আলাউদ্দিন খিলজিকে জলোর দুর্গের গোপন কথা বলার জন্য পুরস্কার হিসাবে পাওয়া অর্থ নিয়ে ভিকা দাহিয়া আনন্দের সাথে বাড়ি ফিরছিলেন।এত টাকা এই প্রথম দেখল। হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিল যুদ্ধ শেষ হলে এই টাকা দিয়ে একটা বিলাসবহুল প্রাসাদ তৈরি করে আরামে বসবাস করবে।প্রাসাদের সামনে ঘোড়া বাঁধা থাকবে, চাকর থাকবে।  তার স্ত্রী হীরা স্বর্ণ ও রৌপ্য গয়না দ্বারা সারা শরীর ঢাকা থাকবে। আলাউদ্দিন কর্তৃক জালোর কেল্লায় নিযুক্ত সুবেদারের দরবারে তিনি বড় মর্যাদার বিবেচিত হবেন।বাড়িতে পৌঁছে বিড়বিড় করে হেসে টাকার বান্ডিলটা বাড়িয়ে দিলেন স্ত্রী হীরা দে'র হাতে।  🌹স্বামীর হাতে এত টাকা এবং স্বামীর মুখ ও অভিব্যক্তি দেখে হীরাদে আলাউদ্দিন খিলজির সৈন্যদের দিল্লি ফিরে যাওয়ার কারণ বুঝতে পেরে জালোরের যুদ্ধে হতাশ হয়ে হঠাৎ জালোরের দিকে ফিরে যায়। হীরা দে বুঝতে পেরেছিলেন যে তার স্বামী ভিকা দাহিয়া তার জন্মভূমি জ