||সাধক যখন বিপ্লবী ||
আলিপুর বোমা মামলায় গ্রেপ্তার হল অরবিন্দ কে। অরবিন্দ ঘোষ ধরা পড়েন ৪৮নং গ্রে স্ট্রিটের বাড়িতে। সেদিন তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের সঙ্গে গিয়েছে এক ইংরেজ অফিসার। ঘরের চারদিকে তাকিয়ে সে তো হতভম্ব। আর ঘরের মেঝেয় মাদুর পেতে শুয়ে আছে। যে লোকটা, কে সে! সেই অরবিন্দ নাকি...?
#স্বাধীনতার_নায়করা পর্ব - ১৪
'হ্যাঁ, আমিই অরবিন্দ ঘোষ।' বলেলেন, সেই মেঝেয় শুয়ে আছে যে লোকটা..।
ইংরেজ অফিসার তাকাল পুলিশের দিকে। অবিশ্বাস্য! এই অরবিন্দ ঘোষ, যে দীর্ঘ নয় বছর বিলেতে কাটিয়ে এসেছে। যে চাল-চলনে খানা- পিনায় পুরোদস্তুর সাহেব। যে নাকি ভালো করে বাংলা পর্যন্ত বলতে পারে না, তার এই দৈন্যদশা? তার একটা শোবার তক্তপোশও জোটে না? না বিছানা-বালিশ? এ যে একেবারে ইংরেজি ভোগবিলাসের প্রতি পরম তিরস্কার।
অরবিন্দের দিকে চেয়ে ইংরেজ অফিসর ধিক্কার দিয়ে উঠল। বললেন, "আই অ্যাম অ্যাশেমড অব ইউ।”
অরবিন্দ হাসলেন। বললেন, "তুমি হতভাগ্য, তোমাকে কি করে বোঝাব এই ভোগবিরতি জীবনের কত বড় বিভূতি।”
সার্চ করে পাওয়া গেল এক কৌটো মাটি।
- কি ওটা? বোমার মশলা..?"
" তার চেয়েও মারাত্মক..", বললেন অরবিন্দ।
-'কি?' অফিসার আঁতকে উঠলেন।
- " দক্ষিণেশ্বরের মাটি......
তার মানে? '
'তার মানে রামকৃষ্ণ পরমহংসের চরণ-ছোঁয়া তীর্থরেণু।"
অফিসার বললেন, ' বোমার চেয়েও মারাত্মক কেন? '
" তার প্রতি ধূলিকণাই একেকটা বোমা। আর তার সবচেয়ে বড় বোমাটার নাম শোনেন নি? সে বোমাটার নামই স্বামী বিবেকানন্দ.." হ্যাঁ, এমনই ছিলেন বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ... যাকে আমরা সক্কলে চিনি ঋষি অরবিন্দ ঘোষ নামেই। আজ তাঁর ১৫১ তম জন্মদিবসে আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি...
তথ্যসূত্রঃ উদ্যতখড়া, শ্রী অরবিন্দের স্মৃতিতীর্থ
সংকলনে : সুভাষের পথে আমরা
ঋষি অরবিন্দ ঘোষ |
জয়হিন্দ| বন্দেমাতরম|
© এক যে ছিলো নেতা