দাড়িভিটের স্ফুলিঙ্গ থেকে ভাষা আন্দোলনের প্রদীপ জ্বালাতে আমরা ব্যর্থ

চৈত্রের সংক্রান্তির আগের দিনে সন্তানের মঙ্গলকামনায় মায়েরা নীলের পূজা বা ব্রত করে থাকেন। আজকে সেই দিন। এইদিন গ্রামে গঞ্জে "শিবের বিয়ে" বলেও পালিত হয়। আজকের দিনে নীলধ্বজ কন‍্যা নীলাবতী পরমেশ্বরীর সাথে শিবের বিবাহ হয়েছিল যিনি ছিলেন মহামায়ার ই অংশ। গ্রামে গ্রামে এই উপলক্ষে উৎসব, আচার অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।

নীলপূজা বা "নীলষষ্ঠী" বা নীলযাত্রা, এটা এলো কিকরে? জানা যায় বহু পূর্বে এক ব্রাহ্মণ দম্পতি ছিলেন, যাঁরা সব ব্রত করেছিলেন, তবু তাঁদের সন্তানরা বেশিদিন বাঁচতো না। দুঃখে একপ্রকার বাঁচার ইচ্ছাই হারিয়ে ফেলেন তাঁরা। কাশীর গঙ্গার ঘাটে তাঁরা এলে দেখা হয় এক বৃদ্ধার সাথে। তাঁরা নিজেদের দুঃখের কথা বৃদ্ধাকে বলেন, বৃদ্ধা তখন বলেন " তোমরা ব্রত করলেও তাতে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসের অভাব ছিল, যার দরুণ তোমাদের এই অবস্থা।" তাঁরা বুঝতে পারেন ইনি সাধারণ বৃদ্ধা নন, স্বভাবতই তাঁরা পরিচয় জানতে চাইলে সেই বৃদ্ধা নিজের রূপ ধারণ করেন। তিনি আর কেউ নন, মা ষষ্ঠী নিজেই।

মা ষষ্ঠী তাঁদের বলেন নীলষষ্ঠী বা নীলপূজা পালনের কথা। চৈত্রমাসে সন্ন‍্যাস নিয়ে সংক্রান্তির আগের দিন উপবাস করে নীলাবতীর পুজো করে নীলকণ্ঠ শিবের উদ্দেশ্যে প্রদীপ বা বাতি জ্বালানোর কথা বলেন। ব্রত পালনের পর মা ষষ্ঠীর কৃপায় তাঁরা সন্তানলাভ করেন। আর দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে নীলপূজার কথা।

মফস্বলে এখনো এই প্রথা আছে। হাজার হাজার মায়েরা আজ মন্দিরে, তাঁদের সন্তানের মঙ্গলকামনায়। এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে ছড়িয়ে যায় এই লোককথা। ছড়িয়ে যায় ভালোবাসা। মায়ের কাছে প্রার্থনা সকলের সন্তান ভালো থাকুক।