Skip to main content

ইতালির পিসার হেলানো টাওয়ার



পিসার হেলানো স্তম্ভটি হল একটি বেল টাওয়ার, এটি এক দিকে অদ্ভূতভাবে কাৎ হওয়া বা ঢলে পড়ার জন্য বিখ্যাত। পিসার ক্যাথিড্রালের সংলগ্নে অবস্থিত টাওয়ার বা স্তম্ভটি ইতালির একটি প্রতীক হয়ে উঠেছে। পিসার ক্যাথিড্রাল চত্বরে অবস্থিত এটি তৃতীয় প্রাচীনতম পরিকাঠামো। শীর্ষে পর্যবেক্ষণ ডেক সহ টাওয়ারটিতে আটটি তল রয়েছে। টাওয়ারটির আনুমানিক ওজন হল 14,500 মেট্রিক টন।

টাওয়ারটিকে মূলত হেলানো অবস্থায় গড়ে তোলার অভিপ্রায় ছিল না, কিন্তু এটিকে নরম মাটির উপর নির্মাণ করার কারণে টাওয়ারটি ধীরে ধীরে এক দিকে হেলে পড়ে। 1990 থেকে 2001 সালে তার পুন:প্রতিষ্ঠার আগে, টাওয়ারটি প্রায় 5.5 ডিগ্রী কাৎ হয়েছিল। অনেকেই মনে করেন যে এটি একদিন পড়ে যাবে।

লক্ষ লক্ষ পর্যটক এই টাওয়াটিকে ধরে ছবি তোলার জন্য এটির প্রাঙ্গনে ভিড় করে। সাদা মার্বেল টাওয়ারটি রোম্যানিকিউ (একাদশ দ্বাদশ শতকে ইওরোপে প্রচলিত গম্বুজ ও খিলানসমন্বিত বিশেষ একধরনের স্থাপত্য ও শিল্পকলারীতি) মধ্যযুগীয় স্থাপত্য শৈলীকে ব্যবহার করে নির্মিত হয়েছে। এটি মনে করা যে টাওয়ারটি চারজন স্থপতির দ্বারা নির্মিত হয়েছিল; যেমন – বোনান্যো পিসানো, ঘেরারডো ডি ঘেরারডো, জিওভান্যি পিসানো এবং জিওভান্যি ডি সিমোনে।

এছাড়াও দর্শকরা টাওয়ারটির অভ্যন্তরীণ সিঁড়ি বেয়ে শীর্ষে উঠতে পারেন। স্তম্ভটির ভিতের গঠন জ্যামিতিকগতাবে সুসজ্জিত বিশাল গুপ্ত তোরণ-শোভিত পথে গর্বিত রয়েছে। টাওয়ারটির শীর্ষে অবস্থিত সাতটি ঘন্টাধ্বনি একটি সুরেলা মাত্রায় ঘড়ির কাঁটার ঘূর্ণনের দিক বরাবর সুর ঝংকৃত করে।

এটি বলা হয় যে আপনি দিনের বেলায় পিসার হেলানো টাওয়ারটি পরিদর্শনে আসুন। রাতের বেলায় সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায় এবং এটিকে নিষ্প্রভ দেখায়। তবে, আপনি যদি পূর্ণিমার রাতে এটি পরিদর্শনের পরিকল্পনা করেন, তবে সেইসময় টাওয়ারটি চিত্তাকর্ষক দেখতে লাগে।

যদিও এখনো টাওয়ারটি ইতিহাসে একটি বিশেষ স্থান অর্জন করে রয়েছে তবুও টাওয়ারটির হেলে পড়ার প্রসঙ্গে অনেকে এটিকে ইঞ্জিনীয়ারিং ব্যার্থতা বলেও মনে করেন। এছাড়াও টাওয়ারটিকে, বিখ্যাত ইতালীয় বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলি তাঁর পরীক্ষা পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহার করেছিলেন। তিনি টাওয়ারের উপর থেকে দুটি বল (ভিন্ন ভরের) নিক্ষেপ করে, এটি প্রমাণ করেন যে তাদের অবরণের সময়, তাদের ভরের সাথে সম্পর্কিত নয়।

বিভিন্ন বস্তুসামগ্রী যেমন অলিভ অয়েল বা ওয়াইন বোতল (টাওয়ারটির আকৃতির প্রতিরূপ), অলংকার, জিগশ্ পাজেল, টাওয়ারের খন্ডাংশ, লেগো, কী চেন ইত্যাদি হল বেশ কিছু নমুনা যা তার জনপ্রিয়তার কারণকে স্পষ্ট করে তোলে। এটা এমনকি গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে এক বিপণন কৌশল হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।

আপনি আপনার টাসকানি সফরে গিয়ে পিসার হেলানো টাওয়ারের নিকটবর্তী বিভিন্ন আকর্ষণীয় কেন্দ্রগুলি পরিদর্শনের সুযোগ হাতছাড়া করবেন না, দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে লুক্কা, ফ্লোরেন্স, সান্তা মারিয়া ডেল্লা স্পিনা ও গুয়েল্ফ টাওয়ার। পিসার হেলানো টাওয়ারটি, অবনত দিকে 55.86 মিটার (183.27 ফুট); এবং উঁচু দিকটিতে 56 মিটার (186.02 ফুট) উচ্চতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

টাওয়ারটির বৈশিষ্ট্য হল, এটি 3.99 ডিগ্রী হেলানো। টাওয়ারটি স্থাপনার কাজ 1173 খ্রীষ্টাব্দে শুরু হয় এবং 1399 খ্রীষ্টাব্দে সম্পন্ন হয়। টাওয়ারটির ইতালীয় নাম হল টোর্যে7 পেন্ডেন্টে ডি পিসা।

শিকাগোর ইল্যিনয়সের নাইলস হেলানো টাওয়ার হল পিসার হেলে পড়া স্তম্ভটির একটি প্রতিরূপ। পিসার হেলানো টাওয়ারটি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে, লাস ভেগাস-এর বীর টাওয়ারটি, কেন্দ্র থেকে 5 ডিগ্রী নতি করে রয়েছে। সেটি লাস ভেগাস-এ হেলানো টাওয়ার হিসাবেও পরিচিত।

Popular posts from this blog

বলি প্রসঙ্গে আমার মতামত

ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এর চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better, তাহলে বলতে হয় আপনার জীবন আর মৃত্যুর sence নেই। কেন ছাগলের মৃত্যুটাই মৃত্যু? চালকুমড়ো বা আঁখের মৃত্যুটা মৃত্যু নয় কেন? আপনার যদি জীবন আর মৃত্যুর সম্বন্ধ প্রকৃত জ্ঞান থাকতো তাহলে তিনটি ক্ষেত্রেই আপনি সমান দুঃখ পেতেন। কিন্ত আপনার মনে হয় ছাগল বলি দেওয়ার চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better।  আপনার এই প্রকৃতি দেখে বলতে হয়, জীবন বাঁচানো আপনার উদ্দেশ্য নয়, বরং আপনি রক্তকে ভয় পান, অস্ত্র কে ভয় পান। আপনার বাস্তবিক বোধ থাকলে আপনি অস্ত্রের আঘাতে চালকুমড়ো বা আঁখের এবং ছাগ তিনটি বলির ই বিরোধীতা করতেন। কারণ তিনটির প্রকৃতিই একই রকম, এই তিনটে থেকেই অনেক নতুন প্রাণের জন্ম হতে পারতো। তাই তিনটির হত্যাই একই রকম ক্ষতি করে। কিন্ত, শুধুমাত্র ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এটি মানুষের হিংস্র পাশবিক প্রবৃত্তি। তাহলে প্রশ্ন করতে হয়, আমরা কি সত্যিই অহিংস?  আমাদের মায়েরা প্রতিদিন জ্যান্ত মাছগুলো দুহাতে ধরে বঁটিতে ঘচাং করে একবারে জ্যান্তই কেটে ফেলেন। শহরের মাছ-মাংস বিক্রেতারাও একইভাবে কাটেন। তখন কি সেটা নৃশংসতা নয়? কেন আমরা ব

ছেলেরা কেন দিনদিন 'বৌদিবাজ' হয়ে উঠছে?

সমাজটা খুবই খারাপ দিকে যাচ্ছে। ছেলেরা এখন বৌদিবাজ হয়ে উঠেছে! তারা একবার করে প্রেমে ছেঁকা খাওয়ার পর আর অন্য কোনও প্রেমিকা জোটায় না, বৌদিদের সাথে গল্প করে। কারণ - ১| ধোঁকা খায় না ২| হৃদয়ে আঘাত লাগে না ৩| Break up 💔 বলে কিছু থাকে না ৪| অনেকটা Stunt বাজীর মতো, মাথায় কোনো চাপ নেয়ার দরকার পরে না  আর একটা বিষয় হলো এখন বেশিরভাগ ছেলে পড়াশোনা দিকে ব্যস্ত। তাই তাদের হাতেও বেশি সময় থাকে না। আবার বৌদিদের হাতেও বেশি সময় সীমিত। তাই একটা Understanding বজায় থাকে। আরেকটা জিনিস হল নতুন প্রেমিকারা যেরকম নানারকম চাপ দেয়। বৌদীরা অনেকটা বোঝে ব্যাপারগুলো। যেমন- ফাঁকা পকেট, কম সময়, Relation Public না করা... এসব জিনিস। সেই কারণে তারা এতটা চাপ দেয় না। অল্পবয়সী মেয়ের একটু জেদি হয়। তাই তারা অকারণেই ঝগড়া করে যা এমনিতেই চাকরি আর ভবিষ্যতের চিন্তায় চিন্তিত ছেলেদের ভালো লাগে না। তাই তারা বৌদিদের দিকেই ঝোঁকে। বিয়ে তো অবশ্য ভালো কোনো মেয়ে দেখেই করবে, তার আগের সময়টা অন্য দিকে দেয় - বৌদিদের সাথে আড্ডা মারে। বৌদিদের সাথে কথা বলে আর কিছু হোক বা না হোক মানসিক শান্তি আছে। আমার বৌদিবাজ বন্ধুদের জন্য 💖

রাষ্ট্রভক্ত বীরাঙ্গনা হীরা দে

 🌹💥🕉️ দুর্নীতিবাজদের সাথে কেমন আচরণ করা উচিত তার উদাহরণ আমাদের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা থেকে জানা যায়। এই শাস্তিও কোন রাজা বা সরকার দিয়েছিল না দিয়ে ছিল শুধুমাত্র তার পরিবারের সদস্যরা। 💢 1311 খ্রিস্টাব্দে, আলাউদ্দিন খিলজিকে জলোর দুর্গের গোপন কথা বলার জন্য পুরস্কার হিসাবে পাওয়া অর্থ নিয়ে ভিকা দাহিয়া আনন্দের সাথে বাড়ি ফিরছিলেন।এত টাকা এই প্রথম দেখল। হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিল যুদ্ধ শেষ হলে এই টাকা দিয়ে একটা বিলাসবহুল প্রাসাদ তৈরি করে আরামে বসবাস করবে।প্রাসাদের সামনে ঘোড়া বাঁধা থাকবে, চাকর থাকবে।  তার স্ত্রী হীরা স্বর্ণ ও রৌপ্য গয়না দ্বারা সারা শরীর ঢাকা থাকবে। আলাউদ্দিন কর্তৃক জালোর কেল্লায় নিযুক্ত সুবেদারের দরবারে তিনি বড় মর্যাদার বিবেচিত হবেন।বাড়িতে পৌঁছে বিড়বিড় করে হেসে টাকার বান্ডিলটা বাড়িয়ে দিলেন স্ত্রী হীরা দে'র হাতে।  🌹স্বামীর হাতে এত টাকা এবং স্বামীর মুখ ও অভিব্যক্তি দেখে হীরাদে আলাউদ্দিন খিলজির সৈন্যদের দিল্লি ফিরে যাওয়ার কারণ বুঝতে পেরে জালোরের যুদ্ধে হতাশ হয়ে হঠাৎ জালোরের দিকে ফিরে যায়। হীরা দে বুঝতে পেরেছিলেন যে তার স্বামী ভিকা দাহিয়া তার জন্মভূমি জ