জলের প্রবাহ ও স্রোতকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করাকে বলা হয় জলবিদ্যুৎ।
জল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে জলের বিভব শক্তিকে কাজে লাগানো হয়। স্বাভাবিক অবস্থান থেকে পরিবর্তন করে কোন বস্তুকে অন্য কোন অবস্থানে আনলে বস্তু কাজ করার যে সামর্থ্য অর্জন করে তাকে বিভব শক্তি বলে। যেমনঃ আমরা যখন কোন বস্তুকে যদি ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরে তুলি তখন আমরা পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের বিরুদ্ধে কাজ করি। ফলে বস্তুটি কিছু বিভব শক্তি লাভ করে। এখন বস্তুটিকে ছেড়ে দিলে আবার যখন ভূপৃষ্ঠে পড়বে তখন সেটি ঐ পরিমাণ কাজ করতে পারবে। বিভব শক্তি Ep=mgh. আমরা শক্তির নিত্যতার সূত্র থেকে জানতে পারি,
বিভব শক্তি =গতি শক্তি
Ep= Ek
mgh= 0.5 mv^2
জলকে যখন বাঁধ দিয়ে আটকানো হয় তখন পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। জলের তলের উচ্চতা বৃদ্ধি বা এর গভীরতা বৃদ্ধির ফলে জলের মধ্যে অধিক বিভব শক্তি জমা হয়। কোন পাহাড়ের উপত্যকায় নিচের প্রান্তে বাঁধ দিয়ে এই কাজটি সাধারণত করা হয়ে থাকে। নদী থেকে
আসা জলপ্রবাহ বাঁধে বাধা পেয়ে জমা হতে থাকে, এতে বাঁধের পেছনে একটি কৃত্রিম হ্রদ সৃষ্টি হয়। হ্রদ পানিতে পূর্ণ হয়ে গেলে হ্রদ থেকে জল একটি মোটা নলের ভিতর দিয়ে নিচে অবস্থিত একটি তড়িৎ উৎপাদন কেন্দ্রে প্রবাহিত করা হয়। জল পতনের সময় এর মধ্যে জমা থাকা বিভব শক্তি গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। এই গতিশক্তিকে কাজে লাগিয়ে একটি টার্বাইনকে ঘোরানো হয়। টার্বাইন হচ্ছে ব্লেডযুক্ত একটি চাকা। টার্বাইনটি একটি তড়িৎ জেনারেটরের সাথে সরাসরি সংযুক্ত থাকে। এই জেনারেটরে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় উৎপন্ন এই তড়িৎ এরপর তারের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়।