দাড়িভিটের স্ফুলিঙ্গ থেকে ভাষা আন্দোলনের প্রদীপ জ্বালাতে আমরা ব্যর্থ

'সুলভ ইন্টারন্যাশনাল'-এর প্রতিষ্ঠাতা বিন্দেশ্বর পাঠক, যিনি বিশ্বকে টয়লেটের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেছিলেন এবং কোটি কোটি মানুষের জীবনকে সহজ করেছিলেন, তিনি আর আমাদের মধ্যে নেই। তিনি মঙ্গলবার মারা গেছেন। আজ, দেশের প্রতিটি শহরে আপনি যে অ্যাক্সেসযোগ্য টয়লেটগুলি দেখতে পাচ্ছেন, তা বিন্দেশ্বর পাঠকের সৌজন্যে। সুলভ টয়লেটকে তিনি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড বানিয়েছেন।

পাঠক প্রবেশযোগ্য টয়লেট শুরু করেছিলেন। তিনি 1943 সালের 2 এপ্রিল বিহারের বৈশালী জেলার একটি গ্রামে ৭টি কক্ষ বিশিষ্ট একটি বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন, কিন্তু সেই বাড়িতে কোন শৌচালয় ছিল না! বাড়ির মহিলারা খুব ভোরে উঠে মলত্যাগের জন্য বের হতেন। দিনের বেলা বাইরে মলত্যাগ করা কঠিন ছিল। এ কারণে তারা অনেক সমস্যা ও রোগে আক্রান্ত হতেন। এসব বিষয় পাঠককে অস্থির করে তুলেছিল। তিনি এই সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছিলেন। তিনি পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে নতুন কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন এবং এমন একজন ব্যক্তি হয়ে ওঠেন যিনি দেশে একটি বড় পরিবর্তন নিয়ে আসেন।

পাঠক বিহার ও উত্তরপ্রদেশ থেকে শিক্ষাজীবন শেষ করেন। তিনি বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক হন। এরপর পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করেন। তিনি 1968-69 সালে বিহার গান্ধী জন্মশতবর্ষ উদযাপন কমিটির সাথে কাজ করেছিলেন। এখানেই কমিটি তাকে সাশ্রয়ী মূল্যের টয়লেট প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করতে বলে। সেই সময়ে স্নাতকোত্তর ছেলের জন্য টয়লেট সেক্টরে কাজ করা সাধারণ ছিল না, কিন্তু বিন্দেশ্বর পাঠক ভিন্ন ছিলেন। তিনি তার উদ্দেশ্য থেকে কখনো পিছপা হননি। তিনি ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং এবং খোলা মলত্যাগের সমস্যা নিয়ে কাজ করেছিলেন। সমাজ এমনকি তার পরিবারের সদস্যদের মতবিরোধ ও অসন্তোষ সত্ত্বেও তিনি দেশকে খোলা জায়গায় মলত্যাগ মুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করে যান। সবার কথার জবাবে পাঠক একটাই কথা বলতেন যে, তিনি গান্ধীজির স্বপ্ন পূরণ করছেন।

1970 সালে, বিদেশ্বর পাঠক সুলভ ইন্টারন্যাশনাল প্রতিষ্ঠা করেন। এটি একটি সামাজিক সংগঠন ছিল। সুলভ ইন্টারন্যাশনাল-এ, তিনি টুইন-পিট ফ্লাশ টয়লেট তৈরি করেন। তিনি ডিসপোজাল কম্পোস্ট টয়লেট আবিষ্কার করেন। এটি কম খরচে বাড়ির আশেপাশে পাওয়া উপকরণ থেকে তৈরি করা যেতে পারে। তারপর তারা সারা দেশে সহজলভ্য টয়লেট তৈরি করতে শুরু করে। 1999 সালে, পাঠক তার কাজের জন্য ভারত সরকারের কাছ থেকে পদ্মভূষণ পেয়েছিলেন। 2003 সালে, তিনি বিশ্বের 500 জন অসামান্য সমাজকর্মীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন। এ ছাড়া তিনি সারা বিশ্বে সব ধরনের পুরস্কার পেয়েছেন।

#BindeshwarPathak #TributePost #TheBetterIndiaBangla