Skip to main content

জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস

জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস:

কংগ্রেসের অনুগামীরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষকে বোঝাতেন- ইংরেজদের অত্যাচারের কথা, মানুষের দুর্দশার কথা। তারপর যে ইংরেজদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে চাইতো তাকে দলে নিয়ে নিতেন। গড়ে উঠতো সংগঠন। গুপ্ত নয় মুক্ত। ব্রিটিশরা কোনো আইন আনলে , তার প্রতিবাদ করতো কংগ্রেস। ব্রিটিশরা সাধারণ মানুষকে হত্যা করলে তারও প্রতিবাদ করতো কংগ্রেস। গ্রামে কয়েকদিন ধরে বৈঠক হতো। বৈঠকে ঠিক করা হতো রণকৌশল। তারপর শুরু হতো আন্দোলন।  

কংগ্রেসের আন্দোলন বলতে সাধারণত - ধর্ণা প্রদর্শন, বড় মিছিল করে গিয়ে পুলিশের কাছে pitition জমা দেওয়া এইসব।

ধরুন আগেরদিন রাত্রে নির্বিচারে গুলি করে 10 জনকে মেরে দিয়েছে ইংরেজরা। গ্রামের সবাই ক্ষিপ্ত। তখনই কংগ্রেস বললো "আমরা  এ অত্যাচার সহ্য করবো না। আমরা এর প্রতিবাদ করবো। তোমরা কেউ ভয় পাবে না তো?" ঠিক আছে। আশেপাশের 25 টি গ্রামে খবর দাও পরশু দিন আমরা প্রতিবাদ করবো। 

আশেপাশের 25 টি গ্রামের লোকজন জড়ো হলো থানার সামনে। পা ফেলার যায়গা নেই। সকলেই Slogan দিতে আরম্ভ করলেন। স্লোগানে গোটা এলাকা কাঁপতে থাকলো। এতোই ভিড় যে কেউ দাঁড়ানোর যায়গা পাচ্ছে না। এই ভিড় যদি থানার উপর পড়ে থানার অস্তিত্ব থাকবে না। কিন্ত কংগ্রেসের কঠোর নির্দেশ কেও কোনোমতেই থানার মধ্যে প্রবেশ করবে না। কিংবা পুলিশের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবে না। 
10000 লোকের ভিড় সামলে দাঁড়িয়ে আছে মাত্র 25-30 জন পুলিশ। হঠাৎই একদল যুবক ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের দিকে এগিয়ে গেলো, শুরু হলো পুলিশের লাঠি চার্জ। তারপর ধস্তাধস্তি। পুলিশ বললো - এক পা এগিয়ে এলে লাঠি চার্জ করবো। কংগ্রেস নেতৃত্ব বললেন- কেউ কিচ্ছু করবে না। আমরা শান্তি চাই। শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। বিচার চাই। ইংরেজ সরকার আমাদেরকে ন্যায়বিচার দেবেন, আমাদের ভরসা আছে। 
লোকজন শুনলো না তাদের নেতৃত্বের কথা। তারা এগিয়ে গেলো, প্রতিক্রিয়া হিসাবে লাঠিচার্জের সাথে সাথে এবার গুলিও চললো।  কংগ্রেস নেতৃত্ব তৎক্ষণাৎ পালালেন। পরে সকল কংগ্রেস সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হলো, তারা আইন অমান্য করেছে, তাই তাদের শাস্তি হবে। সুতরাং, শাস্তির হাত থেকে বাঁচতে তারা যেনো অবিলম্বে গা ঢাকা দেয়। 

তারপর আগামী 15 দিন ধরে চললো ব্রিটিশ পুলিশের অমানবিক অত্যাচার। যে সমস্ত পুরুষ ওই বিক্ষোভ প্রদর্শনে গিয়েছিলেন সকলেই গা-ঢাকা দিলেন, প্রত্যেকের বাড়ি লুট, ভাঙচুর করলো ব্রিটিশ পুলিশ।

এর ফলে
১| নিরপরাধ ভারতবাসী মারা যাওয়ায় ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে যে রাগ সাধারণ মানুষের হয়েছিলো, তার প্রতিবাদ করার কাজটি হয়ে গেলো সামান্য একটি বিক্ষোভ প্রদর্শনের মাধ্যমে।

২| প্রতিবাদ সমাবেশে সামিল হয়েছিলেন প্রায় ১০,০০০ মানুষ। কিন্ত তারা যেনো একটিও আঘাত ব্রিটিশ সরকারের উপর করতে না পারে তা নিশ্চিত করেছিলো ব্রিটিশ পুলিশ নয়, বরং কংগ্রেস। 

৩| দশ হাজার মানুষকে নিরস্ত্র হয়ে সমাবেশ হতে আহ্বান জানানো হলো। কিন্ত থানার সুরক্ষায় মাত্র কয়েকজন রাইফেলধারী। কোথা থেকে পেতো এতো confidence? দশ হাজার নিরস্ত্র মানুষের পক্ষে 100 জন পুলিশ কর্মীকে মারা কি খুব কঠিন কাজ? আক্রমণের নির্দেশ দিতো না কেনো?

৪| যাদের রক্ত গরম হয়েছিলো তাদেরকে একেবারে ঠান্ডা করার জন্য গুলি চালায় পুলিশ। সকলের রক্ত ঠান্ডা হয়ে যায়।

 ৫| যে ব্যক্তি নিরপরাধের মৃত্যুর প্রতিবাদ করতে গেছিলেন যে নিজেই এখন দোষী, পুলিশ তাকে চারিদিকে খুঁজে বেড়াচ্ছে, তার মধ্যে কাজ করছে, অপরাধবোধ, এটাই তো চাইতো সরকার! 

৬| তারপর কংগ্রেস নেতৃত্ব কোথায় গায়েব হয়ে যায় কেউ জানে না! সকলেই তাঁদেরকে বলেন, আপনারা পালান, পুলিশ আপনাদেরকে খুঁজছে, অ্যারেস্ট করবে। হ্যাঁ, কংগ্রেস নেতা গায়েব হয়ে যায়, কোথায় জানেন? ওই গ্রামেরই কোনো এই সমৃদ্ধ পরিবারে। আগামী 6 মাস তার এটাই ঠিকানা! 

শুধু চরিত্র গুলো একটু বদল করে নিলেই গল্পগুলো যেনো আজো মিলে যায়। কি অদ্ভুত! তখন কংগ্রেসের কোনো বিকল্প ছিলো না! আজও নেই!

Popular posts from this blog

 বর্তমানে রাত্রীকালীন বিবাহের প্রাসঙ্গিকতা :- ____________________________________ মুসলমান অত্যাচারের কারণে 'রাত্রি কালীন গোপন বিবাহ' রীতির প্রচলন। এসব সত্য জানার সত্ত্বেও এখনও এই রীতি বয়ে নিয়ে হচ্ছে। তার সম্ভাব্য কারণ কি কি হতে পারে? ১| দিনের বেলা সকলে ব্যস্ত থাকে নানা কাজে। কেও স্কুলে, কেও অফিসে কেও বা অন্য কোনো কাজে লিপ্ত থাকেন। তাই সেই কাজের মাঝে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা সম্ভব হয় না। তাই সন্ধ্যার লগ্নে বিয়ে হলে মানুষ দুপুরে কাজের শেষে বিশ্রাম নিয়ে সন্ধ্যেয় সেজেগুজে এসে বিয়ে দেখতে পারে। রাত্রে প্রায় সকলেই বাড়িতে থাকেন। তাই কোথাও নিমন্ত্রণ রক্ষা করা বিষয়টা অনেকটাই নির্ঝঞ্ঝাট মনে হয়। ২| এখন বিবাহ একটি পারিবারিক উৎসব নয়। বরং বিবাহ আত্ম অহংকার, ক্ষমতার প্রদর্শনীতে পরিণত হয়েছে। রাতে জমকালো Light Show দেখানো যায়। বাজীর প্রদর্শনী করা যায়। এর সাথে আরও যত রকমভাবে নিজের ক্ষমতার প্রদর্শন করা সম্ভব সবরকম চেষ্টাই করা হয়। কিন্ত দিনে এই সমস্ত ঘটনার Prime Focus একজনের উপর পড়া সম্ভব নয়, তাই রাত্রে। ৩| সামাজিক দৃষ্টিকোণ: বর্তমানে দিনে বিবাহ দেওয়াকে দারিদ্রতার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা ...

ব্রাহ্মণ্য অত্যাচার তত্ত্বের Propaganda Vs Reality

ভারত বাংলাদেশ আর পাকিস্তান মিলে প্রায় 50 কোটি মুসলিম বাস করে। কিন্তু, এতো মুসলিম তো আরবেও নেই। তাহলে এতো মুসলমান এলো কোথা থেকে? অন্য ধর্মের লোক এতো দ্রুত হারে বাড়ছে না কেনো? অন্য ধর্মের 50 কোটি লোক হলোনা কেনো ? Communist আর secular দের বক্তব্য এরা হিন্দুই ছিল, কিন্তু ব্রাহ্মণদের অত্যাচারের ফলে আর মুসলিমদের ধর্মের উদারতার কারণে জাত-পাতহীনতার কারণে এরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। এরা মুসলিমদের দান-ধ্যানের নীতি, সুফি_সন্তদের জীবনযাত্রায় প্রভাবিত হয়ে "ইসলাম" ধর্ম গ্রহণ করেছে। ব্রাহ্মণদের অত্যাচার তত্ত্ব  Communist রা হিন্দু সমাজকে দুইভাগে ভাগ করেন-- 1. উচ্চ বর্ণ  2. নিম্ন বর্ণ সমাজের সবচেয়ে ভক্তিবান মানুষ হলো তথাকথিত নিম্নবর্ণের মানুষরা। তাদের কাছে ধর্মই সব। তাঁরা সব করতে পারেন কিন্তু ঠাকুর কে অবহেলা করেন না। তাঁরা শুধুমাত্র ব্রাহ্মণদের অত্যাচারের জন্যেই ধর্মান্তরিত হয়েছে এটা বিশ্বাস করেন কিভাবে❓ এটা তো গেলো পুরোনো যুগের কথা.... এবার এখনকার কথা বলি.... আচ্ছা বলুন তো, আমরা আমাদের পারিবারিক সূত্রে বা বন্ধুদের সূত্রে প্রায় প্রতিদিন নানান রকম খবর শুনি। যেমন- কারোর বিয়ে হয়েছে, কার...

বৃদ্ধাশ্রম ও অনাথালয় এর সংযুক্তিকরণ

আমি কিছু ছোট ছোট old age home এবং orphan home এ গেছি এবং সেখানে গিয়ে মনে হয়েছে বৃদ্ধ মানুষগুলো তাঁদের পরিবারের ছোটো-ছোটো নাতি-নাতনীদের মিস করেন। আবার অনাথালয়ের orphan দের কাছে গিয়ে মনে হয়েছে তারা যদি দাদু ঠাকুমাদের মত কাওকে পেত, যারা তাদের একটু গল্প বলবে, মাথায় হাত বুলিয়ে তাদের আদর করবে তাহলে তারাও হয়ত অনেকটা ভালো থাকত। তাই আমার মনে হয়েছে বৃদ্ধাশ্রম ও orphan home যদি একই ছাদের নীচে করা সম্ভব হয় তাহলে ওইসব বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এবং বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলোর পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার যে কষ্ট, সেটা সামান্য হলেও লাঘব হবে। এবার আমি এটা নিয়ে কতটা ঠিক ভেবেছি বা এটা ইমপ্লিমেন্ট করা কতটা সম্ভব বা তার প্রতিবন্ধকতার জায়গা গুলো আমি সম্পুর্ন ওয়াকিবহল নই। সম্পূর্ণ একটা ইমোশনাল ভাবনা থেকে এটা আমি ম্যাডামকে জানিয়েছি। ম্যাডাম বা ডিপার্টমেন্ট এ যারা দীর্ঘদিন ধরে অনেক গুরুদায়িত্ব সামলেছেন তাঁদের সবার পর্বত সমান অভিজ্ঞতা। যদি তাঁরা এই ভাবনার মধ্যে কোনো পজিটিভ দিক আছে বলে মনে করেন এবং প্রাকটিক্যাল গ্রাউন্ডে এটা ইমপ্লিমেন্ট করা সম্ভব মনে করেন এবং এক ছাদের তলায় old age home এবং orphan home তৈরী করা...