Skip to main content

বিপন্ন কালাশ সম্প্রদায়, পাকিস্তান

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমে রয়েছে খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশ। সেই প্রদেশেই আছে হিন্দুকুশ পর্বতশ্রেণি। যাকে গ্রীকরা বলতেন ককেশাস ইণ্ডিকাস। এমনই এক স্বপ্নের পরিবেশে বাস করে এক  স্বাধীনচেতা প্রাচীন শেতাঙ্গ জনগোষ্ঠী। তাদের চুলের রং সোনালি, চোখের মনি নীল। এই মানুষদের সৌন্দর্য যেন একেবারেই আলাদা। পাকিস্তানের আর কোনো গোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে তাদের চেহারা, ধর্ম, সংস্কৃতি, সমাজব্যবস্থা ও খাদ্যাভাসের বিন্দুমাত্র মিল নেই। এই স্বাধীনচেতা গোষ্ঠি হলো কালাশ। তবে এটা স্পষ্ট যে কালাশরা অন্যন্ত কষ্টে হলেও নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রেখেছেন। যদিও তারা সংখ্যায় মাত্র চার হাজার জন।


আসলেই কি তারা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের বংশধর?


কালাশের মানুষেরা পাকিস্তানের শাসন মানে না। তারা নিজেদেরকে কালাশ উপজাতি গ্রীক বীর আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের সৈন্যসামন্তের বংশধর বলে মনে করেন। তারা জানেন মরলে লড়াই করেই মরতে হয়, কারও অধীনে থেকে নয়। আর এজন্যই পাকিস্তানও এদেরকে স্বাধীনভাবে থাকতে দিয়েছে। আর এই কালাশ উপজাতিরাও বিচ্ছিন্ন এক দুর্গম অঞ্চলে মনের সুখেই বসবাস করছে। তারাও আধুনিক দুনিয়ার বিষয়াদি নিয়ে মাথা ঘামায় না।


কালাশদের মতে, তাদের পূর্বপুরুষরা গ্রীস থেকে এসেছিলেন। ইতিহাসেও তার অনেকটাই প্রমাণ মিলেছে। ইতিহাসবিদদের মতে, কালাশরা এখন যেখানে বসবাস করেন, আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট সেই উত্তর পাকিস্তানের পাহাড়ি এলাকা জয় করেছিলেন দুই হাজার বছর আগে। কালাশ জনগোষ্ঠীর মানুষরাও এখানে বাস করছেন প্রায় দু’হাজার বছর ধরেই।


কালাশ ভাষায় কথা বলে তারা, তাদের ধর্মও আলাদা। ‘কালাশ’ ভাষায় কথা বলেন কালাশ উপজাতির মানুষেরা। এর পাশাপাশি আরবি বা উর্দুর কোনো মিল নেই। কালাশরা বলেন, ইSলামেরও আগে (আলেকজান্ডার) ভারতে আসেন। যুদ্ধ জয়ের পর তিনি যখন গ্রিসে ফিরে যান, তার কিছু সঙ্গীরা এখানেই থেকে যান। 


হিন্দুকুশের ভয়ঙ্কর পাহাড়ি ঢালে কালাশদের অতি সাধারণ বাড়িঘর। তারা পৌত্তলিক, নানা দেব-দেবীর পূজা করেন। সেখানকার নারীরাও স্বাধীনচেতা। নিজেরাই নিজেদের স্বামী বেছে নিতে পারেন। পুরুষতন্ত্রের কোনো হুঙ্কার নেই কালাশ গ্রামগুলোতে। কালাশ গ্রামে নারী-পুরুষের সমান অধিকার।


১৯৫০ সালে কালাশদের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৩০,০০০ সেখানে বর্তমানে তাদের সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০০০। হিসেব বলছে প্রতি বছর অন্তত ২০০ কালাশকে ধর্মান্তরিত করছে স্থানীয় মুSলিম পুরুষরা। কালাশদের আরও অভিযোগ তাদের মধ্যে দুটি বিবাহ অনৈতিক। কিন্তু মুসলমান পুরুষেরা বাড়িতে স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও তাদের বিবাহ করছে। তারপর কালাশ মেয়েরা গর্ভবতী হয়ে পড়লে তাদের ধর্মান্তরিত করার জন্য চাপ দিচ্ছে এই মুসলমান পুরুষরা। অন্যদিকে কালাশরা সেখানে সংখ্যালঘু হওয়ায় কোনও প্রতিবাদও করতে পারছে না।








Popular posts from this blog

খাদ্যের আমিষ-নিরামিষ🌰 🧄

  আণবিক জীববিজ্ঞানের  দৃষ্টিকোণ থেকে আমিষ বা প্রোটিন হল পেপটাইড বন্ধনসমূহ দ্বারা পরস্পর সংযুক্ত অ্যামিনো অ্যাসিডের  পলিমার  শৃঙ্খল। মানব পরিপাকের সময় পাকস্থলীতে  হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড   ও   প্রোটিয়েজ   নামক   উৎসেচকের  ক্রিয়ার ফলে আমিষ অণুগুলো ভেঙে অনেকগুলো ক্ষুদ্রতর  পলিপেপটাইড শৃঙ্খলে  পরিণত হয়। মানবদেহ অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিডগুলো  জৈবসংশ্লেষ  করতে পারে না, তাই খাদ্য হিসেবে গৃহীত আমিষে অবস্থিত এই অ্যামিনো অ্যাসিডগুলো  শোষণ  হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমিষ মানবদেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান। এটি দেহকলার গাঠনিক উপাদানগুলোর একটি এবং জ্বালানির উৎস হিসেবেও কাজ করতে পারে। জ্বালানি হিসেবে আমিষ শর্করার সমপরিমাণ শক্তি ঘনত্ব প্রদান করে: প্রতি গ্রামে ৪ কিলোক্যালরি (১৭ কিলোজুল)। এর বিপরীতে স্নেহপদার্থ বা চর্বি প্রতি গ্রামে ৯ কিলোক্যালরি বা ৩৭ কিলোজুল শক্তি প্রদান করে। পুষ্টিগত দৃষ্টিকোণ থেকে আমিষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক ও সংজ্ঞাসূ...

Dashavatar : 10 Avatars of Bhagwan Vishnu!

1. Matsya Avatar 2. Kurma Avatar 3. Varaha Avatar 4. Narasimha Avatar 5. Vamana Avatar 6. Parashurama Avatar 7. Shree Ram Avatar 8. Shri Krishna Avatar 9. Balarama Avatar 10. Kalki Avatar

বলি প্রসঙ্গে আমার মতামত

ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এর চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better, তাহলে বলতে হয় আপনার জীবন আর মৃত্যুর sence নেই। কেন ছাগলের মৃত্যুটাই মৃত্যু? চালকুমড়ো বা আঁখের মৃত্যুটা মৃত্যু নয় কেন? আপনার যদি জীবন আর মৃত্যুর সম্বন্ধ প্রকৃত জ্ঞান থাকতো তাহলে তিনটি ক্ষেত্রেই আপনি সমান দুঃখ পেতেন। কিন্ত আপনার মনে হয় ছাগল বলি দেওয়ার চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better।  আপনার এই প্রকৃতি দেখে বলতে হয়, জীবন বাঁচানো আপনার উদ্দেশ্য নয়, বরং আপনি রক্তকে ভয় পান, অস্ত্র কে ভয় পান। আপনার বাস্তবিক বোধ থাকলে আপনি অস্ত্রের আঘাতে চালকুমড়ো বা আঁখের এবং ছাগ তিনটি বলির ই বিরোধীতা করতেন। কারণ তিনটির প্রকৃতিই একই রকম, এই তিনটে থেকেই অনেক নতুন প্রাণের জন্ম হতে পারতো। তাই তিনটির হত্যাই একই রকম ক্ষতি করে। কিন্ত, শুধুমাত্র ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এটি মানুষের হিংস্র পাশবিক প্রবৃত্তি। তাহলে প্রশ্ন করতে হয়, আমরা কি সত্যিই অহিংস?  আমাদের মায়েরা প্রতিদিন জ্যান্ত মাছগুলো দুহাতে ধরে বঁটিতে ঘচাং করে একবারে জ্যান্তই কেটে ফেলেন। শহরের মাছ-মাংস বিক্রেতারাও একইভাবে কাটেন। তখন কি সেটা নৃশংসতা নয়? ক...