Skip to main content

শহীদ

'শহীদ' শব্দের অর্থ ও তার উৎপত্তি


   'শহীদ' শব্দের উৎস ও ব্যবহার, দেখা যাক শহীদ শব্দের বিভিন্ন ব্যাখ্যা আর রেফারেন্স কেমন হয়।  


  শহীদ ইসলামীক পরিভাষা ও দৃষ্টিতে খুবই মর্যাদাবান ও তাৎপর্যপূর্ণ একটি শব্দ। এটি ইসলামের নিজস্ব পরিভাষা। শহীদ মৃত্যুবরণ করার সাথে সাথেই জান্নাতের নেয়ামত ভোগ করতে থাকে।


শহীদ কোন সামাজিক বা রাজনৈতিক পরিভাষা নয়। তাই যত্রতত্র শহীদ শব্দের ব্যবহার কতটুকু যৌক্তিক?



   *** অক্সফোর্ড অনলাইন ডিকশনারি অনুসারে: বলা হয়েছে শহীদ শব্দটি এসেছে এরাবিক শব্দ থেকে যার অর্থ a Muslim martyr (অন্য কোন ধর্মের নয়)। 

  --- সুতরাং, শহীদ শব্দটা মুসলমানদের জন্যই প্রযোয্য।  


   *** এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা অনুসারে: এখানে বলা হয়েছে এটা একটা ইসলামিক পদমর্যাদা। আরও বলা হয়েছে শহীদ শব্দটার অর্থ সাক্ষ্য প্রদানকারীর মৃত্যু। (যার ব্যাখ্যা কুরআন ও হাদিস দ্বারা সুস্পষ্টভাবে পরবর্তীতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে)

   --- সুতরাং, শব্দটা মুসলমানদের জন্যই প্রজোয্য। 


   *** উইকিপিডিয়া অনুসারে: শহীদ শব্দটি হল একটি এরাবিক শব্দ, ইহা এসেছে কুরআনিক এরাবিক শব্দ হিসেবে। ইহার অর্থ হল সাক্ষ্য দানকারী। এই সম্মানসূচক শব্দটা কেবল সে সব মুসলমানের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় যারা তাদের জীবন সম্পূর্নরুপে ধর্মীয় নির্দেশনার (যারা সাক্ষ্য দেয় আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মহানবী স: আল্লাহর একমাত্র রসূল) কাজে উৎসর্গ করেছেন অথবা তাদের দেশ অথবা পরিবারের জন্য জীবন দিয়েছেন। 

 এখানে আরও বলা হয়েছে শহীদ কথাটা দ্বারা witness (অর্থাত সাক্ষ্যদানকারী - যারা সাক্ষ্য দেয় আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মহানবী স: আল্লাহর একমাত্র রসূল এবং এই সাক্ষ্য রক্ষার্থেই নিহত হয়) বুঝায়, কিন্তু এটা কখনই martyr সূচিত করে না। কিন্তু পরবর্তীতে আরব খ্রীষ্টান, সাউথ এশিয়ান হিন্দু আর শিখরা তাদের martyr দের চিহ্নিত করতে আর সম্মানসূচক কোন সমার্থক শব্দ না পেয়ে তারাও শহীদ বা 'shaheed শব্দের ব্যবহার শুরু করে। 


  [এখানে আরও বলে রাখা দরকার শহীদ শব্দটা নিজস্ব অলংকারিক আরবী শব্দ, ইহার ব্যকরনগত তাৎপর্য আমাদের বুঝতে হবে। শহীদ শব্দকে বুঝাতে witness আর martyr শব্দদ্বয় ব্যবহার করা হয়। শহীদ শব্দটা কখনই এই শব্দদ্বয় থেকে আসে নি বরং এই শব্দ দুটিই শহীদের তাৎপর্য বুঝাতে ব্যবহার করা হয় (যদিও এই দুটি শব্দ দ্বারাও পুরোপুরি তাৎপর্য প্রকাশ পায় না) - দি ফার্ষ্ট এনসাইক্লোপিডিয়া অব ইসলাম।]


   --- সুতরাং, শহীদ হল কুরআনিক এরাবিক শব্দ - তাই এটাতে মুসলমানদেরই স্বত্তাধিকারি বলা চলে। খ্রীষ্টান, সাউথ এশিয়ান হিন্দু আর শিখরা এই শব্দ ব্যবহার করেন সমমানের শব্দ খুজে না পেয়ে। আর তাই তারা কুরআনিক শব্দ শহীদ ব্যবহার করেছেন। 


   *** দি ফার্ষ্ট এনসাইক্লোপিডিয়া অব ইসলাম, ভলিউম - ০৭, পৃষ্টা – ২৫৯, ২৬০: এখানে বলা হয়েছে শহীদ শব্দটা প্রায়ই কুরআনে ব্যবহার করা হয়। এই বইয়ে ইহার অর্থ প্রকাশের জন্য witness আর martyr ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে আবার বলা হয়েছে যে martyr দ্বারা এ শব্দের অনুরুপ বা সমান্তরাল কোন অর্থ প্রকাশ পায় না। 

   --- সুতরাং, শব্দটা মুসলমানদের জন্যই প্রজোয্য। 


 উপরের তথ্য-প্রমান আর রেফারেন্সের ভিত্তিতে আমরা বলতে পারি যে শহীদ শব্দটা কেবল মুসলমানদের জন্যই প্রজোয্য। উপরে যে সব রেফারেন্স ব্যবহার করা হয়েছে তার বেশীর ভাগই অমুসলিমদের তৈরীকৃত। যেহেতু মুসলমানরাই শহীদ শব্দটার স্বত্তাধিকারী এবং মুসলমানরা যেহেতু কুরআন-সুন্নহ-হাদীস মেনে চলে সেহেতু কুরআন আর হাদিস যদি বলে অমুসলীমদের শহীদ বলা যাবে তাহলে আমরা তাকে শহীদ বলব আর কুরআন-হাদীস যদি বলে অমুসলীমদের শহীদ বলা যাবে না তাহলে আমরা তাই মেনে নিব। আসুন এবার কুরআনিক আর হাদিসের মাধ্যম বিশ্লেষন করি আসলেই অমুসলীমরা শহীদ কিনা।


  কুরআন বলছে:   


আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে তারাই তাদের পালনকর্তার কাছে সিদ্দীক ও শহীদ বলে বিবেচিত। তাদের জন্যে রয়েছে পুরস্কার ও জ্যোতি এবং যারা কাফের ও আমার নিদর্শন অস্বীকারকারী তারাই জাহান্নামের অধিবাসী হবে। - (Al-Hadid: 19) 


  [আমরা জানি অমুসলীম মানেই আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি অবিশ্বাস, সুতরাং তারা কোনভাবেই শহীদ বলে বিবেচিত হবে না।] 


  আর যারা আল্লাহর রাহে নিহত হয়, তাদেরকে তুমি কখনো মৃত মনে করো না। বরং তারা নিজেদের পালনকর্তার নিকট জীবিত ও জীবিকাপ্রাপ্ত। (Al-i-Imran: 169)    

  যারা আল্লাহর পথে গৃহ ত্যাগ করেছে, এরপর নিহত হয়েছে অথবা মরে গেছে; আল্লাহ তাদেরকে অবশ্যই উৎকৃষ্ট জীবিকা দান করবেন এবং আল্লাহ সর্বোৎকৃষ্ট রিযিক দাতা। (Al-Hajj: 58) 


  আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝ না। (Al-Baqara: 154) 


  তা এই যে, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং আল্লাহর পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ও জীবনপণ করে জেহাদ করবে। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম; যদি তোমরা বোঝ। (As-Saff: 11)    


শহীদ কাকে বলে, নীচের হাদিস তার প্রমান -   

- হযরত সাঈদ বিন যায়েদ থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন-”যে ব্যক্তি (মুসলমান) নিজ সম্পত্তি রক্ষায় নিহত হয় সে শহীদ। যে ব্যক্তি নিজ পরিবার রক্ষায় নিহত হয় সেও শহীদ। অথবা প্রাণ রক্ষায় কিংবা দ্বীন রক্ষায় নিহত হয় সেও শহীদ। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৪৭৭৪, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৬৫২) 


   - হযরত জাবের বিন আতীক রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন - আল্লাহর পথে মৃত্যুবরণ করা ছাড়াও সাত প্রকার শহীদ রয়েছে। ১-মহামারীতে মৃত্যুবরণকারী শহীদ। ২-পানিতে নিমজ্জিত শহীদ। ৩-শয্যাশায়ী অবস্থায় মৃত শহীদ। ৪-পেটের রোগ মৃত্যুবরণকারী শহীদ। ৫-আগ্নিদগ্ধ ব্যক্তি শহীদ। ৬-যে ব্যক্তি ধ্বংসাবশেষের নিচে পড়ে মারা যায় সেও শহীদ। ৭-সন্তান প্রসব করতে মারা যাওয়া নারীও শহীদ। {মুয়াত্তা মালিক, হাদিস নং-৫৫৪, ৮০২, আল মু’জামুল কাবীর, হাদিস নং-১৭৮০, সহীহ কুনুজু সুন্নাতিন নাবাবিয়্যাহ, হাদিস নং-২৩}


  শহীদ কাকে বলে? 


শহীদ বলা হয় ঐ ব্যক্তিকে, যাকে কাফেররা হত্যা করে যেকোন কারণেই হোক। অথবা ইসলামী খিলাফতের বিরুদ্ধাচরণকারী, অথবা ডাকাত, অথবা স্বীয় বাড়িতে চোর হত্যা করে, অথবা যাকে কাফেরদের সাথে অনুষ্ঠিত জিহাদের ময়দানে পাওয়া যায়, সাথে সাথে তার গায়ে থাকে কাটার দাগ, বা ক্ষত কিংবা পোড়ার চিহ্ন, কিংবা চোখ বা কান থেকে রক্তক্ষরণ অবস্থায়, মুখ বা কান থেকে নয়। {কেননা কান বা মুখ থেকে আঘাত ছাড়াও রক্ত বের হতে পারে} অথবা যাকে হত্যা করেছে কোন মুসলমান ইচ্ছেকৃত জুলুম করে, ভুল করে নয়। হত্যা করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভার দিয়ে নয়।উক্ত ব্যক্তির নাম শহীদ। তাকে শহীদ এজন্য বলা হয় যে, সে জান্নাতে উপস্থিত হয়ে যায়। {ফিক্বহুল ইবাদাত, কিতাবুস সালাত, ১০ম অধ্যায়, জানাযা-১/১২৩}


  সারাংশ -  

১. পরবর্তীতে আরব খ্রীষ্টান, সাউথ এশিয়ান হিন্দু আর শিখরা তাদের তাদের martyr দের চিহ্নিত করতে আর সম্মানসূচক কোন শব্দ না পেয়ে তারাও শহীদ বা 'shaheed শব্দের ব্যবহার শুরু করে।

 


  ২. উপরোক্তো আলোচনার ভিত্তিতে ৭১ এর অমুসলীম মুক্তিযোদ্ধাদেরকে যদি শহীদ বলা হয় তাহলে মানতে হয় যে মুসলমান হিসেবে নয় বরং অন্যান্যদের মত অমুসলিম হিসেবে এই শব্দের ব্যবহার করা হয়েছে। অমুসলিম হিসেবে যদি শহীদ ব্যবহার করা হয় তাহলে তার জানাযার নামাজ পড়া, কবর জেয়ারত ও ফাতেহা অযৌক্তিক। আসলে তিনি মুসলিম না অমুসলিম? সুতরাং তারই ইথিকস ও ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী জানাযার নামায পড়া আর শহীদ শব্দের ব্যবহার করা তার জন্যই অপমানজনক। 


  ৩. আরবি শহীদ শব্দটি কখনই ইংরেজি martyr বোঝায় না। শহীদ শব্দটা একটা মৌলিক শব্দ যেটা কুরআন থেকে এসেছে অন্য কোন শব্দ থেকে নয়। ইংরেজী শব্দটি আরও অনেক আগে থেকেই ছিল, কিন্তু সেটা দ্বারা ততখানি সম্মান বুঝানো সম্ভব হয় নি যতটা শহীদ দ্বারা বুঝানো যায়। তাই পরবর্তীতে তারা কুরআনের এই শব্দকে ধার করে। সুতরাং নিশ্চই এই শব্দের প্রয়োগ ও সম্মান তার চাইতে অনেক বেশী। এখানে তারা ধার করেছে বলে যে শহীদ শব্দের মান কমে গেছে তা নয়। তারা শব্দ পাই নি বলে ধার করেছে, তাই বলে শহীদ শব্দটি দায়ী নয়।


  ৪. একই ভাবে 'শহীদ' বাংলা শব্দের ক্ষেত্রে বলা যায় বাংলা শব্দটিও ধার করেছে। ঠিক আছে এটা এখন আমাদের নিজের পরিভাষা, কিন্তু পরিভাষাটার সম্পূর্ন সমার্থক অর্থ আমরা পাই নি বলে তার অপপ্রয়োগ করব তা তো হতে পারে না । মরনের ক্ষেত্রে - শহীদ শুধু একটাই না বাংলায় বুঝানোর জন্য কিন্তু আরও সমার্থক শব্দ আছে যেমন- আত্মউৎসর্গ, জীবনাহুতী, মৃত্যু, নিহত, পটল তোলা, মারা যাওয়া ইত্যাদি। আপনি এক্ষেত্রে যদি শহীদ শব্দ ব্যবহার করেন তাহলে যারা আসলেই শহীদ হয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে কি ব্যবহার করবেন? সুতরাং যেই ব্যক্তি যে শব্দ পাবার যোগ্য তার ক্ষেত্রে সে শব্দই প্রয়োগ করা উচিত।


৭১ এর সকল মুক্তিযোদ্ধা যারা দেশের জন্য আত্মউৎসর্গ করে গেছেন তারা সবাই ই অবশ্যই অধিক ও বিশেষ সম্মানের পাত্র, তাদের সবাইকে যথাযত সম্মান প্রদর্শন করা প্রতিটি নাকরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য।


কিন্তু ফেডরিক, কেনান, নেতানিয়াহু, রাম, কৃষ্ণ, মহাদেব, আহমদ ও মোহাম্মদ নামের এদেশের সকল নিহিত মুক্তিযোদ্ধাকে শহীদ বলা কতটুকু যুক্তিসংগত?


........ লিখাটির তথ্য ও সূত্র কোরআন, হাদিস, ডিকশেনারি, নানা বইপুস্তক ও অনলাইন তথ্যভান্ডার হতে সংগ্রহিত।

Popular posts from this blog

Déjà Rêve: স্বপ্ন যখন বাস্তব

 Déjà Rêve: স্বপ্ন যখন বাস্তব ↓ স্বপ্ন আমাদের মস্তিষ্কের সৃষ্ট কিছু চিত্র বা গল্প যা আমরা ঘুমের ভিতর মনের অবচেতনে দেখি। ঘুমের যেকোন পর্যায়ে আমরা স্বপ্ন দেখতে পারি। তবে সাধারণত ঘুমের REM (rapid eye movement) পর্যায়ে আমরা বেশি স্বপ্ন দেখি কারণ তখন আমাদের মস্তিষ্ক সবচেয়ে বেশি সচল থাকে। "দেজা রেভে" হল আপনি যা আগে কখনো স্বপ্ন দেখেছেন তা পুনরায় বাস্তবে দেখা। এর মানে, আপনি বর্তমানে যা চোখের সামনে দেখছেন তা একটি স্মৃতি এবং আপনি আগে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটার অনুরূপ কিছু বাস্তুবে দেখাকে দেজা রেভে বলে। অনেকেই মনে করেন যে দেজা রেভে হলো দেজা ভ্যূ এর বিপরীত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেজা রেভে হলো লুসিড ড্রিমিং এর বিপরীত এবং দেজা ভ্যূ এর অনুরূপ। ২০১৮ সালে ব্রেইন স্টিমুলেশন গবেষকরা বলেন যে দেজা রেভে সাধারণত আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা না বুঝার জন্য হতে পারে। ফরাসি দলটি দেজা রেভে এর উপর স্পষ্ট ধারণা পাওয়ার জন্য আরো পরীক্ষানিরীক্ষা করতে থাকেন। এই পরীক্ষার মাধ্যমে তারা দেখতে পান যে ১৯৫৮ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দেজা রেভে হওয়া সবাই আংশিকভাবে মৃগীরোগে আক্রান্ত ছিলো। সাধারণত মৃগী রোগীদের চিকিৎসায় ইলেকট্রিক ব্র...

বাংলার বারুজীবী বৃত্তান্ত

একসময় পান সুপারি দিয়ে নেমন্তন্ন করার প্রথা ছিল গ্রাম বাংলায়। তারপর ভোজের শেষে মুখুশুদ্ধি হিসেবেও পানের ব্যবহার ছিল তখন ।পান রাঙ্গা ঠোঁট ছিল আজকের সুন্দরীদের লিপস্টিক এর বিকল্প। আর এই পানের চাষ ও বিক্রির সঙ্গে যারা যুক্ত ছিলেন তাদের বলা হতো বারুজীবি বা বারুই। পশ্চিমবঙ্গে হাওড়া ,হুগলি ও বীরভূম জেলার সদর শহর সিউড়িতে রয়েছে বারুইপাড়া ।এছাড়া দুই মেদনীপুর সহ অন্যান্য জেলাতেও কমবেশি এই সম্প্রদায়ের লোক বাস করে। একেবারে নিরীহ শান্ত সৌম্য ভীতু প্রকৃতির সম্প্রদায় ।তবে শৈল্পিক চিন্তাধারা বিশেষভাবে ফুটে ওঠে এই সম্প্রদায়ের। উৎপত্তি - বারুজিবী জাতির উৎপত্তি সম্পর্কে একটি প্রচলিত লোককথা রয়েছে ।সেখানে বলা হয়েছে এক শিব ভক্ত ব্রাহ্মণ ছিলেন ।তিনি প্রতিদিন শিব পূজা করতেন। কিন্তু, তার আরো অনেক কাজ ছিল ।যেমন যেমন পান চাষ, কাপড়বোনা প্রভৃতি।ব্রাহ্মণের বেশিরভাগ সময় চলে যেত ওই কাজে।তারপর কোন এক সময় পেলে শিবের মাথায় দুই একটি ফুল ছুঁড়ে কর্তব্য সারতেন। এসব দেখে শিব ঠাকুর তাকে আন্তরিকভাবে শুধুমাত্র তার পূজা করতে বললেন। এবং আরো জানিয়ে দিলেন তা করলে তার কোন অভাব থাকবে না। কিন্তু, ব্রাহ্মণ সে ...

হিন্দু বিরোধী, বৈষম্যমূলক OBC আইন

২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসে। আর তারপরই রাজ্যের তথাকথিত পিছিয়ে পড়া (?) মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য কল্পতরু হয়ে ওঠেন মমতা ব্যানার্জি। মুসলিমদের জন্য নানা রকম সুযোগ সুবিধা দিতে থাকেন। আর সেই সময় চুপিসারে ২০১২ সালে পাস হয়ে যায় একটি আইন- “ The West Bengal Backward Classes (Other than Scheduled Castes and Scheduled Tribes) (Reservation of Vacancies in Services and Posts) Act, 2012,”  🔴কি ছিল সেই আইনে? আইন অনুযায়ী OBC ( Other Backward Classes ) কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়; OBC-A এবং OBC-B । আর এইভাবে রাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের ঢালাও সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ দিয়ে দেওয়া হয়। আর সেই সংরক্ষণ দেওয়া হয় পিছিয়ে পড়া হিন্দুদের কোটার ভাগ কেটে। এখানে উল্লেখযোগ্য, OBC-তে হিন্দুরা যে সংরক্ষণের সুবিধা লাভ করতেন, তা পিছিয়ে পড়ার মাপকাঠিতে। তাছাড়া, সংরক্ষণ তালিকায় তাদের জাতির সঙ্গে হিন্দু কথা লেখা থাকতো না। কিন্তু OBC-A এবং OBC-B ক্যাটাগরিতে  যাদের পিছিয়ে পড়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে তাদের জাতির পাশে পরিষ্কার ‛মুসলিম’ কথা...