Skip to main content

তেজোমহল

আপনি কি জানেন তাজমহল তেজোমহালয়া শিব মন্দির ভেঙ্গে সেটিকে ট্রিক আর্টের দ্বারা নির্মাণ করা হয়েছিলো শাহাজাহানের দ্বারা, এর ভেতরে বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সভ্যতার চিহ্ন ও সংস্কৃতি ওম, ত্রিশূল শিল্পকলার মধ্যে আছে,কোন আসল ইসলামিক স্মৃতি সৌধে থাকে না, একে বলে চুরি করে,লুটে জতাদের ওপরে নিজের প্রতিষ্ঠা সারা বিশ্বে জাহির করে গেছে ।


১) তাজমহলের নাম শাহাজাহান কিংবা ঔরংজেবের কোন সরকারী কাগজে ছিলো না, নাম অবধি উল্লেখ নেই, তাই তাজ-ই-মহল বলা হাস্যকর ছাড়া কিছু নয় ।

২)’মহল’ কথাটি বিশুদ্ধ সংস্কৃত শব্দ, ৫৮ টি মুসলিম দেশে কোথাও ইসলামিক নির্মাণে এর উল্লেখ নেই।

৩)শাহাজাহানের এক বউ মুমতাজের আসল নাম ছিলো মুমতাজ-উল-জামানি, তাই মুমতাজ মহল বলে কিছু হতে পারে না, কেউ বউ এর নামে বাড়ির নামকরণ করতে গেলে প্রথম “মুম” নামটা বাদ দেবে ?

৪)অনেক ইউরোপিয়ান ভ্রমণকারী জ্ঞানী ব্যক্তি তাজমহল সম্বন্ধে একবাক্য ও লেখেনি, যদি এরকম কোন স্মৃতি সৌধ বানানো হচ্ছিলো এর বছর ধরে সাধারণ লোকের মুখ থেকেই শুনতে পারতেন, উল্টে তেজোমহালয় শিব মন্দিরের উল্লেখ পায়, শাহাজাহান-ওরংজেব সংস্কৃত শব্দ ব্যবহার করতেন না, হঠাৎ এক বউ এর জন্যে সংস্কৃতনাম বাড়ি করতে যাবে ?? তাও আবার পবিত্র ‘কবরখানা’ কে !!!

৫) যদি তাজ মুমতাজের কবরখানা হয় তাহলে “মহল” কিভাবে নাম হলো ?

৬) যদি মুমতাজের কবর থাকতো তার ওপর এতো বড় নির্মাণ করা হতো না , ভব্য স্মৃতি শৌধ তৈরি হতো ।

৭)তাজমহলের নাম সংস্কৃত শব্দ তেজোমহল থেকে এসেছে যার অর্থ শিবমন্দির, আগ্রেশ্বর মহাদেব বলে তাজমহলের জায়গায় পূজিত হতো, পরবর্তীকালে ঐ জায়গা ভাঙ্গা হয় ।

৮) মারবেলের সিড়ি দিয়ে উঠতে গেলে জুতো ছেড়ে উঠতে হয় কেনোনা এটা শাহাজাহানের পূর্বতন মন্দির মান্যতা, কবরে জুতো ছেড়ে আসতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই ।

৯) উপরের অংশে মার্বেলের ওপর ১০৮ নাম্বার খোদাই করা আছে, যেটা হিন্দু পবিত্র সংখ্যা, এটা ইসলামিক বিরোধী নীতি, এর অর্থ মন্দির ভেঙ্গে কিছু অংশ এদিক ওদিক লাগানো হয়েছে ।

১০) তাজমহলের বেসমেণ্টে এরকম অনেক নির্দশন পাওয়া গেছে, শিবলিঙ্গার ভাঙ্গা অংশের প্রতিচ্ছবি পাওয়া গেছে, মুমতাজের কবর যদি সত্যি থাকতো এইসব হতো না ।

১১)তাজমহলের পুরো বাহ্যিক ধরণ বিশ্বের বৃহত্তম অঙ্করভাট মন্দিরের পুরো নকল, যদি সত্যি কবর থাকতো বা ইসলামিক নিয়ম থাকতো মন্দিরের বাহ্যিক কাঠামো হতো না, মন্দিরের বাহ্যিক রুপকে এক রেখে ভাঙ্গাচুরার কাজ করে গেছে জিহাদী জঙ্গীরা ।

১২) যারা তাজমহলের দেখভাল, রক্ষণাবেক্ষণের কাজে যুক্ত তারাও বেসমেণ্টে কালো শিবলিঙ্গের সন্ধান পেয়েছে, দেওয়ালের সাথে গাঁথা, লাল পাথর একদম নীচে বিদ্যমান, প্রতত্ব বিভাগ এইসব খবর লুকিয়ে যায় ।

১৩) ১২ তম জ্যোতির্লিং হলো এই তেজোমহালয় যাকে প্রাচীনকালে নাগনাথেশ্বর বলা হতো, শিবলিঙ্গে সর্ব্দা সাপ জড়িত থাকে, শাহাজাহান এটা দখলের পর মন্দিরের জৌলুস কমে যায়।

১৪) তেজোমহলে ঢোকার নিয়ম জুতো ছেড়ে যেটি শাহাজাহানের বহু পূর্ব থেকে প্রচলিত কারণ এটি মন্দির ছিলো, যদি এটি সত্যি মুমতাজের কবরখানা হতো জুতো খোলার রাখা নীতি মানতে হতো না কারণ ইসলাম অনুযায়ী এরকম কোন জুতো খোলার নিয়ম নেই ।

১৫) বিখ্যাত শাস্ত্র বিশ্বকর্মা বাস্তুশাস্ত্রে তেজ-লিঙ্গের বর্ণণা আছে যার অর্থ হলো শিব-লিঙ্গ, এরকম তেজ-লিঙ্গ এইখানে স্থাপিত ছিলো তাই প্রাচীননাম ছিলো তেজো-মহালয় ।

১৬) আগ্রা শহর যেটি তাজমহলের অবস্থান কেন্দ্র এটি শিব উপাসকের স্থান, বহু প্রাচীন এখানকার অধিবাসীরা শিবের আরাধনা করতো বিশেষ করে শ্রাবণ মাসে রাত্রের খাদ্য গ্রহণ করার আগে পাঁচ শিব লিঙ্গের আরাধনা করতো যথাঃ- বালকেশ্বর, পৃথিবীনাথ, মনাকামেশ্বর, রাজারাজেশ্বর ও তেজোমহালয়, তেজোমহালয় ধ্বংস করার পর এখন সেই শিবলিঙ্গের উপাসনা হারিয়ে যায়, আগ্রার মূলকূল দেবতা কোবরা সাপ, যেটি আবার শিবের অন্যতম অংশ। তেজোমহালয়ের অস্তিত্ব বোঝা যায় ।

১৭) আগ্রা শহরে প্রাচীনকাল থেকে জাট জাতিদের আধিপত্য ছিলো যাদের অধিষ্ঠতা শিবকে তেজাজী বলা হতো, তেজা মন্দির ছিলো, তেজলিঙ্গ ও তার সাথে তেজোমহালয়ের কথা বোঝা যায়। 

১৮) শাহাজাহান নিজের জীবনরচনা বাদশাহনামা (vol 1, 403)লিখেছে যে এক বিরাট গ্মবুজ ও স্মৃতি সৌধ জয়পুরের রাজা জয় সিং এর এলাকা থেকে নেওয়া হয়েছিলো মুমতাজের কবরের জন্যে,সেটির নাম হয়েছিলো রাজা মান সিং হাভেলী ।

১৯) মুমতাজের আসল নাম ছিলো মুমতাজ-উল-জামানী, আমাদের শেখানো হয় যে ১৬৩১-১৬৫৩ অবধি নাকি তাজমহলের নির্মাণ হচ্ছিলো কিন্তু ফরাসী পর্যটক টাভেরনিয়ার নিজের গ্রন্থের এর উল্লেখ করলো না, এত বছর ধরে কোন কিছু নির্মাণে আশেপাশের লোক খবর জানবে না একি সম্ভব ছিলো ? তাজমহল হিসেব মতো শাহাজাহানের মোঘলদের সম্পত্তি বা ওয়াকফ বোর্ডের হওয়া উচিত ছিলো যদি সত্যি মুমতাজের কবরের ওপর এটি নির্মাণ করানো হতো ।

২০) জয়পুরের রাজা মান সিং এতো গদ্দার ছিলো যে শাহাজাহানের কথা মতো বিশাল মার্বেলের আখড়া পাঠিয়েছিলো তেজোমহালয় ভেঙ্গে সারাই করে মন্দির গায়েব করে তাজমহল নির্মাণের জন্যে, সেটি নিজের গোপন গ্রন্থ কপাডদ্বারে উল্লেখ আছে ।

২১)ওরংজেবের শাহাজাহান কে লেখা বিভিন্ন পত্র যা বই হিসেবে আছে তাতে লেখা আছে মুমতাজের কবরের স্মৃতি সৌধ যেটা ৭ তলা ছিলো তা ভেঙ্গে পড়ছে, পুরোনো হয়ে যাচ্ছে, ফাটল দেখা দিচ্ছে, তাই ওরংজেব নিজের অর্থে সারাই করছেন ।তাজমহল যদি সত্যি বানাতো নতুন করে শাহাজাহান তাহলে এতো তাড়াতাড়ি অবক্ষয় হতো না ।

২২) গদ্দার মান সিং এর ছেলে জয় সিং এর কাছে যখন মার্বেলের বিশাল অর্ডার, স্টোণ কাটার মেশিন আবার চাওয়া হয়, গুপ্তচরের মাধ্যমে জানতে পারে যে শিব মহালয় তেজো মহালয়কে ভেঙ্গে নকল কাজকর্ম চলছে ও কোরান শরীফের আয়াত লেখা হবে এমন কাজ চলছে তিনি একদম মানা করে দেন, ফলস্বরূপ জয় সিং গ্রেপ্তার হয় ।

২৩) ফরাসী সোনা ব্যবসায়ী টাবেরনিয়ার শাহাজাহানের আমলে এসেছিলেন, তিনি লিখেছেন যে মুমতাজকে যেখানে কবর দেওয়া হয়েছিলো সেখানে অনেকে যেতো কিন্তু সেই অংশ তাজমহল কিংবা আগ্রার কোন অংশ নেই । এটাই প্রমাণ করে ২২ বছর ধরে তেজো মহালয়া ভেঙ্গে, শিবলিঙ্গ ভেঙ্গে সেটি পুনঃনির্মাণ, কোরানের আয়াত ঢুকিয়ে অন্য রং দেওয়ার চেষ্টা ছিলো ।

২৪) ১৬৩২ সালে পিটার মান্ডী, ইংরেজ ভ্রমণকারী তাজমহলের গম্বুজের কথা উল্লেখ করেছেন । প্রশ্ন হলো তিনি এসেছিলেন মুমতাজের মৃত্যুর ১ বছর পর । এতো তাড়াতাড়ি গম্বুজ উঠে না, ২২ বছর ধরে যেখানে কাজ হয়েছে দাবি করা হয় সেটি এতো তাড়াতাড়ি সম্ভব নয় । অতএব ইহা প্রমাণ করে যে মুমতাজের আগেও এই তেজো মহালয় ছিলো ।

২৫) ডা লায়েত, ডাচ অধিকারী মানসিং এর কেল্লা যেটি শাহাজাহানের আগে নির্মিত সেটি উল্লেখ করেছেন । বাদশাহনামাতে মুমতাজের কবর ঐ কেল্লাতে উল্লেখ আছে ।

২৬) বারনিয়ার, ফরাসী ভ্রমণকারী শাহাজাহানের সময়কালীন উল্লেখ করেছে যে এই মানসিং এর কেল্লা, তেজোমহালয়তে অদ্ভুতভাবে অমুসলিমদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিলেন ।

২৭) জোহান অ্যালবার্ট ১৬৩৮ সালে আগ্রা গেছিলেন। তিনি মুমতাজের মৃত্যুর ৭ বছর পর গেছিলেন । কিন্তু তার গ্রন্থে কোন মুমতাজের কবরের ওপর গড়ে ওঠা তাজমহলের উল্লেখ নেই । ২২ বছর ধরে নির্মাণকাজ চলা, নিজের বউ কবরের ওপর কোন কিছু বানানো হলে সাধারণ জণগণের কাছে খবর চলে যেতো । এরকম কোন নির্দশন বিদেশীরা অবধি খুঁজে পায়নি ।

২৮) ১৮৭৪ সালে ভারতের প্রতত্নবিভাগ তাজমহলের ভিতর খননকার্য চালিয়েছিলো । সেখানে তারা পায় যে একটি পুরোণো পিলারের ওপর নতুন পিলারের কোটিং । বেসমেন্টেও বহু তথ্য পায় । কিন্তু এইসব ফাইল পরের দিকে গায়েব হয়ে যায় ।

২৯)তাজমহলের বেশ কিছুটা দূরে কোরাণের আয়াত লেখা বিরাট গেট দেখা যায় । সেখানে দেখা যায় হাতির মূর্তি স্বাগতম করছে । মূর্তির ভাঙ্গা অংশে ছাপ স্পষ্ট বোঝা যায় । ইসলামিক স্থাপত্যে কোন হাতির চিত্র হয় না ।

৩০) তাজমহল করতে নির্দিষ্ট কতো খরচ হয়েছিলো, কতো মার্বেল লেগেছিলো তার কোন তথ্য নেই তখনকার সরকারী নথীপত্রে, যদি প্রকৃত নির্মাণ হচ্ছিলো সব তথ্যের উল্লেখ থাকতো । যেহেতু পুরো কাজটা ছিলো হিন্দু মন্দিরকে ভেঙ্গে ট্রিক আর্ট দিয়ে কবরের মহল সৃষ্টি করা তাই এতো সময় লাগলো ।

৩১) লক্ষনৌর মিউজিয়ামে আছে একটি নেমপ্লেটের সংরক্ষণ করে রাখা যেখানে ১১৫৫ সালে তৈরী মাউন্ট কৈলাশের ন্যায় সাদা শিব মন্দির তৈরির কথা বলা আছে, ভগবান শিব এখানে থাকার কথা বলেগেছিলেন । শাহাজাহানের নির্দেশে এই নেমপ্লেট হঠানো হয় এই তাজমহল থেকে । তেজোমহালয় (তাজমহল) এর বাগানে আজও চৌকানো পিলার আছে তা স্পষ্ট ইঙ্গিত ট্রিক আর্টের শিকার হয়েছিলো এই শিবমন্দির ।

৩২) তাজমহলের ভেতর এখন কোরানের ১৪ অধ্যায়ের আয়াত দেখেন সেখানে গভীরভাবে গবেষণা করলে দেখা যাবে এই লেখাগুলির আগেও অন্য লেখা ছিলো যেগুলির সঙ্গে ইজলামের কোন সম্পর্ক নেই । ট্রিক আর্টের প্রমাণ আবার ।

৩৩) কোরাণের খোদাই করা লেখাগুলি খুটিয়ে দেখা গেছে এগুলি অনেক পরে লেখা হয়েছে তাও অন্য লেখা মুছে দিয়ে । তেজোমহলের সুদক্ষভাবে দখল করা হয়েছে ।

৩৪) তাজের পাশে নদী থেকেই একটি দরজা পাওয়া গেছিলো যেটা তাজের অংশ ছিলো, তার কার্বন ১৪ আমেরিকা থেকে জানা যায় যে এর বয়স ৩০০ বছরের ও পুরোনো শাহাজাহানের থেকেও । তার অর্থ আগে এখানে শিবমন্দির ছিলো । বারবার মুজলিম আক্রমণে ভাঙনের শিকার হয় ও পরিত্যক্ত রূপে ধীরে ধীরে পরিণত হয় ।

৩৫) মধ্যবর্তী পিলার তার চারপাশে কোনা পৃথিবীর সর্বজনীন হিন্দু মন্দির বানানোর নীতি ।

৩৬) বড় বড় নামকরা বাড়ির নকশা করার প্রযুক্তিবিদরা বলেছেন তাজমহল হিন্দু মন্দির স্টাইলে বানানো । বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়ার জাভাতে হিন্দু মন্দির স্টাইলে এই তাজমহল ।প্রসঙ্গতঃ ইজলামে এরকম নির্দশন কোথাও নেই । হিন্দু মন্দির ন্যায় বানানো হারাম ধরা হয় । বোঝাই যাচ্ছে এটি তেজোমহালয় শিব মন্দির ।

৩৭) ৪ টি কোনার মার্বেল পিলারের ওপর বিরাট তেলের আলো লাগিয়ে রাত্রে বিয়ে বা অন্য কোন অনুষ্ঠান পালন করা হিন্দু রীতির পুরোনো অঙ্গ ।ইজলামে এরকম কোন স্থাপত্য নেই ।

৩৮) অষ্টকোণী পিরামিড আকৃতি যা এই তেজোমহালয়তে আছে যেটা একমাত্র সনাত্ন হিন্দু ধর্মে এই আকৃতির বর্ণণা আছে । প্রত্যেক কোনার নাম, দেবত্ব, ইষ্টপূজন আছে । বাস্তুতন্ত্রের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ । মন্দির, দুর্গ,শহরের এরকম অনেক স্থাপত্য আছে । পরিষ্কার পুরো গঠনতন্ত্র শিব মন্দিরের ন্যায় ।

৩৯) তাজমহলের ডোমের একদম ওপরে ত্রিশূল আছে ও কলস চিত্রিত আছে । খুব চালাকি করে ত্রিশূল বাকিয়ে, কলসের আকৃতি বিকৃত করে ইজলামের আকৃতি দেওয়া হয় । অনেক পরে আল্লাহ শব্দটি ঐখানে খোদাই হয় । এই কলস হিন্দু, বৌদ্ধ হিমালয় এলাকায় স্থাপত্যের অংশ ।

৪০) তাজমহলের পূর্ব-পশ্চিম বরাবর একই দেখতে, দৈর্ঘে, কারুকার্যে দুই ঘর আছে , যাদের মধ্যে পশ্চিমের ঘরকে মসজিদ হিসেবে ধরা হয় । প্রশ্ন হলো যদি পশ্চিমের দিকে মসজিদ হবে তাহলে একই রকমের ঘর পূর্বে কেনো বানানো হলো যেটি ইসলাম স্থাপত্য নয় ।এটি তেজোমহালয়ের অংশ যেখানে অর্ভ্যত্থনার জন্যে কাজে লাগাতো । শাহাজাহান দখল করে এটিকে পরিবর্তিত করে ।

৪১) তাজমহলের ভেতরের অনেক জায়গায় ওম চিহ্ণ, পদ্মের আকৃতি, অষ্টকোণা আকৃতি পাওয়া গেছে যেগুলিকে মুছে দেবার চেষ্টা করেছে শাহাজাহানের লোকেরা । এই খোদাই করা চিহ্নগুলি সুকৌশলে এড়িয়ে গিয়ে অগুলি আলাদা করা হয়েছে যা তেজোমহালয় মন্দিরের স্পষ্টতা প্রমাণ করে ।

৪২) তাজমহলের পশ্চিমদিকে মসজিদ বলা হচ্ছে সেখানে একটি সঙ্গীতের ঘর আছে যা প্রমাণ করে যে এই ঘরটি হিন্দু মন্দিরের অংশ ছিলো এবং এখানে ভগবৎ সঙ্গীত চর্চা হতো সকাল-সন্ধ্যায় ।ইজলামিক সংস্কৃতিতে এইসব কোন স্থান নেই ।

৪৩) তাজের সোনার দরজা ও রুপার রেলিং মন্দির হবার আরও শক্তপোক্ত প্রমাণ দেয় । মার্বেলের মধ্যে মানিক্য-মোতির কাজ ও সেই দিকে আরও ইঙ্গিত দিচ্ছে ।

৪৪) পিটার মুন্ডি, ইংরেজ ভ্রমণকারী যিনি তার বইতে আগ্রাতে এই সোনার দরজা, রুপার রেলিং যুক্ত তাজের কথা বলে । ১৬৩২ সালে ভ্রমণ করেন, মুমতাজের ১ বছর মারা যাবার পর । প্রশ্ন, যদি তাজমহল ২২ বছর ধরে নির্মাণ হচ্ছিলো তাহলে এতো আগে সিড়ি-দরজা সোনা-রূপা কেনো মুড়তে যাবে ? কারণ পুরো কাঠামো তৈরি হলে এগুলো সবার শেষে দেয় । তারমানে এখানে আগে তেজোমহালয় রূপে মন্দির ছিলো । 

৪৫) তথাকথিত মুমতাজের সমাধির চারপাশে মার্বেলের মেঝের ওপর পাতলা মোসাইক পাথর রূপী গর্ত দেখা যায় । এখানে সোনার ঘেরাটোপ যুক্ত আয়তাকার জায়গা ছিলো ।

৪৬) এখানে একটি লম্বা ল্যাম্প চেনের সাহায্যে ঝোলানো দেখা যায় । শাহাজাহানের তেজোমহালয় দখলের আগে এখানে শিবলিঙ্গম ছিলো, জলের পাত্র ওপর থেকে ঝোলানো থাকতো যা থেকে জল পড়তো শিবলিঙ্গের ওপর ।

৪৭) এখানে এক মিথ্যা কাহিনীর আশ্রয় দেওয়া হয় যে শাহাজাহানের চোখের জল নাকি পূর্ণিমা রাত্রে মুমতাজের কবরের ওপর পড়তো ।

৪৮) মুমতাজের কবর বলে যে জায়গার প্রচার করা হয় সেখানে আগে ঘেরাটোপের মধ্যে শিবলিঙ্গম থাকতো । পরবর্তীকালে এটিকে ট্রিক আর্টের মাধ্যমে অন্য রুপ দেওয়া হয় ।

৪৯) তেজোমহালয়তে একটি অন্ধকূপ বিদ্যমান ছিলো, সম্পত্তি ও মন্দিরের অর্থ নীচু একটি অষ্টমকোন বিশিষ্ট ঘরে রাখা হতো । শত্রু আক্রমণে মন্দিরের সম্পত্তিকে বাঁচানোর জন্যে কূয়োর মধ্যে নিক্ষেপ হতো কিংবা পালানোর সুড়ঙ্গ থাকতো । মজার ব্যাপার হলো তাজমহলের মসজিদ ও সঙ্গীত ঘরের মধ্যে একটি কূয়া আছে যা ইজলামিক সংস্কৃতি ও কলা হিসেবে বেইমানান ।

৫০) তাজমহল যদি প্রকৃতভাবে শাহাজাহান নির্মাণ করাতো তাহলে এর কালঅবধি, মুমতাজের সামধির সময়কাল সব তৎকালীন সরকারী কাগজে উপস্থিত থাকতো । এমনকি স্পষ্ট তারিখ অবধি নেই মুমতাজের মৃত্যুর । মোঘল আমলে ইতিহাস লেখা হতো সেখানে শাহাজাহানের ৫০০০ হারেমের কথা উল্লেখ আছে । মুমতাজের মৃত্যু নিয়ে কোন তথ্য নেই । 

৫১) শাহাজাহানের সময় কোন সরকারী কাগজে তাজমহলের খরচের উল্লেখ ছিলো না । যদি সরকারী খরচায় নির্মাণ হতো কিংবা প্রকৃত নির্মাণকাজ হতো তাহলে তার উল্লেখ থাকতো । পরের দিকে লেখকরা তাজমহলের খরচার হিসাবপত্রের কাহিনী লিখে ফেলে ।

৫২) তাজমহল বানাতে বলা হয় ১০ থেকে ২২ বছর সময় লেগেছিলো এরকম বলা হয় । এরকম অনুমান জাতীয় কাজ সরকারী কাজে হয় না যেটা মোঘল আমলে কোন সরকারী কাগজে সময় কিংবা হিসেবের কোন উল্লেখ ই নেই ।

৫৩) তাজমহলের পুরো গঠনের চিন্তা বা প্ল্যানিং কে করেছিলো সেটা অবধি উল্লেখ নেই সরকারী কাগজে । কেউ বলে তুর্কী, পার্সিয়ান আবার কেউ বলে শাহাজাহান নিজেই । এরকমভাবে কোন দেশের কারুকার্য এর কাজ হয় না । 

৫৪) ২২ বছর ধরে ২০ হাজার শ্রমিক তাজমহলের কাজ করছিলো বলে প্রচার করা হয় কিন্তু মজার ব্যাপার হলো সরকারী কাগজে কোন নকশা, শ্রমিকদের ওপর খরচা, থাকার ব্যবস্থা, মালের হিসেব, কার ওপর কি দায়িত্ব ছিলো, বানানোর পদ্ধতি ইত্যাদি এইসবের কোন কিচ্ছুর উল্লেখ নেই এবং কোন সরকারী কাগজ অবধি নেই ।

৫৫) প্রকৃতপক্ষে শিবমন্দির তেজোমহালয় ভেঙ্গে-রুপ পরিবর্তিত করে, কোরানের আয়াত ঢুকিয়ে শাহাজাহানের মিস্ত্রীরা কাজ করছিলো । কাজ শেষ হয়ে যাবার পর শাহাজাহান এদের হাতের আঙ্গুল কেটে দেয় যাতে বিশ্বে আর কোথাও ধাপ্পাবাজী না করতে পারে ।

৫৬) তাজের বাগানে কেতকী, জুই,জয়,বেল, চম্পা, হরশ্রীনগর ইত্যাদি ফুলগাছ আছে । এইসব ফুল হিন্দু দেবদেবী পূজাতে লাগে । বেলের পাতা শিবের পূজনের জন্যে লাগে । প্রশ্ন হলো মসজিদ-কবরে এইসব ফুল-গাছ কোথাও থাকে না । যদিও গাছ থাকতো সেগুলো ছায়া প্রদানকারী হতো, এইসব গাছ কোনদিন হতো না । এর থেকে প্রমাণ হয় যে শাহাজাহান এই শিব মন্দির দখল করেছিলো ।

৫৭) বড় বড় হিন্দু মন্দির নদী বা জলাশয়ের কাছে বানানো হয় কারণ জল প্রতিদিন কাজে দরকার মন্দিরের পূজা ও অন্যান্য কাজে । তেজোমহালয় যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত । কবর ও মসজিদ নদীর তীরে বানানোর এরকম কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই ।

৫৮) তাজমহলের রাস্তা চারদিকে আছে । এটা বিখ্যাত হিন্দু মন্দিরের স্থাপত্যশিল্প চর্তুমুখী রাস্তা ।

৫৯) নবী মুহাম্মদ স্পষ্ট উল্লেখ করে গেছে যে কবরের ওপর চেনার জন্যে কোন চিহ্ন থাকবে না ।কিন্তু তাজমহল সম্পূর্ণভাবে ইজলাম বিরোধী নীতি ছিলো শাহাজাহানের । গর্ভগৃহে ও ১ তলায় কবরগৃহ করা হয়েছিলো । তার ওপর সৌধ নির্মাণ হয়েছে । উজ্জয়ণ ও সোমনাথ মন্দিরের শিবলিঙ্গের ন্যায় এখানে একের ওপর এক শিবলিঙ্গ নির্মাণ ছিলো কিন্তু শাহাজাহানের দখলের ওপর সম্পূর্ব ধ্বংস হয় ।

৬০) তাজমহলের প্রবেশদ্বার হলো দক্ষিণ দিকে । যদি প্রকৃত ইজলামিক নিয়ম অনুসারে স্থাপত্য হতো তাহলে পশ্চিমমুখী হতো । আসলে এটি হিন্দু মন্দির ছিলো ।

৬১) তাজমহলের ওপরের চূড়াটা পদ্মের পাপড়ির ন্যায় । প্রকৃত ইসলামিক স্থাপত্য কখনো এরকম হয় না । চূড়ার মধ্যে অনেকটা পার্থক্য ছিলো । ইসলামিক চূড়া টাক মাথার মতো হয় । 

৬২) স্থাপত্যের বিচারে দেখবেন তাজমহলের চূড়ার আকৃতি প্রতীক ও বৈজ্ঞানিক তারতম্য হলো উচ্চ শব্দ-সঙ্গীত চারদিকে ছড়িয়ে মনোরম পরিবেশ তৈরি করবে যেমনটা আরতি-কিংবা মন্দির সঙ্গীতের ক্ষেত্রে । কিন্তু এমন স্থাপত্য কবরে কেনো হবে সেটার কোন যৌক্তিকতা নেই । তেজোমহালয় শিব মন্দির থাকাকালীন ঘণ্টা, বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের প্রভাবে পুরো জায়গা গমগম করতো ।

৬৩) মোঘল শাসক ওরঙ্গজেব তার বাবা শাহাজাহাঙ্কে চিঠিতে লিখছে যে তাজমহল ৭ তলা ছিলো । ৪ তলা ওপর থেকে গুনে গুনে দেখা যায় । ১২-১৫ নাম্বার ঘরের ভেতর ভূমি থেকে নীচেও ২ তলা ছিলো । যেটি নদীর তল বরাবর আছে । আরও একটি তলা যমুনা নদীর লেবেলের নীচুতে আছে যা প্রাচীন হিন্দু মন্দির স্থাপত্যের চূড়ান্ত নমুনা নির্দেশ করে ।

৬৪) নদীর জলস্তরের নীচুতে থাকা ২২ টি লাল রং এর ঘর এর ভেণ্টিলিটার চুন-সুড়কি-ইট দিয়ে বোজানো হয়েছে । এই ঘরগুলি দরজাগুলি এইভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । এখানে হিন্দু স্থাপত্য ও কলা ছিলো যেটা শাহাজাহানের আমলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । ৩৩ ফুট বিরাট বারান্দা আছে । এই এলাকা তালা দিয়েছে রেখেছে ভারত সরকারের পুরাতত্ত্ব বিভাগ ।

৬৫)এই ৭ তম তলা অনেকবার দরজা ভাঙ্গা হয়েছে ও আবার জোড়া লাগানো হয়েছে ইংরেজদের আমলে । ১৯৩৪ সালে এই ঘরের মধ্যে সংস্কৃতি লিপি, বহু মূর্তি স্থাপত্য, শিবের মাথা ভাঙ্গা মূর্তি, অঙ্কিত দেওয়াল, কিছু কয়েন, বাসনপত্র পাওয়া গেছিলো এমনটা বলা হয় । 

৬৬)১৯৫৯-১৯৬২ সালের মধ্যে তাজমহলের ভেতর অষ্টাকোণা দেওয়ালে বিরাট ফাটল দেখতে পাওয়া যায় । সারাই সময় দেখা যায় বিরাট বড় বড় মার্বেলের মূর্তি ভিতরে । এস.রাও তখন পুরাতত্ত্ব বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন । এই ব্যাপারটা চাওর হতেই সরকারের তরফে আবার মূর্তিগুলি ভেতরে ঢুকিয়ে প্লাস্টার করে দেওয়া হয় ।

৬৭) ভিনসেণ্ট স্মিথের বই "আকবরের ওপরে'' সেখানে বাবরের ওপর কাহিনীতে তাজের নাম উল্লেখ পাওয়া যায় । হুমায়ন নামাতে ও তাজকে অদ্ভূত রহস্যজনক স্থাপত্য বলা হচ্ছে । তাহলে শাহাজাহানের জন্মানোর অনেক আগেই এই তাজ ছিলো যেটি তেজোমহালয় রূপে শিব মন্দির ছিলো ।

৬৮) এমনকি বাবরনামাতে তাজের উল্লেখ পাওয়া যায় যেখানে এই শিব মন্দির স্থাপত্য ইব্রাহিম লোধী দখল করে রেখেছিলো । শাহাজাহানের জন্মের অনেক আগেও তাজ ছিলো ।

৬৯) তাজমহলের পূর্ব ও দক্ষিণ দিকে অনেকগুলি অন্য কবর আছে । শুধু যদি মুমতাজের কবরের ওপর স্মৃতিসৌধ বানানোর জন্যে হতো তাহলে এগুলি কখনো হতো না ।

৭০) তাজমহলের চারপাশে ১০০ ইয়ার্ডের মতো নদী-ঘাটের তাজের বহিরাংশের কিছু ধবংসাবশেষ পাওয়া যায় । ভিক্টোরিয়া গার্ডেনের চারপাশে বাইরের দিকে গাছের বড় শিকড় ছড়ানো যেটি অষ্টকোণ লাল পাথরের স্তম্ভ অবধি যুক্ত আছে । এতবড় কারুকার্য ও বাইরের অংশ কবরের ওপর স্মৃতিসৌধতে তৈরি হয়নি । এখানে আগে শিব মন্দিরের অস্তিত্ব প্রমাণ দেয় ।

৭১) শাহাজাহানের বহুবিবাহ ও হারেমের কথা সবাই জানে । ১৪ সন্তানের পর মুমতাজ মারা যাবার পর তার বোনকে শাহাজাহান বিয়ে করে । যদি মুমতাজের প্রতি এতো ভালোবাসা ও আলাদা জায়গা থাকতো তাহলে তারপরে এগুলি করতেন না । সেই পরিপেক্ষিতে তাজমহলের প্রশ্ন ওঠাটাই অবাঞ্ছিত ।

৭২) মুমতাজ আগ্রা থেকে ৬০০ কিমি দূরে বুরহানপুরে মারা গেছিলো , সেখানেই তাঁর কবর আছে লোককথায় সেটি প্রচলিত । ইজলামিক মতে এইভাবে কবর স্থানান্তরিত করা ঘোরতর ইজলাম বিরোধী কাজ । তাজমহল ইসলামিক স্মৃতিসৌধ হিসেবে প্রচুর ইতিহাসবিদরা দাবী করে । তাই তাজমহলে যে প্রকৃত মুমতাজের কবর আছে কিনা প্রকৃতপক্ষে অনেক সন্দেহ আছে । 

৭৩) তাজমহলের দক্ষিণ দিকে তাজগঞ্জ গেটের দিকে রাণী সারহান্ডী বেগম, ফতেপুরী বেগম ও ভৃত্য সাতুনুসিয়া এর কবর আছে । এবার প্রশ্ন হলো তাজমহল যদি মুমতাজের জন্যে হয় তাহলে এরা কোথা থেকে এলো ? আর রানী ও ভৃত্য একসাথে কবর কিছুটা অস্বাভাবিক কান্ড । শাহাজাহান শিব মন্দির ভেঙ্গে ট্রিক আর্টের মাধ্যমে কবরে রূপান্তরিত করেছিলো । সেইক্ষেত্রে আরও কিছু কবর ঐখানে স্থাপিত করে ফেলেছিলো ।

৭৪) বাদশানামাতে লেখা আছে শাহাজাহান মুমতাজের লাশ বুরহানপুর কবর থেকে উঠিয়ে ১ বছর পর আগ্রাতে নিয়ে এনে আবার কবর দিলেন ।এই ইজলামিক বিরোধী কাজ করতে গিয়ে স্পষ্টভাবে উল্লেখ কেনো নেই যে তাজমহলের নির্মাণ চলছে ? শাহাজাহান তার জঙ্গী সেনার মদতে তেজোমহালয় মন্দিরের সম্পত্তি লুট করে ও অন্যত্র সরিয়ে সেটা পুরো অন্যরুপ দেবার পরিকল্পনা করেছিলো । তাই মুমতাজের কবর একটা ছ্যুত ছিলো । মজার ব্যাপার এই ইজলামিক বিরোধী কাজ যখন করছিলো কোন উলেমা-কাজী এর বিরোধ করলেন না ।

৭৫) যখন মুমতাজ জীবিত ছিলো তখন মুমতাজের নামে কোন প্রাসাদ ছিলো না , মৃত্যুর পর লাশের কবরের ওপর এতো বড় স্মৃতিসৌধ কোন শাসক ও অর্থনীতির পক্ষে ঠিক ছিলো না । শাহাজাহান তো তাজের নির্মাণ করায়নি, শুধুমাত্র মন্দির ভেঙ্গে সেটিকে বিভিন্ন কলার পরিবর্তন করে ইসলামিক সৌধের আকার দেবার কাজ চলেছিলো ।

৭৬) শাহাজাহান শাসক হবার ২-৩ বছরের মধ্যে মুমতাজ মারা গেছিলো । সেইক্ষেত্রে প্রকৃত বুদ্ধি বলে যে তাজমহলের ওপর খরচা করার জন্যে এতো ধনসম্পত্তির অফুরন্ত ভাণ্ডার থাকতে পারে না ।

৭৭) শাহাজাহান ও মুমতাজের বড় সুন্দরী মেয়ে জাহানারার সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিলো । এমনকি অনেক ভৃত্যের সাথে যৌন সম্বন্ধ ছিলো শাহাজাহানের । তাহলে শাহাজাহান অর্থ শুধুমাত্র মুমতাজের কবরের ওপর বিরাট বড় স্মৃতিসৌধ বানাতে এমনি খরচা করবে ? 

৭৮) শাহাজাহান ও মুমতাজের ভালোবাসা নাকি আধ্যাত্মিক-ঐশ্বরিক-হৃদয়মর্মী ছিলো ? চূড়ান্ত কাম-বাসনার অধিনিস্থ মেয়েবাজী করা শাহাজাহান কখনো সেই ভালোবাসার উচ্চশিখরে উঠতে পারবে না এটা মনোবীদ বৈজ্ঞানিকরা বলছে । এমনতো তাজমহল বানানোর চিন্তা কখনো আসতে পারেনা, শুধুমাত্র মন্দির ভেঙ্গে অন্য রুপ দেবার চিন্তা আসতে পারে ।

৭৯) শাহাজাহান যে নিজে কৃপণ ছিলো, নিজের সব শত্রুকে মেরে শাসক হয়েছিলো । খুব অত্যাচারী ছিলো । সে অর্থ অপচয় করে এতো বড় স্মৃতি সৌধ বানানোর প্রশ্ন বৈজ্ঞানিকভাবে ওঠে না ।

৮০) ১৯৭৩ সালে তাজের বাগানের খননের সময় ৬ ফুট নীচুতে অনেকগুলি জলাশয় আকৃতি দেখতে পাওয়া যায় যা শাহাজাহানের পূর্বে নির্মিত ।

৮১) তাজমহলের ভিতর অনেক নকল স্তম্ভ বানানো আছে যেগুলি পরে নির্মাণ করানো হয়েছিলো । ওপরের ঘরের মার্বেলের মোসাইকগুলি লুট হয়েছিলো হিন্দু মন্দিরের সময় । তাই এগুলিকে দেখতে যাবার জন্যে আদেশ নেই আজও । 

৮২) ফরাসী ভ্রমণকারী বেরনিয়ার বলেছেন কোন অমুসলিমকে এই তাজের ভেতরে গোপন ঘরে প্রবেশের নিষিদ্ধ ছিলো । কারণ ঐখানে গেলেই সব লুট তথ্য, হিন্দু মন্দিরের অংশ ফাঁস হয়ে যাবে । যদি প্রকৃত নির্মাণ করাতেন তাহলে সবার প্রবেশ সব জায়গায় উন্মুক্ত থাকতো ।

৮৩) তাজমহলের পেছনের যমুনা নদীতে প্রাচীনকালে মৃতদেহ সৎকার হতো , স্নান হতো । শিবমূর্তিও ছিলো । মোঘল শাসনকালে বিশেষতঃ শাহাজাহানের সময় সব ধ্বংস করে দেওয়া হয় ।

৮৪) আরও একটি গল্প শোণা যায় যে শাহাজাহান নদী বরাবর কালো পাথরের।







☣তাজমহল Vs তেজোমহল বিতর্ক


1989 সালে প্রফেসর পি.এন.অক (Taj Mahal: The True Story বই এর লেখক) দাবী করেন যে তাজমহল মমতাজ বেগমের সম্মানে নির্মিত প্রেমের সমাধিস্থল নয়,বরং এটা প্রাচীন দেবতা শিব এর মন্দির যেখানে আগ্রার রাজপুতরা পূজা অর্চনা করত।পরে শাহজাহান তাঁর মৃত স্ত্রীর স্মরণে স্মৃতিশালা হিসেবে গড়ে তোলেন। এই বই থেকেই শুরু হয় তাজমহল বিতর্ক। তারপর থেকে প্রচুর কারণ উঠে এসেছে এই বিতর্কের।দেখে নেয়া যাক কারণগুলি।


☢বিতর্কের কারণসমূহ


1.নাম এবং অস্তিত্বের বিতর্ক


“তাজমহল” নামের উল্লেখ মোগল আমলের (এমনকি সম্রাট শাহজাহানের আমলেও) দলিলাদি ও কোর্টের নথিপত্রে কোথাও নেই।তাছাড়া ওই সময়ে কোন মুসলিম দেশে কোন প্রাসাদ/ভবনের নাম “মহল” রাখার প্রচলন ছিল না।ইউরোপিয়ান পর্যটক(নাম অনির্দিষ্ট) যিনি ১৬৩৮ সালে আগ্রা ভ্রমন করেন (মমতাজ মারা যাওয়ার মাত্র সাত বছর পর) তিনি তার গ্রন্থে সেসময় তাজমহল তৈরির কোন সূত্র বা সেই নিয়ে কোনরূপ সংবাদ উল্লেখ করেননি।


অনেকে বলেন তাজমহল নাম এসেছে মমতাজ মহল থেকে।কিন্তু তার প্রকৃত নাম কখনই মমতাজ বেগম ছিল না। তার প্রথম প্রকৃত নাম ছিল মমতিয়াজ-উল-জামানি।যদি ধরেও নেওয়া হয় তার নাম ছিল মমতাজ বেগম কিন্তু কারো নামের প্রাসাদের নামকরন করতে চাইলে তার নামের প্রথম দুই অক্ষর বাদ দিয়ে (মমতাজ থেকে “মম” বাদ দিয়ে তাজ) নাম রাখার দৃষ্টান্ত পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র তাজমহলের ক্ষেত্রেই দেখতে পাওয়া যায়।


তাজমহল এর প্রকৃত নাম "তেজ মহালয়" যা একটি সংস্কৃত শব্দ থেকে এসেছে।এটি অগ্রেশ্বর মহাদেবের মন্দির ছিল যা আগ্রার রাজপুত রাজাদের। পরে রাজা জয় সিং উত্তরাধিকারসূত্রে মন্দিরটি পান। সম্রাট শাহজাহান জয়পুরের মহারাজার (জয় সিং) কাছ থেকে সমাধিসৌধ নির্মাণের জন্য দখল করেন। সম্রাট শাহজাহান তাঁর নিজস্ব দিনপঞ্জীতেও (বাদশাহনামা) উল্লেখ করেছেন যে,জয় সিং এর কাছ থেকে আগ্রার এক চমৎকার প্রাসাদোপম ভবন মমতাজ মহলের সমাধিস্থলের জন্য বেছে নেওয়া হয়। এবং এর জন্য জয় সিংকে অনত্র কিছু জমি দিয়ে দেয় সম্রাট শাহজাহানের।নিচে সেই চুক্তির ছবি দেওয়া হলো এবং শাহজাহান এর পুত্র ওরঙ্গজেবও একটি চিঠিতে লিখেছিল এই বিষয়ে তাও দেওয়া হলো।


2.কার্বন ডেটিং


নিউ ইয়র্কের আর্কিওলজিস্ট মারভিন মিলার (Marvin Miller) যমুনা নদীর তীর সংলগ্ন তাজমহলের দেয়ালের নমুনা পরীক্ষা করে তাতে যে কার্বন পাওয়া যায় তা সম্রাট শাহজাহনের শাসনামলেরও ৩০০ বছরের পুরানো বলে দাবি করেন।(গবেষণা অনুযায়ী 1152 খ্রিষ্টাব্দের কাছাকাছি নির্মিত হয়েছিল তেজ মহালয়)।

(https://www.myindiamyglory.com/2017/11/15/taj-mahal-shiva-temple-proofs/)


3.প্রবেশমুখ


তাজমহলের প্রবেশমুখ দক্ষিণ দিকে মুখ করা কিন্তু ইসলামিক স্থাপত্য নির্মাণের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল তা পশ্চিমমুখী হতে হয় অর্থাৎ মক্কার দিকে মুখ করে থাকতে হয়। কিন্তু তাজমহলের ক্ষেত্রে তা দেখা যায়নি।


4.মমতাজ বিতর্ক


মমতাজ তার তৃতীয় অথবা চতুর্থতম স্ত্রী ছিল বলে জানা যায়, তবে এই তথ্য নিয়েও বিতর্ক আছে। এবং শাহজাহান এর প্রায় 9 জন (মতান্তরে ১০ এর অধিক) স্ত্রী ছিল এবং অনেক দাসী ছিল।তাহলে হঠাৎ মমতাজের জন্যই তাজমহল কেন?


ভালবাসার গল্প মুলতঃ রূপকথা যা ওই সময়ের লোকদের মুখ থেকে সৃষ্ট। কারন ওই সময়কার কোন সরকারী নথিপত্রে বা গ্রন্থে মমতাজ-শাহজাহানের প্রেমের কথা উল্লেখ নেই।


অনেকের দাবি মমতাজের মৃত্যু অপঘাতে হওয়ায় এই ধরনের সৌধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত।

মমতাজ কে শাহজাহান বিয়ে করেন 15 বছর বয়সে যখন তার নিজের বয়স ছিল কুড়ি বছর। 15 থেকে 38 অর্থাৎ মাত্র 23 বছরের মধ্যে 13 খানা বাচ্চা প্রসব করার পর 14 তম বাচ্চার প্রসব যন্ত্রনায় মমতাজের মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুকে কি অপঘাতে মৃত্যু বলা যায়?


5. মমতাজের কবরস্থান


মমতাজের মোট তিনটি কবরস্থান পাওয়া যায়। একজন ব্যক্তির তিনটি কবরস্থান কিভাবে হতে পারে?

এই কবরস্থান গুলির মধ্যে শিব লিঙ্গের অস্তিত্বকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে বলে মনে করা হয়।


6. একাধিক জায়গা গুপ্ত রাখা


তাজমহলের অনেক ঘর শাহজাহানের আমল থেকেই তালবদ্ধ করে রাখা হয়েছে যা এখনও জনসাধারনের অজানা রয়ে গেছে।

তাজমহলের নিচের একটি বিশাল চেম্বার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে সবদিক থেকে। 1934 সালে নিরাপত্তার অভাবে দিল্লির এক ছাত্রদল সেই দরজা খুলে সেখানে বৈদিক সভ্যতা থেকে বর্তমান পর্যন্ত সনাতনীদের বিভিন্ন মূর্তির চূর্ণ অবস্থা দেখতে পান বলে তারা দাবি করেন এবং তারা সেখান থেকে একটি মহাদেব এর ভগ্ন মূর্তির ছবি পর্যন্ত তুলে আনেন।

কিন্তু তখন ব্রিটিশ সরকার কোন গুরুত্বই দেয়নি এই বিষয় এবং স্বাধীনতার পর এই বিষয়ে আলোচনাও বন্ধ হয়ে যায়।


7.অদ্ভুত সিড়ি


তাজমহলের বিভিন্ন অংশে অদ্ভুত সিড়ি দেখা যায়। কোথাও হঠাৎই সিড়ি তিনধাপ এগিয়ে শেষ হয়ে গেছে তো কোথাও একধাপ এর পরই আর কোন ধাপ নেই। মনে করা হয়, এই সিড়িগুলো দিয়েই সেইসব ঘরগুলোতে যাওয়া যেত যেখানে সনাতনী সংস্কৃতির বিভিন্ন চিহ্ন পাওয়া যেতে পারে কিন্তু এই চিহ্ন অপ্রকাশিত রাখার জন্যই এই ধরণের অদ্ভুত কাজগুলো করা হয়েছে।


8.গানের ঘর


মসজিদ ইসলামের জন্ম থেকেই সাইলেন্ট প্লেস হিসেবে পরিচিত সেখানে গান চর্চা করার ঘর আসলো কিভাবে?


9.স্থাপত্য রীতি:


মিস্টার কাটিয়ার এবং মিস্টার শেভডে তাজমহল কে নিয়ে প্রায় বারো বছর ধরে গবেষণা করেন। উভয়েই যুক্তি দেন যে,তাজমহলের স্থাপত্যে অনেক হিন্দু স্থাপত্যের ছাপ রয়েছে।


১.তাজমহল একটি গম্বুজাকৃতি স্থাপত্য কিন্তু ইসলামিক সমাধি চৌকো আকৃতির হয়।


২.তাজমহলের শীর্ষে একটি অর্ধাকৃতি চাঁদ আছে। ইসলামিক স্থাপত্যে এই চাঁদটি সাধারণত বাঁকা থাকে। কিন্তু তাজমহলের চাঁদ বাঁকা নয়। এই চাঁদ আসলে হিন্দু দেবতা শিবের সঙ্গে সম্পর্কিত।


৩.এছাড়া এই সৌধ চূড়ায় একটি কলসও আছে। সেখানে আমের পাতা এবং উল্টে রাখা নারকেলও আছে। এগুলো হিন্দু প্রতীক। ইসলামী সংস্কৃতিতে ফুল,পশুর প্রতিকৃতি নিষিদ্ধ। কিন্তু তারপরও তাজমহলে এসব ব্যবহার করা হয়েছে।


৪. তাজমহল এর বিভিন্ন জায়গায় ত্রিশূলের প্রতিমূর্তি দেখা গেছে।


৫. তাজমহল এর বিভিন্ন জায়গায় পশু এবং উদ্ভিদের ছবি দেখা যায় কিন্তু ইসলামে ছবি আঁকা হারাম তার ওপর আবার পশু উদ্ভিদের ছবি??


৬. তাজমহল এর ভেতরের উপরের ছাদের দিকে তাকালেই বৈদিক সূর্য দেবতার চিহ্ন দেখা যায়।


৭. তাজমহল এর কিছু কিছু জায়গায় বৈদিক ওম মন্ত্রের নিদর্শন পাওয়া গেছে।


৮.পাওয়া গেছে গণেশ রেখা এবং গনেশ দেবতার বিভিন্ন ছোট ছোট কারুকার্য।


৯. এগুলি ছাড়াও বহু হিন্দু ঐতিহ্যের চিহ্ন পাওয়া গেছে তাজমহল এর মূল সৌধের বাইরেও(আশেপাশের বিভিন্ন গাছপালার মধ্যে বৈদিক শব্দ এর চিহ্ন পাওয়া যায়)


১০. এইসব বৈদিক এবং সনাতনী হিন্দু সংস্কৃতির নকশা গুলিকে মিটিয়ে আরবি শব্দ লেখার চেষ্টা করায় হওয়া ক্ষত গুলিকেউ খুব সহজেই শনাক্ত করা যায়।


(স্থাপত্য গুলির ছবিগুলি দেওয়া হল নিচে)


⚛অনেকে ছবিগুলি দেখাও বিশ্বাস করবে না এবং এগুলোকে শুধুমাত্র কো-ইন্সিডেন্স বলে উড়িয়ে দিতে চাইবে। তাই প্রত্নতত্ত্ববিদদের দ্বারা করা গবেষণা যেখানে তারা স্পষ্ট ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে এগুলি সম্পূর্ণ সনাতনী শিল্পকলার অংশ।এরকম ৪ টি ভিডিও দেয়া হলো।

1 ম ভিডিও: https://youtu.be/5bTLvf9TVjM

2 য় ভিডিও: https://youtu.be/xQR07ma9luM

3 য় ভিডিও: https://youtu.be/QCyyxKBWssk

4 য় ভিডিও: https://youtu.be/J_JNKBORv5E


এই সব স্থাপত্য গুলি প্রমাণ করে তাজমহল মুলতঃ হিন্দু মন্দির ছাড়া আর কিছুই নয়।


⚛ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক টিম এই বিষয় নিয়ে গবেষণা করে একই জিনিস প্রমাণ করে।তাদের বের করা ভিডিও এর লিংক:(https://youtu.be/1r6BhXJAYzk)


⚛পি.এন.অক এর লেখা তাজমহল দ্য ট্রু স্টোরি বই এর পিডিএফ: http://22knots.com/?q=download&file=files/Real_story_of_Tajmahal.pdf

⚛আগের বছর "অঘোরে ঘুমিয়ে শিব" নামে একটি পুস্তক বের করেন দেবারতি মুখোপাধ্যায় যাতে বিস্তারিত গবেষণার সাহায্যে প্রমাণ করে দেওয়া হয় যে তাজমহল একটি হিন্দু মন্দির।সেই পুস্তকের প্রোমো: https://youtu.be/p3s7EgcwClg

বইয়ের প্রচ্ছদ নিচে ছবিতে দেওয়া হল।


☣বর্তমান পরিস্থিতি


১৯৮৯ তে বই প্রকাশের পরে ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক সংঘাতের আশঙ্কায় ইন্দিরা গান্ধির সরকার প্রফেসর অকের বই বাজার থেকে উঠিয়ে নেয় এবং ভারতে এর প্রকাশনা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তাতে করে কোন সমাধান বের হয় না বরং তাজমহল বিতর্ক ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। বিজেপি ক্ষমতায় আসার সাথে সাথেই কিছু নেতা-নেত্রী দাবি করেন যে তাজমহলের এইসব রহস্যের উন্মোচন করা হোক। কিন্তু এখনোও পর্যন্ত ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সংঘাতের জন্য তা করা হয়ে ওঠেনি।


Riya Ghosh এর লেখা রিপোস্ট।











🟠আজ থে‌কে ৫০ বছর প‌রে আপ‌নি যখন আপনার না‌তি নাতনী‌কে নি‌য়ে গঙ্গার তী‌রে ঘুর‌তে যা‌বেন, হয়‌তো তখন দ‌ক্ষি‌ণেশ্ব‌র শাহী মস‌জি‌দের দি‌কে আঙ্গুল উ‌ঁচি‌য়ে দীর্ঘশ্বাস ছে‌ড়ে আপনা‌কে বল‌তে হ‌বে "‌দেখ দেখ এটা ছিল আমা‌দের দ‌ক্ষি‌ণেশ্বর কালী ম‌ন্দির।"


🟠ও‌রে হিন্দু, আজ এ কথা‌কে তোমার কা‌ছে পাগ‌লের প্রলাপ ম‌নে হ‌তে পা‌রে। কিন্তু ৫০ বছর প‌রের কোলকাতা‌কে আ‌মি এরকমই দেখ‌তে পা‌চ্ছি।


🟠আজ যে কবরকে তু‌মি শাজাহা‌নের তাজমহল বল‌ছো, ৪০০ বছর পূ‌র্বে তোমার পূর্ব পুরুষ সেটা‌কে বল‌তো "তে‌জোমহালয় ম‌ন্দির।"


🟠জে‌নে নিন তাজমহ‌লের প্রকৃত ই‌তিহাস।


💢আমরা নেহেরু মার্কা ইতিহাসের বদৌলতে পড়েছি- সম্রাট শাজাহান তার প্রিয়তম স্ত্রীর মৃত্যুতে শোকাহত হয়ে তাজমহল নির্মান করেন। এতে ২০ হাজার শ্রমিক, ২২ বছর ধরের কাজ করে, ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি।


💢শুরুতেই "নেহেরু মার্কা ইতিহাস" কেনো বললাম, তার ব্যাখ্যা দিয়ে নিই। অখণ্ড ভারত দুই টুকরা হওয়ার পর, বর্তমান ভারতের শাসনভার- ব্রিটিশদের এজেন্ট নেহেরুর কাছে হস্তান্তর হলে, ইতিহাস রচয়িতাদের প্রতি নেহেরু সরকারে একটি অলিখিত নির্দেশ ছিলো- 

📌মুসলমানদের নামে কোনো কিছু খারাপ বলা যাবে না। 

📌যেখানে দরকার বলতে হবে ভালো ভাবে,

 📌আর যেটা ভালো ভাবে বলা যাবে না, সেটাকে এড়িয়ে যেতে হবে।


যেমন ২৮ এপ্রিল ১৯৮৯ সালে, পশ্চিমবঙ্গের সেকুকুরলার বামফ্রন্ট সরকার মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ এর মাধ্যমে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে, যার মূল কথা ছিলো- “ভারতের মুসলমান আমলের সময়কে কোনোরকম বিরূপ সমালোচনা করা যাবে না। মুসলমান শাসকরা যে হিন্দু মন্দির ধ্বংস করেছে তা উল্লেখ করা যাবে না।” 


💢এই নির্দেশ অনুযায়ী বাংলার ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তকগুলো সংশোধিত বা লিখিত হয় আর তাতে লিখা হয় এই ধরণের ইতিহাস - “গজনীর সুলতান মাহমুদ ১৭ বার ভারতে অভিযান পরিচালনা করেন”। কিন্তু প্রতিবারই সুলতান মাহমুদ যে লক্ষ লক্ষ হিন্দু পুরুষকে খুন করে লক্ষ লক্ষ হিন্দু মেয়েকে বন্দী করে নিয়ে গিয়ে যৌনদাসী হিসেবে বাজারে বিক্রি করেছিলো, আর সেই সাথে সোমনাথ মন্দিরের মূর্তি ভেঙ্গে ফেলে মন্দির লুঠ করে কোটি কোটি টাকার সমমূল্যের সম্পদ লুঠ করে নিয়ে গিয়েছিলো। সেই ইতিহাস কোথাও লিখা নেই। হিন্দু ছেলে মেয়েরা প্রকৃত ইতিহাস জানবে কিভাবে, কোথা থেকে❓


💢যা হোক, ফিরে যাই তাজমহলের ইতিহাসে, প্রথমে মিথ্যা প্রচারণার পোস্টমর্টেম করি, শেষে প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমান দিয়ে লেখার পরিসমাপ্তি ঘটাবো।


💢তাজমহল নির্মানের ইতিহাস সম্পর্কে বলা হয়, তাজের নকশা করার জন্য আন্তর্জাতিক টেন্ডার ডাকা হয়েছিলো এবং সেই নকশার সাথে কাঠের তৈরি তাজের একটি ছোট্ট নমুনা দাখিল করতে বলা হয়েছিলো। বহু নকশা ও নমুনা জমা পড়েছিলো এবং শেষ পর্যন্ত পৃথিবীর নামকরা স্থপতিদের ডেকে একটা পরিষদ গঠন করা হয় এবং সেই পরিষদ তাজের চুড়ান্ত নমুনা নির্বাচন করে এবং এই নমুনা হলো পারস্য বা তুরস্কের স্থপতি ওস্তাদ ইশা নামের এক ব্যক্তির; হ্যাঁ, এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা ই বলছে এইসব কথা।


💢এখন কমনসেন্সটাকে একটু খাটান। তাজের মতো একটি বিখ্যাত অট্টালিকা, যার মতো সৌন্দর্যময় দ্বিতীয় কোনো অট্টালিকা এখনও পৃথিবীতে নেই। যার সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন বলেছিলেন, পৃথিবীতে দুই ধরনের মানুষ আছে; এক. যারা তাজমহল দেখেছে, আর দুই. যারা তাজমহল দেখে নি। সেই তাজমহলে নকশা যার কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে, তিনি পারস্য না তুরস্কের লোক, সেই কথাই কেউ ঠিক মতো বলতে পারছে না। ইনি নাকি আবার বিখ্যাত স্থপতি ! যার দেশ সম্পর্কেই সঠিক কিছু জানা যাচ্ছে না, তার সম্পর্কে আর অন্যান্য তথ্য জানার চেষ্টা করাটাই তো বৃথা; কারণ, ওস্তাদ ইশা নামের কেউ থাকলে তো তার সম্পর্কে কিছু জানা যাবে ? 


💢আর একটা বিষয়; চীন ও কোরিয়ার ইঞ্জিনিয়াররা বাংলাদেশের অনেক বড় বড় সেতু, ফ্লাইওভার ইত্যাদি নির্মান করেছে এবং করছে, এর কারণ তারা প্রথমে নিজেদের দেশে ঐসব নির্মান করে দেখিয়েছে, তারপর তাদেরকে ডেকে এনে আমরা তাদেরকে ঐসব বানানোর দায়িত্ব দিয়েছি, এই সূত্রে ওস্তাদ ইশা নামের যদি কেউ থাকতো এবং সে যদি পারস্য বা তুরস্কের কোনো ব্যক্তি হতো, তাহলে নিশ্চয় তাজমহল বা এর মতো বা এই জাতীয় কোনো অট্টালিকা পারস্য বা তুরস্কে নিশ্চয় থাকতো, সেটা কি আছে ?


💢যদি ধরে নিই শাজহান তাজমহল বানিয়েছিলো, তাহলে এই সব বিক্রীত ঐতিহাসিকদের মতে, তাজমহলের নির্মান শরু হয়- কারো মতে ১৬৩০, কারো মতে ১৬৩১, কারো মতে ১৬৩২, আবার কারো মতে ১৬৪১ সালে। ১৬৪১ সালে কোনোমতেই সম্ভব নয়; কারণ, শাজাহানের জীবনী বাদশানামার তথ্য মতে, শাজাহানের স্ত্রী মমতাজ মহলের মৃত্যু হয় ১৬৩০ সালে, এর পর তাকে অস্থায়ীভাবে বুরহান পুরের একটি উদ্যানে সমাহিত করা হয়, মৃত্যুর ৬ মাস পর তাকে তাজের মধ্যে এনে স্থায়ীভাবে কবরস্থ করা হয়। এই সূত্রে ১৬৩২ সালও গ্রহনযোগ্য নয়; কারণ, ‘বাদশানামা’য় উল্লেখ আছে, আরবি মাস ১৫ জমাদিয়াল আউয়াল মমতাজের মৃতদেহ তাজের মধ্যে স্থানান্তরিত করা হয়। আরবি বছর যেহেতু হয় ৩৫৪ বা ৩৫৫ দিনে, সেহেতু ঐ দিনটি ইংরেজি সাল অনুযায়ী সঠিক কোন তারিখ ছিলো তা বের করা খুবই কঠিন হিসাবের একটা ব্যাপার, এই হিসেবকে এড়িয়ে গিয়ে যদি ধরে নিই যে, মমতাজের মৃত্যুর সময়টি ছিলো ১৬৩০ সালের শেষ দিকে, তাহলে মৃত্যুর ৬ মাস পর তাজের মধ্যে তার মরদেহ স্থানান্তর ১৬৩১ সালে হয়েছিলো বলে ধরে নেওয়া যায়। ফলে তাজের নির্মান শুরুর সাল ১৬৩২ ও খারিজ হয়ে যায়।


💢উপরের এই তথ্য থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, মমতাজের মৃত্যুর ৬ মাস পর তার দেহকে স্থায়ীভাবে তাজের মধ্যে সমাহিত করা হয়। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, তাজমহল নির্মানের জন্য সময় পাওয়া যাচ্ছে ৬ মাসেরও কম। অথচ আমাদের ঐতিহাসিকরা বলছে, এই সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক টেণ্ডার ডেকে নকশা অনুমোদন করে তাজ নির্মান করা হয়। এটা কি সম্ভব❓খেয়াল করুন, সময়টা ১৬৩০ সাল, যখন যাতয়াতের একমাত্র দ্রুত মাধ্যম স্থলপথে ঘোড়ার গাড়ি আর জল পথে পাল তোলা জাহাজ। যে জাহাজে ১৭৫৬ সালেও কোলকাতা থেকে মাদ্রাজ যেতেও সময় লাগতো একমাস। এইসব পুরোনো সময়ের কথা ছেড়ে এই আধুনিক যুগের প্রেক্ষাপটেও কী ওরকম একটি ইমারত এক বছরেও কি নির্মান করা সম্ভব❓ আপনাদের কমনসেন্স কী বলে❓

এখন দেখুন তাজমহল নির্মানের ইতিহাস সম্পর্কে ইতিহাসের গ্রন্থগুলো কী বলছে❓


সম্রাট শাজহানের রাজত্বকাল এবং তার কিছু আগে পরের ইতিহাস পাওয়া যায় নিচের এই ৭ টি গ্রন্থে –


১.আবদুল হামিদ লাহোরী রচিত ‘বাদশানামা’


২. সম্রাট জাহাঙ্গীরের লেখা আত্মজীবনী ‘ ওয়াকিঅৎ জাহাঙ্গিরী’


৩. ইনায়েত খাঁ রচিত ‘সাহজাহাননামা’


৪. মুফাজ্জল খাঁ রচিত ‘তারিখ-ই-মুফাজ্জলি’ 


৫. বখতিয়ার খাঁ রচিত “মিরাত-ই-আলম’


৬. মহম্মদ কাজিম রচিত ‘আলমগির নামা’ এবং


৭. কাফি খাঁ রচিত ‘মুস্তাখাবুল লুবাব’


💢বর্তমান ইতিহাস মতে, শাজাহানের জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো তাজমহল নির্মান, কিন্তু অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয় হলো শাজাহানের প্রায় সমসাময়িক এই সব বেতনভোগী মুসলিম ইতিহাস রচয়িতাদের মধ্যে শুধু আবদুল হামিদ লাহোরী রচিত ‘বাদশানামা’ ছাড়া তাজের ব্যাপারে আর কারো কোনো গ্রন্থে তাজের ব্যাপারে কিছু উল্লেখই নেই। বিষয়টি কি মানানসই ? আর বাদশানামায় তাজের ব্যাপারে কী কী বলা আছে, এই পোস্টের মধ্যে প্রসঙ্গক্রমে সেগুলোএকটা একটা করে জানতে পারবেন।


এবার দেখুন তাজ নির্মানের জন্য খরচের ব্যাপারে কে কী বলছে ❓


💢বাদশানামায় আবদুল হামিদ লাহোরী বলছে, তাজের জন্য খরচ হয়েছে ৪০ লক্ষ টাকা। পরবর্তীতে শ্রী রমেশচন্দ্র মজমুদার এবং অতুলচন্দ্র রায় এই সত্যের কাছাকাছি থাকার জন্য বলেছেন ৫০ লক্ষ টাকা। কিন্তু তাজের মতো এত সুন্দর ও বিশাল একটি অট্টালিকা যে এত কম টাকায় নির্মান করা সম্ভব নয় এটা বুঝতে পেরে বিক্রীত ইতিহাস রচয়িতারা এর নির্মান ব্যয় বাড়াতে শুরু করে, এ ব্যাপারে মহম্মদ দীন নামে একজন বলে ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা; গাইড টু তাজে বলা আছে ১ কোটি ৮৪ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা; তাবার্নিয়ে বলেছে ৩ কোটি, এই তাবার্নিয়েই ২২ বছর সময়ের প্রবক্তা; যা হোক, তাজমহল যদি সত্যই শাজহান নির্মান করতো, তাহলে মমতাজের মৃত্যুর পর থেকে সেই প্ল্যান করলেও ১৬৩২/৩৩ সালের আগে তা নির্মান শুরু সম্ভব হতো না এবং তখন থেকে ২২ বছর লাগলে নির্মান শেষ হতো ১৬৫৫ সালে, কিন্তু ১৬৫০ সালে থেভেনট নামে এক ফরাসী পর্যটক তাজমহল দেখে বর্ণনা করে গেছেন, ‘তাজ ভারতীয় ভারতীয়দের সূক্ষ্ম শিল্পনৈপূন্যের এক উজ্জ্বল নিদর্শন’।


💢এর মানে নির্মান শেষ হওয়ার আগে থেকেই তাজ তার জায়গায় দাঁড়িয়েছিলো। এটা কিভাবে সম্ভব❓ সম্ভব এভাবেই যে, তাজ শাজাহান বানায় ই নি। যা হোক, ‘কানোয়ারলাল’ বলেছে তাজের নির্মান ব্যয় ৪ কোটি ১৮ লক্ষ ৪৮ হাজার ৮২৬ টাকা; টাকার হিসেবে যেমন পয়সা উল্লেখ করা যায়, তেমনি কোটির হিসেবে লক্ষ বা খুব বেশি হলে হাজার উল্লেখ করা যায়, কিন্তু এই ‘কানোয়ার লাল’ ৮২৬ টাকা পর্যন্ত উল্লেখ করেছে এই ভাবনা থেকে যে সূক্ষ্ম হিসেব ধরে নিয়ে তার তথ্যটাই যেন মানুষ বিশ্বাস করে। যা হোক এর পর ‘কীনস’ বলেছে তাজের নির্মানের পিছে ব্যয় হয়েছে ৯ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাজের নির্মানের ব্যয় হিসেবে এত মুনির এত মত কেনো❓ সত্য তো একটাই হয়। এতগুলো তো আর সত্য নয়। তাহলে তাজের নির্মান ব্যয়ের পেছনে প্রকৃত সত্যটা কী❓প্রকৃত সত্য হিসেবে আমাদেরকে সেটাই ধরে নিতে হবে, তাজ সম্পর্কে যার গ্রন্থে কিছু তথ্যের উল্লেখ আছে, সেই আব্দুল হামিদ লাহোরীর তথ্যকে, যিনি বলেছেন ৪০ লক্ষ টাকার কথা। কিন্তু তাজের মতো একটি বিশাল ও সৌন্দর্যময় অট্টালিকা কী মাত্র ৪০ লক্ষ টাকায় নির্মান করা সম্ভব❓একটু পরে পাবেন এই প্রশ্নের উত্তর।


💢এখন দেখুন আবদুল হামিদ লাহোরীর ‘বাদশানামা’য় তাজমহল সম্পর্কে কী লিখা আছে। বাদশনামা ফার্সি ভাষায় লিখা; এই গ্রন্থের ৪০৩ নং পৃষ্ঠায় ২১ নং পঙক্তি থেকে ৪১ নং পঙক্তি পর্যন্ত যা লিখা আছে তার বাংলা অনুবাদ এরকম :


২১.শুক্রবার, ১৫ জমাদিয়াল আউয়াল, পরপারের যাত্রী পবিত্রা হজরত মমতাজ উল জামানির সেই পবিত্র মৃতদেহ,


২২. যাঅস্থায়ীভাবে কবরস্থ করা হয়েছিলো, তা


২৩. যুবরাজ শাহ সুজা বাহাদুর, ওয়াজির খাঁ এবং সতিউন্নেসা খানম, যারা


২৪. মৃতের মন মেজাজের ব্যাপারে খুবই ওয়াকিবহাল ছিলো,


২৫. এবং রানীদের রানীর মনোভাব বুঝতো এবং তার কার্যাবলীর সঙ্গে পরিচিত ছিলো,


২৬. তাদের সাহায্যে রাজধানী আগ্রায় আনা হলো


২৭. শহরের দক্ষিনে যেখানে সবুজ ঘাসে ঢাকা বিশাল উদ্যান,


২৮. যার মাঝখানে সেই বিশাল ইমারত, যা পূর্বে রাজা মানসিংহের সম্পত্তি ছিলো এবং


২৯. যার বর্তমান মালিক তাঁর পৌত্র রাজা জয়সিংহ,


৩০. সেখানেই বেহেশতবাসী রানীকে কবরস্থ করা হবে বলে স্থির করা হয়েছিলো,


৩১. যদিও রাজা জয়সিংহ পূর্বপুরুষের সেই সম্পত্তিকে অতিশয় মূল্যবান বলে মনে করতেন, তথাপি সম্রাট শাজাহানকে তা ছেড়ে দিতে রাজী হন।


৩২. কিন্তু ধর্মীয় নিয়ম ও মৃতের প্রতি মর্যাদার কথা চিন্তা করে সম্রাট সেই প্রাসাদ বিনা পয়সায় নেওয়া যুক্তিযুক্ত হবে না বিবেচনা করে শরীফাবাদ নামক স্থান তাকে দিলেন।


৩৩. কাজেই সেই বিশাল প্রাসাদ এর বদলে জয়সিংহকে সরকারী জমি দেওয়া হলো।


৩৪. ১৫ জমাদিয়াল আউয়াল, শবদেহ আগ্রায় পৌঁছবার পর


৩৫. সেই শোভন শবদেহকে চির বিশ্রামে শায়িত করা হলো……


৪১. সেই প্রাসাদ নির্মানে ৪০ লক্ষ টাকা খরচ করা হলো।


এই ৪০ লক্ষ টাকা আসলে জয়সিংহের কাছ থেকে যে প্রাসাদ নেওয়া হয়েছিলো, সেটাকে একটা ইসলামিক কবরখানায় রুপান্তরিত করতে সংস্কারের জন্য ব্যয় করা হয়েছিলো।


এখন দেখা যাক রাজা জয় সিংহ বা তার পূর্ব পুরুষের হাতে এই বিশাল অট্টালিকা এলো কিভাবে ?

আগ্রা শহরের একটি জয়গার নাম বটেশ্বর, এটি আগ্রা থেকে ৪ কি.মি দূরে অবস্থিত। ১৯০০ সালে, ঐ বটেশ্বরের একটাঢিবি খুঁড়ে ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের প্রথম অধিকর্তা জেনারেল ক্যানিংহাম একটা শিলালিপি আবিষ্কার করেন, যা বটেশ্বর শিলালিপি নামে পরিচিত। এই শিলালিপিটি বর্তমানে লখনৌ এর সরকারী সংগ্রহশালায় রাখা আছে। এই বটেশ্বর শিলালিপিটি সংস্কৃত ভাষায় লিখা এবং এতে মোট ৩৪টি শ্লোক আছে। এর মধ্যে ২৫, ২৬ এবং ৩৪ নং শ্লোকের বাংলা অর্থ হলো-


২৫. তিনি একটি সৌধ নির্মান করেছেন, যার মধ্যে ভগবান বিষ্ণু অধিষ্ঠান করছেন, রাজা মাথা নাত করে তার চরণ স্পর্শ করেন।


২৬.রাজা মর্মর পাথরে আরও একটি মন্দির নির্মান করেছেন এবং সেখানে সেই দেব অধিষ্ঠান করছেন, যার কপালে শোভা পাচ্ছে চন্দ্র। যিনি এই সুরম্য মন্দিরকে বাসস্থান হিসেবে পেয়ে কৈলাসে ফিরে যাওয়ার বাসনা ত্যাগ করেছেন।


৩৪. এই শিলালিপিটি আজ বিক্রম সংবতের ১২১২ সালের আশ্বিন মাসে, রবিবার শুক্ল পঞ্চমীর দিনে স্থাপন করা হলো।


বিক্রম সংবত ১২১২ মানে ১১৫৬ খ্রিষ্টাব্দ, যা খ্রিষ্টীয় দ্বাদশ শতক। এই সময়ের রাজা ছিলেন চান্দেল রাজ পরমার্দিদেব, যার অন্য নাম ছিলো পরমাল। চান্দেলদের রাজ্যের নাম ছিলো বুন্দেলখণ্ড, যা বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে অবস্থিত ছিলো। এই শিলালিপি অনুযায়ী রাজা চান্দেলদেব বিষ্ণু এবং শিবের জন্য শ্বেত পাথরের দুটো মন্দির নির্মান করেছিলেন, সম্ভবত নানা উত্থান পতনের মধ্যে দিয়ে এই দুটি মন্দির আকবরের সময়ে রাজা মানসিংহের হাতে আসে, মানসিংহ যেহেতু নিজের বোনকে আকবরের সাথে বিয়ে দিয়ে আকবরের বশ্যতা স্বীকার করেছিলো, সেহেতু আকবর, জাহাঙ্গীরের সময় পর্যন্ত হয়তো সেই মন্দিরগুলো হয়তো অক্ষত ছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে সেই মন্দির দুটি গেলো কোথায়❓


বর্তমানে আগ্রা শহরে শ্বেতপাথরের মাত্র দুটি ই ইমারত আছে, একটি তাজমহল এবং অপরটি নূরজাহানের পিতা ইদমত-উদ-দৌলার সমাধি। এ থেকে স্পষ্ট যে, শিব মন্দিরটিকে তাজমহল এবং বিষ্ণু মন্দিরটিকে নূরজাহানের বাবার সমাধি বানানো হয়েছে।


শিব মন্দিরটিই যে তাজমহল, এখুন দেখুন তার আকৃতিগত ও প্রত্নতাত্ত্বিকগত কিছু প্রমান :


১. তাজমহলের প্রধান গম্বুজের শীর্ষদেশে রয়েছে ত্রিশুল যা অভ্রান্তভাবে মহাদেবের অস্ত্র বা প্রতীক।


২. বটেশ্বর শিলালিপিতে বলা হয়েছে, এই মন্দিরকে বাসস্থান হিসেবে পেয়ে মহাদেব শিব কৈলাসে ফিরে যাওয়ার বাসনা ত্যাগ করেছেন, একমাত্র তাজমহলের সৌন্দর্যের সাথেই শিলালিপিতে বর্ণিত ঐ মন্দিরের সৌন্দর্য মিলে।


৩. তাজমহলের দুটি তলায় কবর রয়েছে, উপরের তলায় নকল কবর, নিচের তলায় আসল কবর। দুই তলায় কবর বিশিষ্ট কোনো কবর ইসলামের ইতিহাসে আর দ্বিতীয়টি নেই, কিন্তু দুই তলায় শিবলিঙ্গ বিশিষ্ট শিব মন্দির ভারতের নানা জায়গায় আছে।


৪. ইসলামিক কবরখানায় কেউ কবরকে প্রদক্ষিণ করে না, কিন্তু তাজের কবর প্রদক্ষিণ করার ব্যবস্থা আছে, এ থেকে স্পষ্ট যে, ভক্তরা এককালে সেই পথে শিবলিঙ্গকে প্রদক্ষিণ করতো।


৫. তাজমহলের প্রধান গম্বুজের ছাদ থেকে ঝুলছে একটি শিকল, কবরখানার সঙ্গে যার কোনো সম্পর্ক নেই। এক সময় সেই শিকলের সঙ্গে ঝোলানো ছিলো একটি মঙ্গলঘট, যার থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল শিবলিঙ্গের মাথায় পড়তো, এখনও বৃষ্টি হলে সেই বৃষ্টির জল কবরের উপর পড়ে। আসলে এটা শিবলিঙ্গের উপর জল পড়ার স্মৃতিমাত্র।


৬. ‘জ্যঁ বাপতিস্ট তাভার্নিয়ে’ ভারত ভ্রমন করে গিয়ে এ সম্পর্কে একটি বই লিখেন যা লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয় ১৮৮৯ সালে, সেই বই য়ে তিনি লিখেছন, তাজ পরিসরের মধ্যে বাজার বসতো। একমাত্র হিন্দু মন্দিরের মধ্যেই বাজার বসে এবং যেখানে ফুল, ফল, প্রসাদের উপকরণসহ আরও নানা জিনিসের বেচাকেনা হয়, কোনো মুসলিম কবরখানায় কোনোদিন বাজার বসে না।


৭. তাজমহলে স্থাপিত শিবলিঙ্গের নাম ছিলো তেজোলিঙ্গ, এই নাম থেকেই তাজমহলের পূর্বনাম ছিলো তেজোমহালয়। তেজোমহালয়ে স্থাপিত মহাদেব শিবের আরেকটি নাম ছিলো অগ্রেশ্বর মহাদেব, যার থেকেই উৎপত্তি হয় আগ্রা নামের।


৮. যার কবরকে নিয়ে এত কথা ও কাহিনী, শাজাহানের সেই স্ত্রীর নাম প্রকৃত নাম ছিলো ‘আরজুমান্দ বানু’ যাকে ‘মমতাজ উল জামানি’ বলেও ডাকা হতো। এখন প্রশ্ন হচ্ছে মমতাজের নামে সমাধি বানানো হলো তার নাম ‘মমতাজমহল’ না হয়ে বা নাম থেকে ‘মম’ বাদ দিয়েশুধু ‘তাজমহল’ হবে কেনো ? প্রকৃত ব্যাপার হচ্ছে, এর পূর্ব নাম ‘তেজোমহালয়’ এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে এর নাম করণ করা হয়েছে তাজমহল। যদিও এর কোনো প্রয়োজন ছিলো না, কিন্তু ঐ যে খুনিরা যেমন খুনের প্রমান রেখে যায়, এই ব্যাপারটিও ঠিক তেমন।


৯. তাজমহলের প্রধান ফটকের উপর রয়েছ একটা স্থান, বর্তমানে যার নাম দেওয়া হয়েছে নহবত খানা; এককালে সেখান থেকে নাকি সকাল সন্ধ্যা সানাই বাজানো হতো; আসলে সেখান থেকে এক সময় পূজা উপলক্ষে ঢাক ঢোল বাজানো হতো । নিস্তব্ধতায় কবরখানার বৈশিষ্ট্য, সেখানে এরকম সানাই বাজানোর স্থান বড়ই বেমানান। কিন্তু আগে থেকেই যেহেতু আছে এবং সেটাকে আর ভেঙ্গেও ফেলা যাচ্ছে না, তাই ঢাক ঢোল বাজানোর স্থানকে নহবতখানা নাম দিয়ে প্রকৃতসত্যকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে মাত্র।


১০. তাজের বিশাল কমপ্লেক্স জুড়ে রয়েছে নানা বাড়িঘর দালান কোঠা। যা একটি মুসলিম কবরখানার জন্য অপ্রয়োজনীয় ও বেমানান। বরং অতিথিশালা, গোশালা, ভাণ্ডারঘর, রন্ধনশালা, ঠাকুরের ঘর, চাকর ও রক্ষীদের থাকার ঘর এবং অফিস ঘরের জন্যই একটা মন্দিরের এসব দরকার এবং যা এখনও আছে ভারতের বিভিন্ন মন্দিরে, কিন্তু যা নেই কোনো ইসলামিক কবরখানায়।


১১. তাজমহলের নিচতলার ঘরগুলোকে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কারণটা কী❓

নেহেরু সরকারে সময়ে একবার তাজমহলে ফাটল দেখা দেয়। সেইসময় প্রত্নতত্ত্ববিদ শ্রী এস.আর.রাও আগ্রার আর্কিওলজিক্যাল সুপারিটেনডেন্ট ছিলেন। তার নেতৃত্বে একটি দল তাজের ফাটল পরীক্ষা করার জন্য একটু দেওয়াল খুঁড়তেই দেওয়ালে আঁকানো বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি বেরিয়ে পড়ে, যেটা বিভিন্ন মন্দিরের গায়ে অঙ্কিত একটি সাধারণ চিত্র। সেই সময় নেহেরুর নির্দেশে ঘটনাটা দ্রুত চাপা দেওয়ার জন্য একেবারে নিচতলায় যাবার রাস্তা ই স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়, সেই থেকেই নিচতলার যাওয়ার রাস্তা বন্ধ।


১২. তাজমহল এবং শাজাহানের পক্ষে সাফাই প্রদানকারী ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার তার বইয়ে উল্লেখ করেছেন তাজমহলের বাগানের নকশা করেছিলেন ‘রনমল’ নামে কাশ্মিরের এক লোক। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আন্তর্জাতিক টেন্ডার ডেকে যে তাজের নকশা অনুমোদন করা হয় সেই তাজের বাগানের নকশা, কাশ্মিরের কোনো হিন্দুকে দিয়ে করাতে হবে কেনো❓নাকি মিথ্যার আড়ালে সত্যের ইঙ্গিত এভাবেই মাঝে মাঝে প্রকাশ পায়।


১৩. ১৯৭৩ সালে, যখন নেহেরু আর নেই, আমেরিকারনিউইয়র্কের প্র্যাট স্কুলের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের এক অধ্যাপক ‘মারভিন মিলস’ আগ্রায় তাজ পরীক্ষা করতে আসে এবং তাজের কোনো এক কাঠের দরজার সামান্য নমুনা সংগ্রহ করে আগ্রায় নিয়ে যায়। আমেরিকার ব্রুকলিন কলেজের রেডিও কার্বন ল্যাবরেটরির অধ্যক্ষ ড. ইভান উইলিয়ামস এর তত্ত্বাবধানে ঐ কাঠের নমুনাটির ‘কার্বন-১৪’ পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়, সেটা১৩২০ থেকে ১৪০০ সালের মধ্যে কোনো এক সময়ের তৈরি। যেটা শাজহানের সময় থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগের। এখন এটা অসম্ভব কিছু নয় যে, দ্বাদশ শতকে তৈরি করা শিব মন্দির তেজোমহালয়ের কোনো দরজা বা জানালার সংস্কার দেড়শ দুশো বছর করা হয় নি❓ কিন্তু এই পরীক্ষা থেকে এটা তো প্রমানিত যে, শাজহানের অনেক আগে থেকেই তাজমহল বলে যাকে চালানো হচ্ছে, তা পৃথিবীতে ছিলো ।


🟠মমতাজমহল ওরফে আরজুমান্দ বানু ছাড়া শাজহানের আরো অনেক নিকা করা বিবি ছিলো। তাজমহলের চত্বরের মধ্যেই আরো দুজন নিকা করা বিবি কবর আছে। এরা হলো সতিউন্নেসা খানম ও সরহন্দি বেগম। এছাড়া আরজুমান্দ বানুর এক খাস পরিচারিকার কবরও তাজের মধ্যে আছে। এখানে উল্লেখ্য যে এই তিনজনের কবর প্রায় হুবহু একই রকম। 


🟠এখন প্রশ্ন হলো, একই সমাধি সৌধের মধ্যে প্রধান বেগমের সাথে অপ্রধান বেগম এবং তার দাসীকে কবর দিয়ে শাজাহান কি মমতাজের সম্মান বাড়িয়েছে, না কমিয়েছে❓ আসলে শাজাহান, কোনো একটা উছিলায়, জয়সিংহের এই মন্দিরটিকে দখল করবে ব’লে, মমতাজের মৃত্যু উপলক্ষে দখল করেছিলো এবং পরে তাকে পারিবারিক কবরস্থান বানিয়েছে, প্রেম ট্রেম কিচ্ছু নয়, মমতাজের প্রতি এত প্রেম থাকলে মমতাজের মৃত্যুর পরই শাজহান মমতাজের ছোট বোনকে বিয়ে করতে পারতো না।


🟠এসবই হচ্ছে ইতিহাসের কচকচানি। কিন্তু এই কচকচানির প্রয়োজন এখন এজন্যই যে, মুসলিম শক্তির কাছে পরাজিত হয়ে হিন্দুরা যেমন শুধু তেজোমহালয়ই নয়, অনেক কিছু হারিয়েছে। তেমনি ভারতে বর্তমান মুসলিম সেন্টিমেন্টকে মূল্য দিতে গিয়ে ভারতের সেকুলার সরকারগুলো প্রকৃত সত্যকে চাপা দিয়ে মিথ্যা ইতিহাস প্রচার করেছে এবং এখনও করছে। কিন্তু প্রকৃত সত্য তো বের হবেই, আজ বা কাল; সেই সত্য আজ বের হয়েছে। কিন্তু এই সত্য জানাটাই শেষ কথা নয়। মুসলিম শক্তির কাছে পরাজিত হয়ে হিন্দুরা তেজোমহালয় হারিয়েছে, দীর্ঘদিন সেই সত্যাটা পর্যন্ত তারা জানতে পারে নি। এখনও সর্বস্তরের হিন্দু সেই কথা জানে না; এখন দরকার সর্বস্তরের হিন্দুকে সেই প্রকৃত সত্য জানানো এবং তাজমহলকে পুনরায় তেজোমহালয়ে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করা।


🟠এখানে আর একটি রূঢ় বাস্তব কথা প্রত্যেক হিন্দুর মনে রাখা দরকার যে, এত সুন্দর মন্দির পেয়ে কৈলাসে ফিরে যাবার ইচ্ছা ত্যাগ করেছেন বলে মহাদেব সম্পর্কে কল্পনা করে যে শিলালিপি লিখা হয়েছিলো, সেই মন্দির রক্ষার জন্য মহাদেব কিন্তু কোনো ভূমিকা রাখে নি, আর ভবিষ্যতে কখনো রাখবেও না। মহাদেবের যদি কিছু করার ক্ষমতা থাকতো তাহলে তার সোমনাথ মন্দির ১৭ বার সুলতান মাহমুদের হাতে লুন্ঠিত হতো না। মহাদেব শিব কোনো হিন্দু জন্য কিছু করবে না, যা করার করতে হবে নিজেকেই; কারণ, পৃথিবীতে মানুষের শক্তিই শেষ কথা। কিন্তু শিবের মূর্তির মধ্যেই বলা আছে কোথায় আছে সেই শক্তি, আর কিভাবে তার ব্যবহার করতে হবে। শিবের সকল শক্তি নিহিত আছে তার ত্রিশুলের মধ্যে, যখন তা কোনো শিবভক্তের হাতে উঠে। এই ত্রিশুল শিবভক্তরা হাতে তুলে নেয় নি বলেই হিন্দুরা বার বার পরাজিত হয়েছে, বার বার মার খেয়েছে এবং এখনও খাচ্ছে এবং ততদিন খাবে যতদিন না শিবের অস্ত্র ত্রিশুলকে নিজের হাতে তুলে না নেবে।

🔱⚔️🙏🚩🚩🚩

(সংগৃহীত)