Skip to main content

শিক্ষাব্যবস্থার সংকট ও উত্তরণ

Q. অনলাইন ক্লাসের ওপর ছাত্রদের কিভাবে আগ্রহী করে তোলা যায়? সারাদেশে অনলাইন ক্লাস কিভাবে ছড়িয়ে দেওয়া যায়? গ্রামে অনলাইনে সমস্যা থাকা সত্বেও ছাত্ররা কিভাবে অনলাইন ক্লাস করবে প্রবন্ধ রচনা। (২৫০ শব্দে)

উত্তর-
বিশ্ব চিরাচরিত যে শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত ছিল এবং বিগত দশকগুলোতে যে অগ্রগতির ধারায় এগুচ্ছিল, কোভিড-১৯-এর কারণে ব্যাপকভাবে তার  পরিবর্তন ঘটে। দীর্ঘকালের ধারাবাহিকতায় শিক্ষা ব্যবস্থার ধরন ও স্বরূপ বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত হয়েছে এবং ক্রমশ তার আধুনিকায়ন ঘটেছে। কিন্তু কোভিড-১৯-এর কারণে যে পরিবর্তন ঘটেছে তাতে নতুন প্রজন্মের আগামী শিক্ষাব্যবস্থার একটি সম্পূর্ণ নতুন পথ খুলে গেছে।

গত বছরের জুলাই পর্যন্ত ১৬০টিরও বেশি দেশের স্কুল বন্ধ ছিল। এতে ১০০ কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় মোট শিক্ষার্থীর ৯৪ ভাগ কোনো-না-কোনোভাবে ক্ষতির শিকার হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ৯০ ভাগই নিম্ন বা নিম্নমধ্য আয়ের দেশের শিক্ষার্থী।

শিক্ষাগ্রহণ প্রক্রিয়ায় একটা সময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সশরীরী উপস্থিতি ও চিন্তা-চেতনা-ভাবনার প্রকাশের মূল কেন্দ্র ছিল শ্রেণিকক্ষ। কিন্তু মহামারির এ ভয়াবহ সংকটে স্কুলে পৌঁছানো সম্ভব নয়। তাই শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক ক্ষতির মধ্য থেকেও তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধার্থে অভূতপূর্ব কিছু ধারণা উদ্ঘাটিত হয়েছে, শিক্ষা ব্যবস্থা কার্যকরি রাখতে নতুন নতুন কৌশল তৈরি হয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে একেবারে প্রান্তিক অঞ্চল পর্যন্ত ডিজিটাল শিক্ষা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষায় নতুন ধরনের অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হচ্ছে, নতুন নতুন বিভিন্ন পদ্ধতির উদ্ভাবন ঘটছে এবং তা শিক্ষার্থীদের প্রদান করাও এখন সম্ভব হচ্ছে। গতানুগতিক শিক্ষাব্যবস্থায় যে আমূল পরিবর্তন ঘটে গেছে, তা এখন আর অস্বীকার করার উপায় নেই। বরং সময়ের প্রয়োজনে পরিবর্তিত তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর এসব শিক্ষাপদ্ধতি সানন্দে গৃহীত হচ্ছে। 

কোভিড-১৯ এর প্রথম দিকে শিক্ষাব্যবস্থা যখন স্তব্ধ তখন শিক্ষকেরা বিভিন্ন পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের চেষ্টা করলেন। অনলাইন শিক্ষায় শহরের ছাত্ররা যতটা এগিয়ে গ্রামের ছাত্ররা ততটা নয়। তাই শিক্ষকেরা বুঝলেন ছাত্র এবং অভিভাবকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা দরকার। তৈরী করা হলো what's app group. এই গ্রুপের মাধ্যমে সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের একজোট করা হলো। স্কুলের তরফ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নির্দেশ দেন শিক্ষকেরা। প্রথম দিকে ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত ছবি বা PDF এর মাধ্যমেই Task দেওয়া হতো। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হল অনলাইন ক্লাসের। অনেক ছাত্রের-ই ধারণা ছিল না অনলাইন ক্লাস কি। তাই শিক্ষকেরা বিষয়টি বুঝিয়ে দিলেন এবং নির্দেশ দিলেন Google meets app ইনস্টল করার।  এভাবেই অনলাইন ক্লাসের সূত্রপাত হলো।



অনলাইন ক্লাসের মূল ব্যপারটাই হলো উপস্থাপনামূলক - এই উপস্থাপনা বা প্রেজেনটেশন ব্যপারটাই সবার আগে মাথায় রাখতে হবে। যদি উপস্থাপনা বা প্রেজেন্টেশন ব্যপারটা ছাত্রদের কাছে কমফোর্টেবল বা আনন্দদায়ক হয় তবেই তারা ক্লাসের প্রতি মনোযোগী হতে পারবে, নাহলে ছাত্ররা অমনযোগী বা অন্যমনস্ক হয়ে পড়বে। এই উপস্থাপনা জন্য কিছু বিষয়ের উপর নজর রাখা দরকার-
১| হুবহু বই না পড়িয়া গল্পচ্ছলে বোঝাতে হবে। তবেই ছাত্রদের আগ্রহ বাড়বে।
২| Visual/ Presentation দেখাতে পারলে ছাত্ররা আরো বেশি আগ্রহী হবে।
৩| বিভিন্ন প্রয়োজনীয় TLM এর ব্যবহার করতে হবে
৪| কথা বলার ধরন ছাত্রছাত্রীদের মনোযোগের উপর অনেকটাই প্রভাব ফেলে। শিক্ষকের জড়তা ছাত্রদেরকে ক্লাসের প্রতি অমনযোগী করে তোলে। তাই, কথা বলার সময় জড়তা পরিহার করে হাসিমুখে কথা বলতে হবে। 
৫| বিভিন্ন সংকেতচিহ্ন যেমন- হাত তোলা, হাসি, কান্না বা রাগের emoji ব্যবহার ছাত্রদের সাথে শিক্ষকের আবেগকে একসূত্রে বাঁধে । 
এভাবেই ছাত্রদের কে অনলাইন ক্লাসের প্রতি আগ্রহী করা যায়।

এই অনলাইন ক্লাসের ফলে গ্রামের ছাত্ররা কিছুটা বিপদের সম্মুখীন হয়। প্রথমত, মোবাইল না থাকা, দ্বিতীয়ত ইন্টারনেট ব্যবহারের অসুবিধা, তৃতীয়ত জড়তা। এইসব বাধাকে পার করে অনলাইনে সরগড় হওয়া গ্রামের ছাত্রদের পক্ষে এতটাও সহজ কাজ নয়, তবুও তারা একটু চেষ্টা করলেই সমস্ত বাধাকে অতিক্রম করতে পারবে।

ক্লাসে কোনো বিষয় বুঝতে না পারলে শিক্ষকের কাছে what's app এর মাধ্যমে জেনে নিতে পারে। কিংবা পরেরদিন ক্লাসে আগের দিনের না বোঝা বিষয়টি  বুঝে নিতে পারে। অথবা ফোন করে জেনে নিতে পারে।
ক্লাসে কোনো বিষয় বুঝতে না পারলে বন্ধুর কাছেও বুঝে নিতে পারে।
কাছে বাড়ি হলে নোট আদান প্রদান করতে পারে।
মোবাইল না থাকলে বন্ধুর মোবাইলে একসাথে ক্লাস করতে পারে।
ইন্টারনেটে সমস্যা হলে বন্ধুর বাড়ি গিয়ে একসাথে ক্লাস করতে পারে।

এইভাবে সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষাদান সম্ভব। 

Popular posts from this blog

হিন্দু বিরোধী, বৈষম্যমূলক OBC আইন

২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসে। আর তারপরই রাজ্যের তথাকথিত পিছিয়ে পড়া (?) মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য কল্পতরু হয়ে ওঠেন মমতা ব্যানার্জি। মুসলিমদের জন্য নানা রকম সুযোগ সুবিধা দিতে থাকেন। আর সেই সময় চুপিসারে ২০১২ সালে পাস হয়ে যায় একটি আইন- “ The West Bengal Backward Classes (Other than Scheduled Castes and Scheduled Tribes) (Reservation of Vacancies in Services and Posts) Act, 2012,”  🔴কি ছিল সেই আইনে? আইন অনুযায়ী OBC ( Other Backward Classes ) কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়; OBC-A এবং OBC-B । আর এইভাবে রাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের ঢালাও সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ দিয়ে দেওয়া হয়। আর সেই সংরক্ষণ দেওয়া হয় পিছিয়ে পড়া হিন্দুদের কোটার ভাগ কেটে। এখানে উল্লেখযোগ্য, OBC-তে হিন্দুরা যে সংরক্ষণের সুবিধা লাভ করতেন, তা পিছিয়ে পড়ার মাপকাঠিতে। তাছাড়া, সংরক্ষণ তালিকায় তাদের জাতির সঙ্গে হিন্দু কথা লেখা থাকতো না। কিন্তু OBC-A এবং OBC-B ক্যাটাগরিতে  যাদের পিছিয়ে পড়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে তাদের জাতির পাশে পরিষ্কার ‛মুসলিম’ কথা...

𝒯𝒽𝑒 𝐻𝒾𝓃𝒹𝓊𝓉𝓋𝒶 𝒟𝒶𝒾𝓁𝓎

||হিন্দুত্বের সারাদিন ||   ১|  জনপ্রিয়তার নিরিখে রাষ্ট্রনেতাদের মধ্যে ফের শীর্ষে মোদি, বলছে মার্কিন সমীক্ষা। মর্নিং কনসাল্টের সমীক্ষা অনুযায়ী, ১২ রাষ্ট্রপ্রধানকে পিছনে ফেলে জনপ্রিয়তার নিরিখে এবারও একনম্বরে নরেন্দ্র মোদি। তাঁর ঝুলিতে ৭৭ শতাংশ জনপ্রিয়তা।  আমেরিকার সংস্থা মর্নিং কনসাল্ট বিভিন্ন দেশের প্রধানদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সমীক্ষা করে। ৭ দিন অন্তর সমীক্ষা করেন তারা। এবারের সমীক্ষাতেও মোদির মুকুটে নয়া পালক জুড়েছে। এবারের তালিকায় একনম্বরে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি (৭৭ শতাংশ), দ্বিতীয় স্থানে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট লোপেজ ওবারডার (৬৩ শতাংশ), তৃতীয় স্থানে ইটালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি। সাত নম্বরে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ২| "সিনেমাটার জন্য তো সমাজ ভেঙে ২ টুকরো হয়ে যাবে!'' The Kashmir Files-নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ নানা পটেকরের (Support link- https://dainik-b.in/NGBwPX0Wvob )

Parallel Government in Hindu Rastra

অনেকেই এখনও confusion এ আছেন। ব্যাপারটা পরিষ্কার করে দিই। আপনাদের কি মনে হয়? বিনা বাক্যে মুসলমানদের হাতে আফগানিস্তান ছেড়ে দিয়ে এসেছিলো হিন্দুরা? কি মনে হয় বিনা যুদ্ধেই বালোচিস্তান মুসলমানদের হাতে ছেড়ে দিয়েছিলো? কোনো প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ছাড়াই মুসলমানরা হিন্দুদের দেশগুলো দখল করেছে? কোনো প্রতিবাদ হয়নি? কোনো প্রতিরোধ গড়ে ওঠেনি?  পোস্ট টা লেখার আগে ভাবছিলাম লেখার আদৌ দরকার আছে কি না? জ্ঞানপাপীরা এসব সমস্ত কিছুই জানে, তবুও মানে না। আসলে অন্ধের চেয়েও অন্ধ হওয়ার ভান করে যারা তারা কিছুই দেখতে পায় না। অনেকেরই ধারণা হিন্দুরা হয়তো বিনা যুদ্ধেই মুসলমানদের হাতে আফগানিস্তান ছেড়ে দিয়ে এসেছিলো হিন্দুরা। বিনা যুদ্ধেই হিন্দুরা মুসলমানদের হাতে বালোচিস্তান ছেড়ে দিয়ে এসেছিলো? এমন ধারণা যে সর্বৈব মিথ্যা তার প্রমান-  1. https://youtu.be/VSIyCwVQRio 2. https://youtu.be/VSIyCwVQRio 3. https://youtu.be/re8txYC56vo এখন প্রশ্ন, হিন্দুরা আফগানিস্তান, বালোচিস্তান ছেড়ে আসতে বাধ্য হলো কেন? এর উত্তর রাজশক্তির পতনের সাথে সাথেই হিন্দুদের পতন। ধরুন একজন হিন্দু রাজা কোনো মুসলমান রাজার সাথে পরাজিত হল...