Skip to main content

ধর্মরাষ্ট্র গঠনের পথ ও পরিস্থিতি

মুসলমানদের জন্য মাদ্রাসা আছে।
কিন্তু হিন্দুদের জন্য গুরুকুল নেই।
একবার মাদ্রাসা ছাড়া মুসলমান ছেলেদের ইসলামিক শিক্ষার কথা ভাবুন তো! মাদ্রাসা ছাড়া কি সত্যিই মুসলমান ছেলেদেরকে ইসলামিক শিক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে!? কখনোই সম্ভব নয়। অসম্ভব! তুমি মাদ্রাসা বন্ধের কথা ঘোষণা করে দেখো দেশ জ্বলে উঠবে। কিন্ত হিন্দুদের? দেশে প্রায় 150 টির উপর হিন্দু সংগঠন আছে, কিন্ত গোটা দেশ জুড়ে 1500 টোল/ গুরুকুল আছে কিনা সন্দেহ। এই দেশে মন্দিরের সংখ্যা কত? প্রত্যেকটি বড় মন্দিরে যদি একটি করে গুরুকুল থাকতো, তাহলে সংখ্যাটা কত দাঁড়াতো!?


এবার একটা পরিস্থিতির কথা বলি। ধরুন ভারতবর্ষ মুসলমানরাষ্ট্র ছিলো। তারপর 1100 খ্রিস্টাব্দের পরবর্তী সময়ে ক্রমাগত আক্রমণ শুরু হলো। আক্রমণ সামলাতে না পেরে মুসলমান সম্রাটরা হেরে গেলো হিন্দু শাসকদের কাছে। তারপর মুসলমানদের একে একে সমস্ত বড় মসজিদ ধ্বংস করে মন্দির নির্মাণ করা হলো, শুয়োরের রক্ত ছড়িয়ে সমস্ত মসজিদ অপবিত্র করা হলো। শুয়োরের মাংস খাইয়ে অনেক মুসলমান কে হিন্দুধর্ম গ্রহণ করতে বাধ্য করা হলো। মুসলমানরা হিন্দুধর্ম গ্রহণে অস্বীকার করলে চললো হত্যালীলা। এইরকম জঘন্য সাংস্কৃতিক আক্রমণ ও নরসংহার চললো 700 বছর ধরে।

এরপর শুরু হলো ইংরেজদের অত্যাচার। তারাও একইভাবে 250 বছর ধরে লুঠপাট চালালো, চললো ধর্মান্তরন, হত্যালীলাও। 


এরপর এইসব ঝড়ঝঞ্ঝা থেমে গেলো 1947 এ। হিন্দুদেরকে দেওয়া হলো পাকিস্তান এবং মুসলমানদের জন্য বরাদ্দ হলো ভারত। এরপর এই ভাঙা সমাজকে পুনর্গঠন করতে মুসলমান সমাজের প্রথম কাজ কি হবে? তারা কি দীর্ঘ 850-900 বছরের অনভ্যাসে আর সেই সমাজতান্ত্রিক গঠনে ফিরে যেতে চাইবে না ? তারা কি মসজিদ ত্যাগ করবে? তারা কি মৌলবীর নেতৃত্বে একজোট হবে না? 850-900 বছর মাদ্রাসায় যায়নি বলে তারা কি আর মাদ্রাসায় যাবে না? তারা কি ওই মুসলমান_তন্ত্র কে ঘৃণা করবে? তারা কি মৌলবীদেরকে ঘৃণা করবে?

করবে না! তাইতো?


যদি এই সুযোগ মুসলমানদের কাছে আসতো তাহলে প্রথমেই একটি গোটা দেশের মৌলবী-মোয়াজ্জেম-মাদ্রাসা শিক্ষকদের নিয়ে সর্বভারতীয় স্তরে বৈঠক করতো মুসলমানরা। তারপর নির্দিষ্ট প্ল্যানিং অনুযায়ী একসাথে মিশন মোডে কাজ হতো। 

প্রথম কাজ হতো, হিন্দুদেরকে দেশ থেকে তাড়ানো।

দ্বিতীয় কাজ হতো- মসজিদের উপর সামগ্রিক সরকারি নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করা এবং মসজিদের টাকা লোটা বন্ধ করা।

তৃতীয় কাজ হতো- শুধুমাত্র ওই ভাঙা মসজিদ বা ওই ভাঙা মাদ্রাসাগুলো পুনর্নির্মাণ নয়। বরং সমগ্র দেশ জুড়ে মসজিদ ও মাদ্রাসা system কে আবারো ঠিক মতো গড়ে তোলা। 

এই system কে পুনরুদ্ধার করতে পারলেই ধর্ম আবার নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারতো। এভাবেই গড়ে উঠতো ইসলামিক সাম্রাজ্যের ভিত!


এবার পরিস্থিতিগুলো একই রেখে ধর্মটিকে পরিবর্তন করা হলো। 1947 সালে হিন্দুরা ভারতবর্ষ কে স্বাধীন হিন্দুরাষ্ট্র হিসাবে পেলো। কিন্ত তারপর কি হলো? 

* সর্বভারতীয় স্তরে কোনো বৈঠক হয়েছিলো কি?

* এই ভাঙা সমাজকে পুনর্গঠন করতে  কি কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো?

* হিন্দুদের মধ্যে মন্দিরের প্রতি বিশ্বাস ফেরাতে কি কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো? 

* বর্ণপ্রথা তে কি আদৌ ফিরতে চেয়েছিলো হিন্দুরা? বর্ণ ব্যবস্থাকে কি সংশোধন করার চেষ্টা করা হয়েছিলো? বর্ণ ব্যবস্থাকে কি পুনরায় চালু করার চেষ্টা করা হয়েছিলো? 

* ব্রাহ্মণদের নেতৃত্ব, ক্ষত্রিয়দের সেনাপতিত্ব, বৈশ্যদের অর্থবল, শুদ্রদের একনিষ্ঠ কর্মক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে হিন্দুদেরকে কি একজোট করার চেষ্টা করা হয়েছিল?

হিন্দুদের জন্য কি গুরুকুল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো? দীর্ঘ 850-900 বছরের অনভ্যাসে হিন্দুরা গুরুকুলে যাওয়া ভুলে গেছিলো। হিন্দুদেরকে কি আর গুরুকুলে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছিলো? 


যদি স্বাধীনতা প্রাপ্তির পরেই সর্বভারতীয় স্তরে হিন্দু ধর্মগুরু, ব্রাহ্মণ, সন্ন্যাসী, পন্ডিত, ভিক্ষুক মিলে সর্বভারতীয় স্তরে একটি বৈঠক  করতো। তারপর যদি নির্দিষ্ট প্ল্যানিং অনুযায়ী একসাথে মিশন মোডে কাজ করতো তাহলে ভারতবর্ষ আজ একচ্ছত্র হিন্দুরাষ্ট্র হতো।


কিন্ত সেসব না হয়ে স্বাধীনতার পরে কি হলো? স্বাধীনতার পরে হিন্দুরা বিপদটা টের পায়নি। যারা একটু আধটু বুঝেছিলো তারা শুধুমাত্র বিপদ বিপদ বিপদ বলে চিৎকার করতেই ব্যস্ত থেকেছেন। তার চেয়েও বড় বিপদ হলো হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো। এরা কোনো কাজের নয়। গলাবাজি ছাড়া কিচ্ছু করে না। যেমন পশ্চিমবঙ্গের - ফুরফুরা শরীফের আব্বাস সিদ্দিকী, বাংলাদেশেও এরকমই বেশ কিছু বাতেলাবাজ আছে। এরা মানুষকে উজ্জীবিত করে, অনুপ্রাণিত করে কিন্ত বাস্তবে এদের প্রভাব খুবই কম। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানতন্ত্র এইসব বাতেলাবাজদের কথায় চলে না। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান সমাজ চলে মৌলবীদের কথায়। তারাই মুসলমান সমাজের ভিত্তি। 


এখনো হাতে সময় আছে। যদি এখনো Temple Administration কে একটি সিস্টেম এ পরিণত করা যায়, যদি এখনো হিন্দুদেরকে মন্দির স্তরে একজোট করা যায় তাহলে ভারতবর্ষ আবারো হিন্দুরাষ্ট্র হবে। আর যদি ওইসব বাতেলাবাজদের কথায় বিশ্বাস করে হিন্দুরাষ্ট্রের আশায় বসে থাকো তাহলে হাতে একটা বাটি নিয়ে বসো। খালি কয়েন জমিয়েই কোটিপতি হয়ে যাবে!

Popular posts from this blog

Indian Population 2050

আমার কথা প্রথমে কিছুটা ভিত্তিহীন মনে হয়। কিন্ত পরে সেটাই সত্যি হয়ে যায়। কিছু তথ্য দিয়ে রাখি, ১| আগামী বছর ভারতের জনসংখ্যা চিনকে ছাড়িয়ে যাবে। অর্থাৎ পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল দেশ হবে ভারত। বর্তমানে ভারতের জনসংখ্যা 141 কোটি, আর চিনের জনসংখ্যা 142 কোটি। আগামী 1 বছরে চিনকে ছাড়িয়ে যাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। ২| আপনি যেটা ভাবছেন সরকার কিন্ত সেটা ভাবছে না। সরকারের ভাবনা হলো, একটি বৃহৎ জনসংখ্যা বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখে। সরকার Man কে Manpower এ রূপান্তরিত করার কথা ভাবছে। সরকার ভারতের জনসংখ্যা বাড়াতে চলেছে। 2050 এ ভারতের জনসংখ্যা বেড়ে হবে 166, আর চিনের জনসংখ্যা কমে হবে 131 কোটি। ৩| ভারতের স্বপ্ন সবচেয়ে কর্মক্ষম, সবচেয়ে তারুণ্যে ভরা দেশে পরিণত হওয়া। এই স্বীকৃতি ভারতের কাছে থাকবে না 2050 এ ভারতের মানুষের কর্মক্ষমতা এবং তারুণ্য হ্রাস পাবে। বরং পাকিস্তান, আমেরিকা এবং বাংলাদেশ এই তালিকার শীর্ষে থাকবে। ৪| জন্ম_নিয়ন্ত্রণের যে কুফল চিন ভোগ করছে ভারত তা চাই না। তাই জন্ম_নিয়ন্ত্রণের পথে হাঁটবে না ভারত। তাছাড়া দক্ষিণে জন্ম বৃদ্ধির হার অনেক কম। উত্তরে জন্ম_হার অনেক বেশি। ফলে একটি উত্...

संस्कृत वर्णमाला

अ आ इ  संस्कृत वर्णमाला अ अ अश्ब; आ आ आम्रः। अश्बः चतुरः ; आम्रः मधुरः। इ इ इक्षु: ; ई ई ईशाः।  रक्षतु सर्वानपि परमेशः। उ उ उदकम्, ऊ ऊ ऊर्मि । उदकम् प्रवहति, प्रभवति ऊर्मिः। ऋ ऋ ऋषिः ; ऋषिं नमामः। ऋ, ऌ इति वयं पठामः। ए ए एडः, स्थूलः पुष्ठः। ऐ ऐ इन्द्रजालिकः । ओ ओ ओतुः, 'म्याव् म्याव् ओतुः। ओ ओषधम्, मास्तु मास्तु। 

শশাঙ্ক

অপরাজিত বঙ্গাধিপতি শশাঙ্ক মহারাজ কানসোনাতে রাজধানী হতে হর্ষে দিয়েছে বাজ। মগধ, গৌড়, রাঢ় দেশ গাঁথে উড়িষ্যা ভুবনেশ্বর রাজনৈতিক সম্প্রসারে  কেঁপে ওঠে স্থানেশ্বর। একদিকে তিনি রক্ষা করেন হিন্দুত্বের ওই মতি পরমতসহিষ্ণু তবু মহাবিহারেও স্থিতি । জলকষ্টে দীঘির জল শরশঙ্ক খোঁড়েন নালন্দাতে বাড়ান হাত  ঐতিহ্যতে মোড়েন। কৃষি শিল্প জ্ঞানচর্চা বাণিজ্যে অগ্রগতি এমন রাজ্য শাসন করেন  গৌড়ের অধিপতি । বঙ্গাব্দের সূচনা খানা হয়ে যায় তাঁর হস্তে পাঁচশত তিরানব্বই সাল বিয়োগ করার ন্যস্তে । বাদ দাও যদি অঙ্কটা ওই দু'হাজার পার একুশ চৌদ্দোশ আটাশএলো এলো বাঙালির হুঁশ। ✍ কল্যাণ চক্রবর্তী 🎨 ছবি এঁকেছেন- শীর্ষ আচার্য আমার কল্পনার দৃষ্টিতে বাংলা বিহার উড়িষ্যার সম্রাট গৌরাধিপতি শশাঙ্ক এঁর নতুন আঙ্গিকে চিত্র অঙ্কন করলাম। বঙ্গাব্দের প্রবর্তক ও বাঙালির হৃদয় সম্রাট শশাঙ্কের জয়। শুভঃ বাঙালি নববর্ষ।