Skip to main content

সরকারী বিল এবং প্রাইভেট মেম্বার বিলের মধ্যে পার্থক্য

সংসদের উভয় কক্ষেই আইন প্রণয়ন পদ্ধতি অভিন্ন। প্রতিটি বিল সংসদে একই পদ্ধতির মধ্য দিয়ে পাস করাতে হয়। একটি বিল হল একটি আইন প্রণয়নের প্রস্তাব। এরজন্য প্রথমে সংসদের উভয় কক্ষের দ্বারা যথাযথভাবে পাস করাতে হয় এবং তারপর ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্বারা স্বাক্ষরিত হয়। তখন এটি একটি আইনে পরিণত হয়ে যায়।


সংসদে উত্থাপিত বিল দুই ধরণের হতে পারে- 
১|পাবলিক বিল / সরকারী সদস্যদের বিল এবং 
২| প্রাইভেট মেম্বার বিল /বেসরকারী সদস্যদের বিল 


এখন প্রশ্ন, সরকারী সদস্য এবং বেসরকারী সদস্য কারা?

একজন সদস্য যখন ক্যাবিনেটের অংশ, তখন তাকে সরকারের প্রতিনিধি বা সরকারী সদস্য হিসেবে ধরা হয়। এবং যেসব সাংসদ ক্যাবিনেটের অংশ নন তাদেরকে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে ধরা হয় না। তাঁরা বেসরকারি সদস্য।

একজন মন্ত্রী যখন সংসদে বিল পেশ করেন তখন তাকে সরকারী বিল বলে। আর একজন সাধারণ সংসদের (যে কোনো সদস্য) যখন বিল উপস্থাপন করেন তখন তাকে প্রাইভেট বিল বলে।

পাবলিক বিল Vs ব্যক্তিগত সদস্য বিল


1. পাবলিক বিল এটি একজন মন্ত্রী কর্তৃক সংসদে প্রবর্তিত হয়।
অন্যদিকে, এটি একজন মন্ত্রী ব্যতীত সংসদের যে কোনও সদস্য দ্বারা প্রবর্তন করা যেতে পারে ব্যক্তিগত বিল।

2. পাবলিক বিল সরকারের (ক্ষমতাসীন দল) নীতি প্রতিফলিত করে।
অন্যদিকে, ব্যক্তিগত বিল জনসাধারণের বিষয়ে রাজনৈতিক দলের মেজাজ প্রতিফলিত করে।

3. পাবলিক বিল পার্লামেন্টে পাস হওয়ার একটি বড় সুযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে, ব্যক্তিগত বিল সংসদে পাস হওয়ার সম্ভাবনা কম।

4. সংসদের নিম্নকক্ষে পাবলিক বিল প্রত্যাখ্যানের ফলে মন্ত্রিসভার পদত্যাগ হতে পারে।
অন্যদিকে, হাউস কর্তৃক ব্যক্তিগত বিল প্রত্যাখ্যান ক্ষমতাসীন দলের সংসদীয় আস্থার উপর কোন প্রভাব ফেলে না।

5. সংসদে পাবলিক বিল introduce করার জন্য 7 দিনের নোটিশ প্রয়োজন হয়।
অন্যদিকে, সংসদে এটি introduce করার জন্য একমাস প্রয়োজন।

6. পাবলিক বিল আইন বিভাগের সাথে পরামর্শ করে সংশ্লিষ্ট বিভাগ দ্বারা খসড়া করা হয়।
অন্যদিকে, এর খসড়া প্রণয়নের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সদস্যদের।


সোজা কথায় বলতে গেলে, সরকার যখন যে বিষয়ে বিল পাশ করানোর কথা ভাবে তখন সরকার একটি কমিটি গঠন করে সেই বিষয়ের গভীর পর্যালোচনায় প্রাপ্ত রিপোর্ট এবং সুপারিশগুলোর সমীক্ষা করে মন্ত্রী পরিষদের সঙ্গে। এবং তারপর সেই মন্ত্রিসভার বিল পাশ করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে  তখন সেই মন্ত্রকের মন্ত্রী সংসদে ওই বিলটি পেশ করেন। 

কিন্ত অন্যদিকে ব্যক্তিগত সদস্যদের বিলে তারা নিজেরাই রিপোর্ট তৈরী করেন। কিংবা অন্য কোনো বড় Private সংস্থার করা সমীক্ষার উপর নির্ভর করে নিজের প্রস্তাব পেশ করেন। 

অর্থাৎ, একটি গোটা ক্যাবিনেটের প্রয়াস, অন্যদিকে একজনের মাত্র ব্যক্তিগত প্রয়াস। অর্থাৎ, All Vs One.

একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে। ধরুন আমাদেরকে (সরকারকে) একটি Transport related আইন তৈরী করতে হবে। এর উদ্যোগ নেবে Ministry of transport। তারপর সেটাকে approve করবে cabinet। এরপর এই বিলকে সংসদে উপস্থাপন করবেন Transport  Minister। এটাই স্বাভাবিক পদ্ধত । 

এখন যদি অন্য কোনও সাংসদের মনে হয় Transport related কোনো আইন বদলানো দরকার। তখন তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন সংস্থার সমীক্ষার রিপোর্টের কথা তুলে ধরবেন এবং নতুন আইনের রূপরেখা তৈরী করে নতুন আইন তৈরী করার প্রস্তাব দিয়ে সংসদে বিল পাশ করবেন। 

একটি বাস্তব উদাহরণ দিই -- বিজেপির এমপি কিরোদি লাল মিনা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (UCC) বিলটি রাজ্যসভায় উত্থাপন করেছেন। কিন্ত এটার পিছনে আদৌ কি যথেষ্ট Homework হয়েছে? বিলটি পেশ করা উচিত ছিল ministry of family and health welfare কিংবা ministry of law and justice এর পক্ষ থেকে। এর জন্য প্রয়োজন ছিল একটি কমিটি গঠন করা। এবং তাদের সমীক্ষার রিপোর্ট কে বিশ্লেষণ করার। তারপর সেই কমিটির সুপারিশ কে ক্যাবিনেটের সিলমোহর লাগিয়ে সংসদে উপস্থাপন করার। কিন্ত সমস্ত কাজ করেছেন একজন মাত্র ব্যক্তি। সেইজন্যই এর গ্রহণযোগ্যতা অত্যন্ত কম।


1952 সাল থেকে, শুধুমাত্র 14 টি ব্যক্তিগত সদস্যের বিল আইনে পরিণত হয়েছে। 14 তম লোকসভায় 300 টি বেসরকারী সদস্য বিল পেশ করা হয়েছিল, যার মধ্যে মাত্র 4% আলোচনা করা হয়েছিল এবং বাকি 96% কোনও বিতর্ক ছাড়াই শেষ হয়ে যায়। ভারতীয় সংসদে পাস হওয়া বেসরকারী সদস্যদের বিলগুলির তালিকা নীচের টেবিলে দেওয়া হল:

1. The Muslim Wakf’s Bill 1952 - Syed Mohammed Ahmed Kasmi
2. The Indian Registration (Amendment) Bill 1955- SC Samanta
3. The Parliamentar Proceedings (Protection of Publication) Bill 1956 -- Feroze Gandhi
4. The Code of Criminal Procedure (Amendment) Bill 1953 -- Raghunath Singh
5. The Women’s & Children’s Institution (Licensing) Bill 1954-- Kamledu Mati Shah
6. The Code of Criminal Procedure (Amendment) Bill 1957-- Subhadra Joshi
7. The Salaries & Allowances of MPs (Amendment) Bill 1964 Raghunath Singh
8. The Hindu Marriage (Amendment) Bill 1963 -- Diwan Chand Sharma
9. Supreme Court (Enlargement of Criminal Appellate Jurisdiction) Bill 1968 -- Anand Narian Mullah
10. The Ancient and Historical Monuments & Archeological Sites and Remains (Declaration of National Importance) Bill 1954 -- Dr Raghubir Singh
11. The Hindu Marriage (Amendment) Bill 1956-- Dr Seeta Parmanand
12. The Orphanages & Other Charitable Homes (Supervision & Control) Bill 1960-- Kailashh Bihari Lal
13. Marine Insurance Bill 1959-- MP Bhargava 
14. Indian Penal Code (Amendment) Bill-- Diwan Chaman Lall

Popular posts from this blog

ছেলেরা কেন দিনদিন 'বৌদিবাজ' হয়ে উঠছে?

সমাজটা খুবই খারাপ দিকে যাচ্ছে। ছেলেরা এখন বৌদিবাজ হয়ে উঠেছে! তারা একবার করে প্রেমে ছেঁকা খাওয়ার পর আর অন্য কোনও প্রেমিকা জোটায় না, বৌদিদের সাথে গল্প করে। কারণ - ১| ধোঁকা খায় না ২| হৃদয়ে আঘাত লাগে না ৩| Break up 💔 বলে কিছু থাকে না ৪| অনেকটা Stunt বাজীর মতো, মাথায় কোনো চাপ নেয়ার দরকার পরে না  আর একটা বিষয় হলো এখন বেশিরভাগ ছেলে পড়াশোনা দিকে ব্যস্ত। তাই তাদের হাতেও বেশি সময় থাকে না। আবার বৌদিদের হাতেও বেশি সময় সীমিত। তাই একটা Understanding বজায় থাকে। আরেকটা জিনিস হল নতুন প্রেমিকারা যেরকম নানারকম চাপ দেয়। বৌদীরা অনেকটা বোঝে ব্যাপারগুলো। যেমন- ফাঁকা পকেট, কম সময়, Relation Public না করা... এসব জিনিস। সেই কারণে তারা এতটা চাপ দেয় না। অল্পবয়সী মেয়ের একটু জেদি হয়। তাই তারা অকারণেই ঝগড়া করে যা এমনিতেই চাকরি আর ভবিষ্যতের চিন্তায় চিন্তিত ছেলেদের ভালো লাগে না। তাই তারা বৌদিদের দিকেই ঝোঁকে। বিয়ে তো অবশ্য ভালো কোনো মেয়ে দেখেই করবে, তার আগের সময়টা অন্য দিকে দেয় - বৌদিদের সাথে আড্ডা মারে। বৌদিদের সাথে কথা বলে আর কিছু হোক বা না হোক মানসিক শান্তি আছে। আমার বৌদিবাজ বন্ধুদের জন্য 💖

বলি প্রসঙ্গে আমার মতামত

ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এর চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better, তাহলে বলতে হয় আপনার জীবন আর মৃত্যুর sence নেই। কেন ছাগলের মৃত্যুটাই মৃত্যু? চালকুমড়ো বা আঁখের মৃত্যুটা মৃত্যু নয় কেন? আপনার যদি জীবন আর মৃত্যুর সম্বন্ধ প্রকৃত জ্ঞান থাকতো তাহলে তিনটি ক্ষেত্রেই আপনি সমান দুঃখ পেতেন। কিন্ত আপনার মনে হয় ছাগল বলি দেওয়ার চেয়ে চালকুমড়ো বা আখ বলি দেওয়া better।  আপনার এই প্রকৃতি দেখে বলতে হয়, জীবন বাঁচানো আপনার উদ্দেশ্য নয়, বরং আপনি রক্তকে ভয় পান, অস্ত্র কে ভয় পান। আপনার বাস্তবিক বোধ থাকলে আপনি অস্ত্রের আঘাতে চালকুমড়ো বা আঁখের এবং ছাগ তিনটি বলির ই বিরোধীতা করতেন। কারণ তিনটির প্রকৃতিই একই রকম, এই তিনটে থেকেই অনেক নতুন প্রাণের জন্ম হতে পারতো। তাই তিনটির হত্যাই একই রকম ক্ষতি করে। কিন্ত, শুধুমাত্র ছাগ বলি দেখলে যদি আপনার মনে হয় এটি মানুষের হিংস্র পাশবিক প্রবৃত্তি। তাহলে প্রশ্ন করতে হয়, আমরা কি সত্যিই অহিংস?  আমাদের মায়েরা প্রতিদিন জ্যান্ত মাছগুলো দুহাতে ধরে বঁটিতে ঘচাং করে একবারে জ্যান্তই কেটে ফেলেন। শহরের মাছ-মাংস বিক্রেতারাও একইভাবে কাটেন। তখন কি সেটা নৃশংসতা নয়? কেন আমরা ব

রাষ্ট্রভক্ত বীরাঙ্গনা হীরা দে

 🌹💥🕉️ দুর্নীতিবাজদের সাথে কেমন আচরণ করা উচিত তার উদাহরণ আমাদের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা থেকে জানা যায়। এই শাস্তিও কোন রাজা বা সরকার দিয়েছিল না দিয়ে ছিল শুধুমাত্র তার পরিবারের সদস্যরা। 💢 1311 খ্রিস্টাব্দে, আলাউদ্দিন খিলজিকে জলোর দুর্গের গোপন কথা বলার জন্য পুরস্কার হিসাবে পাওয়া অর্থ নিয়ে ভিকা দাহিয়া আনন্দের সাথে বাড়ি ফিরছিলেন।এত টাকা এই প্রথম দেখল। হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিল যুদ্ধ শেষ হলে এই টাকা দিয়ে একটা বিলাসবহুল প্রাসাদ তৈরি করে আরামে বসবাস করবে।প্রাসাদের সামনে ঘোড়া বাঁধা থাকবে, চাকর থাকবে।  তার স্ত্রী হীরা স্বর্ণ ও রৌপ্য গয়না দ্বারা সারা শরীর ঢাকা থাকবে। আলাউদ্দিন কর্তৃক জালোর কেল্লায় নিযুক্ত সুবেদারের দরবারে তিনি বড় মর্যাদার বিবেচিত হবেন।বাড়িতে পৌঁছে বিড়বিড় করে হেসে টাকার বান্ডিলটা বাড়িয়ে দিলেন স্ত্রী হীরা দে'র হাতে।  🌹স্বামীর হাতে এত টাকা এবং স্বামীর মুখ ও অভিব্যক্তি দেখে হীরাদে আলাউদ্দিন খিলজির সৈন্যদের দিল্লি ফিরে যাওয়ার কারণ বুঝতে পেরে জালোরের যুদ্ধে হতাশ হয়ে হঠাৎ জালোরের দিকে ফিরে যায়। হীরা দে বুঝতে পেরেছিলেন যে তার স্বামী ভিকা দাহিয়া তার জন্মভূমি জ