ওড়িশাতে অক্ষয় কুমারের 'বচ্চন পান্ডে' সিনেমা বন্ধ করে দিলো বজরং দল
প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী ওড়িশার থিয়েটারে অক্ষয় কুমারের বচ্চন পান্ডে সিনেমা চলছিলো । তখনই বজরং দলের কার্যকর্তারা সেখানে পৌঁছায় এবং থিয়েটারের মালিককে সিনেমা বন্ধ করার হুমকি দেয়। এরপর পিছনে কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে - বচ্চন পান্ডে সিনেমায় খারাপ চরিত্রে ব্রাহ্মণ নামের ব্যবহার করা হয়েছে, যার জন্য অনেক আগেই সিনেমা বয়কট করার ডাক দিয়েছেন হিন্দুরা। তাই পরিস্থিতি বুঝেই অক্ষয় কুমার 'কাশ্মীর ফাইলস' নিয়ে মন্তব্য করে হিন্দুদের আবেগকে টানার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্ত সেই চেষ্টায় কোনো লাভ হলো না। শেষমেশ যা হওয়ার তাই হলো। বয়কটের পথে বচ্চন পান্ডে!
বজরং দলের কর্মীদের দাবি ওই সিনেমা হলের মালিক কাশ্মীর ফাইলস সিনেমার অনেক অংশ কেটে বাদ দিয়ে দিচ্ছেন এবং কাশ্মীর ফাইলস সিনেমার বদলে অক্ষয় কুমারের বচ্চন পান্ডে সিনেমা চালাচ্ছেন তাই এবার বচ্চন পান্ডে সিনেমাকেই বয়কট করার পথে হিন্দুরা।
মুসলমান মেয়েকে ভালোবাসাই হল কাল : বাড়ি ফিরলো না ধোনীস্বরণ
পুলিশ জানায় ওই ছাত্র এক মুসলমান মেয়েকে ভালোবাসতো। কিন্ত ওই মেয়েটির মা বাবা এই সম্পর্কের বিরোধী ছিলেন। পুলিশের বক্তব্য সম্ভবত ওই মেয়েটির পরিবার ছেলেটিকে খুন করেছে ।
গত বছর অক্টোবরেও এই একইরকম ঘটনা ঘটেছিলো। কর্নাটকের বিজাপুরে এক মুসলমান মহিলার সাথে সম্পর্কের কারণে হিন্দু যুবক রবি নিম্বারগী কে হত্যা করেছিলো। বাড়ি থেকে বাজার করতে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি রবি। পরেরদিন কুঁয়ো থেকে তার দৈহিক উদ্ধার হয়।
চায়ের পয়সা চাওয়ায় সেবারাম কে খুন করলো মুনব্বর, মোজিম ও মুশারফ
উত্তর প্রদেশের বরেলিতে ধাবার মালিক সেবারাম গঙ্গোয়ার চায়ের পয়সা চেয়েছিলেন। টাকা দিতে অস্বীকার করে এই চার ব্যাক্তি। শুরু হয় বচসা। তখনই এই ঝামেলার সুযোগ নিয়ে মুনব্বর, মোজিম, মুশারফ মিলে ছুড়ির কোপে হত্যা করে সেবারাম গঙ্গোয়ারকে।
শিবভক্ত খুশি আহমেদ !
2021 সালের 20 মার্চ মুসলমান ভিড় সরায় কালে খাঁ বস্তিতে ঢুকে আক্রমণ চালায়। আক্রমনের কারণ ছিলো খুশি আহমেদ। তারপর অনেকদিন কেটে গেছে। সুমিত কে বিবাহ করার পর খুশির জীবন সম্পূর্ণ বদলে গেছে। খুশি এখন শিবভক্ত।
গেরুয়া উত্তরীয় পড়ে দেখা যাবে না সিনেমা, মহিলাদের পথ আটকালো গার্ড
ঘটনাটি ঘটনাটি মহারাষ্ট্রের কানপুরের। যেখানে কিছু মহিলা যখন গেরুয়া উত্তরীয় পড়ে সিনেমা হলে যায় তখন ওই হলের গার্ড তাদেরকে বাধা দেয়। তাদের বক্তব্য সিনেমা দেখতে হলে প্রথমে গেরুয়া উত্তরীয় খুলতে হবে তবেই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। ওই মহিলারা প্রথমে গার্ডকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, কিন্ত গার্ড মানতে না চাওয়ার শেষমেশ হাতাহাতিতে পৌঁছে যায়।
ওই মহিলাদের মধ্যে একজন জানান "মহিলা মন্ডলের সকলেই গেরুয়া উত্তরীয় পড়েছিলেন। কিন্ত এই গেরুয়া উত্তরীয় পড়ার কারণেই তাদেরকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না"
অন্য একজন মহিলার বক্তব্য " একটি গ্রুপের তরফ থেকে তাদেরকে সিনেমা দেখানো হচ্ছিলো। যেহেতু এই গ্রুপের কোনো নিজস্ব প্রতীক বা লোগো নেই তাই গ্রুপের সদস্যদের চিহ্নিত করার জন্যই উত্তরীয় করা হয়েছিল, অন্য কোন উদ্দেশ্য এর মধ্যে ছিল না।
কর্ণাটকের পর এবার বাংলাদেশেও নিষিদ্ধ বোরখা!
নোয়াখালীর স্কুলে হিজাব পরে ছাত্রীদের ঢোকা নিষিদ্ধ করল স্কুল কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাবকে কেন্দ্র করে এক নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের নোয়াখালীতে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের হিজাব পরাকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ দ্বারা পেশ করা নোটিশে বলা হয়, বিদ্যালয়ের ভেতর কেউ তাদের মুখ ঢাকতে পারবে না। যদিও পরে এই নোটিশটি কর্তৃপক্ষ দ্বারা সরিয়ে নেওয়া হলেও বিতর্ক থামতে চায় না এবং ঘটনাটি ঘটার প্রায় দুই সপ্তাহ পরেও এখনো প্রতিবাদ চালাচ্ছে একদল মানুষ। বিদ্যালয়ের সামনে তারা একাধিকবার বিক্ষোভ করেছে বলে জানা গিয়েছে।
এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, একটি ভ্রান্ত ধারণাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে এ বিতর্ক। তবে তাদের এসকল কথা শুনতে নারাজ বিক্ষোভকারীরা। স্থানীয় এক পুলিশকর্মীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন যে, আসলে স্থানীয় এবং আশেপাশের এলাকা থেকে বহু মানুষ তাদের মুখ ঢেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করছিল। ফলে বিদ্যালয়ের ভিতরে প্রবেশ করা স্টুডেন্টরা আদেও সেখানকার নাকি বহিরাগত, কেউ তা বুঝে উঠতে পারছিল না। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেই কারণে আদেশ দেয় যে কেউ মুখ ঢেকে রাখবে না, তাহলে সহজেই চিহ্নিত করা যাবে আসল স্টুডেন্টদের। সেই নিয়েই সৃষ্টি হয়েছে এই বিতর্ক।
বিহারের ভাগলপুরে এক হিন্দু মেয়ের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করায় বাবা-ছেলেকে পিটিয়ে মারলো মুসলমানরা।
The Kashmir Files দেখে অনেকেই The Bengal Files দাবি করছেন। তারা অনেকেই জানেন না The Calcutta Killings মানে BENGAL FILES এর ওপর পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ফিল্ম বানিয়েছে হিন্দু সংগঠন "জাতির কথা" এবং গতবছর YouTube এ তাদের চ্যানেলে এই ছবি রিলিজও করেছে ।
সেই রোমহর্ষক, বেদনাদায়ক মুহূর্তগুলি আপনি দেখতে পারেন এই লিঙ্কে https://youtu.be/QTzF4Yv6yIk
এবার, The Kerala Files!
32000 মহিলার পাচার ধর্মান্তরন, কেরালা কে মুসলমান রাজ্য বানানোর ষড়যন্ত্র এসবের উপর ভিত্তি করে তৈরী হচ্ছে The Kerala Files. Release করা হলো treasure...
"आंध्रप्रदेश में मंदिरों की व्यवस्था में अहिंदुओं का दखल, हिन्दूद्रोही मौलवी व पादरियों को हिंदुओं के पैसों से ही वेतन व भक्तों पर अनुचित बंदिशें अस्वीकार्य "- VHP
"পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেক হিন্দুদের নিজস্ব বন্দুকের লাইসেন্স দেওয়া হোক" - টি রাজা সিং
যদিও রাজা সিং ভুল তথ্য পেয়েছেন, তবুও প্রত্যেক হিন্দুর জীবন রক্ষার জন্য নিজস্ব বন্দুকের লাইসেন্স দরকার। জিহাদের হাত থেকে বাঁচার জন্য নিজস্ব বন্দুকের দরকার। এটাই সত্য।
হিন্দু যুবা বাহিনী গান্ধীধাম দ্বারা কালকের মতো আজও আদিপুর হলের সমস্ত টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা করা হলো। এবং মাত্র 50 টাকার বিনিময়ে The Kashmir Files সিনেমা দেখানো হলো।
পাকিস্তানের হিন্দু রিফিউজি দের The Kashmir Files সিনেমা দেখালেন মনোজ তিওয়ারি
লাভ জিহাদ
গত 24 ঘন্টায়
1. মধ্যপ্রদেশ - ইন্দৌর - নাবালিকা হিন্দু মেয়ে - উমেদ খান-জোরপূর্বক ধর্ম পরিবর্তন, যৌন শোষণ
2. মধ্যপ্রদেশ - খন্ডবা- হিন্দু যুবতী- অজমদ খান (রাহুল শর্মা সেজে)- প্রেমজাল, যৌন শোষণ
3. উত্তরাখণ্ড- হরিদ্বার -হিন্দু যুবতি - অজহার (সোনু সেজে)-প্রেমজাল, যৌন শোষণ
4. রাজস্থান - আজমের- হিন্দু যুবতি - আরশাদ খান - Instagram এ বন্ধুত্ব- গ্যাংরেপ- চাকু দিয়ে হত্যা
রোহিঙ্গা গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিল আমেরিকা, মায়ানমারের উপর চাপ বৃদ্ধি ওয়াশিংটনের
Collected Post : রোহিঙ্গা (Rohingya) গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিল আমেরিকা। মায়ানমারের উপর চাপ বাড়িয়ে মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন যে রোহিঙ্গাদের উপর চরম অত্যাচার চালিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে বার্মিজ সেনাবাহিনী।
সোমবার ওয়াশিংটনের হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম পরিদর্শনের পর ব্লিঙ্কেন বলেন, “সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মায়ানমারের সেনাবাহিনীর চালানো হিংসা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল বলে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই প্রথম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনীর অত্যাচারকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিল আমেরিকা। মার্কিন বিদেশ সচিব ব্লিঙ্কেন গত বছরের ডিসেম্বরে মালয়েশিয়া সফরের সময় বলেছিলেন, “রোহিঙ্গাদের প্রতি মায়ানমারের আচরণ গণহত্যা কি না, তা খুবই সক্রিয়ভাবে খতিয়ে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র।”
২০১৭ সালে মায়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর নৃশংস দমন-পীড়নের মুখে ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা প্রাণভয়ে দেশ থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এরআগে চার লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। শরণার্থী শিবিরে জন্ম নেওয়া একলক্ষ রোহিঙ্গা শিশু-সহ বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা এখন ১২ লক্ষ। এর ফলে বাংলাদেশের (Bangladesh) অর্থনীতির উপর বিপুল চাপ পড়ছে।
এদিকে, রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত রাষ্ট্রসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা চলছে। দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ২০১৯ সালে মামলাটির প্রাথমিক শুনানি শুরু হয়। মায়ানমারের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের নভেম্বরে আইসিজেতে মামলাটি করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। রাষ্ট্রসংঘের একটি ‘ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন’ ২০১৮ সালে এই উপসংহারে পৌঁছায় যে মায়ানমার সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযানে ‘গণহত্যামূলক কাজ’ অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে তখন ওয়াশিংটন এই নৃশংসতাকে ‘জাতিগত নির্মূল’ হিসেবে অভিহিত করেছিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে এই শব্দবন্ধের কোনও আইনগত সংজ্ঞা নেই।
BISপন্থা
Culture of Hindus
অতীত ইতিহাস: ন্যায়-ঘন্টা
মাদ্রাজ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে রয়েছে রাজা এল্লালানের এক সুবিশাল মূর্তি, যার সামনে পড়ে রয়েছে একটি মৃত শিশু এবং একটি মৃত বাছুর। জানেন কি, কে ছিল এই এল্লালান? কেন হাইকোর্টের মতো জায়গায় তাঁর এই অদ্ভুত মূর্তি প্রতিষ্ঠিত? আসুন, জানি এক আশ্চর্য কাহিনী!
দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের তাঞ্জোরের নিকটবর্তী একটি ছোট শহর হল তিরুভারুর। চোল রাজবংশের অনেক রাজারাই তাদের রাজধানী প্রতিষ্ঠা করেন এই তিরুভারুরে এবং সেখানে রাজত্ব করেন। এদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা খ্যাতিমান ছিলেন 'এল্লালান' বা 'মনু নীতি চোলা' যিনি খ্রীষ্টপূর্ব ২০৫ থেকে ১৬১ পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন। রাজা এল্লালান ছিলেন অত্যন্ত ধার্মিক এবং তিনি সকলের সঙ্গে সম আচরণ করতেন। সকলের জন্য তাঁর বিচার ছিল নিরপেক্ষ এবং ন্যায্য। তাঁর রাজত্বে প্রজারা যাতে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হয় একারণে তিনি তাঁর রাজদরবারে একটি ঘন্টা বেঁধে রেখেছিলেন। ন্যায়বিচার প্রার্থী যে কেউ সেই ঘন্টাটি বাজাতে পারত এবং রাজা স্বয়ং উপস্থিত থেকে অভিযোগকারীর বক্তব্য শুনে তাঁকে ন্যায় বিচার প্রদান করতেন। মহিমান্বিত রাজা এল্লালানের রাজত্বে সকল মানুষ থেকে শুরু করে পশু-পাখিরা পর্যন্ত শান্তিতে ও সুখে জীবনযাপন করত।
রাজা এল্লালান দীর্ঘদিন পর্যন্ত নিঃসন্তান ছিলেন, একারণে তিনি ভগবান শিবের কাছে প্রার্থনা করেন এবং অবশেষে একটি পুত্রসন্তান লাভ করেন। রাজপুত্রের নামকরণ করা হয় 'বিধি বিদঙ্গন'। বিদঙ্গন তাঁর পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ক্রমশ ধার্মিক হয়ে ওঠেন। পিতার প্রতি তাঁর ছিল অসীম শ্রদ্ধা। পশুপাখিদের তিনি এত পছন্দ করতেন যেন মনে হত এরা তাঁর ভাইবোন। পিতার মতোই তিনি সবার প্রতি স্নেহ ও কোমলতার সঙ্গে আচরণ করতেন।
একদিন রাজপুত্র বিদঙ্গন তাঁর রথে চড়ে নগর পরিক্রমা করছিলেন, এই সময়ে একটি ছোট্ট বাছুর আচমকাই তাঁর রথের চাকার নিচে পড়ে যায় এবং চাকায় পিষ্ট হয়ে মর্মান্তিকভাবে বাছুরটির মৃত্যু ঘটে। আকস্মিক ঘটে যাওয়া এই দূর্ঘটনায় রাজপুত্র বিদঙ্গন অত্যন্ত মর্মাহত হয় এবং এই ঘটনা তার ঈশ্বরতুল্য পিতার কানে গেলে কি হতে পারে তা ভেবে বিচলিত হয়ে পড়ে। ইতিমধ্যে বাছুরটির মা তার সন্তানকে খুঁজতে খুঁজতে দুর্ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় এবং তার স্নেহের সন্তানের এই অবস্থা দেখে বুকফাটা হাহাকার করতে থাকে। সন্তানহারা মা গরুটির শোক এবং করুণ বিলাপ দেখে উপস্থিত সকলের চোখে জল এসে যায়। মা গরুটি এই সময়ে ছুটতে ছুটতে রাজদরবারে পৌঁছায় এবং রাজদরবারে প্রতিষ্ঠিত 'ন্যায়ের ঘন্টা' ক্রমাগত বাজাতে থাকে। রাজা এল্লালান ঘন্টার শব্দ শুনে দরবারে পৌঁছে গরুটিকে দেখে বিস্মিত হন এবং দরবারে উপস্থিত প্রতক্ষ্যদর্শীদের কাছে সমস্ত ঘটনাবলি জানতে পারেন। ঘটনার বিবরণ শুনে এল্লালান চরম শোকে পাথর হয়ে যান। তিনি কেবলই ভাবতে থাকেন, কি করলে এই সন্তানহারা, শোকগ্রস্ত মা গরুটিকে উপযুক্ত সান্ত্বনা দেওয়া যায়। তাঁর নিজের একমাত্র পুত্র এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত হবার কারণে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা এল্লালানের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। অবশেষে সব দ্বিধা দূরে সরিয়ে এল্লালান ঘোষণা করেন যে, অভিযুক্তকে একই ভাবে রথের চাকার নিচে পিষ্ট করে মারা হবে যাতে বাছুরটি যতটা কষ্ট পেয়ে মারা গিয়েছে অভিযুক্তও যেন ঠিক ততটাই কষ্ট পেয়ে মারা যায়। কিন্তু রাজার এই আদেশ পালনে কেউ সম্মত না হওয়ায় এল্লালান স্বয়ং রথের রশি হাতে নেন এবং তাঁর একমাত্র পুত্রকে সকল জনগনের সামনে রথের চাকায় পিষ্ট করে হত্যা করেন।
যদিও রাজা এল্লালান ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন কিন্তু একমাত্র পুত্রকে হত্যার আক্ষেপে তিনি নিজেকেও হত্যা করতে উদ্যত হন। এই সময়ে ভগবান শিব সেখানে আবির্ভূত হন এবং এল্লালান-কে আত্মহত্যা করা থেকে নিরস্ত করেন। ভগবান শিব বলেন যে, তিনি শুধুমাত্র এল্লালানের ন্যায়ের প্রতি নিষ্ঠার পরীক্ষা নিতে চেয়েছিলেন এবং সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের একমাত্র পুত্রকে বলিপ্রদত্ত করে এল্লালান সেই পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এরপরে ভগবান শিবের বরে সেই মৃত বাছুরটি এবং রাজপুত্র বিদঙ্গন, দুজনেই পুনর্জীবন লাভ করে। প্রজাদের মধ্যে রাজা এল্লালানের ন্যায়বিচার ও সাম্যের জয়জয়কার ধ্বনি উঠতে থাকে এবং সবকিছুর খুব সুন্দরভাবে পরিসমাপ্তি ঘটে।
উল্লিখিত কাহিনী কিছুটা অতিরঞ্জিত মনে হলেও রাজা এল্লালানের বাস্তবে উপস্থিতি ছিল এবং তাঁর উল্লেখ ইতিহাসে পাওয়া যায়। সেই সমস্ত ঐতিহাসিক প্রমাণ সমূহের উপর ভিত্তি করে এটা বলা যায় যে, ২০৫-১৬১ খ্রীষ্টপূর্ব সময়কালে এল্লালান নামক একজন সত্যবাদী, ন্যায়-নীতি পরায়ন চোল বংশীয় রাজা সত্যিই ছিলেন। তবে তাঁর রাজধানী তিরুভারুরে ছিল না, এল্লালান রাজত্ব করতেন তৎকালীন শ্রীলঙ্কার অনুরাধাপুরমে। তামিল চোল বংশের রাজা এল্লালানের উল্লেখ যতগুলি প্রাচীন গ্রন্থে পাওয়া যায় তারমধ্যে প্রাচীনতম, শ্রীলঙ্কার পুরাণ 'মহাবংশ' গ্রন্থে এল্লালানের (সিংহলি ভাষায় এল্লারা) ন্যায়পরায়ণতার কাহিনী বিশদে বর্ণিত হয়েছে। এল্লালানের আরেকটি নাম ছিল 'মনু নীতি চোলা' অর্থাৎ যিনি মনুর নীতি অনুসরণ করে চলেন। পরবর্তীতে ঘটনাচক্রে রাজা এল্লালান তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী দুতুগামুনু-র সঙ্গে এক যুদ্ধে নিহত হন। এই দুতুগামুনু নিজেই রাজা এল্লালানের একজন ভক্ত ছিলেন, একারণে ন্যায়পরায়ণ রাজার স্মরণে, তাঁর শেষকৃত্যের স্থানটিতে স্বয়ং দুতুগামুনু একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করিয়ে দেন। 'দক্ষিণা স্তুপ' নামক সেই স্মৃতিসৌধের ধ্বংশাবশেষ আজও শ্রীলঙ্কার অনুরাধাপুরম নগরে দেখতে পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, ২০১৭ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে চলা একটি মামলায়, আইন যে সবার জন্য সমান তা বোঝাতে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট রাজা এল্লালানের উল্লেখ করেন এবং বলেন আমাদের সবার উচিত তাঁর মতো মহান ব্যক্তিত্বের থেকে অনুপ্রেরণা গ্রহণ করা।
লেখা --দিলীপ মুখোপাধ্যায় পাথরঘাটা (নিউ -টাউন)
23●03●2022