Rastriya SwayamSevak Sangh

🧊একদল মানুষকে কিছু বোঝানোর জন্য একটি সংগঠন দরকার হয়। কিছু মানুষকে একজোট করতে হয়। তাদেরকে সময় দিতে হয়, ভালো করে বোঝাতে হয়। 

এই একজোট করার কাজটাই RSS করে। এটাই RSS এর কাজ। RSS এর শাখার প্রথম দিনে আশেপাশে থাকা লোকজনকে ডাকা হয়। তাদেরকেই হিন্দুত্বের মন্ত্রে দীক্ষিত করে স্বয়ংসেবক হতে আহ্বান করা হয়। এরপর 10-12 জনকে নিয়ে নিয়মিত 'শাখা' চলতে থাকে। 

🧊শাখায় স্বয়ংসেবকদের সাথে কী কী নিয়ে আলোচনা হয়? 

শাখার অন্যতম আলোচ্য বিষয় হলো সমসাময়িক সমাজ ও রাজনীতি। এই আলোচনা আস্তে আস্তে ধর্ম থেকে রাজনীতির দিকে অগ্রসর হয়। 

শাখার পরিচালকের অন্যতম বক্তব্য হল- 

বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের পক্ষে হিন্দুবাদী কার্যকলাপ সম্ভব নয়। এই হিন্দু_বিরোধী রাজনৈতিক দলকে  হারিয়ে হিন্দুবাদী বিজেপিকে জেতাতে হবে। 

তাই আলোচনা শুরু হয় ভোটের রণকৌশল নিয়ে। এরপর যদি ভোটে হেরে গেলো তাহলে এই একই অজুহাত চলতে থাকলো আর যদি ভোটে জিতল তাহলে তো অন্য ব্যাপার, তখন শাখা বললো এবার তো যা করার বিজেপিই করবে। আমাদের আর কিছু করার দরকার নেই। যদি বিজেপি করছে না বলে অভিযোগ করা হলো তাহলে বললো- এত তাড়াহুড়ো করলে হবে? হবে হবে। ঠিক হবে। চিন্তা নেই। 

-এটিই RSS এর কর্মপদ্ধতি। হিন্দুত্বের যোদ্ধা হিসেবে যে যাত্রা শুরু হয় তার পরিণতি হলো- নির্বিরোধ দল-দাস।

🧊কিন্তু, হিন্দুত্বের এই একজোট করার কাজটা যদি RSS মাঠে না করে মন্দিরে করতো তাহলে কি পার্থক্য হতো?

প্রথমেই বলে রাখা ভালো, RSS ব্রাহ্মণ্যতন্ত্রের বিরোধী। RSS দু-চোখে ব্রাহ্মণদের দেখতে পারে না। কোনো নিত্যপূজ্য মন্দিরে ব্রাহ্মণদের দ্বারা হিন্দুদেরকে একজোট করাকে RSS মৌলবাদের সঙ্গেই তুলনা করে। 

🧊নিত্যপূজ্য মন্দির ও মাঠের শাখার মধ্যে পার্থক্য কি?

১| শাখা হয় দিনে একবার এক ঘন্টার জন্য। নিত্যপূজ্য মন্দির  12-24 ঘন্টাই খোলা থাকে।

২| শাখা তে স্বয়ংসেবকদের কে ডেকে ডেকে 10-12 জনকে জড়ো করা যায়। কিন্ত একটি নিত্য-পূজার মন্দিরে প্রতিদিন স্বতঃস্ফূর্তভাবে অন্তত 100-150 লোকের সমাগম হয়। 

২| RSS মাঝে মাঝে সভা করে। সে সভা করার খরচ যথেষ্ট। RSS আর্থিকভাবে যথেষ্ট অনটনের সম্মুখীন হয়। তবুও কোনোদিন মন্দিরের সাথে সমঝোতা করে না। একটি নিত্য-পূজার মন্দির কিছুটা হলেও আর্থিকভাবে সক্ষম। মন্দিরের অর্থ আর স্বয়ংসেবকের পরিশ্রম মিলিত হলে এই জনজাগরণের কাজ অনেক সহজ হয়। কিন্ত RSS মন্দিরের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে নিজেকে রাজনৈতিক সমাজ সচেতক হিসেবেই ধরে রাখতে চায়, মন্দিরের ধার ঘেঁষে না!

৩| শুধুমাত্র ফাঁকা হিন্দুত্বের কথা বলে জনজাগরণ ঘটানো যায় না। ধর্ম ছাড়া কখনোই হিন্দুত্বের জাগরণ সম্ভব নয়। স্বামী বিবেকানন্দ, স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী এভাবেই পেরেছিলেন। তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন কঠোর সত্য মানুষ গিলবে না, কঠোর সত্যকে ধর্মের মোড়কে পরিবেশন করতে হবে। তবেই তা সফল হবে।

৪| একজন স্বয়ংসেবকের কথা যত জন সাধারণ মানুষ শুনবে , একজন নিত্য-পূজার মন্দিরের পুরোহিতের কথা তার দশগুণ লোকে মানবে। একজন স্বয়ংসেবক কথা যতজন গুরুত্ব দেবে, একটি মন্দিরের পুরোহিতকে তার 5 গুণ মানুষ গুরুত্ব দেবে।

মন্দিরেরও তিনটি রীতি অনুসরণ করা প্রয়োজন-

১| সকলকে ব্রাহ্মণ্য শিক্ষাদান 

২| বংশ পরম্পরাহীন ব্রাহ্মণত্ব এবং ব্রাহ্মণত্ব লোপ

৩| মন্দিরের জন্য শ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণকে পূজারী নির্বাচন

--এই কাজগুলো RSS চেষ্টা করলে অনেক আগেই করে ফেলতে পারতো। RSS চাইলে হিন্দুদেরকে মন্দিরে সংগঠিত করতে পারতো, ব্রাহ্মণ্যতন্ত্রের ভুলগুলো সংশোধন করতে পারতো। কিন্ত RSS চাই না।

শেষে একটাই কথা বলবো- "Go Back to Vedas। বেদে ফিরে যাও। বেদে ফিরলে আবারো হিন্দুত্বের সূর্যোদয় হবেই।