Skip to main content

বামপন্থা ও Fake Hindutva

বামপন্থা এমনি এমনিই বামপন্থা হয়ে যায়নি। তার পিছনে অনেক পরিশ্রম আছে। হতে পারে বামপন্থীদের আসন সংখ্যা আজ শূন্য, কিন্ত বামপন্থীদের শূন্য করা এতো সহজ কাজ নয়। কারণ বহু মানুষ বাঁচে বামপন্থায়। তাদের জীবনের প্রতিটা মুহূর্তেই বামপন্থী চিন্তা-চেতনা-ভাবনা, জীবনের প্রতিটা ক্ষণে বামপন্থাই তাদের একমাত্র সঙ্গী। 

বামপন্থীদের অত্যন্ত প্রিয় পোষ্য কুকুর বা বেড়াল। তাই বামপন্থীদের প্রত্যেক ছবি, গান, গল্প সর্বত্রই স্থান পেয়েছে এই সারমেয়দের দুঃখের কাহিনী। কিন্ত, এই পৃথিবীতে কি একমাত্র কুকুররাই ক্ষুধার্ত? শুধু একমাত্র কুকুররাই দুঃখ-কষ্টের শিকার? না। আরো অনেকে প্রাণীই এই দুঃখের শিকার হলেও তাদের দুঃখের কথা ঠিক তুলে ধরতে পারেনা তারা। যেমন- হিন্দুবাদীরা গরুকে অত্যন্ত ভালোবাসে, তবুও তাদের দুঃখের কাহিনী জনপ্রিয় হয়নি। কারণ- তারা তাদের ভালোবাসাকে বাস্তব রূপ দিতে পারে না। কুকুরের চেয়েও গরুর দুঃখের কাহিনী আরো করুণ। কিন্ত তারা দুঃখকে বাস্তবের মাটিতে তুলে ধরতে পারেনি। তারা চাইলে ছবি আঁকতে পারতো, গান লিখতে পারতো, প্যারোডি করতে পারতো, সিনেমা বানাতে পারতো, তথ্যচিত্র বানাতে পারতো, কিন্ত পারেনি। কারণ তারা আসলে হিন্দুত্ববাদী নয়। তারা আবেগ দেখায় নামমাত্র। তারা হিন্দুত্বের জন্য বাঁচে না। আর এখানেই পার্থক্য হিন্দুত্বের সাথে বামপন্থার। বামপন্থীরা বামপন্থার জন্য বাঁচে, বামপন্থাই তাদের সব, কিন্ত হিন্দুত্ববাদীরা হিন্দুত্বের জন্য বাঁচেনা, তারা বাঁচে বিজেপি বা RSS এর ভরসায়। আর এখানেই পার্থক্য হিন্দুত্বের সাথে বামপন্থার।

নিজেদের কাহিনী, চাওয়া-পাওয়া এসবকে ফুটিয়ে তোলা যে খুব একটা কঠিন কাজ সেটা নয়। বামপন্থীরা এই কাজটি নিপুণভাবে করে থাকে। তাই সোশাল মিডিয়ার প্রত্যেক Content এর মধ্যেই ভেসে ওঠে বামপন্থী চিন্তা-ভাবনার । বামপন্থীরা সংখ্যায় নগণ্য হোক না কেন তবুও তাদের চিন্তাধারা সকলকেই প্রভাবিত করে। বামপন্থীরা লিখতে না পারলে বলেন, বলতে না পারলে ছবি আঁকেন। ছবি আঁকতে না পারলে গান/ কবিতা লেখেন। সেটাও না পারলে একটি ঘটনাক্রমের মাধ্যমে পুরো ঘটনাকে গল্পের আকারে বর্ণনা করেন। আর এতেই বামপন্থার সমৃদ্ধ। আজ - ছবি, গান, কবিতা, গল্প, তথ্যচিত্র সর্বত্রই বামপন্থীদের একচ্ছত্ররাজ। 

উল্টোদিকে দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ববাদরা হিন্দুত্বের নামে যতটা লাফায়, কাজের বেলা অষ্টরম্ভা। আজ পর্যন্ত একটিও গল্প হিন্দুত্বের বিষয়ে খুঁজে পাবেনা কেউ।  কতজন লেখক হিন্দুত্বের বিষয়ে গল্প লেখেন? কতজন হিন্দুত্বের জন্য গান লিখেছেন? বিজেপির আইটি সেলের তৈরির গল্পগুলোকেই আওড়াতে আওড়াতেই দিন শেষ। কখনো Masterstroke,  কখনো 'ভিরাট_ষড়যন্ত্র' তত্ত্বের ব্যাখ্যা দিতেই তাদের দিন কেটে যায়।  আসলে এটাকে কোনোমতেই হিন্দুত্ব বলা যায় না, এটা আসলে Anti-congress Pro-BJP thoughts. যদি এটা প্রকৃত হিন্দুত্বই হতো তবে বেশকিছু জীবনধারায় অন্যরকম পরিবর্তন আসতো। তারা হিন্দুত্বকে নিয়েই বাঁচতেন। আসলে যারা ফেসবুকে বড় বড় anti-muslim, anti-Christian,  Pro-Hindutva প্রবচন দিয়ে বেড়ায় তারাই আবার বাস্তবের মাটিতে নিজেদের একমাত্র সন্তানকে Convent School পাঠিয়ে রহিম চাচার কাছে সব্জি, ফল, মাংস কিনে বাড়ি ফেরে। এখানেই হিন্দুত্বের সাথে বামপন্থার পার্থক্য। 


ফেসবুকে রহিম চাচার সাত সন্তানের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে নিজের একটা সন্তান নেওয়াই হলো fake Hindutva. 

নিজে Population Coltrol Act,  Uniform Civil Code,  হিন্দুরাষ্ট্র চেয়ে কুকুরের মতো ঘেউঘেউ করে সারা না পেয়েও বিরাট ষড়যন্ত্রের ব্যাখ্যা করাই হলো Fake Hindutva.

বাস্তবত এগুলো হিন্দুত্ব নয়, কোনোমতেই নয় । এটা হিন্দুত্ব হতেই পারে না। হিন্দুত্ব তো দৈনন্দিন জীবনসঙ্গী। হিন্দুত্ব তো জীবন যাপন উপায়। যাদের জীবনের প্রতিটা মুহূর্তেই হিন্দুত্বের জন্য, বিজেপির জন্য নয়। হিন্দুত্বের আর বিজেপির মধ্যে পার্থক্য বোঝার চেষ্টা করো। হতে পারে বিজেপি হিন্দুবাদী কিন্ত বিজেপিই হিন্দুত্বের শেষ কথা নয়। বিজেপিকেই যারা হিন্দুত্ব বলে ভাবে তারা অন্ধভক্ত ছাড়া আর কিছুই নয়। এটাই Fake Hindutva ।

Popular posts from this blog

 বর্তমানে রাত্রীকালীন বিবাহের প্রাসঙ্গিকতা :- ____________________________________ মুসলমান অত্যাচারের কারণে 'রাত্রি কালীন গোপন বিবাহ' রীতির প্রচলন। এসব সত্য জানার সত্ত্বেও এখনও এই রীতি বয়ে নিয়ে হচ্ছে। তার সম্ভাব্য কারণ কি কি হতে পারে? ১| দিনের বেলা সকলে ব্যস্ত থাকে নানা কাজে। কেও স্কুলে, কেও অফিসে কেও বা অন্য কোনো কাজে লিপ্ত থাকেন। তাই সেই কাজের মাঝে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা সম্ভব হয় না। তাই সন্ধ্যার লগ্নে বিয়ে হলে মানুষ দুপুরে কাজের শেষে বিশ্রাম নিয়ে সন্ধ্যেয় সেজেগুজে এসে বিয়ে দেখতে পারে। রাত্রে প্রায় সকলেই বাড়িতে থাকেন। তাই কোথাও নিমন্ত্রণ রক্ষা করা বিষয়টা অনেকটাই নির্ঝঞ্ঝাট মনে হয়। ২| এখন বিবাহ একটি পারিবারিক উৎসব নয়। বরং বিবাহ আত্ম অহংকার, ক্ষমতার প্রদর্শনীতে পরিণত হয়েছে। রাতে জমকালো Light Show দেখানো যায়। বাজীর প্রদর্শনী করা যায়। এর সাথে আরও যত রকমভাবে নিজের ক্ষমতার প্রদর্শন করা সম্ভব সবরকম চেষ্টাই করা হয়। কিন্ত দিনে এই সমস্ত ঘটনার Prime Focus একজনের উপর পড়া সম্ভব নয়, তাই রাত্রে। ৩| সামাজিক দৃষ্টিকোণ: বর্তমানে দিনে বিবাহ দেওয়াকে দারিদ্রতার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা ...

ব্রাহ্মণ্য অত্যাচার তত্ত্বের Propaganda Vs Reality

ভারত বাংলাদেশ আর পাকিস্তান মিলে প্রায় 50 কোটি মুসলিম বাস করে। কিন্তু, এতো মুসলিম তো আরবেও নেই। তাহলে এতো মুসলমান এলো কোথা থেকে? অন্য ধর্মের লোক এতো দ্রুত হারে বাড়ছে না কেনো? অন্য ধর্মের 50 কোটি লোক হলোনা কেনো ? Communist আর secular দের বক্তব্য এরা হিন্দুই ছিল, কিন্তু ব্রাহ্মণদের অত্যাচারের ফলে আর মুসলিমদের ধর্মের উদারতার কারণে জাত-পাতহীনতার কারণে এরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। এরা মুসলিমদের দান-ধ্যানের নীতি, সুফি_সন্তদের জীবনযাত্রায় প্রভাবিত হয়ে "ইসলাম" ধর্ম গ্রহণ করেছে। ব্রাহ্মণদের অত্যাচার তত্ত্ব  Communist রা হিন্দু সমাজকে দুইভাগে ভাগ করেন-- 1. উচ্চ বর্ণ  2. নিম্ন বর্ণ সমাজের সবচেয়ে ভক্তিবান মানুষ হলো তথাকথিত নিম্নবর্ণের মানুষরা। তাদের কাছে ধর্মই সব। তাঁরা সব করতে পারেন কিন্তু ঠাকুর কে অবহেলা করেন না। তাঁরা শুধুমাত্র ব্রাহ্মণদের অত্যাচারের জন্যেই ধর্মান্তরিত হয়েছে এটা বিশ্বাস করেন কিভাবে❓ এটা তো গেলো পুরোনো যুগের কথা.... এবার এখনকার কথা বলি.... আচ্ছা বলুন তো, আমরা আমাদের পারিবারিক সূত্রে বা বন্ধুদের সূত্রে প্রায় প্রতিদিন নানান রকম খবর শুনি। যেমন- কারোর বিয়ে হয়েছে, কার...

বৃদ্ধাশ্রম ও অনাথালয় এর সংযুক্তিকরণ

আমি কিছু ছোট ছোট old age home এবং orphan home এ গেছি এবং সেখানে গিয়ে মনে হয়েছে বৃদ্ধ মানুষগুলো তাঁদের পরিবারের ছোটো-ছোটো নাতি-নাতনীদের মিস করেন। আবার অনাথালয়ের orphan দের কাছে গিয়ে মনে হয়েছে তারা যদি দাদু ঠাকুমাদের মত কাওকে পেত, যারা তাদের একটু গল্প বলবে, মাথায় হাত বুলিয়ে তাদের আদর করবে তাহলে তারাও হয়ত অনেকটা ভালো থাকত। তাই আমার মনে হয়েছে বৃদ্ধাশ্রম ও orphan home যদি একই ছাদের নীচে করা সম্ভব হয় তাহলে ওইসব বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এবং বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলোর পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার যে কষ্ট, সেটা সামান্য হলেও লাঘব হবে। এবার আমি এটা নিয়ে কতটা ঠিক ভেবেছি বা এটা ইমপ্লিমেন্ট করা কতটা সম্ভব বা তার প্রতিবন্ধকতার জায়গা গুলো আমি সম্পুর্ন ওয়াকিবহল নই। সম্পূর্ণ একটা ইমোশনাল ভাবনা থেকে এটা আমি ম্যাডামকে জানিয়েছি। ম্যাডাম বা ডিপার্টমেন্ট এ যারা দীর্ঘদিন ধরে অনেক গুরুদায়িত্ব সামলেছেন তাঁদের সবার পর্বত সমান অভিজ্ঞতা। যদি তাঁরা এই ভাবনার মধ্যে কোনো পজিটিভ দিক আছে বলে মনে করেন এবং প্রাকটিক্যাল গ্রাউন্ডে এটা ইমপ্লিমেন্ট করা সম্ভব মনে করেন এবং এক ছাদের তলায় old age home এবং orphan home তৈরী করা...