Skip to main content

পৌষ_সংক্রান্তি কি? কেন পালন করা হয়?

আগামী ২৯ শে পৌষ ১৪২৬ বঙ্গাব্দ ( ১৫ই জানুয়ারি ২০২০ খ্রিঃ) বুধবার পৌষ সংক্রান্তি এবং উত্তরায়ণের শুরু। প্রতি মাসের শেষ দিন অর্থাৎ যে দিন মাস পূর্ণ হবে সে দিনকে সংক্রান্তি বলা হয়। সংক্রান্তি অর্থ সঞ্চার বা গমন করা। সূর্যাদির এক রাশি হতে অন্য রাশিতে সঞ্চার বা গমন করাকেও সংক্রান্তি বলা যায় সংক্রান্তি শব্দটি বিশ্লেষ করলেও একই অর্থ পাওয়া যায়; সং+ক্রান্তি, সং অর্থ সঙ সাজা এবং ক্রান্তি অর্থ সংক্রমণ। অর্থাৎ ভিন্ন রূপে সেজে অন্যত্র সংক্রমিত হওয়া বা নুতন সাজে, নুতন রূপে অন্যত্র সঞ্চার। হওয়া বা গমন করাকে বুঝায়। মাঘ, ফাল্গুন, চৈত্র, বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ আষাঢ় এই ছয় মাস উত্তরায়ন কাল এবং শ্রাবণ, ভাদ্র, আশ্বিন, কার্তিক, অগ্রহায়ণ ও পৌষ এই ছয় মাস দক্ষিণায়নকাল। পৌষ মাসের শেষ দিনে সূর্য উত্তরায়ণের দিকে যাত্রা শুরু করে বলে এই সংক্রান্তিকে উত্তরায়ণ সংক্রান্তিও বলা হয়।
শাস্ত্রমতে মানুষের এক বছর দেবতাদের একটি দিন-রাতের সমান অর্থাৎ মানুষের উত্তরায়ণের ছয়মাস দেবতাদের একটি দিন ও দক্ষিণায়নের ছয়মাস দেবতাদের একটি রাত। রাত্রে মানুষ যেমন সকল দরজা-জানালা, প্রধান ফটক ইত্যাদি বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন, তেমনি দেবতাগণও রাত্রে অর্থাৎ দক্ষিণায়ণে সবকিছু বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন। এসময় বাহির থেকে প্রবেশ করার সুযোগ নেই, অর্থাৎ দক্ষিণায়ণে দেবলোক পুরোপুরি বন্ধ থাকে। আবার দেবগণের রাত পৌষ সংক্রান্তির দিন শেষ হয় বলে পরবর্তী উদয়ের ব্রাহ্মমুহূর্ত থেকে (গোস্বামীমতে) দেবগণের দিবা শুরু হয়।

উক্ত সময়ে স্বর্গবাসী ও দেবলোকের সকলেই নিদ্রা ভঙ্গ হয় এবং নিত্য ভগবৎ সেবা মূলক ক্রিয়াদি শুরু হতে থাকে। এই জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীগণ ব্রহ্মমুহূর্তে স্নান, নামযজ্ঞ, গীতাপাঠ, শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনি ও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটিকে আনন্দময় করে তোলেন। অন্যদিকে, গঙ্গা পুত্র ভীষ্ম তার পিতা শান্তনু থেকে বর পেয়েছিলেন যে তিনি যখন ইচ্ছা মৃত্যুবরণ করতে পারবেন। অর্থাৎ তাঁর নিজের ইচ্ছা ছাড়া কখনো মৃত্যু তাকে স্পর্শ করতে পারবে ন।.মহাভারতের কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের বিশ্ববিখ্যাত বীর, মহাপ্রাজ্ঞ, সর্বত্যাগী ও জিতেন্দ্রিয় মহাপুরুষ ভীষ্মের মহাপ্রয়াণের স্মৃতির জন্য উত্তরায়ণ সংক্রান্তি আরও মর্যাদাপূর্ণ হয়েছে।

উল্লেখ্য, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে কৌরবপক্ষের চারজন সেনাপতির মধ্যে তিনিই প্রধান সেনাপতি। উভয় পক্ষের আঠারদিন যুদ্ধের দশম দিবসে সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পূর্বে পাণ্ডব পক্ষের সেনাপতি অর্জুনের শরাঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে ভীষ্মদেব রথ থেকে মাটিতে পড়ে যান। কিন্তু তিনি মাটি স্পর্শ না করে আটান্ন দিন তীক্ষ্ণ শরশয্যায় শুয়ে উত্তরায়ণের অপেক্ষা করে পৌষ সংক্রান্তির দিনে যোগবলে দেহত্যাগ করেছেন। গ্রাম বাংলা সহ ভারতের বিভীন্ন জায়গায় ভোর বেলা আগুন লাগানো হয় খড় ও বাঁশ দিয়ে বানানো স্তুপে...!! এটি মূলত পিতামহ ভীষ্মের চিতার স্বরুপ...!!

পৌষ সংক্রান্তির দিন সূর্য উত্তর মেরুতে হেলে পড়তে থাকে যার জন্যে একে মকর সংক্রান্তি বা উত্তরায়ণ সংক্রান্তি বলে! শাস্ত্রমতে ভীষ্মদেব মৃত্যুর পরে ভগবদ্ ধামে যাননি। তিনি ছিলেন 'দৌ' মতান্তরে দ্যু নামক অষ্টবসু, যিনি মহর্ষি বশিষ্ঠের অভিশাপগ্রস্ত হয়ে ইহলোকে মনুষ্য হিসাবে কৃতকর্ম ভোগের জন্য জন্ম নিয়েছিলেন। তাই তাঁর পুনরায় দেবলোকেই যাবার কথা। কারণ তিনি

সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা দক্ষিণায়নের সময় দেবলোকে রাত্রি, সেই সময় সেখানকার সবকিছু বন্ধ থাকে। ভীষ্ম যদি দক্ষিণায়নে দেহত্যাগ করতেন, তবে তাঁকে তাঁর লোকে প্রবেশ করার জন্য বাইরে প্রতীক্ষা করতে হত। তিনি ইচ্ছামৃত্যু বরণ করেছিলেন বলে ভেবে দেখলেন, দক্ষিণায়নে মহাপ্রয়াণ করলে দেবলোকে গিয়ে বাইরে প্রতীক্ষা করার চেয়ে এখানে থেকে উত্তরায়ণের প্রতীক্ষা করাই ভালো। কারণ এখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দর্শন লাভ হবে এবং সৎসঙ্গ হতে থাকবে, যার ফলে সকলেরই মঙ্গল হবে। দেবলোকে একলা প্রতীক্ষা করে কী হবে ? এইভেবে তিনি দক্ষিণায়নে শরীর ত্যাগ না করে উত্তরায়ণে শরীর ত্যাগ করেছিলেন।

দীর্ঘ ৫৬ দিন শরশয্যায় অবস্তানের পর অবশেষে উত্তরায়ণ বা পৌষ সংক্রান্তির নিশান্তে পিতামহ ভীষ্মদেব যোগবলে দেহত্যাগ করে দেবলোকে গমন করেন। ৫০০০ বৎসর + পূর্ব হইতে আমরা প্রতিবৎসর উত্তরায়ণ বা পৌষ

সংক্রান্তিতে প্রাতকালে খড়-কুটা জড়ো করে পিতামহ ভীষ্মদেবের প্রতীকি শবদাহ করে থাকি। অনেকে এই শবদাহকে মেড়ামেড়ির ঘর বা ভেড়াভেড়ির ঘর জ্বালানো বলে থাকেন এবং এই দিন মাছ-মাংস আহার করে থাকেন, যাহা সম্পূর্ণ অনুচিত। কারণ উত্তরায়ণ বা পৌষ সংক্রান্তি অন্তেষ্টিক্রিয়া ও শ্রাদ্ধ সংক্রান্ত অনুষ্ঠান। অন্যদিকে এই দিবসটি এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, এই দিন প্রাতকালে দেবলোকের সকল দেবতাগন ও স্বর্গবাসী পিতৃপুরুষগন নিদ্রা থেকে জাগ্রত হন। ভীষ্মদেবের এই মহাপ্রয়াণের স্মৃতির জন্য সনাতণ ধর্মাবলম্বীগণের নিকট উত্তরায়ণ সংক্রান্তি বেশী গুরুত্ব পেয়েছে।

এই জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীগন ব্রাহ্ম মুহুর্থে স্নান, শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি, গ্রামে, নগরে সংকীর্তন, গীতাপাঠ, অন্নদান, বস্ত্রদান বা আর্থিক অনুদান দেওয়া সহ মঙ্গলজনক কাজ করে থাকেন। প্ৰতি বৎসর আমরা শাস্ত্রসম্মতভাবে ভাবগাম্ভীর্যের সহিত এই অনুষ্ঠান পালন করার আশা ব্যক্ত করি।

Popular posts from this blog

PFI - Targer 2047

টার্গেট: ২০৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতে ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠা হবে, ফাঁস PFI-এর পরিকল্পনা। পুলিশের অভিযানে বিহারে গ্রেপ্তার হওয়া ৩ ইসলামিক মৌলবাদীর কাছ থেকে পাওয়া গেলো মারাত্বক তথ্য। ৭ পাতার ছাপা নথিতে ভারতকে নিয়ে মারাত্বক পরিকল্পনা করা হয়েছে। ওই নথিতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে যে কিভাবে ২০৪৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ভারতে ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে। আর এই পুরো পরিকল্পনার পিছনে রয়েছে ইসলামিক মৌলবাদী সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া(PFI)। বিহার পুলিশের একটি দল ফুলওয়ারী শরীফ এলাকা থেকে এদের গ্রেপ্তার করে। এদের মূল মাথা মহম্মদ জালালুদ্দিন। এদের ঘরের বিছানার নিচে এমন একটি ষড়যন্ত্রের নথি পাওয়া গিয়েছে, যা দেখার পর চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। পুরো পরিকল্পনার ব্যাপকতা আঁচ করে পুরো ঘটনার তদন্তভার হাতে নিয়ে NIA(National Investigation Agency)। ভারতে ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য। উদ্ধার হওয়া ছাপা নথির নাম দেওয়া হয়েছে ‛India 2047’। তার নিচে রয়েছে ‛Towards Rule of Islam in India’। তার নিচে স্পষ্টত ইংরেজিতে লেখা রয়েছে, যার অর্থ বাংলাতে দাঁড়ায় ‛অভ্যন্তরীণ নথি, বিতরণের জন্য নয়’। মোট ৭ পাতার এই নথিতে বিস...

government schemes

2014 Answer -1 Here is a list of central government schemes and projects launched in 2014: Swachh Bharat Abhiyan (Clean India Mission) PM Jan Dhan Yojana (PM's People's Wealth Scheme) Deendayal Upadhyaya Grameen Kaushalya Yojana (DDU-GKY, Deen Dayal Upadhyaya Rural Skills Schemes) Namami Gange Programme Make in India Skill India Mission Startup India Beti Bachao Beti Padhao (Save the Girl Child, Educate the Girl Child) Pradhan Mantri Ujjwala Yojana (PMUY) Pradhan Mantri Fasal Bima Yojana (PMFBY) Pradhan Mantri Jeevan Jyoti Bima Yojana (PMJJBY) Pradhan Mantri Suraksha Bima Yojana (PMSBY) Atal Pension Yojana Pradhan Mantri Mudra Yojana Digital India Smart Cities Mission Gold Monetization Scheme AMRUT (Atal Mission for Rejuvenation and Urban Transformation) Setu Bharat Yojana Pradhan Mantri Gram Sadak Yojana (PMGSY) Rashtriya Gokul Mission Pradhan Mantri Krishi Sinchai Yojana (PMKSY) These schemes and projects have been launched with the aim of improving the...